উপকার করে খোঁটা দেওয়া!

লিখেছেন লিখেছেন প্রশান্ত আত্মা ২৪ আগস্ট, ২০১৩, ০২:২২:৩৭ দুপুর

কাওকে উপকার করে খোঁটা দেওয়াটা খুবই জঘন্য কাজ।পরোপকারী লোকজনের অনেকেই এই ভুলটা করে থাকেন।মতের অমিল হলে অথবা পারস্পরিক সদ্ভাব বজায় না থাকলে অন্যকে উপকারের কথা স্মরন করিয়ে দিয়ে খোঁটা দেওয়া যে কতটা খারাপ কাজ কেবল যাকে উদ্দেশ্য করে খোঁটা দেওয়া হয় সেই বুঝতে পারে!

এ ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই কঠোর।যারা মানুষের উপকার করে তা স্মরণ করিয়ে দেয় বা খোঁটা দেয় তাদের উদ্দেশ্যে মহাগ্রন্থ আল কোরআনে বলা হয়েছে,’ একটি মিষ্টি কথা এবং কোন অপ্রীতিকর ব্যাপারে সামান্য উদারতা ও ক্ষমা প্রদর্শন এমনি দানের চেয়ে ভালো,যার পেছনে আসে দুঃখ ও মর্মজ্বালা।মূলত আল্লাহ‌ করো মুখাপেক্ষী নন,সহনশীলতাই তাঁর গুণ।‘--[সূরা আল-বাকারাঃ ২৬৩]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ করো না সে ব্যক্তির মত যে নিজের ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে না। অতএব, এ ব্যাক্তির দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ পাথরের মত যার উপর কিছু মাটি পড়েছিল। অতঃপর এর উপর প্রবল বৃষ্টি বর্ষিত হলো, অনন্তর তাকে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে দিল। তারা ঐ বস্তুর কোন সওয়াব পায় না, যা তারা উপার্জন করেছে। আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না। [সূরা আল-বাকারাঃ ২৬৪]

আবু যার (রা) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তিন শ্রেণীর লোকের সাথে আল্লাহ্ তা'আলা কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না। খোঁটাদানকারী, সে যা কিছু দান সাদকা করে পরক্ষনেই তার খোঁটা দেয়। আর যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করে তার পণ্য বিক্রি করে এবং যে ব্যক্তি টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে চলে বা পরিধান করে। [সহীহ মুসলিম, প্রথম খণ্ড, কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং-২০২]

হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,’ ‘ধোঁকাবাজ, কৃপণ ও উপকার করে খোঁটা দেয় যে-এ তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। --[তিরমিযী শরীফ]

একবার নাসিরউদ্দিন হোজ্জার কাছে এক লোক এসে প্রশ্ন করছেন যে, জীবনে সুখী হওয়ার জন্যে আমাদের কোন ব্যাপারটা মনে রাখা উচিত আর কোনটা ভুলে যাওয়া উচিত। হোজ্জা বললেন, আপনি যদি কারো কাছ থেকে উপকার পান তবে সেটা আজীবন মনে রাখবেন আর যদি কারো উপকার করেন তাহলে সেটা ভুলে যাবেন।

সবচেয়ে বড় কথা হল উপকার করে খোঁটা দেওয়া কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত আর আমরা জানি খালেস তাওবা ছাড়া কবিরা গুনাহ মাফ হয়না।কাওকে উপকার করতে পারলে নিঃস্বার্থভাবেই করব কিন্তু উপকার করে বিভিন্ন কারনে খোঁটা দেওয়ার চাইতে উপকার না করা অনেক অনেক ভাল।অতএব দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে এ বিষয়গুলি আমাদের স্মরন রাখা প্রয়োজন।

বিষয়: বিবিধ

১৬৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File