জামাত-শিবির এবং যুদ্ধাপরাধী প্রসঙ্গে আস্তিক মুসলিমদের উদ্দেশ্যে দুটি কথা:
লিখেছেন লিখেছেন মিজবাহ ০৭ মার্চ, ২০১৩, ০৪:৪৪:৫৬ বিকাল
প্রথমত: জামাত-শিবির প্রসঙ্গে
আমরা অনেকে জামাত-শিবিরকে খারাপ বলি তবে আমরা অন্য একটি ইসলামী দল গঠন করছিনা কেন? গঠন করে বুঝিয়ে দিই আমরা তাদের চেয়ে ভাল কাজ করি। মুখের কথা দিয়ে চিড়া ভিজেনা । সারাক্ষন তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে গেলাম লাভটা কি হলো। আমরা আস্তিকরা একে অপরের বিরুদ্ধে বলতে থাকলে আমাদের কোন ক্ষতি হয়না বরং ক্ষতি হয় ইসলামের। চলুন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কি বলেন:
আল্লাহ বলেন,"আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়,যারা কল্যাণের দিকে আহবান করবে,ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে(সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১০৪)।
তিনি আরো বলেন,"তোমরা হলে সর্বোত্তম জাতি। মানুষের কল্যাণের জন্য যাদের বের করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ দেবে আর মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে(সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১১০)।
আল্লাহ রাব্বুলআলামিন আরো বলেন,"আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু।তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। (সূরা আত তাওবা,আয়াত: ৭১)
"হে নবী! ডাকো তোমার রবের পথে হিকমাহ ও বুদ্ধিমত্তা এবং সদুপদেশ সহকারে এবং লোকদের সাথে যুক্তি তর্ক করো সর্বোত্তম পদ্ধতিতে"।(সূরা আন নাহল:১২৫)।
সুতরাং আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা কাল কেয়ামতের ময়দানে কঠিন মুছিবতের সময় আল্লাহর প্রশ্নগুলো কিভাবে উত্তর দিব? দুনিয়াতে আমরা হাজারো অযুহাত দিতে পারব কিন্তু আল্লাহর কাছে অযুহাত কি কোন কাজে দিবে? আর অন্যের বিরুদ্ধে বলে ফেতনা সৃষ্টি করে কোন লাভ নেই ক্ষতি ছাড়া। আল্লাহ ফেতনা সৃষ্টিকারীদের খুবই খুবই অপছন্দ করেন।
দ্বিতীয়ত: যুদ্ধাপরাধী প্রসঙ্গ
৪০ বছর পরে আনিত এই ব্যাপারটি এখন তরুন সমাজের কাছে হটক্যাকের মতো মনে হচ্ছে।তর্কের প্রয়োজনে ধরে নিলাম বর্তমানে যারা কারাগারে আছেন তাঁরা যুদ্ধাপরাধী অন্য কোন দলে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই। যেহেতু আমরা চোখে দেখিনি তাঁরা প্রকৃত অপরাধী কিনা, তাঁরা মানুষ হত্যা করেছেন কিনা,মা-বোনদের ধর্ষন করেছেন কিনা, বাড়ি-ঘর পুড়িয়েছেন কিনা। অমুকে বলেছেন এই অযুহাতে আমরাও তাঁদের সুরে সুর মিলায় আর তাঁরা যদি ঐসব দোষে দুষি না হন এবং আমাদের প্রচেষ্টার কারনে তাঁদের বড়ধরনের শাস্তি হয়ে যায় তবে কাল কেয়ামতের কঠিন মুছিবতের সময় আমরা আল্লাহ কাছে কী জবাবদিহী করব?
আল্লাহ কোরআনে বলছেন;
“হে মু’মিনগণ! তোমরা বহুবিধ ধারনা হতে বিরত থাকো; কারণ কোন কোন ধারনা পাপ আর তোমরা একজন অন্যজনের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের অসাক্ষাতে নিন্দা করো না। তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? প্রকৃতপক্ষে তোমরা তো এটাকে ঘৃণ্যই মনে কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ তওবা গ্রহণকারী পরম দয়ালু।” (সুরা আল হুজুরাত- ৪৯ : ১২)।
"ধবংশ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে (সামনা সামনি) লোকদের ধিক্কার দেয় এবং (পেছনে ) নিন্দা করতে অভ্যস্ত "(সুরা আল হুমাজা-১)।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “গীবত কী তা কি তোমরা জান?” লোকেরা উত্তরে বলল, “আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন।”রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, “গীবত হলো তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কথা বলা যা সে অপছন্দ করে।”জিজ্ঞাসা করা হলো, “আমি যা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তবে এটাও কি গীবত হবে?”রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, “তুমি যা বল তা যদি তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে তাহলেই সেটা হবে গীবত, আর তুমি যা বল তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে সেটা হবে বুহতান বা মিথ্যা অপবাদ।”(মিশকাত পৃ-৪১২)।
অতএব আমরা যাঁরা আস্তিক মুসলিম, কোন ব্যক্তিবিশেষকে নয় ইসলামকে পছন্দ করি তাঁদেরকে প্রতিটি কদম ফেলতে হবে মেপে মেপে অন্যতায় তাঁদের দুনিয়াতেও অপমান (যা আমরা অনেকে এখনও বুঝতেছিনা) আর আখিরাতে অবধারিত।
সেইসব ভাইদেরকে হাতজোড় করে বলছি এখনো সময় আছে প্লিজ গভীরভাবে ভেবে দেখুন।
আসুন মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করি কারণ আজ রাতে ঘুমানোর পর কাল সকালে জেগে উঠতে পারব কিনা আমরা কেউ জানিনা যেমনিভাবে আমার ইমিডিয়েট বড়বোন আল্লাহর কাছে চলে গেছেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার তওফীত দান করুন।আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৬৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন