সাঈদী কি যুদ্ধাপরাধী?

লিখেছেন লিখেছেন প্রশান্ত আত্মা ২১ এপ্রিল, ২০১৪, ০২:৩৪:৫১ দুপুর

কে এই সাইদী?দেলোয়ার শিকদার আর সাইদী কি একই ব্যাক্তি?এই লোকটাই কি ইব্রাহিম কুট্টি আর বিশাবালীর হত্যাকারী? দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কি আসলেই যুদ্ধাপরাধী?আসুন নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এই প্রশ্নগুলীর উত্তর খোজার চেষ্টা করি..

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে যে দু'টি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে,তার মধ্যে একটি হলো-

১.বিশাবালীকে হত্যার ঘটনা।এবং অন্যটি হল

২.ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার ঘটনা।

সুখরঞ্জন বালী যিনি সাঈদীর পক্ষে সাক্ষী দিতে গিয়ে কোর্ট এলাকা থেকে গুম হয়েছে প্রকাশ্য দিবালোকে তারই ভাই বিশাবালী হত্যার অভিযোগে সাঈদী সাহেবকে ফাসির রায় দেওয়া হলো !সরকারপক্ষ মিথ্যা সাক্ষী দেয়ার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছিল।কিন্তু গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, আদালতে তিনি প্রকৃত কাহিনী তুলে ধরবেন। বলবেন, সাঈদী তার ভাইকে খুন করেননি। কিন্তু তিনি ওই সাক্ষ্য দিতে পারেননি। ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে তাকে অপহরণ করে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী।নিরাপত্তা বাহিনী আমাকে অপহরণ করে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়।কিছুদিন আগে কলকাতার এক কারাগারে সুখরঞ্জন বালীর সন্ধান পাওয়া যায়।

দেখুন বিশাবালীর আপন ভাই সুখরঞ্জন বালী সাঈদীর ব্যাপারে কি বলে ..

দেখুন বিশাবালীর গুম হওয়া নিয়ে রিপোর্ট..

অন্য আরেকটি যে তার ফাঁসির রায় দেওয়া হল সেটি হচ্ছে ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার ঘটনা।অথচ ইব্রাহিম কুট্রির স্রী মমতাজ বেগম ১৯৭২ সালে ১৪ জন কে আসামী করে ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার মামলা করে সেই মামলায় অনেকের সাজা হয়।মজার বিষয় হল, ঐ মামলায় সাঈদীকে আসামী করা হয়নি।আল্লামা সাঈদী যদি ইব্রাহিম কুট্রি হত্যার সাথে জড়িতই থেকে থাকে ।তবে কেন তাকে ১৯৭২ সালে ঐ মামলায় আসামী করা হয়নি!!আরও হাস্যকর বিষয় হল ইব্রাহিম কুট্টির স্ত্রী ছেলে মেয়ে শাশুড়ী শ্যালক শ্যালিকা জীবিত থাকলেও তাদের এ মামলায় সাক্ষী করা হয়নি!!যেন মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশী!দেখুন ইব্রাহিম কুট্রি হত্যা মামলার চার্জশিটে সাইদীর নাম নেই --





ট্রাইব্যুনালের সবচেয়ে নির্মম রসিকতাটি হল আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে রাজাকার দেলোয়ার শিকদার বানিয়ে রায় দেওয়া।অথচ জন্মের পরেই তার নাম রাখা হয় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ১৯৫৭ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে সাইদী দাখিল পাস করেন।তার দাখিল পাশের সার্টিফিকেটেও নাম দেওয়া আছে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।



১৯৬৪ সালে যশোরের কেশবপুর থানার ফতেহপুর গ্রামে ফতেহপুর মসজিদ প্রাঙ্গনে এক আজিমুসশান জলসার আয়োজন করা হয়।১৯৬৪ সালের ঐ মাহফিলের লিফলেটেও সাইদীর নাম দেওয়া ছিল ' দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।



প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে,দেলোয়ার শিকদার নামে পিরোজপুরে একজন কুখ্যাত রাজাকার ছিল এবং স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় লোকজন মিলে পিরোজপুরে তাকে হত্যা করে।পিরোজপুর জেলা পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত ‘পিরোজপুর জেলার ইতিহাস’ গ্রন্থে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকায় মাওলানা সাঈদীর নাম নেই। বরং ওই গ্রন্থে পিরোজপুরের কৃতী সন্তানের তালিকায় তার নাম ও সংপ্তি ইতিহাস রয়েছে। নীচের ছবিটি দেখুন।বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পিরোজপুর জেলা ইউনিট কমান্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত পিরোজপুর জেলার পিস কমিটি, রাজাকারদের তালিকা এটি।এখানে দেওয়া আছে দেলোয়ার শিকদারের পিতার নাম রসুল শিকদার।ট্রাইব্যুনালেও রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মধুসূদন ঘরামীকে দেলোয়ার শিকদারের পিতার নাম রসুল শিকদার উল্লেখ করে নির্দিষ্টভাবে প্রশ্ন করা হয়েছিল।অথচ মাওলানা সাঈদীর পিতার নাম ইউসুফ সাঈদী।



নীচের ছবিটি দেখুন। ছবিটিতে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আর রাজাকার দেলোয়ার শিকদারের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য তা তুলে ধরা হয়েছে।



আল্লামা সাইদী যে সম্পূর্ণ নির্দোষ এটা এদেশের সর্বস্তরের মানুষই বিশ্বাস করে। আমি এ পর্যন্ত আমার পরিচিত একটা লোকও পাইনি যিনি সাইদীকে যুদ্ধাপরাধী মনে করে এদের মধ্যে অনেক কট্টর আওয়ামীলীগও আছে।তিনি যে নির্দোষ এ ব্যাপারে ট্রাইব্যুনাল,সুপ্রিমকোর্ট থেকে শুরু করে বিচার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত লোকজন আমাদের চাইতে আরও বেশী জানে।আমরা সবাই জানি আল্লামা সাইদী নির্দোষ এরপরেও এই মজলুম ব্যাক্তিটিই হয়তবা ফাঁসি দড়িকে বরণ করে নিতে হবে!



বিষয়: বিবিধ

৫৭৬৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

211204
২১ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:২০
ওমর ফারুক ইফতি লিখেছেন : তথ্যপূর্ন ব্লগপোষ্ট। খুবই ভাল লাগল।
211225
২১ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:০২
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : আল্লামা সাইদীর একটাই অপরাধ ইসলামের পক্ষে অবস্থান নেওয়া। তার বিরুদ্ধে চুর ,ডাকাত ,বউ পেটানো মামলায় আসামীদের দিয়ে মিথ্যে বানোয়াট নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে ,,আমরা তার মুক্তি চাই।
211247
২১ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৯
ভিশু লিখেছেন : আল্লামা সাঈদী কিছুতেই, কোনোভাবেই যুদ্ধাপরাধী নন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File