শাহবাগি তরুণের বৈশিষ্ট্য
লিখেছেন লিখেছেন জলি্ ১৮ মার্চ, ২০১৩, ১১:৪৩:৩৬ সকাল
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/03/18/192456
শাহবাগিদের সরকারঘোষিত দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের নেতা ও তরুণ প্রজন্মের আদর্শ বলে সাব্যস্ত করেছে আওয়ামী লীগ, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও। তথাকথিত আদর্শ বনে যাওয়া এ নেতাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খুঁজে দেখা যায়, এদের অনেকে নষ্ট চরিত্রের এবং বাবা-মায়ের অবাধ্য সন্তান। এদের একজন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ) সভাপতি হুসাইন আহমেদ তফছির। গত বিশ বছর ধরে তফছির তার বাবার সঙ্গে কথা বলেন না বলে জানা যায়। আত্মপূজারী এ ছাত্রলীগ নেতা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে চলছেন গত দুই দশক ধরে। ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে শাহবাগের আন্দোলনে জড়ানোর কারণে তাকে অবাঞ্ছিত ও প্রতিরোধের ঘোষণা করেছেন তার বাবা। বর্তমানে ভবঘুরে তফছির নিজের পরিচয় গোপন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে শাহবাগি নাস্তিকদের সঙ্গে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তফছির দাবি করেছেন, তার বাবা এমন কথা বলেননি। যারা প্রচার করছে, তারা মিথ্যা প্রচার করছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তফছির। নয় ভাইবোনের মধ্যে তার অবস্থান প্রথম। তার ছোট ভাই হাফেজ খলিল আহমেদ সরাইল উপজেলা খেলাফত মসলিসের সভাপতি। ছোট বোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। বাবা মাওলানা হাফেজ উবায়দুল্লাহ বিদগ্ধ আলেম ও ইসলামি চিন্তাবিদ। তিনি দীর্ঘদিন স্থানীয় মসজিদের পেশ ইমাম ও আলীনগর দারুল উলুম মাদরাসার ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। ইসলামি পরিবারের ঐতিহ্য ও ভাবধারায় বেড়ে ওঠে তফছির। মাদরাসা থেকে সরাইল স্কুল ও কলেজ থেকে ১৯৮৪ এবং ১৯৮৬ সালে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। বাম চিন্তাচেতনা প্রচার করায় স্থানীয় মাহফুজ ও মোকসেদুল ইসলাম তাকে পিটিয়ে গ্রামছাড়া করে। এরপর রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে অনার্সে ভর্তি হন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে। কলেজজীবন থেকে সক্রিয়ভাবে তিনি বাম রাজনীতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (জাসদ) সঙ্গে জড়িয়ে পরেন। তার এ রাজনীতি-সংশ্লিষ্টতায় নাখোশ হন ইসলামি চিন্তাবিদ বাবা ও পরিবারের সদস্যরা। তাকে বারবার নিষেধ করা হলেও তিনি প্রগতিশীলতার নামে বাম রাজনীতি চালিয়ে যান। খোঁচা দাড়ি সর্বদা পাঞ্জাবি-পায়জামা পরিধান করা এ লোকটিকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তার আপাদমস্তক বাম চিন্তাধারা বিস্তৃত রয়েছে।
৪৫ বছর বয়সী এ ছাত্রলীগ নেতা ২৫ বছর ধরে রাজনীতি করছেন। প্রগতিশীলতার প্রতি অতি উত্সাহী তফছির জেলা পর্যায়ে জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতির পদসহ গত ১৩ বছর ধরে তিনি কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি।
বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার প্রথম পাঁচ বছর বাবা মাওলানা হাফেজ উবায়দুল্লাহ তাকে বারবার ইসলামি ভাবধারায় ফিরে আসতে বলেন। এসময় তফছির তার বাবার আদেশ অমান্য ও উপেক্ষা করেন।
বাবা তাকে বারবার ফাসেকি নীতি ছেড়ে ফিরে আসার আহ্বান করায় তফছির বাবার সঙ্গে কথা বলা ছেড়ে দেন বলে জানান তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। কিন্তু বাবা নিরাশ হননি। তিনি যখনই যেভাবে হোক ছেলেকে বোঝাতে চেষ্টা করেন। তবে উগ্র স্বভাবের এ ছেলে বাবার কোনো কথা শোনেন না। বাবা কথা বলতে গেলে অন্যদিকে চলে যান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২০ বছর তফছির বিভিন্ন সময় বাড়িতে গেলেও তার বাবার সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। এমনকি শ্রদ্ধামিশ্রিত ভদ্র ব্যবহারটুকু পর্যন্ত করেন না।
এদিকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধ করার দাবি জানান শাহবাগি সরকারি তরুণরা। তরুণ প্রজন্মের নামে বাম রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের নাস্তিক কর্মীরা ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের জমিয়ে রাখা দীর্ঘদিনের আক্রোশ প্রকাশ শুরু করে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পবিত্র ধর্ম ইসলাম ও প্রিয় নবী (সা.) এবং মহান আল্লাহকে নিয়ে অভাবনীয় কটূক্তি শুরু করে।
এ সময় তফছির নাস্তিক মুরতাদের নেতা ইমরান এইচ সরকারের পাশে সমর্থন দেন। নাস্তিকদের কটূক্তির প্রতিবাদকারী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের তিনি বিষোদ্গার করেন।
ছেলের ইসলামবিদ্বেষী অবস্থান ও নাস্তিকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাবা মাওলানা হাফেজ উবায়দুল্লাহ। তিনি গত শুক্রবার সরাইলে উন্মুক্ত মঞ্চে ধর্মদ্রোহীদের সহোযোগিতা করায় নিজ ছেলেকে প্রতিরোধ করার জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আহ্বান জানান। তফছিরের ওপর তার পুরো এলাকা এখন নাখোশ ও ক্ষিপ্ত বলে জানা যায়।
তবে তার বাবা এমন কথা বলেননি দাবি করে তফছির বলেন, আমার বাবা একটু রাগী। তিনি আমার বিষয়ে এমন কথা বলেননি। যারা প্রচার করছে তারা মিথ্যাচার করছে।
বাবার সঙ্গে কথা বন্ধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তফছির বলেন, এটা সত্য নয়।
এদিকে নাস্তিকদের সঙ্গে আঁতাত করায় নিজ অস্তিত্ব নিয়ে সঙ্কটে পড়েছেন তফছির। এখন ভবঘুরে হয়ে নিজের পরিচয় গোপন করে চলছেন। এর আগে ফকিরাপুল এলাকায় থাকলেও এখন সেখানে থাকেন না বলে জানা যায়।
বিষয়: বিবিধ
৯৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন