রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কৃত্রিম সুন্দরবন (মোডিফাইড).........
লিখেছেন লিখেছেন কূটনী ০৯ অক্টোবর, ২০১৩, ০৩:১১:৫৬ দুপুর
অনেক দূর থেকেই চোখে পড়ছে এক সুবিশাল বন। কৃত্রিমতার ছাপ লক্ষ্যনীয় এর প্রতিটি পরতে পরতে। বনের পিছন দিকে রয়েছে শক্তিশালী উচু দেয়াল। সামনের সু-উচ্চ গেটের সঙ্গে জ্বল জ্বল করছে “কৃত্রিম সুন্দরবনে আপনাকে স্বাগতম” লেখাটি।
গেটের দুপাশের বিলবোর্ড জুড়ে রয়েছে ভিজিটরদের জন্য নিয়মাবলী আর সতর্কবানী। প্রতিটি বিলবোর্ড এর নিচে ছোট করে লেখা রয়েছে একটি সংবিধিবদ্ধ সতর্কিকরন**।
গেটের সামনেই টানানো হয়েছে এই কৃত্রিম বনে বসবাসরত বিভিন্ন প্রজাতির নাম গুলো। ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন প্রজাতি নিয়ে আসার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ, সে কথাও লেখা রয়েছে এখানে। ভিজিটরদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এ বনে শুধু দিনের আলোতেই প্রবেশের অনুমতি রয়েছে কারন রাতে লাইট বন্ধ করে হামলা করার রেকর্ড রয়েছে এই প্রজাতির। একজন ভিজিটর সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা বনের মাঝে অবস্থান করতে পারবে বলে নিয়ম বেধে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকলেই মন জুড়িয়ে যায়। বিশাল এলাকা নিয়ে বানানো হয়েছে এই কৃত্রিম বন। ছিমছাম পরিপাটি। ঐতিহ্যগতভাবেই এরা নিজেরা কামড়াকামড়িতে অভ্যস্ত তাই প্রতিটি প্রজাতির জন্যই রয়েছে আলাদা আলাদা এলাকা। আর প্রতিটি এলাকায়ই রয়েছে একটি করে সাইনবোর্ড যেখানে ওই প্রজাতির নাম এবং সংক্ষিপ্ত বিবরন লেখা রয়েছে।
কয়েক পা ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়লো মুরগীর এড়িয়া। এ বনে দুই ধরনের মুরগী রয়েছেঃ বয়লার এবং মুরগী কবির। অন্য পরিবেশে বড় হওয়ার কারনে বয়লার মুরগীটা এদেশের পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝেনা তাই কখন কি করে কেউ জানেনা। তার আক্রমণ থেকে বাচতে দূরে থাকুন।
পাশে তাকাতেই চোখে পড়ল কি একটা ঝিমুচ্ছে আর বিষন্ন মনে দাত বের করে রোদ পোহাচ্ছে। বোর্ডের কাছে গিয়ে দেখলাম এটার নাম কালো বিড়াল। এ দো পায়া জীবটার ভিতরটা নাকি চার পায়া কালো বিড়ালের চেয়েও বদ।
আরেকটু ভিতরে ঢুকে অবাক হলাম! এত বড় এলাকা এক্কেবাড়ে ফাঁকা। আরও সামনে গিয়ে খুজে পেলাম বোর্ড। জানতে পারলাম এটা হায়েনার এলাকা। সে অত্যন্ত হিংস্র। সমাজে কথিত আছে যে, “বাঘে ধরলে ছাড়ে কিন্তু সে ধরলে ছাড়ে না এবং সে উত্তরে যাচ্ছি বলে দক্ষিনে যায়।
হায়েনার এলাকার ঠিক উল্টা পাশেই রয়েছে ডালিম গাছ। ডালিমকে এই প্রজাতি প্রচন্ড ভয় পায় তাই তারা এর কাছে আসেনা। কোন ভিজিটর আক্রান্ত হলে এই ডালিম বাগানে নিরাপদ আশ্রয় নিতে পারে।
ডালিম বাগানের পরেই রয়েছে প্রজাপতির এলাকা। এই প্রজাপতির কাজ শুধু ঘুরে বেড়ানো। দেশের টাকায় দেশ থেকে দেশ ঘুরে বাড়ালেও নিজের দেশেই তার দেখা মেলে না।
প্রজাপতির খোজে ঘুরতে ঘুরতে চলে এলাম তেঁতুল বাগানে। এক পাশে ব্যাথাতুর মনে বসে আছে কয়েক জন প্রাচী-কামালেরা, কেউ তাকাচ্ছেও না সে দিকে কিন্তু অন্য পাশে মানুষের জটলা যেন শাহবাগীদের মজমা! বুঝতে পারলাম জমির চাচাদের আকর্ষন শুধু ঐশীদের দিকেই। ঐশীরা নাই তাই আর জমছে না শাহবাগীদের মজমা।
সময়ের অভাবে বাকী প্রজাতিদের শুধু নাম দেখেই বের হতে হলো এই কৃত্রিম লীলাভূমি সুন্দরবন থেকে। ভালমত দেখা হয়নি ষাঁড়, দস্যু, মাছের ব্যাপারী, দরবেশ বাবা আর দু-মুখো সাপটাকে। যদিও দরবেশ বাবা আর দু-মুখো সাপের কামড়াকামড়ির কথা শোনা যায় সবার মুখে মুখে।
কৃত্রিম বনের পিছনের দেয়ালটা নিয়ে বেশ কৌতুহল লাগছিল। কাছে এসে দেখলাম দেয়ালে লেখা রয়েছে, এই কৃত্রিম বনের প্রজাতিগুলোর সীমান্তের ওপারে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাই এখানে দেয়াল করে দেয়া হয়েছে।
**সংবিধিবদ্ধ সতর্কিকরনঃ এরা মানুষ না আম্লীগ।
(**ছাড়া, পুরাটাই কল্পিত )
বিষয়: বিবিধ
১২৬৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন