হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু

লিখেছেন লিখেছেন জলি্ ২৮ মার্চ, ২০১৩, ০২:৪৪:০৯ দুপুর

http://www.dailyinqilab.com/details_news.php?id=99616&&%20page_id=%205

মিনা ফারাহ : মূর্তি ভাঙার ধুম পড়েছে। এই দফায় অধিক জড়িত, রাজনৈকিত হিন্দুরাই বেশি। জামায়াত-বিএনপি নয়, এমনকি হিযবুল তাহেরিও নয়, সাম্প্রতিককালে হিন্দুদের সবচে’ বেশি ক্ষতি করেছে হিন্দুরা এবং অসাম্প্রদায়িক দলের নামে ছোট ছোট গোষ্ঠীগুলোর ক্ষতি করেই চলেছে আওয়ামী লীগ। সংবিধানে সবাইকে বাঙালি বানিয়ে ঐতিহাসিক নৃগোষ্ঠী হত্যা করেছে। বিশেষ করে হিন্দুরা আওয়ামী লীগের একচেটিয়া ভোট ব্যাংক। অথচ ’৭৩ এ রমনা মন্দিরে ব্যুলডোজার মারা এবং ’৭৫ এ অর্পিত সম্পত্তির গেজেট জারি করে ৩০ লক্ষ বিঘা জমি দখলসহ আরো প্রায় ২ কোটি হিন্দু দেশ ছাড়া করার মতো কাজ আওয়ামী লীগই করেছে কারণ ’৭৮ এর আগে বিএনপি ছিল না। জামায়াত তখন নিষিদ্ধ। যেহেতু আওয়ামী লীগই সর্বপ্রথম মাঠ পেয়েছিলো তাই শুরু থেকেই যদি বাঁশ আর লগি-বৈঠার রাজনীতি বাদ দিয়ে বুদ্ধিভিত্তিক রাজনীতি করতো, তাহলে অবস্থা এতো ভয়ংকর হতো না। বরং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দ্রুততম সময়ে কয়েকটি উন্নতির ধাপ অতিক্রম করতো। কিন্তু তা না হওয়ার কারণ শুরু থেকেই রাজনীতিতে লগি-বৈঠার তা-ব। ২৪ বছরে না হোক, ৪০ বছর পর স্বাধীন হলে সমস্যা কি? ১৯৩৭ সন থেকে বাংলা তো বাঙালি মুসলমানদের শাসনেই ছিলো। জাতীয়তাবাদের আদর্শে কংগ্রেসীদেরকেও হার মানিয়ে বৃটিশ তাড়াও আন্দোলনে দেশবিভাগের নেতৃত্ব দিয়েছিলো জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে মুসলিম লীগ। সেই চেতনা ধরে রাখতে পারলে, ৭ মার্চ ছাড়াই স্বাধীন হতো না বলা যাবে না। মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে গিয়ে যুক্তফ্রন্টের আয়ু কয়দিন? সমস্যা, ভোট ব্যাংক হিন্দু আর সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগ। ৫২ সন থেকেই এদেশের বাঙালিরা মগজ এবং মেরুদ- দুটোই হারিয়ে কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, সহ্য করছে লাঠি আর বৈঠার অত্যাচার। যারা কোনটাই নয়, তারাই মেরুদ-হীন অবস্থায় বেঁচে আছে।

স্বাধীনতার জন্য নেলসন মেন্ডেলা ২৭ বছর একটা ৭/৮ হাত কক্ষে কাটিয়ে দিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে গান্ধি যখন ভারতে ফিরলেন সেটা ছিলো ১৯১৫ সন। কৃতদাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়েছিলা ১৮৬৫ সনে কিন্তু সত্যিকারের মুক্তি এসেছে ১৯৬৫ সনে। ২০০ বছর বৃটিশ শাসন শেষে দেশবিভাগ হয়েছে। ৫২ থেকে’ ৭১ ... সকলেই আমরা তাড়াহুড়ো স্বাধীনতার মাশুল দিচ্ছি ৪২ বছর।

আন্দোলন দানা বাধে। আন্দোলন জমে ওঠে। পরিপক্বতা লাভ করে। ১৯১৫ সনে ভারতে ফিরে সংগ্রামের আগে ব্যারিস্টার গান্ধির অহিংস সংগ্রামী ইতিহাস তাকে গান্ধি বানিয়েছিলো। মেন্ডেলা যদি ২৭ বছরের ইতিহাস সৃষ্টি না করতেন, দক্ষিণ আফ্রিকার এতো উন্নতি হতো না অর্থাৎ বিচক্ষণ এবং যোগ্য রাজনীতিবিদরাই তৈরি করে শক্তিশালী অর্থনীতি। তাদের মাথাপিছু আয় বেড়ে প্রায় ১১০০০ ডলার। অথচ ১৯৯২ সনে স্বাধীনতা পাওয়া দেশটিতে আমরা ৪২ বছর পরেও মানবসম্পদ রফতানির জন্য ধন্যা ধরি। কেন? কারণ ৪২ বছর পরে আমাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতা আর অর্থনৈতিক অক্ষমতা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে অদক্ষ, অযোগ্য, অপদার্থদের কারণে। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পর্যন্ত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং সবচে’ বড় গণতান্ত্রিক দেশে উন্নিত হয়েছে। স্বাধীনতা তো আসবেই। কিন্তু দুঃখজনক যে, মুজিব একা নন অন্যরাও ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত যাদের নাম আর উচ্চারণ পর্যন্ত হয় না। এবার বই পুস্তক থেকেও প্রায় সবার নাম উধাও করেছেন দেশরতœ। সারা দেশজুড়েই পরিবারতন্ত্রের বুর্জোয়া শাসন। মিরপুরের দুই মাইল রাস্তা পার হওয়া আমার জন্য কতো যে কঠিন। সেখানে কামাল মজুমদারের নেতৃত্বে পরিবারতন্ত্রের অন্তত হাজার পোস্টার দেখতে দেখতে ক্লান্ত চোখ। এই দৃষ্টান্ত একমাত্র সাদ্দাম হোসেনদের বেলায় প্রযোজ্য হলেও আমাদের ক্ষমতাসীনদের মূর্তি আর পোস্টারের বাহার দেখলে গণতন্ত্রের হৃদপি- বেরিয়ে যায়। গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে “বাচাল” বলায় মামলা ঠুকে দিলো স্তাবক লীগার আর ওবামাকে মিথ্যুক বলে জনপ্রিয় হলেন বিরোধী দলের সারা পেলিন? অর্থাৎ গণতন্ত্রের মানসকন্যার সমালোচনা নিষেধ কিন্তু কোন গীতার লেখা তা বলেনি আওয়ামী লীগ বিশেষজ্ঞরা। এতোকাল জেনেছি কোরআন শরীফে পরিবর্তন নিষেধ। শেখ হাসিনার দাবি, দেশে কথা বলার অধিকার আছে।

বিভ্রান্তিকর গণতন্ত্রের একটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে আরব বসন্তের সঙ্গে। আজ মিসরের কি অবস্থা? তাহেরি স্কোয়ার কোন স্বাধীনতাকামীদের আন্দোলন নয় বরং পশ্চিমা প্রণোদনায় একদল বিদ্রোহী সৃষ্টি করে আরব বসন্তের নামে সা¤্রাজ্যবাদ। মাত্র দেড় বছরে মোবারক বিদায়সহ তিউনিসিয়া, লিবিয়া, মিসর সব ভেঙেচুড়ে পড়ছে আর খনিজসম্পদ লুটপাটকারীরা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আজ মধ্যপ্রাচ্যের রক্তাক্ত স্কয়ার-স্ফকায় ব্যর্থ। মিসরে এখন হার্ভার্ড শিক্ষিত স্বৈরাচার যে নাকি নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান একসঙ্গে ডুবছে। এর নাম যদি গণতন্ত্র হয় তাহলে ৪২ বছর পর আমাদের গণতন্ত্রের ঠিকানা কার হাতে? স্কোয়ারের নামে ভারতীয় গুপ্তচরদের প্রবেশ উদ্বেগজনক।

বিপ্লব করেছেন হো-চি-মিন ক্যাস্ট্রো এবং হুগো স্যাভেজ। এতো বছর পরেও সেসব বিপ্লবের ধারা এবং আদর্শ প্রণিধানযোগ্য। ব্রিটিশ বিরোধী অসহযোগ আন্দোলন হয়েছিলো। ফলে ৪২ থেকে’ ৪৭ ... ফিরিঙ্গিরা দেশ ছাড়লো ন্যূনতম রুক্তপাতে। কিউবা, কম্বোডিয়া, রুয়ান্ডা, বসনিয়া, সার্বেনিকা, ভিয়েতনাম... সংগ্রামের পর সংগ্রাম। কিন্তু বিপ্লবের গণতান্ত্রিক ধারা কতোটুকু রক্ষা করেছে মুজিব লীগ? আমাদের অসহযোগ আন্দোলনের অর্জন কি? ৩৯ বছর পরে একদিনে পুলিশ দিয়ে অন্যের দেশের গণতন্ত্র পাহারা দেই অন্যদিকে নিজ দেশে সেই পুলিশ দিয়েই গণহত্যা করি।

মুক্তি নয় বরং ক্ষমতার জন্য ৬ আর ১১ দফা। এতো দ্রুত দফার পর দফা দিয়ে খান সাহেবদেরকে উত্তেজিত না করলে হয়তো এভাবে ঝাপিয়ে পড়তো না। ’৭০ এ না দিলে, ৭৫ এ কিংবা ৮৬ তে দিতো কিন্তু এতো রক্তপাত হয়তো এড়ানো যেতো এবং জাতিও ১০০ ভাগে বিভক্ত হতো না। ৭১ -এর মাধ্যমে কংগ্রেস ঘেঁষা বাংলাদেশ আজ অস্তিত্ব সংকটে। দেশের অধিকাংশ মানুষ তা পছন্দ করে না। মুজিবের অভিযোগ সত্য হলে, পাকিস্তানীরা যা নিয়েছিলো, সেই তুলনায় শেখ হাসিনার অপদার্থ শাসনামলে বারবার হলমার্ক আর শেয়ারবাজারওয়ালারা কি উল্টো পাকিস্তানীদেরকেই লজ্জা দেয়নি?

একটি জাতির সবচে’ বড় অর্জন স্বাধীনতা। সঙ্গে গণতন্ত্র এবং সার্বভৌমত্ব। মুসলিম লীগ’ ৭১ সনে যুদ্ধ করেছিলো পাকিস্তান রক্ষায়। ভারত আমাদেরকে’ ৭১ এ সাহায্য করে একই সঙ্গে উপনিবেশ বানানোর কাজে কাছে পেয়েছে আওয়ামী লীগকে। মুজিবের ভারত প্রীতির শুরু আগরতলা ষড়যন্ত্র দিয়ে। তখন থেকেই কংগ্রেসের একটি হিসেব ছিল। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মাধ্যমেই মুজিব জনপ্রিয় হয়েছেন এবং তখন থেকে কংগ্রেসঘেঁষা দলটি বারবার অসাম্প্রদায়িকতার নামে হিন্দুদেরকে লগ্নি করে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে দিল্লীর কাছে।

এরপর কি হলো? ‘র‌্য’ -এর প্রেতাত্মা এদেশ থেকে যায়নি বলেই স্বাধীনতা পেয়েছি, স্বার্বভৌমত্ব পাইনি। স্বাধীন দেশের মানুষেরা সা¤্রজ্যবাদী ভারতের কাছে ৭১ -এর দেনা শোধ করতে করতে প্রায় কলোনি। ৭৫’ এর পর, শেখ হাসিনারা দিল্লীতে

বিষয়: বিবিধ

১৪২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File