মেহেদীর রং না মুছতেই যে মেয়ের ঘর ভাংলো
লিখেছেন লিখেছেন মিশেল ওবামা বলছি ১৪ মার্চ, ২০১৩, ১০:৫১:০৩ সকাল
আমার এক বান্ধবী, দেখতে মোটামুটি ভালই ছিলো। খুব অল্প বয়স থেকেই প্রচুর বিয়ের প্রপোজাল আসা শুরু করলো। ওর বাবা-মা মেয়ে ছোট বলে ফিরিয়ে দেয়। তো হটাৎ একটা প্রপোজালে রাজি হয়ে গেল।
একদিন বিকেলে ওদের বাসায় বেড়াতে গিয়ে দেখি অনেক মেহমান। ওর আম্মু আস্তে করে বললো যে, ওকে দেখতে এসেছে। তো মেহমান বিদায় নিলো। তারপর আস্তে আস্তে শুনলাম ছেলে কি করে, ছেলের বাবা করেন। আরো যেটা শুনে অবাক না হয়ে পারলাম না, ছেলেকে মেয়ে দেখায়ই নাই, ছেলের মা দেখে পছন্দ করেছে আবার বিয়ের দিন-তারিখও ফাইনাল। এত তারাহুড়ো দেখে আমার কেমন যেন খটকা লাগলো।
ছেলে এগ্রি. ভার্সিটি থেকে পাশ করে, তেমন কিছু করে না। ছেলের বাবা একটা ইন্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির প্রফেসর। মেয়ের ফ্যামিলি, ছেলেরে ফ্যামিলি দুটোই খুব ধার্মিক।
যাহোক, বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসলো।বিয়ের আগের দিন আমরা বান্ধবীরা মিলে মেহেদী লাগিয়ে দিলাম। বান্ধবীটা বউ সাজলো, আমরাও অশ্রুসজল চোখে বিদায় দিলাম।
এর প্রায় মাস খানেক পর আমার একমাত্র কাকুর বিয়ের সানাই বাজলো। তো কাকুর বিয়ের কেনাকাটা, আনুষাংগিক বিভিন্ন আয়োজন নিয়ে আমি তখন মহাব্যাস্ত। আমার কাকু আমাকে নিয়েই সব কেনাকাটা করবে। ফুপিরা, সবাই তো ব্যাস্ত যার যার সংসার নিয়ে। অগত্যা আমিই ভরসা। প্রায়দিনই মার্কেটে যেতে হয়। এতো ব্যাস্ততায় বান্ধবীটার খবর নিতে পারি নাই। তো কাকুর বিয়ের ৩/৪ দিন আগে যেদিন দাদু বাড়ি যাব, সেদিন সকালে আম্মু বলছে যে তোমার ঐ বান্ধবী তো বাবার বাড়ি এসেছে। আমি বললাম কই আমি তো জানি না। আম্মু বললো যে হয়তো মন খারাপ, ওর সংসারটা তো মনে টিকবে না। সংগে সংগে মনে হলো কেউ হাতুড়ি দিয়ে আমার বুকে বাড়ি দিল। ভাবলাম কি এমন হলো যে দের দুই মাসের মাথায় সংসার ভেংগে যাচ্ছে? যাহোক, এই পর্যন্ত জেনে কাকুর বিয়েতে চলে গেলাম। আসার পর শুনলাম, ডিভোর্স হয়েই গেছে। তার কিছু দিন পর ওর এবং আমার দুজনেরই খুব কাছের এক আপুর কাছে যা শুনলাম, তা মেনে নেয়ার মত ঘটনা না। আপুটা বললো আমার ঐ বান্ধবীটা প্রেগন্যান্ট ছিল, তাকে শ্বশুড় বাড়ি থেকে যখন নিয়ে আসে তখনও সে জানে না যে এটা তার একেবারে চলে যাওয়া। ওদের হাসব্যান্ড-ওয়াইফের রিলেশনটা খুব ভালো ছিল। ডিভোর্সের কারণটা ছিল, ছেলের মায়ের সংগে মেয়ের মায়ের কিছু তর্ক-বিতর্ক। ছেলের মা এবং মেয়ের মায়ের ইগোকে কেন্দ্র করে একটি সাজানো সংসার ভেংগে গেল। কিন্তু আমাদের সমাজের বাস্তবতায় ছেলে যতটা না খতিগ্রস্ত হয়েছে, মেয়েটার জীবনটাই ধূলিন্সাত হয়ে গেছে। সেই ছেলে আমাদেরই পরিচিত আর এক মেয়েকে বিয়ে করে সংসার করে খাচ্ছে। অথচ, মেয়েটা আজও একা, নি:সংগ জীবন কাটাচ্ছে। সে বর্তমানে মানষিক রুগি। আর তার ঘর ভাংগার কারণ হিসেবে সে শুধুই তার মাকে দোষারোপ করে।
বি:দ্র: প্রিয় পাঠক, কেউ ছেলের সংসারই হোক আর মেয়ের সংসারই সব সময় চেষ্টা করবেন, ছেলে-ছেলের বউ, মেয়ে-মেয়ের জামাই যেন সুখে থাকে। কারো একটু প্রচেষ্টায় একটি সংসার তছনছ হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্খা পেতে পারে।
বিষয়: বিবিধ
১৮৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন