যাকিছু সুন্দর অতি মধুময়, তাতেই কেন আমার এত ভয়??
লিখেছেন লিখেছেন মামুন আহমেদ ০২ মে, ২০১৩, ০৪:১০:১৬ বিকাল
ধর্ম মানুষকে শৃঙ্খলাব্দ করে, অবাধ্য নয়। ধর্ম মানুষকে শান্তির পথ দেখায়, নির্যাতনের নয়। পৃথিবীতে এমন কোন ধর্ম আছে, যেখানে কাউকে পশু হতে আহ্বান করে? আমার জানামতে নেই। ধর্ম কি বলে? আমাদের জানা উচিৎ ধর্মের দাবী কি? ধর্ম মানব জীবনের সাথে অতি চমৎকারভাবে জড়িত কেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে সবসময় ইতিবাচক উত্তরই পাওয়া যাবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। কেউ যদি বলে আমার জীবনে ধর্মের কোন প্রয়োজন নেই। তার সাথে কোন আলোচনার দরকার নেই। তার সাথে আলোচনা মানেই সময় নষ্ট করা মাত্র। কারণ ধর্মহিন মানুষ আর বনের হিংস্র হায়েনার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এরা উভয়ই শান্তিকামী মানব জাতির সামনে অতি ভয়ঙ্কর আতংকের আধার। এদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে মৃত্যু পর্যন্ত।
কেউ যদি স্বীকার করেন যে, মানব জীবনে ধর্মের বিকল্প বলতে কিছু নেই। তাহলে তার কাছে প্রশ্ন থাকবে, আমি কোন ধর্ম মেনে চলবো? আমি যদি সর্বত্তম ধর্মকে জীবনের পরম প্রাপ্তি বলে উপস্থাপন করি, তাহলে কারো কোন আপত্তি থাকলেও সেটা কত টুকু যুক্তিযুক্ত? এই মুহুর্তে পৃথিবীতে সর্বত্তম ধর্ম কোনটি? আমি যতটুকু খুঁজে পেয়েছি তা হচ্ছে, ইসলাম হল সর্বত্তম ধর্ম। কেউ কেউ আপত্তি করবেন, আমি তাও জানি! আমি তাদের কাছে জানতে চাই, ইসলাম যদি সর্বত্তম ধর্ম না হবে তাহলে সেই সর্বত্তম ধর্মের নাম কি? আপনার বুকে হাত রেখে উত্তর দিবেন। এটা আমার ছোট্ট একটা দাবী, শুধুই আপনার কাছে!
একটা চোর যে কিনা নিজেকে মুসলিম বলে পরিচয় দিয়ে থাকে, তাই বলে কি ইসলাম নষ্ট হয়ে যাবে? কখনও না। কারণ, ইসলাম বলে যে চোর এবং চুরি করে তার হাত কেটে দিতে হবে। যাতে করে, সে পরে আর চুরি করতে না পারে। একটা লোক আছে, যে কিনা পরকীয়ায় লিপ্ত এবং নিজেকে মুসলিম বলে জাহির করে। তাহলে কি মুসলিমদের ধর্ম ইসলাম গ্রহণযোগ্যতা হারাবে? কখনও নয়। কেননা, ইসলামের বিধানমতে যিনাকারির সাস্তি মাফযোগ্য নয়। বিবাহিতদের সাস্তি পাথর মেরে হত্যা আর অবিবাহিতদের সাস্তি বেত্রাঘাত। ইসলামে লোভীব্যক্তিদের স্থান নেই। ইসলাম কৃপণদের সাথে কোনরুপ আপোষ করে না। অন্যায়, যুলুম আর চোগলখুরি ইসলামে ঘৃণিত কাজ বলে সাব্যস্থ আছে। মিথ্যাবাদীদের সাথে ইসলাম সম্পর্ক রাখেনা। যে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ইসলাম তাকে অপমান করতে ছাড়ে না। যে অন্যের সম্পদ লুণ্ঠন করে, কারো প্রাপ্য নিয়ে টালবাহানা করে, ইসলামে তার কোন মাফ নেই। নেশাকারীদের ইসলাম অভিশাপ দিয়ে থাকে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ যারা নিজেদের কুক্ষিগত করে বেড়ায় ইসলাম তাদেরকে কঠোর সাস্তির দিকে ঠেলে দিবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। নারীর অবমাননাকর কোন কথা বলা বা কাজ করার অনুমোদন ইসলামে নেই। নারীর কর্তৃত্ত করার সাথে সাথে তাদেরকে পূর্নরুপে ভরণপোষণও দিতে হবে। শুধু তাই নয়, নারীজাতির নিরাপত্তাবিধানও পুরুষদেরকেই করতে হবে। নারী পুরুষের মা, বোন, কন্যা, প্রিয়তমা স্ত্রী। পুরুষ হয়ে আমি কেমন করে এই নারী জাতির প্রতি যুলুম করতে পারি? আমি যদি নারীর প্রতি যুলুম করে থাকি, তাহলে আমার উচিৎ ইসলাম ত্যাগ করে বনের পশুদের সাথে বসবাস করা। কেননা, আমার কুকর্মের কারণে ইসলামের অবমাননা করা হবে তা কোন ইসলাম প্রিয় ব্যক্তিই মেনে নিবেন না। যদি কেউ ইসলামের অবমাননা দেখেও চুপ থাকতে পারে বুঝতে হবে তার মধ্যে ঈমানের দুর্বলতা আছে। দুর্বল ঈমান নিয় আর যাই হোক ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার আগে নিজের ঈমান রক্ষার প্রতি দৃষ্টি দেওয়া উচিৎ। বুঝলেন কিছু?
যারা অন্যায়ে, অবিচারে মানব সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরিতে সদা ব্যস্ত, তাদের সাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাষ্ট্র নায়কেরা কখনও এই ধরণের অপরাধীদের ধমনে পুরোপুরি সফল হতে পারেনা। কারণ তারাই কোন না কোনভাবে অপরাধীদের সাথে জড়িত থাকে। জড়িত থাকার পিছনের একমাত্র কারণ হচ্ছে লোভ। ক্ষমতার লোভ। ক্ষমতার বলে যা খুশি তাই করা যেতে পারে। কেউ বাধা দিলে দেশদ্রোহী বলে তাকে অন্ধকার কারাগারে চালান করা যায়। রাষ্ট্র চালনায় যদি ইসলামের নীতিমালা অনুসরণ করা হয় তবে কোন রাষ্ট্র পরিচালকই স্বেচ্ছাচারি হতে পারবেনা। তখন তার পক্ষে অপরাধী সনাক্ত করতেও বেগ পেতে হবে না। অপরাধী সনাক্তের পরে তাদের যথাযথ সাস্তি প্রদান করলে আর অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ার কোন সুযোগ থাকবেনা।
শান্তিকামি মানুষের জন্য ধর্মের বিপক্ষে যাওয়া আদৌ উচিৎ নয়। কেউ যদি বলে আমি ধর্মকে অস্বীকার করি না বরং ধর্মের কিছু কিছু বিধান রয়েছে যে গুলো আধুনিক সমাজে বেমানান! তার কাছে জানতে চাই, আধুনিক বলতে আপনি কি বুঝেন অথবা বুঝাতে চাচ্ছেন? স্পষ্ট উত্তর দিবেন। পোশাক পড়ার পরও মেয়েদে শরীর দেখানো কি আধুনিক সমাজের শর্ত নাকি শয়তানের ফাঁদ? ঘরে নিজের মা, বোন, স্ত্রী, যুবতি কন্যা আছে যাদেরকে আপনি পবিত্র রাখতে পছন্দ করেন অথচ আপনি অন্য কারো আত্মীয়াদের সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্ক করেন বা করার ইচ্ছা রাখেন অথবা কেউ করে থাকলে আপনি কোন আপত্তি করেন না। কারণ ঐ সমস্ত আত্মীয়ারা আপনার কাছে শুধুই কামনা বাসনা পূরণের পাত্রি ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু ইসলাম আপনাকে এমন অনৈতিক কাজের অনুমতি দেয়না। তাই আপনি ইসলামের সব বিধিনিষেধ মানতে রাজি হবেন না, এটাই স্বাভাবিক।
আপনি লক্ষ করবেন যে, একটা পশু যখন তাড় যৌন ক্ষুধা মিটাতে চায়, তখন তার কাছে তার সাথী যে হোক না কেন, সে তার সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হবেই হবে। তার কোন সামাজিক বাধা নেই, নেই কোন ধর্মিয় বাধ্যবাদকতা। সে তো জঙ্গলে বাস করে। আমরা যারা নিজেদেরকে সভ্য সমাজের বাসিন্দা বলে দাবী করে একটা পশুর মত একাধিক নারী পুরুষের সাথে যৌন বাসনা পূরণের জন্য মরিয়া হচ্ছি কেন? তবে কি সভ্যতার দোহাই মাত্র মুখোশ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে না?
ইসলাম নারী নীতিতে নারীদেরকে কোনভাবেই বঞ্চিত করেনি। যারা বলে ইসলাম নারীদের ঠকিয়েছে তারা আসলেই পশু সমাজের সদস্য ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ পর্দানশিলা একজন নারীর সাথে পশুতুল্য পুরুষরা আর যাই করতে পারুক না কেন তার সাথে অবৈধ সম্পর্ক করতে পারবেনা। তাহলে কেন নারীদেরকে পর্দার দিকে যেতে দিবে? এই সহজ হিসাবটা নারী সমাজ কেন বুঝতে চায়না, নারী সমাজই ভাল বলতে পারবে! তবে মুসলিম অমুসলিম সকল নারী সমাজের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে আসুন কিছু মানুষের মিথ্যে ছলনায় না ভুলে নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ নারী হিসেবে গড়ে তুলে পশুসম পুরুষ সমাজকে দাঁতভাঙা জবাব দিন।
বিষয়: বিবিধ
২০৫৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন