সালাতে আমরা কি পড়ি এবং কি বলি ? আসুন অর্থগুলো জানি এবং বুঝি।
লিখেছেন লিখেছেন আলমপুরের জুয়েল ২৪ জুলাই, ২০১৩, ১২:৩৭:০৭ দুপুর
অনেক সমস্যা অনেক বিপদ অনেক কষ্ট অনেক পাপ অনেক চাওয়া নিয়ে আমরা সালাতে দাড়াই এই আশায় যে আল্লাহ্ যদি একটু রহম করেন, দয়া করেন, আমাদের দু’আ যেন কবুল করে আমাদের শান্তি প্রদান করেন। !
সালাতের মধ্যে আসলে আমরা কি পড়ি বা কি বলি তা আমরা অনেকেই জানি না বা বুঝি না। অর্থ না জানা থাকার কারনে সালাতের এই সকল বিষয়ে আমরা মনযোগী হতেই পারি না।
সালাতের মধ্যে আসলেই আমরা কি পড়ি বা বলছি আসুন তা জানার এবং বুঝার চেষ্টা করি। জানা এবং বুঝার পর সালাতে এগুলো অনুভব করার চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ্।
সালাতে দাড়িয়েই সর্ব প্রথম আমরা বলি ”আল্লাহু আকবার’ – আল্লাহ্ সবচেয়ে বড় !
যখন আমরা বুঝব যে আল্লাহু আকবর মানে আল্লাহ্ সবচেয়ে বড় সকল দিক থেকেই আল্লাহ্ বড়- ক্ষমা, দয়া, দানশীলতা সকল দিক থেকেই আল্লাহ্ সবচেয়ে বড়।
আল্লাহ্ তো অন্তরের খবরও রাখেন তা-ই না?
তারপর পড়ি সানা- সানায় আমরা আল্লাহর প্রশংসা করি নিজের জন্য দুয়া করি। যে যেই সানা পরি তার অর্থ জানা থাকলে আমাদের জন্য তা (feel) অনুভব করা আমাদের জন্য সহজ।
”আল্লাহুম্মা বা-ঈদ বাইনী ওয়া বাইনা খাতাইয়া ইয়া কামা বা আদ’তা বাইনাল মাশরিক্বী ওয়াল মাগরিব। আল্লাহুম্মা নাক্কিনি মিনাল খাতাইয়া কামা উনাক্কাস ছাওবুল আব্ইয়াদু মিনাদ দানাস। আল্লাহুম্মাগসিল খাতাইয়া ইয়া বিল মা-য়ি ওয়াসছালজি ওয়াল বারাদ্।” বুখারী ও মুসলিম|
অর্থঃ হে আল্লাহ্ ! আমার ও আমার গুনাহ্ গুলোর মাঝে এমন দূরত্ব সৃষ্টি করে দাও যেমন তুমি পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করেছ। হে আল্লাহ্ ! আমাকে পাপ ও ভুলত্রুটি হতে এমন ভাবে পবিত্র করো যেভাবে সাদা কাপড় ময়লা হতে পরিস্কার করা হয়। হে আল্লাহ্ ! আমার যাবতীয় পাপসমূহ ও ত্রুটি বিচ্যুতি গুলি পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধৌত করে দাও।
”সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাস্মুকা ওয়া তা’আলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা” আবূ দাঊদ ৭৭৫, ৭৭৬ ইঃফাঃ
অর্থঃ হে আল্লাহ ! তুমি পাক-পবিত্র , তোমারই জন্য সমস্ত্ প্রশংসা, তোমার নাম পবিত্র এবং বরকতময়, তোমার গৌরব অতি উচ্চ , তুমি ছাড়া অন্য কেহ উপাস্য নাই ।
তারপর আমরা শয়তানের থেকে আশ্রয় চাই এবং বলি আ‘ঊযু বিল্লা-হি মিনাশ শায়ত্বা-নির রাজিম – বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
আল্লাহর পবিত্র নাম দিয়ে আল্লাহর দয়া করুণার গুন দিয়ে সালাত এগিয়ে নিয়ে যাই। এবং বলি, ’বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ অর্থঃ পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি|
সুরা ফাতেহাঃ
আমরা সালাতে সুরা ফাতেহা পাঠ শুরু করলাম। মনে মনে অনুভব করার চেষ্টা করি আসুন। সহিহ মুসলিম এর সহিহ হাদিস থেকে।
(বিষয়টা এই যে, যখন আমরা বলি তার সাথে সাথেই আল্লাহ্ আমাদের কথার উত্তর দেন! আল্লাহ্ আমার আপনার মত নগণ্য লোকের কথার উত্তর দিচ্ছেন )
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্নিত,
বান্দা যখন বলে, ”আলহামদুলিল্লাহি রাব্বাল আলামিন – সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি জগত সমূহের প্রতিপালক।
তখন আল্লাহ্ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল।
বান্দা যখন বলে, আর-রাহমা-নির-রাহিম – যিনি করুণাময়, পরম দয়ালু।
তখন আল্লাহ্ বলেন, বান্দা আমার গুণগান করল।
বান্দা যখন বলে, মা-লিকি ইয়াওমাদ্দিন – যিনি বিচার দিনের মালিক।
তখন আল্লাহ্ বলেন, আমার বান্দা আমাকে সম্মান প্রদর্শন করল।
বান্দা যখন বলে, ইয়্যা-কানা’বুদু ওয়া ইয়্যা কানাসতাঈন – আমরা কেবল আপনারই ইবাদত করি এবং আপনার নিকটেই সাহায্য প্রার্থনা করি।
তখন আল্লাহ্ বলেন এটা আমার ও আমার বান্দার মাঝে আধা-আধিভাগ (অর্থাৎ ইবাদত আমার জন্য আর প্রার্থনা বা দু’আ তার জন্য) এবং বান্দার জন্য সে অংশ রয়েছে যা সে চাইবে।
তখন বান্দা বলে, ইহদিনাছ ছিরাত্বাল মুস্তাকীম, ছিরা-ত্বল্লাযিনা আন’আমতা আলায়হীম গাইরিল মাগযুবি আলায়হিম ওয়ালায য্বা-ল্লিন । (আমীন) অর্থাৎ আপনি আমাদের সরল পথ দেখান। তাদের পথ যাদের উপর আপনি রহম করেছেন। তাদের পথ নয় যারা অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্ট। (আল্লাহ্ তুমি কবুল কর)
তখন আল্লাহ্ বলেন, আমার বান্দা যা চেয়ে তা তার জন্য ।
অতএব আমরা যদি অনুভব করতে পারি একজন নগণ্য পাপী বান্দা আমি জমিনে সালাতের মধ্যে সুরা ফাতেহা পড়ছি আর আমারই সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ তার উত্তর দিচ্ছেন ! বুঝেন তো বিষয়টা কি দাড়ায়?
সুরা ফাতেহা পড়ার পর কুরআন থেকে অন্য সুরা মিলিয়ে তারপর আমরা রুকুতে যাই।
আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে শরীর অর্ধেক ঝুঁকিয়ে দিয়ে মাথা নুয়িয়ে দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করি এবং ক্ষমা চাই,
সুবাহানা রাব্বি-আল আজিম – আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি| অথবা তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম ওয়া বিহামদিহি ‘; অর্থ: আমার মহান রবের পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি| আহমদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত, দারু কুতনি , তাবরানী|
সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম মাগফিরলি| অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র তোমার প্রশংসায় আমি রত, আমায় ক্ষমা কর| রাসুল (সাঃ) এই দুআ রুকু সিজদায় বার বার বেশি বেশি করে পাঠ করতেন (বুখারী, মুসলিম, নাসাই, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)
তিনবার ‘সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুল মালাইকাতিহ ওয়ার- রূহ’ অর্থ আল্লাহ সত্তায় পবিত্র ও গুনাবলীতেও পবিত্র, যিনি ফেরেস্তাকুল ও জিব্রাইলের প্রতিপালক| ( মুসলিম, মিশকাত হাদিস ৮৭২ পৃঃ ৮২)
তারপর রুকু থেকে উঠে আমরা বলি,
”সামি আল্লাহু লিমান হামিদা” অর্থ আল্লাহ সেই ব্যক্তির কথা কবুল করেন, যে তার প্রশংসা করে| (বুখারী ও মুসলিম);
তারপর পরই আমরা আল্লাহর প্রশংসা করে বলি, ‘ আল্লাহুম্মা ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’ অর্থ হে আল্লাহ! যাবতীয় প্রশংসা কেবল তোমারই| (বুখারী ও মুসলিম)
তারপর আমরা সমস্ত শরীর নুয়িয়ে দিয়ে মাথাকে মাটিতে লুটিয়ে দিয়ে আল্লাহর নিকট সিজদা দেই। ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করে, আল্লাহ তার জন্য একটি নেকী লেখেন ও তার একটি পাপ দূর করে দেন এবং তার মর্যাদার স্তর একটি বৃদ্ধি করে দেন। অতএব তোমরা বেশী বেশী সিজদা কর’ (ইবনু মাজাহ হা/১৪২৪ ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, অনুচ্ছেদ-২০১।)
সিজদা করার সময় যদি এই হাদিসটির কথা স্মরণ থাকে তাহলে আমরা অনুভব করব যে এক একটা সিজদার বিনিময়ে আল্লাহ্ নেকী লিখছেন পাপ ক্ষমা করছেন।
সিজদায় গিয়ে আমরা আল্লাহর নিকট তাঁর প্রশংসা করি তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি। যদি অর্থগুল আমরা অনুভব করতে পারি তাহলে আরও কাতরতার সাথে আল্লাহর নিকট দু’আ করা আমাদের জন্য সহজ হবে।
তিনবার বলি ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা’; অর্থ: আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি| (নাসাই, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মিশকাত, দারু কুতনি)
সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম মাগফিরলি| অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র তোমার প্রশংসায় আমি রত, আমায় ক্ষমা কর| রাসুল (সাঃ) এই দুআ রুকু সিজদায় বার বার বেশি বেশি করে পাঠ করতেন (বুখারী, মুসলিম, নাসাই, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)
তিনবার ‘সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুল মালাইকাতিহ ওয়ার- রূহ’ অর্থ আল্লাহ সত্তায় পবিত্র ও গুনাবলীতেও পবিত্র, যিনি ফেরেস্তাকুল ও জিব্রাইলের প্রতিপালক| ( মুসলিম, মিশকাত হাদিস ৮৭২ পৃঃ ৮২)
দুই সিজদার মাঝখানে আমরা বলি, ”আল্লাহুম্মাগ ফিরলি, ওয়ার হামনী, ওয়াহদীনি, ওয়া আফিনী, ওয়ার-ঝুকনী” অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি আমায় মাফ কর, আমাকে রহম কর, আমাকে হেদায়েত দান কর, আমাকে শান্তি দান কর এবং আমাকে রিজিক দাও| (মুসলিম, মিশকাত পৃঃ ৭৭ হা/ ৮৯৩)
এভাবে সালাত শেষে মধ্য বৈঠক আর শেষ বৈঠকে তাশাহুদে আল্লাহর প্রশংসা করি রাসুল (সাঃ) এর প্রতি দুরুদ পেশ করে নিজেদের জন্য দুয়া করি।
আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্ সালাওয়াতু, ওয়াত্ তাইয়িবাতু। আস্সালামু ‘আলাইকা আইয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্হাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু। (বুখারী, মিশকাত পৃঃ ৮৫)
অর্থঃ “সকল তাযীম ও সম্মান আল্লাহর জন্য, সকল সালাত আল্লাহর জন্য এবং সকল ভাল কথা ও কর্মও আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপানার প্রতি শান্তি, আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের উপরে এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপরে শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল।”
আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ, ওয়া বারিক আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়ালা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাক্তা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ”। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত পৃঃ ৮৬, হা/৯১৯)
অর্থ: “ হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ ও তার বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপভাবে আপনি ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ও তার বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত সম্মানিত।”
‘যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ তার উপরে দশটি রহমত নাযিল করেন। তার আমলনামা হ’তে দশটি গুনাহ ঝরে পড়ে ও তার সম্মানের স্তর আল্লাহর নিকটে দশগুণ বৃদ্ধি পায়’- নাসাঈ, মিশকাত হা/৯২২, ‘নবীর উপরে দরূদ ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৬।
তারপর আমরা নিজেদের জন্য দুয়া করি আল্লাহর নিকট। আমরা অধিকাংশই জানি যে আল্লাহর নিকট আমরা কি দুয়া করছি সালাতের শেষ বৈঁঠিকে। আমরা যদি অর্থের দিকে মনোযোগ দিতে পারি তাহলে তা হৃদয়ঙ্গম করা খুব সহজ হবে।
‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন্ ‘আযা-বি জাহান্নামা ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ‘আযা-বিল কাবরি, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিল মাসীহিদ্ দাজ্জা-ল, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিৎনাতিল মাহ্ইয়া ওয়াল মামা-ত, আল্লাহুম্মা ইন্নি আ’উজুবিকা মিনাল মা’ছামী ওয়াল মাগরাম |” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত)
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় ভিক্ষা করছি জাহান্নামের আযাব হ’তে, কবরের আযাব হ’তে, জীবন ও মৃত্যুকালীন ফিৎনা হ’তে, এবং দাজ্জালের ফিৎনা হ’তে| আশ্রয় চাচ্ছি পাপ ও ঋণের বোঝা হতে|
আরেকটি দুআ মাসুরা,
আল্লাহুম্মা ইন্নি জলামতু নাফসি যুলমান কাছিরা, ওয়ালা ইয়াগ ফিরূজ যুনুবা ইল্লা আন্তা ফাগফিরলি মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা ওয়ার হামনি ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম | (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত পৃঃ ৮৭ হা/৯৩৯)
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আমার উপর অত্যাধিক অন্যায় করেছি এবং তুমি ব্যতীত পাপ ক্ষমা করার কেউ নেই| সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও| ক্ষমা একমাত্র তোমার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে | আমার প্রতি রহম কর| নিশ্চই তুমি ক্ষমাশীল দয়ালু|
তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্যেকার দো‘আ সমূহের শেষে রাসূল (সাঃ) নিম্নের দো‘আ পড়তেন,
আল্লা-হুম্মাগফিরলী মা ক্বাদ্দামতু অমা আখখারতু, অমা আসরারতু অমা আ‘লানতু, অমা আসরাফতু, অমা আনতা আ‘লামু বিহী মিন্নী; আনতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুআখখিরু, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা’ ।
মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩ ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘তাকবীরের পরে কি পড়তে হয়’ অনুচ্ছেদ-১১।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার পূর্বাপর গোপন ও প্রকাশ্য সকল গোনাহ মাফ কর (এবং মাফ কর ঐসব গোনাহ) যাতে আমি বাড়াবাড়ি করেছি এবং ঐসব গোনাহ যে বিষয়ে তুমি আমার চাইতে বেশী জানো। তুমি অগ্র-পশ্চাতের মালিক। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই’।
সালাতে সালাম ফেরানর পুর্বে অন্যান্য দুআ :
‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনান্না-র’ (হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে জান্নাত প্রার্থনা করছি এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ চাচ্ছি)। (আবুদাঊদ হা/৭৯৩, ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, অনুচ্ছেদ-১২৮; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৮৬৫।)
আল্লা-হুম্মা রববানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল আ-খিরাতে হাসানাতাঁও ওয়া ক্বিনা আযা-বান্না-র’ । অথবা আল্লা-হুম্মা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া ..।
বুখারী হা/৪৫২২, ৬৩৮৯; বাক্বারাহ ২/২০১; মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৪৮৭ ‘দো‘আসমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘সারগর্ভ দো‘আ’ অনুচ্ছেদ-৯।
‘হে আল্লাহ! হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি আমাদেরকে দুনিয়াতে মঙ্গল দাও ও আখেরাতে মঙ্গল দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও’।
====================================
বিষয়টা অন্তরের। অন্তর দিয়ে যে যত বেশি অনুভব করতে পারব এর স্বাদ তত বেশি অনুভূত হবে।
এই অন্তর দিয়ে অনুভব বিষয়টা নির্ভর করে আমরা কতটুকু বুঝছি তার উপর। যদি না বুঝি তাহলে অনুভবের বিষয়টা কাজ করবে না।
ব্যস্ততার কারনে হক বা তাড়াহুড়োর কারনে হোক বা যে কোন কারনেই হোক আমরা সব সময় সালাতে গভীর মনোযোগ দিতে ব্যার্থ হই। কিন্তু সব সময় না পারি মাঝে মাঝে তো আমরা মনোযোগ দিতে পারি তা-ই না?
এই মনোযোগ বিষয়টা কাজ করবে যখন আমরা বুঝব যে সালাতে আমরা আসলে কি করছি। যখন আমরা সালাতে ব্যবহৃত শব্দ বাক্যগুলোর অর্থ বুঝব বা অনুভব করব তখন মনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া ঘটবে এবং আমাদের সাহায্য করবেসালাতকে আরও বেশি সুন্দর ও খাটি করতে।
এর জন্য যে সম্পুর্ন অর্থ মুখস্ত করতে হবে তাও নয়। যদি শুধুমাত্র জানা থাকে যে এই এই অর্থ তাহলেই তা কাজ করবে ইনশা আল্লাহ্।(সংগৃহীত)
বিষয়: বিবিধ
২৩৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন