নাস্তিক থাবা বাবা কথিক ব্লগার রাজিবেব কিছু অপ্রিয় সত্য কথা ।

লিখেছেন লিখেছেন আমি সত্যের পক্ষে ১৬ মার্চ, ২০১৩, ০৬:১৮:১১ সন্ধ্যা

১. বিচার-বহির্ভূত যে কোন হত্যাকাণ্ডই নিন্দনীয়

বিচার-বহির্ভূতভাবে রাজীব ওরফে থাবা বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই, এবং দোষী ব্যক্তিকে অবিলম্বে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানাই।

২. তদন্তের আগে কাউকে দায়ী করা দায়িত্বহীনতার পরিচয়

বিচার বিভাগীয় তদন্ত ছাড়াই কাউকে রাজীবের হত্যার জন্য দায়ী সাব্যস্ত করাকে দায়িত্বজ্ঞানহীনতা বলে মনে করি, “এটা স্পষ্ট ভাবে একটা ঠান্ডা মাথার খুন – মারার জন্য টার্গেট হিসাবে “থাবার” চেয়ে আদর্শ কেউ ছিল না”- তদন্তের আগেই এই ধরণের শিরোনামে পোস্ট দেওয়া আমরা সঠিক মনে করি না। [যদিও এই ধরণের অনুমান করার যথেষ্ট সুযোগ থাকতে পারে, কিন্তু অনুমান আর বাস্তবতা সব সময় এক হয় না।]

৩. ধিক্কার জানাই: ইসলামী বোধ নিয়ে এক রকমের খেলা!

রাজীবকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ শাহবাগে আন্দোলনকারিদের সবাইকে নাস্তিক/ইসলামবিদ্বেষী আখ্যা দেবার চেষ্টা করছে। শিবির কর্মীরা শাহবাগে আন্দোলনকারিদের ওপর কালিমা লেপন করে ফেকবুকে ভূয়া ছবি বা এডিট করে অশ্লীলতা জুড়ে দেওয়া ছবি প্রচার করছে। এটা সুস্পষ্টভাবে ইসলামের অনুভূতির অপব্যবহারের অনৈসলামিক অপকৌশল। এই ধরণের ঘৃণ্য অপকর্মকে ধিক্কার জানাবার ভাষা আমাদের নাই। জালিয়াতি, অপবাদ আর মিথ্যাচার করে যারা মানুষের ইসলামী বোধ নিয়ে খেলা করে, আমরা তাদের সাথে নেই। তাদের স্বার্থান্বেষী নাস্তিক্যবিরোধি আন্দোলনের সাথে আমরা একাত্ম নই। আমরা আগে থেকেই নাস্তিক্যবাদ ও ইসলাম-বিদ্বেষের বিপক্ষে কলম চালিয়ে যাচ্ছিলাম, আমাদের সে যাত্রা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

৪. ধিক্কার জানাই: ইসলামী বোধ নিয়ে আরেক রকমের খেলা!

রাজীব একজন চিহ্নিত ইসলাম-বিদ্বেষী, ইসলামকে অবমাননাকারি নাস্তিক হওয়া সত্ত্বেও যারা তার জানাযার আয়োজন করেছেন, ইসলামের অপব্যাখ্যা করে রাজীবের জানাযায় অংশ নেবার জন্য মানুষকে প্ররোচিত করেছেন, আমরা তাদেরকেও ধর্মব্যবসায়ি গণ্য করি এবং তাদের এই অনৈতিক কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানাই। ধর্মের ব্যবসা সবাই করে, কম আর বেশি। আসলে ধর্ম বড়ই মধুর!

৫. সত্য লুকাবার বিষয় নয়

অনেকেই এখন রাজীব ওরফে ‘থাবা বাবা’কে সাধু বানাতে চাচ্ছেন। অনেকক্ষেত্রে চলছে থাবার লেখাসমূহ মুছে ফেলার নীরব প্রক্রিয়া। থাবার লেখাগুলো নিষিদ্ধ, অখাদ্য, অরুচিকর ধরণের বলেই কিন্তু মুছে ফেলা হচ্ছে না, বরং থাবার অপকর্মকে চাপা দেওয়াই এখানে মূখ্য উদ্দেশ্য। কেননা এই লেখাগুলো এতদিন কিন্তু সদর্পে সগর্বে মাথা উঁচু করেই সেখানে বিরাজ করছিল। তবে প্রমাণ কিন্তু কিছু না কিছু রয়েই যাচ্ছে। এক ফেসবুকেই থাবার অপকর্মের অগণিত প্রমাণ রয়ে গেছে (১, ২, ৩, ৪; নুরানী চাপা শরীফ 004, 005, 006, 007, 008, 009, 010, 011, 012, 013, 014, 015, 016, 017, 018)। “ধর্মকারী”, “আমার ব্লগ" সহ অনেক জায়গাতেই রাজীবের ইসলাম-বিদ্বেষী লেখাগুলো এখনও বিরাজ করছে, অথচ কেউ কেউ ‘নূরানীচাপা ব্লগ’ রাজীব বা ‘থাবা বাবা’র নয় এই অথর্ব যুক্তি দিয়ে রাজীবের অপকর্মকে ঢাকার চেষ্টা করছেন, জামাতীদের অপপ্রচার বলে চালাবার চেষ্টা করছেন; এটা একটা জঘন্য মিথ্যাচার। কেননা ‘নূরানিচাপা ব্লগ’ যে-ই বানাক না কেন লেখাগুলো যে ‘থাবা’র এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।

৬. সত্য প্রচারে বিচলিত হবার কিছু নাই

থাবাকে কেন্দ্র করে অনলাইনের ইসলাম-বিদ্বেষীদের চেহারাটা মানুষের সামনে খুলে গেছে। যারা এই কাজটা করেছেন তারা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে করলেও বাস্তবতাই প্রকাশ পেয়েছে, মিথ্যাচার নয়। বিষয়টা যখন সামনে এসেই গেছে, আর সদালাপও বহুদিন থেকে এইসব ইসলাম-বিদ্বেষীদের মুখোশ খুলে দিয়ে এসেছে, কাজেই অনলাইনে এইসব গার্বেজের প্রচার বন্ধের দাবি যখন এসেই পড়েছে তখন আমরা সদালাপের লেখক-পাঠকগণ নিজস্ব ভিন্ন অবস্হান হতে এই একই দাবি জানাতে চাই। মানুষ এতদিন জানতো না, ধর্মকারীতে কী হয়, মুক্তমনায় কী হয়; এখন জানছে, এই জানাতে গিয়ে যদি তাদের কদর্য লেখনীর কিয়দংশ প্রকাশ করা হয়, সেটাকে অশ্লীলতা প্রচারের সাথে এক করে দেখার সুযোগ নেই। জনগণ এখানে বিচারকের আসনে আর বিচারকের সামনে আসল ঘটনা তুলে ধরতেই হবে। ধামাচাপা দেবার বা লুকোচুরি করার কোন সুযোগ নাই। কেউ কেউ বলছেন, থাবা মরে গেছে তার লেখা নিয়ে আর এত টানাটানি কেন? এদেশে অনেক মৃত ব্যক্তিদের নিয়েই কিন্তু বাকবিতণ্ডা হয়, তখন কিন্তু এই কথা শোনা যায় না। থাবা মরে গেলেও “ধর্মকারী”, “আমারব্লগ” সহ অনেক সাইটেই থাবার লেখা রয়ে গেছে, রয়ে গেছে থাবার মতো কুৎসিত মানসিকতার আরো অনেক "মুক্তমনা" ব্লগার। থাবা'কে ফোকাস করে এদের অপতৎপরতা থামাতে হবে। থাবার লেখা প্রচার করে ইসলামের অবমাননা হচ্ছে বলেও কেউ কেউ যুক্তি দেখাচ্ছেন। জনগণ কিন্তু বোকা নয়। কোনটা অবমাননা আর কোনটা অবমাননা বন্ধ করার পদ্ধতি, এটা তারা বোঝে।

৭. প্রত্যেক ক্রিয়ারই প্রতিক্রিয়া আছে!

৭.১

প্রত্যেক ক্রিয়ার একটা সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। মুসলিম অধ্যুষিত দেশে রাজীব ওরফে ‘থাবা বাবা’-র মতো রুচিবিকৃত, কুলাঙ্গারকে যদি হিরো বানাবার চেষ্টা করা হয়, তাকে “শহীদ” উপাধি প্রদান করা হয়, ‘জাতীয় বীর’ বলে অভিহিত করা হয়; তখন পরিণতি যা হবার তাই হয়েছে। জামায়াত দেশের আলেমসমাজকে ‘শাহবাগের গণজাগরণ নাস্তিকদের আন্দোলন’ – এই কথা গিলাতে খুব ভালো ভাবেই সমর্থ হয়েছে। রুচিবিকৃত, কুলাঙ্গার ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিককে হিরো বানাবার এইসব আত্মঘাতী কার্যক্রম অব্যাহত রেখে ‘জামায়াতের ফাঁদে পা দিয়েন না’ জাতীয় নসিহত করে লাভ নাই। নাস্তিক্যবিরোধী যে ভিন্ন জাগরণের উত্থান এখন দেখা যাচ্ছে, সেটার পেছনে জামায়াতের ভূমিকা যতটুকু, ‘থাবা বাবা’-কে নিয়ে লাফালাফি করা অতি উৎসাহীদের ভূমিকা তার চেয়ে অনেক গুন বেশি।

৭.২

রাজীবকে নিয়ে মাতামাতিটা যতই হবে, বিপরীত প্রতিক্রিয়ার মাত্রা ততই বেশি হবে। ইসলামপ্রিয় জনতার একটা বড় অংশ নিভৃতেই প্রত্যাহার করে নেবেন শাহবাগের গণজাগরণের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন। কারণ ইন্টারনেট এবং ফেসবুকে বিচরণকারি মুসলিমদের অন্তরে 'থাবা বাবা'দের জন্য জমে আছে একরাশ ঘৃণা। বস্তুত ঘৃণার যে চাষাবাদ থাবা করে গেছে তাতে ঘৃণা ছাড়া আর কিছু তার প্রাপ্য নাই। তাকে যদি বলা হয় ‘জাতীয় বীর’ তবে আমরা তাকে বলবো ‘জাতীয় কুলাঙ্গার’; তাকে যদি বলা হয় ‘মুক্তিযুদ্ধের শহীদ’ তবে আমরা তাকে বলবো ‘ইসলামের রাজাকার’। (TIT FOR TAT)

রাজীবকে সত্যিকারের শহীদ বলা ইসলামের অবমাননা, আর তাকে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বলা মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের অবমাননা।

৭.৩

“যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হোক, বিচার নস্যাতের পাঁয়তারা বন্ধ করা হোক, আঁতাতের রাস্তা রূদ্ধ করা হোক” – এটাই হওয়ার কথা শাহবাগ গণজাগরণের মূল উদ্দেশ্য। কাজেই “জামায়াত-শিবিরের” রাজনীতির সাথে সাথে “ধর্মীয় রাজনীতি” বন্ধের আওয়াজ যারা তুলছেন, দয়া করে তাদের মুখ এখনই বন্ধ করুন। সময় পেরিয়ে গেলে করার কিছুই থাকবে না।

কেউ কেউ ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধের এজেণ্ডা চালিয়ে যাবেন, স্পিকারের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে কৌশলে সেটা ঢুকিয়ে দেবেন, তখন আপনারা চোখ বন্ধ করে না দেখার ভান করবেন; আর সেটার প্রতিবাদ করলে আন্দোলনে ফাটল ধরার ভয়ে ইশারায় চুপ করিয়ে দেবেন এটা তো হবে না।

আমরা ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে। অন্যায় যে-ই করুক, আমরা নি:সংকোচে নির্ভয়ে তার প্রতিবাদ করবোই।

নোট: লেখাটি আমার নিজস্ব হলেও লেখাটিতে ‘আমরা’ এবং ‘আমাদের’ অর্থাৎ বহুবচন ব্যবহার করেছি। কারণ আমার বিশ্বাস যে কথাগুলো আমি বললাম সেটা আমার একার কথা নয়, বরং আরো অনেকেরই মনের কথা।

পূর্বে এই টিউনটি Click this link প্রকাশিত হয়েছিল

এই ব্লগ সাইটে সবাইকে টিউন করার আমন্ত্রন জানাচ্ছি

সুযোগ থাকলে এই পেইজে একটা লাইক দিয়েন

বিষয়: রাজনীতি

১৬৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File