নরসিংদীতে কাউন্সিলার নির্বাচন/মনোনয়নে ব্যাপক দুর্নীতি ও টাকার ছড়াছড়ি
লিখেছেন লিখেছেন শিশিরভেজা ২৯ নভেম্বর, ২০১৪, ০৩:৪০:৪২ দুপুর
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
নরসিংদী সদর। নরসিংদী জেলার সংসদীয় অাসন নাম্বার-১। সরসিংদী জেলায় মোট ৫টি সংসদীয় অাসন রয়েছে। স্বৈরশাসকের পতনের পর থেকে প্রতিটি সংসদীয় নির্বাচনে ৪টি অাসনই বিএনপির দখলে ছিলো। নরসিংদী তাঁত শিল্প ও সাগর কলার জন্য বিখ্যাত। নরসিংদীর বাবুরহাট বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কাপড়ের পাইকারী বাজার।
এডভোকেট অাসাদুজ্জামান। নরসিংদী জেলা অাওয়ামী লীগের সভাপতি। দীর্ঘদিন ধরে অাওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। তার পুরো জীবনে রাজনৈতিক কোন সাফল্য নেই। যতোবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন ততোবারই বিপুল ভোটে পরাজয় বরণ করেছেন। তবে তার জীবনের সাফল্য হলো যে বছর তত্বাবধায়ক সরকার দয়া করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার মসনদে বসার সুযোগ করে দিয়েছেন সে বছর তাকে মনোয়ন দেয়া হয়নি।
নজরুল ইসলাম হিরু। বলতে পারেন জিরো থেকে হিরু। নরসিংদি সদর এর সংসদ সদস্য। তার নাম এর অাগে কেউ শুনেছে বলে অামার জানা নেই। আওয়ামী অান্দোলনের ফসল মইনু-ফখরুদ্দিনের সরকার দয়া করে অবসর প্রাপ্ত সেনা নজরুল ইসলাম হিরুকে ক্ষমতার মসনদে অারোহন করান। সেই থেকে তিনি জিরো থেকে হিরু।
ইসমাইল হোসেন সিরাজী । বি এ পাশ। সদরের অদূরে নজর পুর ইউনিয়ন পরিষদ অাওয়ামী লীগের সভাপতি সেই দীর্ঘদিন যাবৎ। ছাত্র জীবন থেকেই অাওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত।মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। একসময় এলাকায় বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। বর্তমানে ব্যবসা বানিজ্য নিম্নমুখী হওয়ায় সব ব্যবসা ক্লোজ করে অবসরে অাছেন। অার অাওয়ামী রাজনীতির সাথে পুরো সময়টাই ব্যয় করছেন।
বাদল মিয়া। পিতা হানিছ মুন্সী ( চরমোনাই মুরীদ)। বাদল মিয়ার তেমন লেখাপড়া নাই। নতুন ব্যবসায়ী। ৫ বছর যাবৎ বোখারী লুঙ্গীর ব্যবসা করে শহরে পরিচিতি লাভ করেন। রাজনৈতিক কোন পরিচয় নেই। অাওয়ামী লীগের নতুন সদস্য হিসাবে নিজের নাম লিখিয়েছেন মাত্র কয়েকদিন অাগে।
পুরো বাংলাদেশে চলছে অাওয়ামী লীগের কাউন্সিলার নির্বাচন/মনোনয়ন। দলীয় কোন্দলে প্রার্থীতা/ক্ষমতা নিয়ে অনেক খুনের ঘটনা ঘটছে। সেই ধারাবাহিকতায় নরসিংদী সদরে নজরপুর ইউনিয়নে চলছে সভাপতি/কাউন্সিলার নির্বাচন। এখানে সভাপতি হিসাবে প্রার্থী হয়েছেন কয়েকজন। তম্মধ্যে ইসমাইল হোসেন সিরাজী ও বাদল মিয়া হলো মূল প্রার্থী। এ দু'জনের মধ্যেই চলছে প্রতিযোগীতা যদিও বাদল মিয়া ইসমাইল হোসেন সিরাজীর কাছে বিপুল ভোটে পরাজয় বরণ করবেন বলে সবায় জানে।
ইসমাইল হোসন সিরাজী হলেন জেলা অাওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট অাসাদুজ্জামানের প্যানেল। অার বাদল মিয়া হলেন সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরুর প্যানেল। জনমত যাচাই জরিপে ইসমাইল হোসেন সিরাজী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন। এ অবস্হা দেখে নজরুল ইসলাম হিরু জেলা সভাপতির মাধ্যমে ইসমাইল হোসেন সিরাজীকে ডেকে এনে ভয়ভীতি ও অস্ত্রের মুখে নির্বাচন থেকে পদত্যাগ করাতে বাধ্য করেন। সেই সাথে নির্বাচনের অাগের দিন বাদল মিয়াকে নজরুল ইসলাম হিরুর মতো জিরো থেকে হিরু বানিয়ে দেন। বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় তাকে নজরপুর ইউনিয়ন সভাপতি হিসাবে ঘোষনা দিয়ে দিন। অার তার পিছনে মূল শক্তি হলো বাদল মিয়া নজরুল ইসলাম হিরুকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে খরিদ করে নিয়েছেন।
অামার লেখার মূল কথা হলো অাওয়ামী লীগ খুব বড় গলায় বলে থাকেন যে তৃনমুল থেকে জনগনের প্রত্যাশানুযায়ী নেতা নির্বাচন করে নিয়ে অাসছেন। অথচ তাদের নেত্রীর মতো তাদের সবায় মুখে যা বলে তারা করে তার ঠিক উল্টোটা। তারই ধারাবাহিকতায় নরসিংদী সদরের নজরপুর ইউনিয়নের সভাপতি ও কাউন্সিলারদের মনোনয়ন করা হয় যদিও এলাকায় প্রতিটি অাওয়ামী সদস্য মনোঃক্ষুন্ন হয়ে অাছেন। অার অামার লেখার সত্যতা যাচাই করার সৎসাহস যদি অাওয়ামী লীগের থেকে থাকে তাহলে সরেজমিনে যাইয়া যাচাই করার অনুরুধ রইলো।
অামার লেখা দীর্ঘ হয়ে যাবে বিধায় যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত করার চেষ্টা অব্যাহত ছিলো।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন