একটি বেদনাময় হৃদয়ের অাকুল অাকুতি

লিখেছেন লিখেছেন শিশিরভেজা ০৫ মার্চ, ২০১৫, ০৩:৩৮:২৫ দুপুর

বিডি টু ডে ব্লগে অনেক বিজ্ঞ লোকের বিচরণ। তাই একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয়ে অাপনাদের স্মরনাপন্ন হলাম। অাশা করি অাপনাদের কাছ থেকে কোরঅান হাদীছের অালোকে সুন্দর পরামর্শ ও মীমাংসা পাবো।

মা-বাবা ও সকল ভাইবোনদের অতি অাদরের ছোট বোন। সবার ইচ্ছা ছিলো এই বোনটিকে ভালোভাবে পড়ালেখা করিয়ে যোগ্য করে তুলবে। অাদর যত্নের কোনো অভাব ছিলোনা। মুর্খ মা-বাবার ইচ্ছার সাথে পেরে উঠতে না পেরে অল্প বয়সেই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠিত ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দিতে হলো। যদিও ভাই-বোন কেউ রাজী ছিলোনা।

বোনের সংসার সুখেই যাচ্ছিলো ২ সন্তান ও স্বামী নিয়ে। মা-বাবার অতি অাদর ও তাদের সাপোর্ট পেয়ে বোনটি স্বামী সহ ভাই-বোনদের কারো কোনো তোয়াক্কা করতোনা। কারো কোনো পরামর্শ গ্রহন করতোনা। মান-সম্মানের কোনো চিন্তা-ভাবনা ছিলোনা। স্বামী-সন্তানদের কোনো কেয়ার করতোনা। ইচ্ছামতো এদিক-সেদিক ঘুরাফেরা করতো। কেউ কিছু ভাবুক বা বলুক এসব ব্যাপারে কোনো মাথাব্যথা ছিলোনা। ভাইয়েরা বোনদের ব্যপারে কিছু বললে মা উল্টাপাল্টা ভাইদের বলতো। মা বলতো ভাইয়েরাই বোনের বদনাম করে। মানুষতো কিছু বলেনা। শেষ পর্যন্ত বোনটি সবার অবাধ্য হয়ে যায়।

মা-বাবার কথায় অাসা যাক। মা-বাবা অন্যান্য সন্তানদের কথা না ভেবে শুধু এই বোনটিকে নিয়েই ভাবতো। বাবার সব সঞ্চিত অর্থ এই মেয়েটিকে দিয়ে দিতো। যদিও তার স্বামীর সংসারে কোনো অভাব ছিলোনা। অন্যান্য বোনদের সংসার জীবন খুবই করুণ থাকা সত্বেও মা-বাবা ওকেই বেশী সহযোগিতা করতো সবদিক দিয়ে। মা-বাবা লেখাপড়া জানেনা বলে ইসলাম সমন্ধেও সঠিক কোনে ধারনা নাই। অার তাই সব সন্তানদের সমান অধিকার বা সবাইকে সহযোগিতা করা দরকার তা তাদের চিন্তাই ছিলোনা।

এবার অাসা যাক ছেলে বৌদের সাথে তাদের অাচরণ। বাবা মোটামুটি ঠিক অাছে তেমন সমস্যা নাই। তবে ছেলেদের রোজগারের টাকা খরচ না করে অাত্মাকে কষ্ট দিয়ে নাত-নাতনীদের ভাগ্যে তেমন ভালো খাবার তুলে দেয়না। মাসিক খরচের টাকা বাচিঁয়ে অাদরের ১টি মাত্র মেয়েকে দিয়ে দেয়। অার সবকিছুই ছিলো তাদের একটি মাত্র মেয়ের ঘরের নাত-নাতনীকে ঘিরে।

মা সারাদিন বউদের দোষত্রুটি খোঁজে বেড়ায়। শ্বাশুড়ীর ভয়ে বউয়েরা সঠিক কথাও স্বামীদের সাথে বলার সাহস পায়না এই জন্য যে ছেলেরা ব্যবসা উপলক্ষে বাইরে চলে গেলে বউদের অার শান্তি নেই। সারাদিন তাদের গালি গালাজ করবে। শুধু তাই নয় তাদের চৌদ্দ গোষ্ঠীকে তুলে বলবে। বউেয়রা খুবই ভালো। বৌদের সবার মাঝে ভালো মিল। একটাই মাত্র সমস্যা অার তা হলো শ্বাশুড়ী।

ছেলেরা চায় সংসার খরচ যা লাগে লাগাতে। বাবা কৃপন অার মা কাউকে শান্তিতে খেতেও দেয়না অার থাকতেও দেয়না। বউদের কোনো অাত্মীয় মা-বাবা অাসলে শ্বাশুড়ীর ভয়ে না খেয়ে চলে যেতে হয়। সংসারে কোনো অশান্তি নাই। শুধু এই মার কারণে পুরো বাড়ীতে সবসময় অাগুন লেগেই থাকে। ছোট্ট একটি কথাকে নিয়ে মা সারাদিন বকবক করতে থাকে। বউয়েরা শ্বাশুড়ীর যন্ত্রনায় অতিষ্ট। ছেলেরাও মা-বাবার অধিকারের কথা ভেবে সব মুখ বুঝে সহ্য করছে। মা-বাবার বয়স ৭০ এর উপরে। দুইজনই দুর্বল হয়ে পড়েছে বয়সের ভারে। তারপরও ওরা মরনকে ভয় পাচ্ছেনা।

অাল্লাহর ভয় দেখিয়েও কোনো লাভ হচ্ছেনা। কিন্তু ছেলেরা সবাইকে নিয়ে সুখে থাকতে চায়। কোনো ঝগড়া-বিবাদ চায়না। মা-বাবার মনে কষ্টও দিতে চায়না। কিন্তু এভাবে অার কতোদিন। বউদের কি দোষ। স্বামীর কারণে বউয়েরা কেনো এতো যন্ত্রনা সহ্য করবে। বউয়েরাও চায় মা-বাবাকে সাথে নিয়েই চলতে। বউয়েরা যা পাক করে দিবে বুড়াবুড়ী তাই খাবে অার সময় মতো অাল্লাহর এবাদত করবে। বউয়েরা খুবই পরাধীন। এ বয়সেও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি সংসারের পুরো দায়িত্ব বউদের হাতে দিচ্ছেনা। শ্বশুর-শ্বাশুড়ি যা দেয় তাই বউয়েরা পাক করতে হয়।

এই অবস্হায় ছেলেরা কি ভুমিকা নিতে পারলে সংসারে শান্তিতে থাকা যাবে। মা-বাবাও যেনো কষ্ট না পায় অার বউরাও যেনো শান্তিতে থাকতে পারে। ইসলামী শারীয়া কি বলে। দয়া করে জানালে উপকৃত হবো। কষ্ট করে অাপনাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

বিষয়: বিবিধ

১৩৭১ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

307413
০৫ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:২৩
আফরা লিখেছেন : আমি কোন পরামর্শ দিতে পারব না তবে লেখাটা পড়ে মনে হল লেখাটা এক তরফা হয়েছে ।
০৫ মার্চ ২০১৫ রাত ০৯:২০
248657
শিশিরভেজা লিখেছেন : ধন্যবাদ অাপু মন্তব্য করার জন্য। তবে লেখাটা মোটেই একতরফা হয়নি। তাছাড়া নিজের মা-বাবাকে তো অামরা ভালো করেই চিনি।
০৫ মার্চ ২০১৫ রাত ০৯:২৯
248658
আফরা লিখেছেন : কি জানি ভাইয়া আপনার কথাই ঠিক হবে যদি আপনি ভুক্তভুগী হয়ে থাকেন । আমার মনে মা কি কখনো এমন হয় ! আমার কথায় আপনি কষ্ট লেপে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন ।

আপনাদের প্রতি আমার সববেধনা ও দুয়া রইল আল্লাহ আপনাদের সব সমস্যার সমাধান করে দিন যাতে আপনারা সুখে শান্তিতে থাকতে পারেন ।
307420
০৫ মার্চ ২০১৫ রাত ০৯:০১
আবু জারীর লিখেছেন : প্রথমেই আপনার প্রতি এবং আপনাদের মজলুম বৌদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

শরিয়তের সিদ্ধান্ত খোজার আগে বাবা মাকে এবং নিজেদেরকে শরিয়তের জ্ঞানে জ্ঞানি করে তোলা জরুরী, যতটা সম্ভব।

আপনার প্রতি আমার আবেদন হল, মা-বাবা, সান্তান, প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজনের অধিকার সংক্রান্ত কুর'আন-হাদীসের আলোকে লেখা কিছু বই সংগ্রহ করে প্রথমে নিজে পড়ুন, ভাই ভাবিদের পড়ান, বোনদের পড়তে দিন। সপ্তাহ শেষে একটা পারিবারিক বৈঠকে বসুন। সপ্তাহ শেষে পঠিত চাপ্টারের উপর সম্মিলিত আলোচনা করুন। মা-বাবা পড়তে না পারলে আপনিই দায়িত্ব নিয়ে তাদের পড়ে শুনান। আপনার সমস্যার সমাধান ইনশা'আল্লাহ করে দিবেন ইনশা'আল্লাহ।
307422
০৫ মার্চ ২০১৫ রাত ০৯:২৬
শিশিরভেজা লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাইয়া অাপনার সুন্দর পরামর্শের জন্য। শরীয়াতের সামন্য জ্ঞান অাছে বলেইতো মা-বাবার খেদমত করতে চাই অার ওরা যতো অপরাধই করুক তাদের মনে কষ্ট দিতে চাইনা। তবে অামরা ভাইয়েরা যে জীবিকার নির্বাহে মা-বাবাকে সময় দিতে পারছিনা। অার তাই সঠিক শরীয়াকে তাদের সামনে তুলে ধরতে পারছিনা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File