পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নতুন কর্মকৌশল গ্রহন সময়ের দাবি
লিখেছেন লিখেছেন গ্রীণ ওয়ে ০৩ মে, ২০১৫, ০১:৩৪:২৬ দুপুর
১. বাংলাদেশে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ইতিহাসের একটি কঠিনতম সংকটকাল অতিক্রম করছে। ১৯৭১ সালে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক বির্পযয়ের পর মাত্র দু’দশকের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন পূর্নগঠন ও পূর্ণবিন্যাসের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক শাক্তিতে পরিণত হয়। জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ ঘোষিত হবার মাত্র নয় বছরের মাথায় পূর্ণরুজ্জীবিত হয়েছে বাংলাদেশে। পৃথিবির অন্য কোথাও এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। অর্ধশতাব্দির বেশী কাল যাবত মিশরের ইসলামী আন্দোলন আল-ইখওয়ানুল মুসলিমিন বা মুসলিম ব্রাদারহুড এখনোও পর্যন্ত নিষিদ্ধই হয়ে রয়েছে। তুরস্কের ইসলামী আন্দোলন অনেকবার নাম পরিবর্তন করে অনেকটা সেকুলার আদলে কাজ করছে। রাষ্টীয় ক্ষামতায় অধিষ্ঠিত হবার পরও বাস্তব কারনেই এবং বৈশি^ক প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে কৌশলগত অবস্থান গ্রহন করছে।
২. এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী স্বনামে আবিভূত হয়ে রাজনৈতিক অঙ্গকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হওয়ার পিছনের মূল কৃতিত্ব ঐসব তরুনদের যারা অকপটে ইসলামের জন্য জীবনদান করেছে এবং শাহাদাত বরন করেছে। শতাধিক শাহাদাতের ঘটনা ইসলামী আন্দোলনকে আধ্যাতিক শক্তি যুগিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী বর্তমান পর্যায়ে আসার জন্য দ্বিতীয় যে শক্তি তাহলে সারাদেশে জামায়াত ও শিবিরের নিবেদিত প্রাণ সক্রিয় কর্মীগন। শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র ইসলামের জন্যই তারা এই আন্দোলনের সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এতবড় মুখলেছ কর্মীবাহিনী পৃথিবীতে খুব কমই দেখা যায়। তৃতীয়ত: জনগনের দাবী একটি বিপুল অংশ যাদের সংখ্যা কম করে হলেও ১০-১৫% ভাগ হবে তারা ইসলামী আন্দোলনের প্রতি সমবেদনা পোষন করেন।
৩. কিন্তু বর্তমান জামায়াতে ইসলামী তথা বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলন যে সংকটের মুখোমুখি তা খুবই ব্যতিক্রমধর্মী। জামায়াতে ইসলামীকে দল হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরুধী এবং উপরন্তু দলের বর্তমান নেতৃত্বকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে বিশেষ এক পরিস্থিতিতে একটি ইসলামী দল হিসেবে বিশে^র অন্যতম প্রধান একটি মুসলিম রাষ্টকে খন্ডিত করার বিপক্ষে তথা পাকিস্তান নামক দেশটিকে একরাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল জামায়াত। তখনকার জামায়াত মনে করতো পাকিস্তান এক রেখে এখানে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে পূর্ব ও পশ্চিমের অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের বঞ্চনার অবসান হবে। জামায়াতের আরো আশংকা ছিল পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ আলাদা হলে এখানে ভারতীয় অধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু জামায়াতের এবং আরো যারা পাকিস্তানকে এক রাখার পক্ষে ছিল তাদের ইচ্ছার বিপরিতে একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মদ্য দিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারকের প্রত্যেক্ষ সহযোগিতায় ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। পাকিস্তানের ৯৫হাজার সৈন্য ভারতের ইষ্টার্ন কমান্ডের সেনাপতি জগজিত সিং অরোরার নিকট নতুন স্বাধীনদেশ বাংলাদেশর রাজধানী ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পন করে। জামায়াত যদিওবা পাকিস্তানের সংহতির পক্ষে ছিল তথাপি বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নেয়। বাংলাদেশের সরকার জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক দল সমূহ নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। ১৯৭৯ সালে ২ শে মে জামায়াত নিজস্ব নামে আত্মপ্রকাশের সুযোগ লাভ করে।
মু. কামারুজ্জামান (জেলে থাকা অবস্থায় লেখা)
বিষয়: বিবিধ
১২৭৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
না হলে মাইর যে শুরু হয়েছে তা থামবে না ।
আল্লহা মরহুমকে শাহাদতের মর্যাদা দান করুন। আমিন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন