অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলার হালচাল । ন্যায়বিচার বনাম প্রহসনের বিচার !
লিখেছেন লিখেছেন প্রশান্ত আত্মা ১৮ এপ্রিল, ২০১৩, ১২:২২:১৪ দুপুর
অধ্যাপক গোলাম আযম অপরাধ সংঘঠনের লাইট হাউস নন, তিনি বাংলাদেশের ইসলামিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য লাইট হাউসের কাজ করেছেন। ফৌজদারী মামলা শাস্তি দেওয়ার জন্য যেসব সাক্ষ্য প্রমাণ দরকার তার কিছুই দিতে পারেননি প্রসিকিউশন । আবেগ দিয়ে বিচার হয় না, বিচার হয় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে।‘মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত গোলাম আযমের মামলায় যা আছে আবেগ আর গাল গল্প, তবে যা নেই তাহলো সাক্ষ্য প্রমাণ।’
আসুন দেখে নেই অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলার হালচাল ।
# মিরু মিয়া দারোগা হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে অধ্যাপক গোলাম আযমের একটি কথিত চিঠির ভিত্তিতে। কিন্তু সেই চিঠিটি আদালতে হাজির করা হয়নি। চিঠিটি যার মাধ্যমে আনা হয়েছিল, যিনি বহন করে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং যার কাছে লেখা হয়েছিল তাদের কাউকেই সাক্ষী হিসেবে আনা হয়নি। এর অর্থ দাঁড়ায় এই যে, কোন সাক্ষ্য-প্রমাণই তারা হাজির করতে পারেনি। সম্পূর্ণ বানোয়াট কাহিনী সাজানো হয়েছে।
# টিক্কা খানের সাথে নাকি গোলাম আযম সাহেব ষড়যন্ত্র করেছেন। কিন্তু কোন সাক্ষীই তা বলেননি। কোন দলিলপত্রও এর সমর্থনে পেশ করা হয়নি।একটা রাজনৈতিক দলের প্রধান অন্য দেশের জেনারেলের সাথে আলোচনার টেবিলে বসতেই পারেন। শেখ মুজীবও তো ভুট্টুর সাথে মিটিং করেছিলেন। টিক্কা খানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিন্তু আলোচনায় তিনি কি বলেছেন, কি নিয়ে আলোচনা এ বিষয়ে কোনো সাক্ষীও কিছু বলেননি, কোন প্রমাণও তারা উপস্থাপন করতে পারেননি !
# বলা হচ্ছে গোলাম আযমের লিখিত নির্দেশে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলাখানায় ৩৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার অভিযোগ আনা হলো কিন্তু কে চিঠি নিয়ে গেল, কাকে চিঠি দিল, কে চিঠি পড়ল, চিঠিতে কি লেখা ছিল তার কোনো কিছু তারা হাজির করতে পারেননি। চিঠির কোনো হদিসও নেই ! সুপিরিয়র বা কমান্ড রেসপনিসিবিলিটি শুধুমাত্র সামরিক বাহিনীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বেসামরিক ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
# মামলার যত ডকুমেন্ট তার কোন কিছুই তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান কর্তৃক তৈরি হয়নি বরং এসব তৈরি করেছেন ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিন। ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিন অন্যান্য লোকজনের যোগসাজজে তা তৈরি করে প্রসিকিউশনের নামে জমা দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালে।
এটা একটা প্রতারনা। বিচারপতি নিজামুল হক চার্জ গঠনসহ যেসব আদেশ দিয়েছেন এই ট্রাইব্যুনালে তা তার নিজের তৈরি করা নয়। তা দেশের বাইরে থেকে ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিন তৈরি করেছেন। অথচ পরের এসব জিনিস তিনি নিজের বলে চালিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রতারনা এবং জালিয়াতি করেছেন। তাই এ বিচার আর কোন অবস্থায়ই চলতে পারেনা।
# অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন বিষয়ে ৫টি ড্রাফট আসে বেলজিয়ামে বসবাসরত ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের কাছ থেকে। সাক্ষী নির্ধারন করা, সাক্ষীকে দিয়ে কি বলাতে হবে তার সবকিছু বেলজিয়াম থেকে ঠিক করা হয়েছে।
১২/৫/২০১২ তারিখ বেলজিয়াম থেকে ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিন গোলাম আযমের মামলায় চার্জ গঠন বিষয়ে ইমেইল পাঠান বিচারপতি নিজামুল হকের কাছে। বিচারপতি নিজামুল হক সেই ড্রাফটটি হুবহু কপি করে পরের দিন ১৩/৫/২০১২ তারিখ অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন বিষয়ে আদেশ দেন।
# ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যেসব বর্বরতার অভিযোগ রয়েছে, তা সংঘটনের সাথে অধ্যাপক গোলাম আযম কোনোভাবে সরাসরি জড়িত ছিলেন, এমন কোনো কিছু আমরা পাইনি।’
১৯৯৪ সালে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে দেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে এ কথা উল্লেখ রয়েছে।
রায়ে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘পাকিস্তানি আর্মি ও তাদের সহযোগী বাহিনী রাজাকার, আলবদর কিংবা আলশামসের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে যেসব বর্বরতার অভিযোগ রয়েছে, তার একটির সাথেও অধ্যাপক গোলাম আযমের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।’
আপিল বিভাগের তৎকালীন বিচারপতি হাবিবুর রহমান, বিচারপতি এ টি এম আফজাল, বিচারপতি মুস্তাফা কামাল ও বিচারপতি লতিফুর রহমান এ ঐতিহাসিক রায় দেন। এই চার খ্যাতিমান বিচারপতির সবাই পরে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আসন অলঙ্কৃত করেন এবং তাদের মধ্যে বিচারপতি হাবিবুর রহমান ও বিচারপতি লতিফুর রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ইর্ষণীয় ত্যাগের দৃষ্টান্ত রেখেছেন অধ্যাপক গোলাম আযমে। আসুন, জেনে নেই ভাষা আন্দোলনে তার কিছু অবদানের কথা।
* ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ... একদল ছাত্র নিয়ে ভাষা আন্দোলনের পক্ষে পিকেটিং করার সময় সদলব...লে গ্রেফতার হন এবং তেজগাঁও থানায় বেড়া-বিহীন টিনের ঘরে সাত দিন রোদ বৃষ্টিতে অসহনীয় যন্ত্রণায় ভুগেছেন।
* ১৯৪৮ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকায় সফররত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে গোলাম আযম রাষ্ট্রভাষা ও পূর্ব পাকিস্তানের সামগ্রিক দাবী সম্বলিত ঐতিহাসিক ‘অভ্যর্থনা স্মারকলিপি’ প্রদান করেন। উল্লেখ্য, ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ঢাকসু) জি.এস. ছিলেন।
* ১৯৫২ সালে মার্চের ৬ তারিখে রংপুরে ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অপরাধে গ্রেফতার হয়ে একমাস রংপুর জেলে অন্তরীণ ছিলেন।
* ২১ ফেব্রুয়ারী যাতে পালন করতে না পারেন তার জন্য ১৯৫৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং দু মাস পরে হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্তি লাভ করেন।
* ১৯৫৫ সালে কারান্তরীণ অবস্থায় রংপুর কারমাইকেল কলেজের চাকুরী থেকে তাকে অব্যহতি দেয়া হয়। গভর্নিংবডির পক্ষ থেকে জেলে তাকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয় যে, বার বার গ্রেফতার হওয়ায় ছাত্রদের পড়ার ক্ষতি হয় বলে কলেজে তাকে আর প্রয়োজন নেই।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার আন্দোলনে যিনি চাকুরী হারালেন, বার বার কারারুদ্ধ হলেন, বিবাহিত জীবনের প্রথম বস্তনকালটি যাকে কাটাতে হয়েছে অন্ধকারাগারে, অন্তরের অন্তস্থল থেকে তাকে জানাই সালাম। তার সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু, মানসিক প্রশান্তি ও আল্লাহর অফুরন্ত রহমত কামনা করছি।
তবে এ কথা সত্য স্বাধীনতা যুদ্ধে অন্য অনেক দলের মত জামাতে ইসলামীও চাইনি ভারতের সহায়তাই দেশ স্বাধীন হোক।
এমনকি মজলুম জন নেতা মাওলানা ভাসানির দল ন্যাপও স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয়নি।
স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা বিরোধিতা করেছিল ------
১. পি ডি পি
২. জাতীয় দল।
৩. কৃষক শ্রমিক পার্টী
৪. সকল উপজাতি।
৫. চীনপন্থি কম্যুনিস্ট পার্টী ।
৬. বৌদ্ধ সম্প্রদায় ।
৭. জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ।
৮. জামায়াতে ইসলামী।
৯. নেজামে ইসলাম ।
১০. খেলাফত আন্দোলন ।
১১. মুসলিম জাতীয়তাবাদী দল।
১২. মুসলিম লীগের তিন গ্রুপ।
১৩. ইদানীং কিছু বুদ্ধিজীবীদের নামও উঠে আসছে এ তালিকায়।
তাহলে শুধু জামাতের নাম আসছে কেন?
বাকিদের নামত কখনো শুনিনি।
তাহলে আসল এজেণ্ডা কি?
৭১ এ জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা কি ছিল এ ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর নেতা, বক্তা-ওয়ায়েজ ও ‘সওয়াল-জওয়াব’ ধারণার জন্য বিখ্যাত খন্দকার আবুল খায়ের লিখেছেন : ‘আমি যে জেলার লোক, সেই জেলায় ৩৭টি ইউনিয়ন থেকে জামায়াত আর মুসলিম লীগ মিলে ৭০-এর নির্বাচনে ভোট পেয়েছিল দেড়শতের কাছাকাছি আর সেখানে রাজাকারের সংখ্যা ১১ হাজার, যার মাত্র ৩৫টি ছেলে জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগারদের।… আমার কিছু গ্রামের খবর জানা আছে, যেখানে ৭১-এর ত্রিমুখী বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচার জন্য গ্রামে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেন যে, দুই দিকেই ছেলেদের ভাগ করে দিয়ে বাঁচার ব্যবস্থা করতে হবে। এই সিদ্ধান্ত মোতাবেক যে গ্রামের শতকরা ১০০ জন লোকই ছিল নৌকার ভোটার, তাদেরই বেশ কিছুসংখ্যক ছেলে যোগ দেয় রাজাকারে। যেমন কলাইভাঙ্গা গ্রামের একই মায়ের দুই ছেলের সাদেক আহমদ যায় রাজাকারে, আর তার ছোটভাই ইজহার যায় মুক্তিফৌজে।… এটাই ছিল বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অবস্থা।… যারা ছিল সুযোগ সন্ধানী, তারা সুযোগ পেয়েছে, ব্যস রাজাকার হয়ে পড়েছে।… এরপর এগার হাজার রাজাকার যারা নৌকা থেকে নেমে এসেছিল, তাদের সব দোষ গিয়ে আমাদের ঘাড়ে চাপল।’ (খন্দকার আবুল খায়ের, ‘১৯৭১-এ কি ঘটেছিল রাজাকার কারা ছিল’, যশোর : তৌহিদ প্রকাশনী (তৃতীয় সংস্করণ), ১৯৯২, পৃ. ৪৪-৪৫,৬২)।
৭১ এ নিজের অবস্থান তুলে ধরে জাতির উদ্দেশে অধ্যাপক গোলাম আযমের বক্তব্যের কিছু অংশ নীচে তোলে ধরা হল-----
১৯৫৪ সালে আমি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করি এবং প্রত্যক্ষভাবে আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু করি। অখণ্ড পাকিস্তানে ১৯৫৫ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আমি সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। কপ (COP- Combined Opposition Party), পিডিএম (PDM- Pakistan Democratic Movement), ডাক (DAC- Democratic Action Committee) ইত্যাদি আন্দোলনে জনাব শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্য সকল দলের নেতাদের সাথে অংশগ্রহণ করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করি। রাজনৈতিক কারণে ১৯৬৪ সালেও আমাকে কারাবরণ করতে হয়েছিল।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের পর আমি বিবৃতি দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর দলকে অভিনন্দন জানাই। সেই সাথে কালবিলম্ব না করে বিজয়ী দলের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট-এর নিকট আহবান জানাই। এরপর আসে মার্চ ১৯৭১।
১৯৭১-এর মার্চ মাসের ঐ উত্তাল দিনগুলোতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়ার সাথে শেখ সাহেবের আলোচনার সময় আমার সাথে শেখ সাহেবের একান্ত ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ও বর্তমান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জনাব সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম-এর পিতা জনাব সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং জনাব আব্দুস সামাদ আযাদ-এর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তাঁরা আমাকে জানিয়েছিলেন যে, অখন্ড পাকিস্তান-এর চিন্তা নিয়েই উনারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। জনাব আব্দুস সামাদ আযাদের সাথে ২৫শে মার্চেও আমার টেলিফোনে আলোচনা হয়। তিনি আমাকে পুনরায় আশ্বস্ত করে বলেন যে, তাঁরা অখণ্ড পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোন বিকল্প চিন্তা করছেন না।১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ঢাকায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যে নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায় তা থেকে বোঝা গেল যে, ইয়াহইয়া-মুজিব সংলাপ ব্যর্থ হয়ে গেছে। পরে জানা গেল যে, ’৭০-এ নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু শেখ সাহেব পাক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। ইচ্ছা করলে তিনিও ভারতে চলে যেতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাননি। শেখ সাহেব গ্রেফতার হওয়ায় তাঁর কথা কিছুই জানা গেল না। অন্যদিকে বোঝা গেল যে, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ভারত সরকারের সহযোগিতা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করতে চান। এদিকে, ’৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ী নেতৃবৃন্দ ভারতে চলে যাওয়ায় অসহায় নির্যাতিত জনগণ আত্মরক্ষার জন্য দেশে অবস্থানরত আমাদের মত রাজনৈতিক নেতাদের নিকটই ধরণা দিতে বাধ্য হলো।
১৯৪৭ সাল থেকে ’৭০ সাল পর্যন্ত ভারত সরকার এ দেশের সাথে যে আধিপত্যবাদী আচরণ করেছে তাতে আমাদের নিশ্চিত এ বিশ্বাস ছিল যে, ভারতের সহযোগিতা নিয়ে দেশ স্বাধীন হলে তা ভারতের তাবেদার রাষ্ট্রই হবে। তাই, কিছু বামপন্থী, সকল ডানপন্থী ও সকল ইসলামী দলগুলোসহ প্রায় সকল সুপরিচিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব এ সুস্পষ্ট ধারণার কারণেই ভারতের সাহায্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সঠিক মনে করেননি। ভারতের সাহায্য না নিয়ে যদি স্বাধীনতা যুদ্ধ করা হতো, তাহলে আমরা অবশ্যই সে যুদ্ধে যোগদান করতাম।
ভারত বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী ও ১৯৭০-এ নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্য জনাব নুরুল আমীনের বাসায় সমবেত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় যে, জেনারেল টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করে গণহত্যা বন্ধ করার দাবি জানাতে হবে এবং সেনাবাহিনীর জুলুম-নির্যাতনের শিকার অসহায় জনগণের সহায়তার জন্য আমাদেরকে সুযোগ দেবার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমরা ৭/৮ জন একসাথেই টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করি। পিডিপি’র জনাব নূরুল আমীন, জামায়াতে ইসলামী থেকে আমি, নেজামে ইসলাম পার্টির মৌলভী ফরিদ আহমদ, মুসলিম লীগের খাজা খায়রুদ্দীন, কেএসপি’র এ এস এম সুলাইমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ তাতে সামিল ছিলেন। এখন ঐ মিটিং-এর ছবির বরাত দিয়ে আমার নামে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। উনাদের কি ধারণা যে, ছবি কথা বলে? তাহলে শেখ সাহেবের সাথেও তো আমার এবং মাওলানা মওদূদী (র)-এর মিটিং-এর ছবি আছে। সেগুলোর আলোচনার বিষয়বস্তু কী ছিল তা কি তারা বলতে পারবেন?
১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না পারা রাজনৈতিক নেতাগণ জনগণকে যুলুম থেকে রক্ষা করার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। নির্বাচনে বিজয়ী নেতৃবৃন্দ দেশে না থাকায় সাহায্যপ্রার্থী অসহায় জনগণের সমস্যার সমাধান করাই তাদের একমাত্র দায়িত্ব ও চেষ্টা ছিল। আমিও এ চেষ্টাই করেছি। আমি ১৪ আগস্ট ১৯৭১-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের এক মিটিং-এ সেনাবাহিনীর জুলুম-নির্যাতনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিকার দাবী করেছিলাম। বায়তুল মোকাররমের সামনে আরেকটি মিটিং-এও আমি এই প্রতিবাদ ও প্রতিকার দাবি উত্থাপন করেছিলাম। আমার বক্তব্য পত্রিকায় আসতে দেয়া হয়নি; বক্তব্য প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
যুদ্ধাপরাধী ইস্যুর উদ্ভাবন
১৯৮০’র দশকে এবং ১৯৯০ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে বিএনপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলনে জামায়াত ও আওয়ামী লীগ যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। সকল আন্দোলনকারী দলের লিয়াজোঁ কমিটি একত্রে বৈঠক করে কর্মসূচি ঠিক করতো। তখন তো কোন দিন আওয়ামী লীগ জামায়াত নেতৃবৃন্দকে যুদ্ধাপরাধী মনে করেনি। ফেব্রুয়ারি ১৯৯১-এর নির্বাচনের পর সরকার গঠনের জন্য আওয়ামী লীগ জামায়াতের সহযোগিতা প্রার্থনা করে আমার নিকট ধরনা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতা আমির হোসেন আমু সাহেব জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ সাহেবের মাধ্যমে আমাকে মন্ত্রী বানাবার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। তখনও তো আওয়ামী লীগের মনে হয়নি যে, জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধী! পরবর্তীতে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী জামায়াতের সমর্থন লাভের আবদার নিয়ে যখন আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন, তখনও তো তাদের দৃষ্টিতে জামায়াত নেতৃবৃন্দ ‘যুদ্ধাপরাধী’ ছিল না। এরপর এমন কী ঘটলো যে আওয়ামী লীগ ও কতক বাম দল জামায়াতকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যা দিয়ে জামায়াতকে নির্মূল করার জন্য জেহাদে নামলেন? এরূপ দু’মুখো নীতি কোনো সুস্থ রাজনীতির পরিচয় বহন করে না।
২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মাত্র ৫৮টি আসনে বিজয়ী হয় আর বিএনপি ১৯৭টি আসন পায়। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন হওয়ায় নির্বাচনে ইসলামপন্থী দলসমূহের শতকরা ২০ ভাগ ভোট একতরফা বিএনপি পাওয়ায় এসব ভোট থেকে বঞ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগ মাত্র পাঁচ হাজার থেকে বিশ হাজার ভোটের ব্যবধানে বহু আসন হারায়।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার কারু হিসেবে বুঝতে পেরেছিল যে, জামায়াতে ইসলামীকে ঘায়েল করতে না পারলে ভবিষ্যতে নির্বাচনে বিজয়ের কোনো আশা নেই। এ উপলব্ধি থেকেই ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকে জামায়াত নেতাদেরকে যুদ্ধাপরাধীর অপবাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রচারাভিযান চালায়। যাদেরকে এক সময় ‘কলাবরেটর’ আখ্যা দেয়া হয়েছিল তাদেরকেই এখন আওয়ামী লীগ ‘যুদ্ধাপরাধী’ হিসেবে বিচার করতে চাচ্ছে। ২০০১ সালের পূর্বে কখনো জামায়াত নেতাদেরকে যুদ্ধাপরাধী বলা হয়নি। এখন পাকিস্তানী ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে বিচার করার জন্য ১৯৭৩ সালে যে আইন করা হয়েছিল সে আইনেই আওয়ামী লীগ নতুনভাবে আমাদেরকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়ে বিচার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর আগে আওয়ামী লীগ ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০১, মোট দু’বার ক্ষমতায় ছিল। তখনতো তারা আমাদের এ আখ্যাও দেয়নি এবং ঐ আইনে বিচারের উদ্যোগও নেয়নি। সেটা কেন নেয়নি এর কি কোনো সন্তোষজনক জবাব আওয়ামী লীগ জনগণের সামনে দিয়েছে বা দিতে পারবে?
চল্লিশের দশকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করে যে, যুদ্ধের পর তারা ভারতবর্ষকে স¡াধীনতা দিবে। মি. গান্ধি ও মি. নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেস দল থেকে দাবি করা হয় যে, ভারতীয় জাতীয়তা ও সেক্যুলার গণতন্ত্রের ভিত্তিতে অখণ্ড ভারত ‘এক রাষ্ট্র’ হবে, কারণ ভারতের সকল ধর্মের মানুষ এক জাতি। কায়েদে আযম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর নেতৃত্বে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেখ মুজিবের মত নেতারা দাবি করলেন যে, ‘মুসলিমরা আলাদা জাতি’। ৪০ কোটি ভারতবাসীর রাষ্ট্রে ১০ কোটি মুসলমান ৩০ কোটি হিন্দুর শাসনাধীন হলে মুসলিমরা স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারবে না। তাই, মুসলিম জাতীয়তার ভিত্তিতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশগুলোকে ভারত থেকে আলাদা করে পাকিস্তান কায়েম করার আন্দোলন হয়। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে ১০ কোটি মুসলমান পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দেয়ার কারণে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হয়ে পাকিস্তানের জন্ম হয়।
কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আদর্শিক লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। তার ফলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়। এই বিভেদ বঞ্চনা থেকেই পৃথক হওয়ার ধারণার জন্ম। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ বিভক্ত ভারত ও বিভক্ত পাকিস্তানের উত্তরসূরী। এই বিভক্তির ফলে আমরা আলাদা জাতিসত্তা ও স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিুত হয়।
বিগত ৬০ বৎসর ধরে ভারতে মুসলমানদের যে দুর্দশা চলছে, ভারত বিভক্ত না হলে বাংলাদেশের মুসলমানদেরও একই দুরবস্থা হতো। পাকিস্তান হওয়ার কারণেই সর্বক্ষেত্রে মুসলমানদের এত ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছিল। ভারত বিভক্ত না হলে ১৯৪৭ সালের পর বাংলাদেশ ভূখণ্ডের যে উন্নতি হয়েছে তা কখনো হতো না। আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি ৪৭ এর দেশ বিভাগের ফল হিসেবেই।
বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ আল্লাহকে বিশ্বাস করে, রাসূল (সা)-কে মহববত করে এবং কুরআনকে ভক্তি ও শ্রদ্ধা করে। রাসূল (সা) কুরআনের জীবন বিধান বাস্তবে চালু করেই ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েম করেন। তিনি ইসলামকে শুধু কতক অনুষ্ঠানসর্বস্ব ধর্ম মনে করেননি। মানবজাতির পার্থিব সুখ-শান্তি ও আখিরাতে সাফল্যের জন্যই আল্লাহ কুরআন নাযিল করেন।
বাংলাদেশে ধর্মহীন সেক্যুলার মতবাদ কায়েম করা হলে কংগ্রেসের ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সাথে কোনো পার্থক্য আর থাকবে না এবং ভারত বিভাগ ও আমাদের আলাদা স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের কোনো যৌক্তিকতা থাকবে না। এই কারণেই আমরা বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন, সুখী ও ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। তাহলেই আমাদের স্বাধীনতা অর্থবহ হবে। তা না হলে এদেশ একদিন ভারতীয় জাতীয়তাবাদের কবলে পড়ে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশের সেক্যুলার সরকার আমাদের স্বাধীন ও স্বতন্ত্র জাতীয়তার ভিত্তি ইসলামকে এ দেশের জনজীবন থেকে উচ্ছেদ করে কংগ্রেসের ভারতীয় জাতীয়তাবাদের আগ্রাসনের পথই পরিষার করছে।
আমি মুসলিম দেশবাসীর প্রতি আকুল আবেদন জানাই, যেন তারা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে এ দেশে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েমের জন্য জান-মাল দিয়ে প্রচেষ্টা চালান। কারণ, এটা ঈমানেরই দাবি এবং এটা স্বাধীনতারও একমাত্র গ্যারান্টি।
অনেকেই গোলাম আজমকে রাজাকার প্রমাণ করতে বিভিন্ন মিথ্যা পেপার কাটিং ছড়িয়ে দিচ্ছে ইন্টারনেটে । তাদের উদ্দেশে বলতে চাই,
তোমাদের পেপার কাটিং যদি সত্যই হয় তবে তা ট্রাইব্যুনালে উত্থাপন করনি কেন ? ভণ্ডামির একটা সীমা থাকা দরকার।
গোলাম আজম রাজাকার নন এ কথা অনেক তরুণ বিশ্বাসই করতে চাইনা।কারণ তারা চলে আবেগ দিয়ে, যুক্তির ধার ধারেনা।
হিটলারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গোয়েবোলস একটা কথা বলতেন ,’একটা মিথ্যা কথা ,একশো লোকের কাছে প্রচার করলে তা সত্য হয়ে যায়।‘
আমাদের মিডিয়া গোয়েবোলসের এ নীতি মেনে বহুদিন থেকেই প্রচার করে আসছে জামায়াত নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতা বীরুধী ।
তারা এ অপপ্রচারে সফলও হয়েছে।
যখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সময় গোলাম আযমের বাসায় গিয়ে তার কাছে দোয়া নিয়েছিলেন তখন জামায়াত নেতৃবৃন্দ যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না ।
যখন জামায়াত নেতাদের সাথে একসাথে আন্দোলন করছিলেন তখনও জামায়াত নেতৃবৃন্দ যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না ।
যখনি আওয়ামীলীগের আতে ঘা লেগেছে তখন থেকেই মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বলা হচ্ছে জামায়াত নেতৃবৃন্দ যুদ্ধাপরাধী !!
একথা চিরন্তন সত্য , আজ যদি অধ্যাপক গোলাম আজম আওয়ামীলীগের কেও হতেন, তবে আমি নিশ্চিত জিল্লুর রহমানের বদলে তাকেই রাষ্ট্রপতি করা হত।
কিন্তু তার অন্যায় একটাই তিনি ইসলামী আন্দোলনকেই জীবনের পাথেয় হিসাবে গ্রহণ করেছেন।
অধ্যাপক গোলাম আজমের ন্যায়বিচার চাইনা।
কারণ, প্রহসনের ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।
তবে ব্লগার নজরুল ইসলাম টিপু ভাইয়ের ভাষায় বলতে চাই,
‘শ্রদ্ধেয় গোলাম আজম ,আপনার বিচার আদালতের কাঠগড়ায় হবে, সেই বিচার দেখার প্রত্যাশায় রইলাম। তবে ইতিহাসের দুটি করুণ দিক তুলে ধরলাম জাগ্রত বিবেকের চেতনার প্রতি। তিউনিসিয়ায় ইসলামী আন্দোলনের নেতা রশিদ ঘানুসীকে, বেন আলী সরকার বহুবার ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল। ফল হল এমন, রশিদ ঘানুসী ফাসিতে মরেন নাই তিনি নিজেই তার মৃত্যুদণ্ড উপভোগ করার জন্য বেন আলীর কোমা আক্রান্ত দেহের দিকে তাকিয়ে আছেন। মিশরের শাহ ফারুক জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে, ইসলামী নেতা হাসান আল বান্নার লাশকে দাফন করেছিল। ফল হল এমন, শাহ ফারুকের প্রতি অবিকল একই অবিচার হয়েছিল জামাল নাসেরের হাতে। আবার সেই জামাল নাসের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে ইসলামী আন্দোলনকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ইসলামী আন্দোলনের প্রধান নেতা সাইয়্যেদ কুতুবকে গোপনে ফাঁসিতে লটকিয়েছেন। ফল হল এমন, সেদেশের অলি গলিতে এখন সাইয়্যেদ কুতুবের সাথীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং আমেরিকা তাদের কাছে, নাকে খত মারতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তুরস্কে ধর্মনিরপেক্ষ বাদী সরকার ও সামরিক জান্তা, নাজিমুদ্দিন আরবাকানের ইসলামী সরকারকে, প্রতি পদে নাজেহাল করেছিল। ফল হল এমন, দাড়ি মোচ বিহীন এমন এক শক্তির উদ্ভব হল, যারা মসজিদের জামায়াতে লাইন লাগিয়ে কাতার বন্ধী হয়ে দাঁড়ান এবং সমুদয় অপবাদের মূলোৎপাটন করেন। যাদের হাতে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ভূলুণ্ঠিত হল এবং সামরিক জান্তার প্রত্যেক দোষী সদস্যকে ইঁদুরের মত পাকড়াও করে জেলের প্রকোষ্ঠে ভরা হল।‘
তথ্যসূত্রঃ জাতীয় দৈনিক,ব্লগ,ওয়েবসাইট
বিষয়: বিবিধ
২৪১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন