গতকাল অফিস থেকে বাসায় যাত্রা পথের চিত্র
লিখেছেন লিখেছেন আবু নাইম ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:৩০:৫৮ সন্ধ্যা
আমাদের অফিস ছুটি হয় ৫টায়। আমি প্রতিদিন একটু দেরী করেই অফিস থেকে বের হই। এই টুকটাক অফিসের কাজ, নেটের কাজ একটু গোছানো এতে করে বের হতে একটু দেরীই হয়। আবার কোন কোন সময় বের হলে রাস্তায় নামাজের সময় চলে যায়, সে ক্ষেত্রে অফিসে নামাজটা পড়েই বের হই। গতকালও তাই করলাম।
মাগরিবের নামাজ পড়ে একটু বসলাম। বের হওয়ার সময় কম্পিউটারে টিভি কার্ড সেট করা টিভিটা একটু অন করে দেখলাম কি চলছে। একটা চ্যানেলে দেখলাম আদালত চলছে। আবার অন্য কিছু চ্যানেলে বিভিন্ন সিনেমাও চলছে। আমি ছোট বেলা থেকেই গল্প, উপন্যাস ইত্যাদির পাগল ছিলাম। একটা বই একবার ধরলে শেষ না করে ছাড়তাম না। সিনেমা, নাটকও খুব ভাল লাগে। জোকের মত তাকিয়ে থাকি তার পরের ঘটনা কি জানার জন্য। জীবনের প্রথম ছবি দেখেছিলাম আমার উপরের ক্লাশের এক বড় ভাইয়ের কল্যাণে ছুটির ঘন্টা। তারপর চলার পথে অনেক ছবি, নাটক, উপন্যাস এর সাথে কত যে সাক্ষাত ঘটেছে তার আর হিসাব নাই বা করলাম। আজকেও দেখলাম বেশ কয়েকটা চ্যানেলে কিছু ছবি চলছে। তবে এখন চলার পথের গতিটা বদলে গেছে। দেখার আনন্দ বা মজা আছে ঠিকই, তবে না দেখার বা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। বাসায় ছেলে-বউকে উপদেশ দেই এগুলো দেখা ভাল না।
তবে আদলত প্রোগ্রামটা ভালই লাগে এবং সুযোগ পেলে দেখি। আজও দেখলাম। শেষ হতে ৯:৩০টা বেজে গেল। অফিস থেকে বের হয়ে প্রধান সড়কে গিয়ে জিগাতলা টু ফার্মগেট এর টেম্পুতে উঠলাম। রাস্তা ফাকাই ছিল। জাতীয় সংসদের সামনে থেকে পূর্ব দিকে খেজুর বাগান-খামার বাড়ী নামলাম। সংসদের এ পুর্ব-দক্ষিন সাইডে প্রচুর খেজুর গাছ লাগানো হয়েছে, এ কারণেই কিনা জানিনা এ জায়গাটাকে সবাই খেজুর বাগান বলে চিনে। আমরা যাওয়ার পথে এখানে নেমে মিরপুর-১০ এর টেম্পু, বাসে করে যাই।
আজও নামলাম। নেমেই দেখি সড়ক দীপের শেষ মাথায় লোকদের জটলা, মনে হচ্ছে একটি কুপের চারপাশে লোকেরা গোল হয়ে জটলা করে দাড়িয়ে কুপের গভীরে কি যেন দেখছে। কাছে যেতেই জটলার ভিতর থেকে মেয়েলি কন্ঠের ক্ষীন চিৎকার ভেসে আসল। ঘটনা বুঝার জন্য কাছে গেলাম। কিন্তু লোকদের জটলার ভিতরে কাছে তো যাওয়া দুরের কথা দেখাই যাচ্ছে না, কে জটলার ভিতরে পড়ে আছে, তার সাথে কি রকম আচরণ করা হচ্ছে। তবে এ টুকু বুঝলাম এক বা একাধিক মেয়েকে আটকে রেখে কিছু একটা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মানুষ যা করে এখানেও তাই হচ্ছে। কেউ মজা দেখছে, কেউ ঘটনার জানার চেষ্টা করছে, কেউ আবার হাতের সদব্যবহার করার চেষ্টা করছে।
আমি আসল ঘটনা জানার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। লোকদেরকে মারতে দেখলে, কষ্ট দিতে দেখলে এমনকি ডাক্তার যে ইনজেকশন পুশ করে সেটা দেখলেও আমার কষ্ট লাগে। এখানেও আমার তাই হল। মনে বড় কষ্ট পেতে থাকলাম।
অন্যান্য দিন এখানে ট্রাফিক পুলিশসহ সার্জেন্ট থাকে। আজকে কোন পুলিশ চোখে পড়ল না। একটু শব্দ করেই বলে উঠলাম যে, কোন পুলিশও দেখছি না এদেরকে তো মেরে ফেলবে। এ কথাটা বলে ঘাড় ফিরানোর পরেই দেখলাম পাশে একজন পুলিশ খালি হাতে ও খালি মাথায় মজা দেখছে। বললাম কি খবর ব্যাপারটা দেখুন, না হলে তো মেরে ফেলবে যে। পুলিশ বাবাজী বলল মারতে দিন, কিছু মার খাক, এদেরকে মারাই ভাল। ঘটনা কি? জানতে চাইলাম, জটলার একজন জানাল যে, এরা খারপ মেয়ে। তিনটা ছেলেকে এরা তিনটি মেয়ে এখান থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাদের কাছ থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, ঘড়ি ও টাকা-পয়সা যা ছিল সব রেখে চাড়-থাপ্পর মেরে ছেলে তিনটাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ওরা আবার ওদের পাড়ার বড় ভাইদের কাছে ঘটনা বলার পর বড় ভাইরা ২৫/২৬ জনের দল নিয়ে এসে দেখে ঐ তিন মেয়ে যথারীতি আগের জায়গায় নতুন শিকার ধরার জন্য ধান্ধা করতেছে। আর যায় কোথায়। ছেলেদের দেখে একজন পালিয়ে যেতে পারলেও দুজন ধরা পড়ে।
কিছু সময় পড়ে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাসহ পুলিশ এসে তাদেরকে আটক করে পাশের পুলিশ বক্সের ভিতরে নিয়ে ছিনতাইকৃত মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করতেছিল।
সংসদ ভবন সংলগ্ন এ জায়গাটাতে এ ধরনের বাজে মেয়েদের আনাগোনা চোখে পড়ার মত। এখানে ভদ্র ঘরের মেয়েরা তাদের প্রেমিক, স্বামী-সন্তান নিয়ে যেমন আসে তেমনি আসে এরাও। তবে ভদ্র ঘরের মেয়েরা আসে একটু উন্মুক্ততার স্বাধ নিতে, স্বস্তি পেতে আবার সন্ধার সাথে সাথে এদের সবাই প্রায় চলে যায়। আর বাজে মেয়েরা রাত যত গভীর হয় এদের বিচরণও তত বাড়তে থাকে।
মনে পড়ে বেশ কয়েকদিন আগে মহিলা ছিনতাইকারী নিয়ে দুটো অনলাইন নিউজ পড়ে ছিলাম। ঘটনাটা ছিল এ রকম
অভিনব পদ্ধতিতে নারী ছিনতাইকারীরা
http://meghnanewsbd.com/national/%E0%A6%85%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%AC-%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80-%E0%A6%9B%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%A4/
রাজধানীতে মহিলা ছিনতাইকারীদের নবউৎপাত
রাজধানীতে বেড়ে গেছে ব্যাপক ছিনতাই । ছিনতাইয়ের মাত্রা এতোটা বেড়েছে যা দমন করা আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। সড়ক থেকে ফুটপাত, মার্কেট থেকে বাসাবাড়ি, সর্বত্রই চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে হরহামেসায় ।
ছিনতইকারিরা অভিনব কৌশলে চালিয়ে যচ্ছে ছিনতইকাজ,তারই চিত্র দেখাগেল রোবার বিকেল ৫.৩০ মিনিটে রাজধানীর শিশুমেলার (শ্যামলী) সামনে। চার জন পড়ন্ত বয়সের মহিলা একজন অফিস ফেরত যুবককে বাসের ভেতর থেকে টেনে হেচরে নামাচ্ছে আর বলছে ছেলেটি নাকি এদের দলের এক মহিলার সাথে অশোভনা আচরন করেছে এবং কুপ্রস্তাব দিয়েছে। মহিলা গুলি ইভটিজিং বলে চিৎকার করে লোক জনের দৃষ্টি আকর্ষণ চেষ্টা করছে এবং ভদ্রলোকটির শার্ট ধরে টানা হেচরা করে।
সিনিউজবাংলার প্রতিবেদক রফিক সুলাইমান জানান ‘আমি ঘটনার ছবি তোলাতে ব্যস্ত ছিলাম কিন্ত এক সময় মেয়েগুলির আচার আচরন দেখে আমার সন্দেহ হয়। তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করি উত্তরে তারা তাদের সরকারী দলের নেতা ও কর্মী বলে পরিচয় দেয় ”
উল্লেখ্য ,ঘটনাস্থলে সমবেত মানুষকে বুঝেতে পারে যে এরা একটি নতুন চক্র। সহজ সরল ভভদ্রলোক দেখে তাকে নাজেহাল করে দু’পায়সা কামিয়ে নেবার নতুন ফন্দি। সাধারন মানুষ ঘটনা বুঝতে পেড়েছে দেখে মহিলাগুলি চোখের পলকেই কেটে পড়ে।
এখন সমান অধিকারের এ যুগে মাহিলারা কেন পিছিয়ে থাকবে।
এখানে এর একটা জিনিষ দেখলাম, ছিনতাইকারী মহিলাদের পুলিশ বক্সে ঢুকানোর পর এক মেয়ে পুলিশ বক্স ক্রস করে এপারে আসতেছিল কিছু সুযোগ সন্ধানী হুট করে মেয়েটাকে ধরে বসল যে, এও ওদের সাথের, কিছু ভাল লোকের জোড়াল প্রতিবাদের মুখে মেয়েটিকে ছেড়ে দিল। ছাড়া পেয়ে মেয়েটি ভীত হরিনীর মত কাপতে কাপতে রাস্তা পার হল।
এরা যদি মহাল আল্লাহর বিধান হিজাব পালন করত, তা হলে এ মেয়েটাকে কেই ধরার সাহস পেত না। ঐ ছিনাতাইকারী মেয়েরাও আল্লাহর ভয় এমন পাপের পথে পা বাড়াত না।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে তার প্রিয় বন্দা হিসেবে কবুল করুন। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১৬৩৮ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ আপনাকে পথের পাচালী ব্লগে তুলে আনার জন্য।
মানুষ যেন দেখেও দেখেনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন