রেশমা ফিরে এল নাকি আওয়ামীলিগ আর একটি নাটক মঞ্চস্থ করল

লিখেছেন লিখেছেন কানা বাবা ১১ মে, ২০১৩, ০৬:৪৫:২২ সকাল



সাভারের রানা প্লাজার ধংস স্থুপ থেকে ১৭ দিন পর একজন গার্মেন্টস কর্মী রেশমা উরফে রেশমির জীবিত উদ্ধারের পর অনেক খুশি হয়েছিলাম।চার পাশে অনেক হাতাশার মাঝেও একটু আশার সংবাদ হয়ে এসেছিল এটা।সব চেয়ে খুশি হয়েছিলাম একজন মেজর পদের সেনা অফিসার যেভাবে রেশমিকে উদ্ধার করেছে বলে বর্ননা দেয়া হল তা শুনে।চার পাশে মানবতার এত পদদলনের মাঝেও আমাদের সেনাবাহিনির মাঝে এখনো মানবিকতার অবশিষ্টাংশ বিদ্যমান আছে এটা ভেবে অনেকটাই পুলকিত বোধ করেছিলাম।কিন্তু ঘড়ির কাটা ঘন্টা না ঘোরতেই এত আনন্দের একটা বিষয় নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে অনেকটায় বিরক্ত হই।প্রথমে বিষয়টা আমার দৃষ্টি গোচর করলে আমার এক আওয়ামীলিগ বিরোধী বন্ধুর উপর অনেকটাই বিরক্ত হয়ে তার সাথে ঝগড়া করলাম যে সরকারের পক্ষে যাচ্ছে বলে এরকম একটা আনন্দের বিষয়কে বিতর্কিত করা ঠিক না।ফেইচবুকে ঢুকেও দেখি একই অবস্থা পক্ষে বিপক্ষে নানা প্রচারনা শুরু হয়ে গেছে।যেই সকল পেইজ এর বিপক্ষে বলতেছিল যে এটা সাজানো তাদের রাজনৈতিক স্ট্যান্ড সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা থাকায় বিষয়টা এড়িয়ে যাচ্ছিলাম।কিন্তু হটাত একটা পেইজের কমেন্ট দেখে বিষয়টা এড়িয়ে যেতে পারলাম না।“ ১৭ দিন অন্ধকারে থাকলে ত অন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা রেশমি অমন ফেল ফেল করে থাকিয়ে থাকল কিভাবে?”চিকিতসা বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়া আসলে আমার জন্য কষ্টকর ছিল। সম্পুর্ন বিষয়টা আবার হিসাব মিলানো শুরু করলাম।তখন নিচের প্রশ্ন গুলোর কোন উত্তর খোজে পেলাম না।

১) যখন থেকে রেশমার জীবিত থাকার কথা ঘোষনা করা হয় তখন থেকেই ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিতে লাইভ দেখা শুরু করি। ২ ইঞ্ছি একটা ছিদ্র থেকে রেশমার অস্তিত্ত টের পেয়ে গর্ত করে তাকে বের করে আনা হয় বলে সেনাবাহিনির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সাংবাদিক উদ্ধারকারিদের ঠিক পিছনে থাকলেও গর্ত করার কোন অংশ দেখায় নি কেন? যারা বলবেন উনি হয়ত অত কাছে পোছাতে পারেন নি তাদের জন্য বলে রাখি যেই স্থান দিয়ে রেশমাকে বের করে আনা হয় তার দুই তিন মিটার দূরে সাংবাদিক রা ছিল অনেকে পাশে আর ছিদ্র দিয়ে ধংস স্থুপের ভিতরের ছবিও তুলতেছিল।

২) জীবিত প্রানের অস্তিত্ত আছে জানতে পারার পর অনেক টিভি চ্যানেল লাইভ দেখায়। ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সাংবাদিক তখন বলছিলেন খুব ধিরে ধিরে অভিযান চালানো হচ্ছে হয়ত কয়েক ঘন্টা লাগতে পারে অথচ মাত্র ১৫ মিনিটের মাথায় রেশমা কে বের করে নিয়ে আশা হল কিভাবে।

৩) বলা হচ্ছে রেশমা কর্মরত ছিল ৩য় তলায় অথচ তাকে উদ্ধার করা হল বেইচমেন্ট থেকে অর্থাৎ নিচ তলা থেকে।সাক্ষাতকারে সে বলেছে সে বাচার জন্য এধিক ওধিক ছুটতে ছুটতে নিচ তলায় গিয়ে বেঁচে যায় তা হলে নিচতলায় কি আর কেউ কর্মরত ছিল না থাকলে তারা কই? লোকজন বাচার জন্য সবায় নিচের ধিকে ছুটা টাই কি স্বাভাবিক না? শুধু কি সে একাই নিচ তলায় আশ্রয় নেই?

৪) চিকিতসা বিজ্ঞানের মতে ২৪ ঘন্টার বেশি অন্ধকারে থাকলে সে আলোতে এসে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য কিছু দেখতে পাবে না। এমন কি সে চোখ ও খোলা রাখতে পারবে না।সাথে তার nystagmus ( severe wandering of the eyes from side to side) হওয়ার কথা। সেখানে রেশমা ছিল ১৭ দিন আর আলোতে আসার মাত্র এক দুই মিনিট পর তার চোখ এত সুন্দর করে পৃথিবীর আলো দেখতেছে কিভাবে।



৫) রেশমার কাপড় দেখে কখনোই মনে হচ্ছিল না যে সে ১৭ দিন একটা ধংস স্থুপের নিচে চাপা পড়ে ছিল।এত বড় একটা ভবন ধসে পড়লেও রেশমা একটুও আহত হল না কেন?

৬) বলা হচ্ছে রেশমা শুকনা খাবার খেয়ে বেঁচে ছিল, ১৭ দিন বেঁচে থাকার মত শুকনা খাবারের আসলেই কোন বিশ্বাস যোগ্য উৎস আছে কি?

জানি এই লিখা পড়ার পর অনেকেই আমাকে ছাগু ট্যাগ দিবেন কিন্তু আসলেই এই প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে কি?

সর্বশেষ একটা প্রশ্ন বার বার মাথায় ঘোরতেছে আসলেই কি রেশমা আমাদের জন্য অনেক নিরাশার মাঝেও একবিন্দু আশার আলো জালাতে ফিরে এল নাকি আরেকটি আওয়ামী নাটক মঞ্চস্থ হল যাতে রেশমা নায়ক হলেও পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের হোসেন মিয়ার মত নায়ক কুবেরকে ছাপিয়ে প্রধান মন্ত্রী ই মুল কারিগর ও সুফল ভোগি।

বিষয়: রাজনীতি

২২৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File