ইসলাম, সেতো পরশ পাথর, মোরা কি তা ঠিক বুঝি!
লিখেছেন লিখেছেন প্রশান্ত আত্মা ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১১:৫৪:১১ সকাল
তাদের দাবী বেশী কিছুনা।ন্যূনতম ৮ হাজার টাকা বেতনের দাবীতে রাস্তায় নেমেছে।আর এটা অবশ্যই একটা যৌক্তিক দাবী।এত সস্তা শ্রম পৃথিবীর আর কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই।সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে পোশাকশ্রমিকেরা কিন্তু তাদের ন্যূনতম বেতন মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা অথচ তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থলোভী দানব শিল্প মালিকেরা!চিন্তা করে দেখুন এই অল্প টাকা এই সময়ে জীবনধারণ করাটা কতটা কষ্টের!তাছাড়া কারখানায় ঝুঁকি,অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ইত্যাদি সমস্যা তো আছেই।সবচেয়ে খারাপ লাগে যখন দেখি শিল্প কারখানাগুলি এই ন্যূনতম বেতনও শ্রমিকদের দেয়না,ঈদ বোনাস দেয়না!এই পরিস্থিতিতে নিজেকে কল্পনা করুন।সারামাস চাকরী করার পর যদি আপনি বেতন বোনাস না পান তখন মানসিক যে অসহ্য বেদনা অনুভূত হয় সেটাই দেখবেন আপনাকে সহিংস করে তুলবে।
পুঁজিবাদী এই সমাজে পোশাকশ্রমিকদের কান্না শুনার কেও নেই কেও শুনবেও না!কারণ পুঁজিবাদী সমাজের ধারক বাহকেরা অর্থ উপার্জনের জন্য শ্রমিকদের গলায় ছুড়ি চালাতেও দ্বিধাবোধ করবে না।শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে অনেক বিপ্লব,অনেক মতবাদ,অনেক তন্ত্র মন্ত্রই দেখেছি।কিন্তু বাস্তবে সবই ফাঁকা বুলি!
তবে পৃথিবীর ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়,কেবল একটা মতবাদই পৃথিবীর বুকে শ্রমিকদের অধিকার যথাযথভাবে সংরক্ষণ করেছিল।সেই মতবাদ হল ইসলাম।এ ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কতই না উত্তম।রাসূল (সা) বলেছেন, ‘মজুর-শ্রমিক ও ভৃত্যদের যথারীতি থাকা ও পোশাক দিতে হবে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘যারা তোমাদের কাজ করছে তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন।’-বুখারী।
‘মজুরদের সাধ্যের অতীত কোন কাজ করতে তাদের বাধ্য করবে না। অগত্যা যদি তা করাতে হয় তবে নিজে সাহায্য কর।’ (বুখারী)
‘কিয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমি কঠিন অভিযোগ উপস্থাপন করব-যে ব্যক্তি আমার কাউকেও কিছু দান করার ওয়াদা করে প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করল, কোন মুক্ত স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রয় করে যে তার মূল্য আদায় করল এবং যে ব্যক্তি অন্যকে নিজের কাজে নিযুক্ত করে পুরোপুরি কাজ আদায় করে নিলো, কিন্তু তার মজুরি দিলো না-ওরাই সেই তিনজন।’ (মিশকাত)
তোমরা শ্রমিককে তার শরীরের ঘাম শুকানোর পূর্বেই পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।(ইবনু মাজাহ)
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন,‘যেই সত্তার হাতে আবূ হুরায়রার প্রাণ তার কসম! যদি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ, হজ্জ ও আমার মায়ের প্রতি সদ্ব্যবহারের ব্যাপারগুলো না থাকত, তাহ’লে আমি শ্রমিক হিসাবে মৃত্যুবরণ করতে পছন্দ করতাম’। (বুখারী )
মনে পড়ে গেল হযরত ওমরের (রাঃ) কথা।শ্রমিকদের প্রতি কতটা উদার হলে একজন রাষ্ট্রনায়ক ভৃত্যকে উটের পিঠে বসিয়ে নিজে উটের রশি ধরে মরুভূমি পারি দিতে পারেন!আর তাইতো কোন এক কবি বলেছেন,
প্রভু ধরেছেন উটের রশী, ভৃত্য সওয়ারী তাতে,
মরুর পথে চলেছে ওমর, শাসন নিতে নিজ হাতে।
রাতের আঁধারে চলেছেন তিনি, আটার বস্তা কাঁধে,
শান্তনা দিতে বিধবা প্রজার, অভুক্ত শিশুরা কাঁদে।
ইসলাম, সেতো পরশ পাথর, মোরা কি তা ঠিক বুঝি!
পরশে তাহার, সোনা হল যারা, এসনা তাদেরই খুঁজি
Photo Design by - Syed Jafor Ahamad Rajib
বিষয়: বিবিধ
১০৬২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন