স্বদেশেও যেন আমি প্রবাসী
লিখেছেন লিখেছেন মিশেল ওবামা বলছি ১৫ মার্চ, ২০১৩, ০৬:০৩:২৫ সন্ধ্যা
আমার বিয়ের কিছুদিন পর থেকে আব্বু-আম্মু দেশের বাইরে। চারদিকে যখন দেখি আমার নেইবার, কাজিন, বান্ধবীরা কিছুদিন পরপর বাবার বাড়ি যাচ্ছে তখন মনের অজান্তেই চোখ থেকে অশ্রু ঝরে। এই তো সেদিন এক বান্ধবী ফোন করলো, ও বাবার বাসায় বেড়াতে এসেছে আমি যেন ওর সাথে দেখা করতে যাই। বিয়ের পর নতুন জীবন, নতুন সংসার। যে আমি প্লেটটা পর্যন্ত ধুয়ে ভাত খেতাম না, সেই আমি রান্না কি করে করবো এই চিন্তায় মাথাটা খারাপ হয়ে যেত। আম্মুরও একই চিন্তা এই মেয়ে কি করে রান্না-বান্না করবে। আম্মুরা চলে গেল, তারপর একে তো মন খারাপ, দ্বিতীয়ত কোন কাজ করে একেবারেই অভ্যাস ছিল না তাই যখনই বাসায় একাকি থাকি বিনা কারণেই চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে। অনেক সময় এমন হয়েছে আমি খেয়ালই করি নাই অথচ কেদে যাচ্ছি। রান্না কখনো করা তো দুরের কথা, কোন তরকারি কিভাবে রান্না করে, কি কি মশলা দেয় তার কিছুই জানা ছিল না। আর জানবোই বা কি করে কোন দিনও তো রান্নাঘরে উকি মেরেও দেখি নাই। কি আর করা কোন কিছু রান্না করতে লাগলে হয় আম্মুকে আর না হয় খালামনিকে ফোন করে জেনে নেই। এভাবে চলতে চলতে আজ প্রায় সব রান্নাই পারি। শুধু কি রান্না, পিঠা বানানো, আচার বানানো। আগে যেখানে বিকেলে বাইরের কেনা নাস্তা নিয়ে আসা হত। এখন ঘরেই সব কিছু তৈরীর চেস্টা করি। প্রতিদিন রান্না করি আর ভাবি, আগে শখ করে যদি কিছু রান্না করতাম, বাবা তো প্রশংসায় একেবারে পন্চমুখ। যদিও সেই রান্নাটা প্রশংসার যোগ্য ছিল না, ভাল করেই জানতাম। তবুও বাবা বলেই এত প্রশংসা করতো। আবার আগে যখন রান্না তেমন একটা ভালো হত না, আমার হাসব্যান্ডও কখনো বলতো না রান্নাটা খারাপ হয়েছে। কিন্তু আমি তো বুঝতাম কি অখাদ্যটাই না রান্না করতাম!
বিষয়: বিবিধ
১২৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন