স্বামী অসীমানন্দ বনাম ইয়াকুব মেমন

লিখেছেন লিখেছেন প্রশান্ত আত্মা ৩০ জুলাই, ২০১৫, ১১:২৯:০৬ সকাল

স্বামী অসীমানন্দ জঙ্গি সংগঠন আরএসএস এর একজন সক্রিয় সদস্য।২০০৭ সালের ১৮ মে জুমার নামাজের সময় হায়দ্রাবাদের মক্কা মসজিদে বিস্ফোরণে অসীমানন্দ জড়িত।হায়দ্রাবাদ বিস্ফোরণে ৯ জন মুসল্লী নিহত হয়েছিল।একই বছর ১১ অক্টোবর আজমীর শরীফে মইনুদ্দিন চিশতীর মাজারে বোমা বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হয়।এই ঘটনায়ও অসীমানন্দ জড়িত ছিল।২৯ শে সেপ্টেম্বর ২০০৮ এবং ৮ই সেপ্টেম্বর ২০০৬ এ মালেগাঁও মসজিদে সিরিজ বোমা হামলায় মারা গিয়েছিল প্রায় ৫০ জন মুসল্লি।এই ঘটনারও মূল নায়ক অসীমানন্দ। স্বামী অসীমানন্দ ২০০৭ সালে সমঝোতা এক্সপ্রেসে বিস্ফোরণের বোমা হামলা করে প্রায় ৬০ জনকে হত্যা করে।

ইয়াকুব মেমন একজন চার্টার্ড একাউন্টেন্ট।সে মুম্বাই বোমা হামলায় অভিযুক্ত টাইগার মেননের ভাই।খুবই সাধারণ একজন মানুষ ইয়াকুব মেমন।কিন্তু মুম্বাই হামলায় তার ভাই জড়িত থাকার কথা বলা হলেও ইন্ডিয়ান আদালত সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আজ সকালে তার ফাঁসি কার্যকর করে।আজ ছিল ইয়াকুব মেমনের জন্মদিন।অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইয়াকুব মেমনের ফাঁসিকে ঠাণ্ডা মাথার হত্যাকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে এবং একে নিষ্ঠুর ও অমানবিক বলে মন্তব্য করেছে।ইন্ডিয়ার মজলিশ-ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন বা ‘মিম’ নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ও কাশ্মীরের নেতা সঈদ আলি শাহ গিলানির মতে,কেবল মুসলিম বলেই ইয়াকুব মেমনকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়েছে ইন্ডিয়ান সরকার।সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘সরকার ধর্মের ভিত্তিতে তাকে ফাঁসি দিতে চাচ্ছে। ইয়াকুব মেমন মুসলিম হওয়ার জন্যই তাকে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে। যদি ফাঁসি দিতে হয় তাহলে সমস্ত অপরাধীদের দেয়া উচিত, শুধু এক জনকেই কেন?’আসাদউদ্দিন ওয়াইসি প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘মুম্বাই দাঙ্গার ঘটনায় যুক্ত অপরাধী, রাজীব গান্ধী হত্যাকারী এবং বিয়ন্ত সিংয়ের হত্যাকারীকে ফাঁসি দেয়া হয়নি কেন?’ ইয়াকুব মেমনের এই অন্যায় মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদ করে টুইট করেছিলেন বলিউড অভিনেতা সালমান খান।সালমান আদালতের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, টাইগারের পরিবর্তে কেন তার ভাইকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হল। এটা কোন ধরণের বিচার। একজনের অপরাধে অন্যজন কেন সাজা ভোগ করবে, এমন প্রশ্নও ছুড়ে দেন সালমান। সালমান তার টুইটারে লিখেন, টাইগারকে ধরে শাস্তি দাও, ইয়াকুবকে নয়। অন্য একটি টুইটে সালমান বলেন, একজন নিরীহ মানুষকে মেরে ফেলা মানে মানবতাকেই কুলুষিত করা।আর যায় কোথায়!ইন্ডিয়ান উগ্রপন্থীরা চেঁচামেচি শুরু করে সালমান খানের বিরুদ্ধে।তার বিরুদ্ধে শুরু হয় বিক্ষোভ!বেচারা সালমান খান বাধ্য হয়ে পরে টুইট ডিলিট করে দেন।



মজার বিষয় হল এতগুলি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় স্বামী অসীমানন্দ হামলার দায় স্বীকার করলেও সে এখনও বহাত তবিয়তেই আছে আর নিরপরাধ ইয়াকুব মেমনকে বিনা কারণে ঝুলতে হল ফাঁসির দড়িতে!কিন্তু কেন!ইয়াকুব মেমনের দুই ধরণের অন্যায় হতে পারে।প্রথমত সে টাইগার মেননের ভাই আর স্বামী অসীমানন্দ উগ্রপন্থী আরএসএস এর একজন সক্রিয় সদস্য।দ্বিতীয়ত ইয়াকুব মেমন মুসলিম আর স্বামী অসীমানন্দ হিন্দু ধর্মের অনুসারী।উল্লেখ্য, এর আগেও কাশ্মীরের প্রখ্যাত আলেম,ও ইসলামী ব্যক্তিত্ত আফজাল গুরুকে অভিযোগ প্রমান করতে না পেরেও এক প্রহসনের বিচার মঞ্চস্থ করে ফাঁসি দেয় ইন্ডিয়ান সরকার।একই কায়দায় মকবুল বাটকেও তারা হত্যা করে।

বিষয়: বিবিধ

১৫৩৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

332633
৩০ জুলাই ২০১৫ সকাল ১১:৪৯
হতভাগা লিখেছেন :
''বেচারা সালমান খান বাধ্য হয়ে পড়ে টুইট ডিলিট করে দেন।''


বজরঙ্গী ভাইজান , এটাই আপনার দেশ ভারত ।
ইন্ডিয়াওয়ালে বাহ্‌ বাহ্‌ বাহ্‌ !

মেরা ভারত মহান

বোমাবাজি করে অসীমানন্দ সাহেব ভারতের হিন্দুদের অসীম আনন্দ দিয়েছেন বলে তাকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
৩০ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৪২
274902
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : এই সালমান কিন্তু গুস্টিসহ বিজেপির অন্ধভক্ত, যে বিজেপি আরএসএস আর শীবসেনার মতো জঙ্গী দলগুলোর পৃষ্টপোষক। গত নির্বাচনে সে বিজেপির পক্ষে বিভিন্ন মিডিয়ায় বলতে বলতে মুখের ফ্যানা তুলে ফেলেছিলো।
332642
৩০ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:১৯
নাবিক লিখেছেন : ইয়াকুব মেনন একজন মুসলিম, এটাই কি তার সবচেয়ে বড় অপরাধ নয়?
332647
৩০ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৫২
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সে একজন মুসলমান এর চেয়ে বড় অপরাধ তো আর দ্বিতীয়টি হতে পারে না। ধন্যবাদ
332649
৩০ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০১:০৯
আহমেদ ফিরোজ লিখেছেন : বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনাল আর ভারতের আদালতের মাঝে কোনো পার্থক্য দেখছিনা। দুইটাই একই থিংক ট্যাংকের ফসল বলে??
332652
৩০ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০১:১৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : বাংলাদেশেও তাই। শুধু মুসলিম হওয়ার অপরাধেই ফাসি হচ্ছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File