ইসলামি সমাজ গঠনে সোস্যালওয়ার্ক বা জনকল্যানমূলক কাজের গুরুত্ব।

লিখেছেন লিখেছেন মিজবাহ ২৩ নভেম্বর, ২০১৩, ০৪:১৪:৫৪ বিকাল

আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন"তোমাদের মুখ পূর্ব দিকে বা পশ্চিম দিকে ফিরাবার মধ্যে কোন পুণ্য নেই্।বরং সৎকাজ হচ্ছে এই যে, মানুষ আল্লাহ, কিয়ামতের দিন, ফেরেশতা আল্লাহর অবতীর্ণ কিতাব ও নবীদেরকে মনে প্রাণে মেনে নেবে এবং আল্লাহর প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের প্রাণ প্রিয় ধন-সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন,এতীম,মিসকীন,মুসাফির,সাহায্য প্রার্থী ও ক্রীতদাসদের মুক্ত করার জন্য ব্যয় করবে৷ আর নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দান করবে৷ যারা অংগীকার করে তা পূর্ণ করবে এবং বিপদে-অনটনে ও হক –বাতিলের সংগ্রামে সবর করবে তারাই সৎ ও সত্যাশ্রয়ী এবং তারাই মুত্তাকী ৷(সুরা আল বাকারা:১৭৭)।

" হে নবী! তাদেরকে বলো, “আমার রব তার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে চান মুক্ত হস্তে রিযিক দান করেন এবং যাকে চান মাপাজোপা দেন৷ যা কিছু তোমরা ব্যয় করে দাও তার জায়গায় তিনি তোমাদের আরো দেন, তিনি সব রিযিকদাতার চেয়ে ভাল রিযিকদাতা"(সুরা সাবা-৩৯)

" তোমরা যে ধন-সম্পদ দান –খয়রাত করো, তা তোমাদের নিজেদের জন্য ভালো ৷ তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করার জন্যই তো অর্থ ব্যয় করে থাকো ৷ কাজেই দান-খয়রাত করে তোমরা যা কিছু অর্থ ব্যয় করবে , তার পুরোপুরি প্রতিদান দেয়া হবে এবং এ ক্ষেত্রে কোন ক্রমেই তোমাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হবে না ৷"(সুরা বাকারা-২৭২)

নবীজি (স: ) বলেন,

হযরত আদী ইবনে হাতেম (র: ) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা: ) বলেন, তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেদের বাঁচাও, যদি তা অর্ধেক খেজুর দ্বারা হয় তবুও।(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত জাবির (র: ) বর্ণনা করেন, রাসুল(স: ) এর কাছে কেউ কোন জিনিস চাওয়া হলে জবাবে তিনি "না" বলেছেন, এমন কখনো ঘটেনি।(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আবু হুরাইরা(রা: ) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা: ) বলেন, প্রতিদিন সকালে বান্দাহ যখন যাগ্রত হয়, তখন দু´জন ফেরেশতা আকাশ থেকে অবতীর্ণ হন। তাদের একজন বল্লেন, হে আল্লাহ! (তোমার পথে) খরচকারী ব্যক্তিকে তার কাজের প্রতিদান দাও।অপরজন বলেন, হে আল্লাহ!(হাত গুটানো) কৃপণ ব্যক্তিকে শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্ত করো।(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আবু হুরাইরা(রা: ) থেকে বর্ণীত রাসুল (সা: ) বলেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‌´হে আদম সন্তান!(তুমি সম্পদ) ব্যয় করো (তাহলে) তোমার জন্যেও ব্যয় করা হবে।(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে ´‌আস (র: ) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুলে আকরাম (স: )কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ ইসলাম উত্তম? তিনি বল্লেন, কাউকে খাবার পরিবেশেন করা এবং জানা-অজানা অর্থাত পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে সকলকে সালাম করা(বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আব হুরাইরা(র: ) বর্ণনা করেন, রসুল(স: ) বলেন, দান খয়রাতে (কখনো) সম্পদ হ্রাস পায় না। আল্লাহ যাকে ক্ষমার গুণে গুণান্বিত করেন, তাকে অবশ্যই সম্মান দ্বারা ধন্য করেন। যে ব্যক্তি কেবল আল্লাহর (সন্তুষ্টির) উদ্দেশ্যে বিনম্রতার নীতি অনুসরণ করে, মহিমাময় আল্লাহ তার মর্যাদা সমুন্নত করে দেন।(মুসলিম)

আমাদের প্রিয় নবীজি এবং তাঁর সাহাবাগণদের দিকে তাকালে দেখতে পাই তাঁদের পুরো জীবনটি ছিল সোস্যাল ওয়ার্ক বা জনকল্যানমূলক কাজ যার ফলে সফলতা হাতের কাছে ধরা দিয়েছিল।শুধুমাত্র মুখের কিছু সুন্দর সুন্দর কথার মাধ্যমে দাওয়াতীকাজে সফল হওয়া যেত তবে উনারা তাই

করতেন!!!

পক্ষান্তরে,এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সমাজের বিপদগ্রস্থ মানুষকে বিভিন্ন সহযোগিতার লোভ দেখিয়ে খ্রীষ্টান মিশনারী ও বামপন্থী লোকেরা ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।

সুতরাং আমাদের এখনও সময় আছে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া,সফলতার জন্য চিন্তার প্রয়োজন হব্নো ইনশাল্লাহ।জনকল্যানমূলক কাজ করতে গিয়ে মানবতার কল্যানে মূল কাজে হাত দেয়ার আগে যদি ক্যামেরা ম্যান,সাংবাদিক এবং দলীয় ব্যানার তৈরীর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে তবে ঐ সময়ের মধ্যে মানবতার বিপর্যয় হয়ে যেতে পারে যেমন,বন্যা,ঘুর্নিঝড়,অন্যান্য প্রাকৃতিক দর্যোগে সময়।সময়ের কাজ সময়ে না করলে ডাক্তার আসিবার পূর্বে রুগি মারা গেল অবস্থা হবে। তাই ঠিক সময়ে মানবতার কল্যানে কাজ করতে পারলে উপকৃত মানবতা উপকারীর ব্যানার খুঁজে নিবে।

যা কিছু করতে হবে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য লোক দেখানোর জন্য নয়।নিজের ঢোল নিজে না পিটিয়ে জনগনকে পিটানোর দায়িত্ব দিলে তার ফলাফল হয় অনেক অনেক বেশী।যেটা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ(স: )ও উনার সাহাবীগন করে দেখিয়েছেন। তাবত দুনিয়াতে যাঁরাই উনাদের সত্যিকার অর্থে অনুসরণ করবেন তাঁরাই সফলকাম হবেন এতে কোনপ্রকার সন্ধেহের অবকাশ নেয় যেমনিভাবে উনারা প্রথম সফল হয়েছিলেন মদীনাতে।

বিষয়: বিবিধ

১৫৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File