রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হেফাজতে ইসলামের সমর্থক ছিলেন !!
লিখেছেন লিখেছেন প্রশান্ত আত্মা ২৪ আগস্ট, ২০১৩, ০৬:০৭:১২ সন্ধ্যা
হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে নারীবাদীরা যে সকল অভিযোগ তুলেছেন তার মধ্যে অন্যতম হল---
-- তারা নারী-পুরুষদের অবাধ মেলামেশা করতে দিতে রাজি নয়।
-- নারীদের তারা ঘরে আটকে রাখতে চায়।নারীদের ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করাকে তারা সমর্থন করেনা।
-- তারা নারীদের ঘরের কোনে রাখতে চায়।
-- নারী-পুরুষদের সর্বক্ষেত্রে সমান অধিকারকে তারা উৎসাহিত করেনা।
যদিও হেফাজতে ইসলাম এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এসবের ব্যাখ্যা দিয়েছে।
এবার মূল কথায় আসি।অনলাইনে রবীন্দ্র রচনাবলী পড়ছিলাম।পড়ার ফাঁকে কয়েকটা জায়গায় এসে থমকে গেছি!অবাক হয়েছি।হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে নারীবাদীরা যে সকল অভিযোগ তুলেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার প্রত্যেকটি অভিযোগের কট্টর সমর্থক!নীচে রবীন্দ্র রচনাবলী থেকে কয়েকটি লাইনের উল্লেখ হল---
‘নারী নারী বলিয়াই শ্রেষ্ঠ, তিনি পুরুষের কার্যে হস্তক্ষেপ করিলে যে শ্রেষ্ঠতর হইবেন তাহা নহে বরং বিপরীত ঘটিতে পারে; তাহাতে তাঁহাদের চরিত্রের কোমলতা, সহিষ্ণুতা ও দৃঢ়তার সামঞ্জস্য নষ্ট হওয়া আশ্চর্য নহে।‘ [ সূত্র ]
‘যেমন করেই দেখ প্রকৃতি বলে দিচ্ছে যে, বাহিরের কাজ মেয়েরা করতে পারবে না। যদি প্রকৃতির সে-রকম অভিপ্রায় না হত তা হলে মেয়েরা বলিষ্ঠ হয়ে জন্মাত। যদি বল, পুরুষদের অত্যাচারে মেয়েদের এই দুর্বল অবস্থা হয়েছে, সে কোনো কাজেরই কথা নয়। কেননা, গোড়ায় যদি স্ত্রী পুরুষ সমান বল নিয়ে জন্মগ্রহণ করত তা হলে পুরুষদের বল স্ত্রীদের উপর খাটত কী করে। [ সূত্র ]
‘প্রকৃতিই রমণীকে বিশেষ কার্যভার ও তদনুরূপ প্রবৃত্তি দিয়া গৃহবাসিনী করিয়াছেন, পুরুষের সার্বভৌমিক স্বার্থপরতা ও উৎপীড়ন নহে—অতএব বাহিরের কর্ম দিলে তিনি সুখীও হইবেন না, সফলও হইবেন না।‘[ সূত্র ]
‘মেয়েরা এতদিন যেরকম শিক্ষা পেয়েছে তাই যথেষ্ট ছিল। Burns খুব যে সুশিক্ষিত ছিলেন তা নয়। অনেক বড়ো কবি অপেক্ষাকৃত অশিক্ষিত নিম্নশ্রেণী থেকে উদ্ভূত। স্ত্রীজাতির মধ্যে প্রথমশ্রেণীর কবির আবির্ভাব এখনো হয় নি। মনে করে দেখো, বহুদিন থেকে যত বেশি মেয়ে সংগীতবিদ্যা শিখছে এত পুরুষ শেখেনি। য়ুরোপে অনেক মেয়েই সকাল থেকে রাত্তির পর্যন্ত পিয়ানো ঠং ঠং এবং ডোরেমিফা চেঁচিয়ে মরছে, কিন্তু তাদের মধ্যে ক'টা Mozart কিংবা Beethoven জন্মাল! অথচ Mozart শিশুকাল থেকেই Musician। এমন তো ঢের দেখা যায়, বাপের গুণ মেয়েরা এবং মায়ের গুণ ছেলেরা পায়, তবে কেন এরকম প্রতিভা কোনো মেয়ে সচরাচর পায় না। আসল কথা প্রতিভা একটা শক্তি (Energy), তাতে অনেক বল আবশ্যক, তাতে শরীর ক্ষয় করে। তাই মেয়েদের একরকম গ্রহণশক্তি ধারণাশক্তি আছে, কিন্তু সৃজনশক্তির বল নেই। মস্তিষ্কের মধ্যে কেবল একটা বুদ্ধি থাকলে হবে না, আবার সেইসঙ্গে মস্তিষ্কের একটা বল চাই। মেয়েদের একরকম চটপটে বুদ্ধি আছে, কিন্তু সাধারণত পুরুষদের মতো বলিষ্ঠ বুদ্ধি নেই। আমার তো এইরকম বিশ্বাস।‘[ সূত্র ]
‘মেয়েটাকে দাও পাঠিয়ে য়ুরোপে।
সেখানে যারা জ্ঞানী, যারা বিদ্বান, যারা বীর,
যারা কবি, যারা শিল্পী, যারা রাজা,
দল বেঁধে আসুক ওর চার দিকে।
জ্যোতির্বিদের মতো আবিষ্কার করুক ওকে —
শুধু বিদুষী ব'লে নয়, নারী ব'লে।
ওর মধ্যে যে বিশ্ববিজয়ী জাদু আছে
ধরা পড়ুক তার রহস্য..[ সূত্র ]
ওহে নারীবাদী রমণীগণ!
দেখলেন তো,রবী ঠাকুর আপনাদের উচ্চশিক্ষাকে সমর্থন করেনা!
দেখলেন তো,রবী ঠাকুর আপনাদের ঘরের বাইরে চাকরী করাকে সমর্থন করেনা!
দেখলেন তো,রবী ঠাকুর নারী-পুরুষদের সমান অধিকার সমর্থন করেনা!
তাহলে কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও হেফাজতে ইসলামের সমর্থক ছিলেন !!
ওহে নারীবাদী রমণীগণ! !
যখন বৃষ্টি নামে তখন আপনি আনমনে গেয়ে উঠেন—আজি ঝরঝর মুখর বাদল দিনে...
যখন জোড়ে বাতাস বহে তখন আপনি আনমনে গেয়ে উঠেন—পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে ...
পছন্দমত কিছু দেখলেই আপনি গেয়ে উঠেন—আমারও পরাণও যাহা চাই..
আপনার শয়নে স্বপনে নিশিতে জাগরনে শুধুই রবীন্দ্রনাথ!আপনাদের বেডরুম,ড্রইংরুমে শোভা পায় রবীন্দ্রনাথের ছবি!সেই রবীন্দ্রনাথ এসব কথা বলতে পারল!!
আহমেদ শফি সাহেব একটা গ্রাম্য মাহফিলে কি না কি বলিয়াছেন আর অমনি নারীবাদীদের চিৎকার চেঁচামেচিতে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হইয়া উঠিল।অথচ নারী স্বাধীনতা নিয়া রবীন্দ্রনাথ কত গুরতর কথাই না বলিয়াছেন!কিন্তু সেদিকে উহাদের ভ্রূক্ষেপ নাই!মানে বুঝিলাম,রবী ঠাকুর বলিলে উহা গল্প উপন্যাস আর আহমেদ শফি বলিলে উহা নারী অবমাননা!
বিষয়: বিবিধ
১৮৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন