সংখ্যালঘু নির্যাতনঃ আওয়ামী রাজনীতির পুরানা ট্রাম্পকার্ড...
লিখেছেন লিখেছেন কূটনী ১৪ মার্চ, ২০১৩, ০৪:৪৪:৩৬ বিকাল
পৃথিবীর বুকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরন আমাদের বাংলাদেশ। যুগ যুগ ধরে একই সাথে বসবাস করলেও বাংলাদেশে ঘটেনি কোণ সাম্প্রদায়িক সঙ্ঘাতের ঘটনা। ভারতসহ বর্তমান পৃথিবীর উন্নত দেশ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশে সাম্প্রদায়িক এবং বর্নবাদী সংঘাতের অসংখ্য ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশ এর ব্যাতিক্রম। এমনকি ভারতে শিবসেনা ও যুক্তরাজ্যে ই.ডি.এল ও বি.এন.পি’র মত চরম বর্নবাদী ও সাম্প্রদায়িক কোণ দলের সৃষ্টি হয়নি আমাদের এই দেশে। যেমন শান্তি প্রিয় আমাদের দেশের মুসলমানেরা ঠিক তেমনি সংখ্যালঘুরা ও। তবে একথা সত্য যে বিভিন্ন সময় তাদের উপড় নির্যাতনের বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে তবে তা হয়েছে ব্যাক্তিগত ও রাজনৈতিক শত্রুতার জের ধরে। ভিন্ন রাজনৈতিক মতালম্বীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও দমন-নিপিড়ন আজকাল আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। এখানে হিন্দু-মুসলিম পরিচয় খুবই নগণ্য।
এদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ধর্মীয় পরিচয়ের কারনে নির্যাতনের শিকার না হলেও একটি দল তাদের কে ব্যাবহার করে আসছে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য। আওয়ামী লীগ নামের সেক্যুলার এই দলটি হিন্দু সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে আসছে ক্ষমতায় যাওয়ার সিড়ি হিসেবে। যখনই এই দলটি কোণ ক্রাইসিসের মুখমুখি হয় ঠিক তখনই তারা ব্যাবহার করতে শুরু করে “ সংখ্যালঘু নির্যাতন” নামের রাজনৈতিক ট্রাম্পকার্ড।দূর্নীতি, অবিচার ও দেশ পরিচালনায় চরম ব্যার্থতার কারনে আজ যখন তাদের অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখোমুখি ঠিক তখনি তারা আবার সংখ্যালঘু নির্যাতনের বায়বীয় গুজব ছড়াচ্ছে। এমন কি কোন কোন জায়গায় নিজেরাই মন্দিরে আগুন লাগিয়ে জামাত-শিবিরের নামে চালিয়ে দিয়ে জনমত ও বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করে নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার চেষ্টা করছে। আজকের এই টেকনোলজির যুগে তাদের এই কু-চেষ্টা কতটা সফল হবে তা সময়ই বলে দেবে ইনশাল্লাহ।
এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে জোট সরকার বিরোধী আন্দোলনে সফলতার পিছনে আম্লীগের এই ট্রাম্পকার্ডের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। আজগুবি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা বানিয়ে তারা বিশ্ব জনমত কে তাদের পক্ষে এনেছিল।
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হিন্দুদের প্রতি পাকিস্থানি সেনাবাহিনীর নির্যাতনের কথা আমরা সবাই জানি কিন্তু আম্লীগের নেতা কর্মীরা ও যে সেদিন হিন্দুদের বাড়ি ঘর লুটপাট করে নি তা আজ আর বিশ্বাস হয় না। ছোট বেলায় আম্লীগের নেতাদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে দেখেছিলাম পিতলের বিশাল ডেকচি আর তামা-কাশার নানান সরঞ্জামাদি। আজ আম্লীগের কর্মকান্ড দেখে মনে প্রশ্ন জাগে সেগুলো কোথা থেকে জোগাড় করেছিল ঐ নেতা? সেগুলো অবশ্যই হিন্দুদের থেকে লুট করা হয়েছিল। আজ যখন দেখি ছাত্রলীগ নেতারা হিন্দুদের নির্যাতন করে শিবিরের নামে চালিয়ে দিচ্ছে তখন বিশ্বাস করতে বাধ্য হই যুদ্ধ চলাকালিন সময়ে পাকিস্থানি আর্মীদের সাথে তাল মিলিয়ে আম্লীগ ও লুট করেছিল হিন্দুদের বাড়ি ঘর যা সহজেই পকিস্থানি সেনাবাহীনির নামে চালিয়ে দেয়া গেছে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বলছিঃ
আপনারা এই বাংলাদেশেরই অংশ। জানি আপনারা ও এদেশকে ভালবাসেন সবার মতই। এ দেশটা আমাদের সকলের তাই সকলের অংশগ্রহন করতে হবে এ দেশ গঠনে। এদেশের কোন মানুষই আপনাদের শত্রু নয় ঠিক তেমনি কোন রাজনৈতিক দল ও আপনাদের শত্রু মনে করে না। আমরা এদেশে একে অপরের ভাই ভাই হিসেবে বাস করি। কারও উপকারের সময় হিন্দু মুসলমান বিবেচনা করা হয়না এখানে। জীবনের ঝুকি নিয়ে ও আল্লামা সাঈদীর পক্ষে গনেশ ও সুখরঞ্জনের সাক্ষী প্রদানের ঘটনা কি এটা প্রমানের জন্য যথেষ্ঠ নয়?
আপনাদের প্রতি অনুরোধ আপনারা কারো ভোট ব্যাংক হিসেবে থাকবেন না। আম্লীগ আপনাদের বন্ধু নয় বরং ওরাই আপনাদের সবচেয়ে ক্ষতি করছে। নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে দেখুন কোন ধর্মপ্রান মুসলমান বা জামাত-শিবির আপনাদের প্রতি কোন আক্রমন করেছে বলে প্রমান পাবেন না। সাথে সাথে খবর নিয়ে দেখুন আপনাদের আশেপাশে যত চাঁদাবাজ সব আম্লীগের, ওরাই আপনাদের প্রতিনিয়ত ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে, আপনাদের বাড়ি দখল করছে। একটি বার হিসেব করে দেখুন অর্পিত-শ্ত্রু সম্পত্তি আম্লীগের নেতাদের দখলেই সবচেয়ে বেশী। খোজ নিয়ে দেখুন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় লুটপাটের মাল আম্লীগের নেতাদের ঘরেই সবচেয়ে বেশী সংরক্ষিত রয়েছে। আপনারা সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনাদের দায়িত্ব পালন করুন। আপনাদের প্রতি কেউ আক্রমন করতে আসলে তাকে পাকড়াও করে জনতার সামনে হাজির করুন। প্লিজ আপনারা আম্লীগের ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হবেন না।
বিষয়: বিবিধ
১৩২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন