মানব জীবনে ধর্ম ও রাষ্ট্র

লিখেছেন লিখেছেন মামুন আহমেদ ১৪ মার্চ, ২০১৩, ০৪:১৫:০২ বিকাল

জীবনে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা অনেক। কেননা, পৃথিবীর সকল ধর্মই চায় সমাজের বিশৃঙ্খলা দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। সকল মানুষ সুখে, শান্তিতে বেঁচে থাকুক। অন্যের ক্ষতি করে নিজে ভাল থাকবো, সামান্য বিবেকবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি মাত্রই এর বিপক্ষে কথা বলবেন। ধর্ম বলে তুমি নিজে ভাল থাক, অন্যকেও ভাল থাকতে দাও, প্রয়োজনে তাকে সাহায্য সহযোগিতা করো। আর এভাবেই একটা সুখি সমৃদ্ধ সমাজ, নগর বা রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারবে, এর মধ্যে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। রাজনীতির লক্ষ যদি ব্যক্তি উন্নয়ন এবং দলের শক্তি বৃদ্ধি হয় তবে সেখানে ধর্ম গলার কাটা হিসাবে আভিরভুত হতেই পারে। কারণ ব্যক্তি উন্নয়নের জন্য ব্যক্তিকে সরবাত্মক চেষ্টায়, প্রয়োজনে সমাজ, রাষ্ট্রের স্বার্থ পরিপন্থি কাজ করতে হতে পারে। ফলে রাজনৈতিক ব্যক্তিবরগ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান হতে পারেন! আরও সত্য কথা হচ্ছে, দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা যখন রাষ্ট্র পরিচালনা করে তখন রাষ্ট্রের সর্বত্রই নৈরাজ্য ছড়িয়ে পড়ে। তখন রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হয়। একসময় তারা রাষ্ট্রের প্রতি শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলে। রাষ্ট্রের প্রতি তাদের ক্ষোভ বৃদ্ধি পায়। তখন তারা বিদ্রোহী আচরণে উদ্ভুদ্ধ হয়। রাষ্ট্র তখন বিভক্ত হতে পারে। বিভক্ত রাষ্ট্রে আর যা হোক না কেন, রাষ্ট্রের উন্নয়ন কখনও সম্ভবপর হবে না। তাই যারা রাষ্ট্র ব্যবস্থার সাথে ধর্মকে স্থান দিতে চায়না, হয়ত তারা স্বার্থপর অথবা দুর্নীতিবাজ। কেননা ধর্ম মানুষের কুপ্রবৃত্তিগুলোকে দূর করে, মানবতার দিকে আহবান করে। ন্যায়ের কথা বলে, মানুষকে তাঁর অধিকার পরিপূর্ণভাবে প্রদান করার জন্য রাষ্ট্র প্রধানকে জোরালভাবে নির্দেশ দেয়। তাই রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্মীয়মূল্যবোধের অনুসরণ করা বুদ্ধিমান রাষ্ট্রের প্রধান কর্তব্য।

যারা রাষ্ট্রের মঙ্গল কামনা করে তারা এক বাক্যে রাষ্ট্রের সাথে ধর্মকে জড়াতে চাইবে। সাথে সাথে যারা ধর্ম নিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে নিজস্ব বা ব্যক্তি উন্নয়নে তৎপর তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করবে। একটা বিষয় পরিষ্কার হওয়া উচিৎ, ''ধর্ম নিরপেক্ষতাবাধের গ্রহণযোগ্যতা বলতে কিছু নেই''। কারণ ধর্মনিরপেক্ষতা মানেই স্বার্থপরতা। কেউ চাইলে এটা নিয়ে গবেষনা করতে পারেবন।

যে বা যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের পায়তারা করে তারা অবশ্যই ঘৃণিত পশুর তুল্য। তাই অন্তর দিয়ে ধর্মকে ভালবাসতে পারলেই ধর্ম এবং রাষ্ট্রের মধ্যে সমন্নয় ঘটানো সম্ভব। ধর্ম যেমন শান্তিময় জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে, রাষ্ট্রও তেমনি মানব কল্যাণের জন্য নীতিগত পদ্ধতিতে গড়ে ওঠে। ধর্ম মানুষের দুনিয়াবি জীবন ও পরকালীন মুক্তির ব্যপারে আলোচনা করে থাকে। আর রাষ্ট্র মানব জীবনের উথান পতনের আধার। একটা বিষয়ে সকলের এক মত হওয়া উচিৎ ধর্ম মানুষের জন্য, মানুষ ধর্মের জন্য নয় এবং রাষ্ট্রও মানুষের জন্য মানুষদের নিয়েই অগ্রসর হয়। মোট কথা মানব কল্যাণের জন্যই রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ধর্মীয় মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ধর্মীয় মতবাদের বিকল্প মতবাদ খুজতে যাওয়া মূর্খতারই নামান্তর মাত্র। মানুষ যে ধর্মেরই হোকনা কেন তাকে অবশ্যই নিজ ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। কেননা পৃথিবীতে এমন কোন ধর্ম নেই যেখানে মানুষকে সমাজ ও রাষ্ট্রে গর্হিত কাজ করতে উদ্ভুদ্ধ করে। বিভন্ন ধর্ম পরস্পর সাংঘরসিকপূর্ণ নয় বরং পরস্পর সম্পূরক। বাস্তবতা হচ্ছে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিই দায়ী সাম্প্রদায়িক সংঘরসের জন্য।

বিষয়: বিবিধ

১৫৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File