আমরা কেন নির্যাতিত? কি আমাদের অপরাধ?(কিস্তি-১)
লিখেছেন লিখেছেন সাইফুল্লাহ আরাফাত ২১ মে, ২০১৩, ১২:০৭:৩৮ রাত
বিশ্বের বুকে নিজেকে একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে গর্ব ভরে পরিচয় দিতে পারায় মহান আল্লাহ তা’য়ালার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। অত:পর ভক্তি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সেই সব বীর শহীদদের যারা আমাদের এই প্রাণ প্রিয় মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে হাসিমুখে জীবন দান করেছিলেন। কেউবা পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে দিনাতিপাত করছেন কিংবা এখনও যারা সুস্থ সবল রয়েছেন। সকলের প্রতি ব্যথিত হৃদয়ের গভীর ভালবাসা। আমরা নবীন প্রজন্ম। হৃদয়ের আকুতি ব্যক্ত করছি দেশের জ্ঞানীগুণী মুক্তিযোদ্ধা সহ সর্বসাধারণের প্রতি---
আমরা কেন নির্যাতিত? কি আমাদের অপরাধ?
আমরা মুসলিম, এই কি আমাদের অপরাধ!
বলবেন, তা হবে কেন?
তাহলে শুনুন আমার সম্মানিত দেশবাসি। আমরার যারা কওমি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে অথবা যারা আমাদের শিক্ষাদন করেন, আমাদের একমাত্র লক্ষ্য উদ্দেশ্য ঈমান আমালের সাথে মহান আল্লাহ তা’য়ালাকে সন্তুষ্ট করে দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়া। আল্লাহ ভুলা মানুষদেরকে আল্লাহ তা’য়ালার সাথে সর্ম্পক প্রতিষ্ঠা করা। মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, মানবতার মুক্তির দিশারি আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শে আদর্শবান হিসাবে গড়ে তুলতে সহায়তা করা। আমাদের ছাত্র উস্তাদেরা সর্বদা এত অধিক পরিমান লেখাপড়ায় মশগুল থাকেন যার ফলে অন্য কোন বিষয়ের প্রতি মনোযোগি হওয়ার কোন প্রকার সময় সুযোগ থাকেনা।আপনার যদি আমার কথা বিশ্বাস না হয় অতি সঙ্গোপনে বাংলার যে কোন কওমি মাদ্রাসা পরিদর্শন করুন। তখন স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করবেন, ছাত্র শিক্ষকের কিতাব অধ্যয়নের অথবা ইবাদত বন্দেগীর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। তখন তাদের প্রতি ভক্তি ভালবাসায় আপনার হৃদয় জুড়িয়ে যাবে। প্রতিদিন নামাজ বাদ দেশের সুখ-শান্তি নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হচ্ছে।
আমাদের মুরব্বীদের সুস্পষ্ট ঘোষণা, একমাত্র আল্লাহ তা’য়ালা কে রাজি খুশি করার জন্য দ্বীন শিখছি-শিখাচ্ছি। অন্য কোন উদ্দেশ্য আমাদের নেই। দেশের রাষ্ট্র প্রধান হতে নিয়ে সর্ব শ্রেণীর মুসলিম যেন প্রকৃত রাসূল (সাঃ) প্রেমী হয়ে যায়। রাসূল (সাঃ) এর আদর্শে নিজেকে গড়ে তোলা এই হলো আমাদের একান্ত কামনা। আমরা কখনও ক্ষমতায় ছিলাম না, আমরা ক্ষমতাশীন হওয়ার দাবিও করিনা। আমরা সরকারের হিতাকাঙ্খী, শত্রু নই। সরকারের প্রতি আমাদের একটাই দাবী ছিল, সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনায় আপনারা যা খুশি আইন-কানুন করুন, আমাদের কোন আপত্তি নেই কিন্তু আমাদের প্রাণ ভালবাসা ইসলাম বিরোধী কোন আইন-কানুন নিয়ম নীতি করবেন না, এই হল আমাদের আকুতি।
আমরা মসজিদ মাদ্রাসা খানকা নিয়ে থাকতে চাই। কেন আমাদের জোর করে বার বার রাজপথে নামতে হচ্ছে ? কেন আমাদের লেখাপড়া ইবাদতে বিঘ্ন ঘটানো হচ্ছে? কি আমাদের অপরাধ? জাতির কাছে জবাব চাই। আপনি আশ্চর্য হয়ে বলবেন, এ কেমন কথা! আপনারা মিটিং মিছিল হরতাল করছেন, অন্য দিকে নিজেরাই দাবী করছেন আমাদের দ্বারা জোর পূর্বক এমন কেন করানো হচ্ছে। আপনার এসব না করলেই তো পারেন, তাহলে আর কোন সমস্যা থাকেনা।
আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। গ্রাম বাংলায় একটা প্রবাদ রয়েছে, উপর দিকে থুথু নিক্ষেপ করলে নিজের গালেই পড়ে। এখন আপনি মনোযোগের সাথে সামান্য কয়েকটি বিষয়ের উপর যাচাই বাছাই করুন, অত:পর আপনার সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করুন। আমরা রাজপতে স্বেচ্ছায় নেমেছি, নাকি আমাদের জোরপূর্বক নামতে বাধ্য করা হয়েছে।
আপনারা জানেন পিলখানায় যখন দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান পঞ্চাশের অধিক বি.ডি.আর অফিসারদের নির্মমভাবে সরকারের নাকের ডগায় হত্যা করা হলো। শত কাকুতি-মিনতি শুনেও সেদিন সরকার তাদের রক্ষায় সেনাবাহিনী প্রেরণ করেনি। আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মত ঝটপট সরকার তদন্ত রিপোর্ট জাতির সম্মুখে পেশ করলেন। ডাল-ভাতের জন্য সৈনিকদের চাপা ক্ষোভ থেকে এসব হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। অথচ দশ ট্রাক অস্ত্রের তদন্ত কার্যক্রম, বিচার প্রক্রিয়ার এখনও সমাপ্তি হয়নি। (চলবে)
পূর্বে প্রকাশিত: বিডি ওয়াল্ড ব্লগে
বিষয়: বিবিধ
১২২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন