বাংলাদেশের মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নানারকম বিষ
লিখেছেন লিখেছেন মিশেল ওবামা বলছি ০২ জুন, ২০১৩, ১০:২৯:৫৪ সকাল
আমার ছোট খালামনির বাড়ির ভাড়াটিয়া মহিলা গল্প করেছে যে সে পানি খাওয়ার জগে আয়রন লাগলে হারপিক দিয়ে পরিস্কার করে। শুনে হাসবো না কাদবো বুঝে পেলাম না। খালামনিকে বললাম এত বাজে জিনিস খাবার পানির জগে ইউজ করে ওদের তো পেটের সমস্যা হওয়ার কথা। শুনে খালামনি বলছে, যে এদেশের মানুষের পেট বিষ খেতে খেতে অভস্ত হয়ে গেছে। শুনে ভাবলাম যে ঠিকই তো।
বাইরের ফল খেতে ভয় পাই, খেলেই মনে হয় ভিটামিন নয় বিষ খেলাম। আমি এমনিতেই তেমন একটা ফল খেতে পছন্দ করি না। আগে খেতাম আব্বু-আম্মুর জোড়া-জুড়িতে এখন আরেকজনের জন্য অনিচ্ছা সত্বেও খেতে হয়। খেজুরের পুস্টিগুন আর স্বাদের দিক দিয়ে মোটামুটি ভালই লাগে আমার কাছে, কিন্তু তাতেও ফরমালিন নামক বিষ। কলা লোকাল ফল, তাতে কি? সেই কলাও বিষাক্ত কেমিক্যালস ছাড়া পাকে না।
আমি ছোট থাকতে আব্বু খাটি মধু জোগাড় করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরার সাথে খাওয়াতো। তখন একদম ভালো লাগতো না, তবুও আব্বু-আম্মুর জোড়াজুরিতে খেতাম।
এখন মধু আর কালোজিরার উপকারিতা বুঝি, তাই আবার শুরু করলাম খাওয়া। কিন্তু সেই মৌচাকের খাটি মধু কই পাবো? ডাবরের মধু খাটি ভেবে তাই খাওয়া শুরু করলাম, পেপারে সেই মধুর ব্যাপারে একটা প্রতিবেদন পড়ে তো চক্খু চড়কগাছ। বুঝলাম এটাও মধুর নামে বিষ খাচ্ছি।
বাজারে মৌসুমী ফল আসা শুরু করেছে। সর্বত্রই এখন রসে ভরপুর লিচুর একচ্ছত্র দাপট। বাজারে, আড়তে, ফুটপাতে ক্ষুদে ব্যবসায়ীর ডালায় ডালায় লাল-খয়েরির মেলা। পথ চলতে চোখে পড়লেই কম-বেশি লিচু কিনে নেওয়ার লোভ সামলানো কঠিন। কিন্তু পরিবার-পরিজনের জন্য লিচুর নামে বিষই যে কেনা হচ্ছে না, তার নিশ্চয়তা কী? শুধু লিচু নয়, আম, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, আনারস থেকে শুরু করে আপেল, আঙ্গুর, নাশপাতিসহ দেশি-বিদেশি প্রায় সব ফলেই মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল। তবে লিচু ও আমে বাগানেই কেমিক্যাল মিশিয়ে সরবরাহ করে। পরে আরও কয়েক দফায় বিভিন্ন স্থানে কেমিক্যাল মেশায়। মৌসুমের আম এখনো পুরোপুরি পাকতে শুরু করেনি। কিন্তু বাজারে পাকা আম চলে এসেছে। দামও খুব নয়, ফলে বিক্রি হচ্ছে দেদার। আম পাকানোর জন্য কেমিক্যাল সহজলভ্য। প্রভিট, ইডেন, ইথরেল প্রভৃতি কেমিক্যাল ব্যবহারে সব আমেই হলুদ রং ধরে যায়। এজন্য সিজনের শুরু এবং শেষে আম, টমেটো খাওয়া এভয়েড করি। কয়দিন আগে দেখলাম প্রাণের মাংগো জুস, আচার এসবেও ফরমালিন। যেকোন ব্র্যান্ডের জুস খাওয়াতো সেই কবে ছেড়ে দিয়েছি, কিন্তু ছোট বাচ্চাদেরকে তো নিষেধ করলে শুনতে চায় না। মানুষের খাবারে যারা বিষ মেশায় তারা কোন শ্রেণীর মানুষ আমার বুঝে আসে না।
বিষয়: বিবিধ
৩২০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন