জুম্মাহ নামাজ বন্ধ করা কি জায়েজ হবে !!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২০ মার্চ, ২০২০, ০৬:৩৭:৪৫ সকাল
(আসসালাতু ফি বুয়াতীকুম- তোমরা বাড়িতে সালাত আদায় করে নাও)
---------------------------------------------
রসূল(সাঃ) বলেন- "নি:সন্দেহে জুম্মাহর সালাত ওয়াজিব, কিন্তু তোমরা কাদাযুক্ত পিচ্ছিল পথে কষ্ট করে চলবে,তা আমি পছন্দ করিনি"-(বুখারী ৬৬৮,মুসলিম ১৪৮৯,আবু দাউদ ১০৬৬)
রসূল(সাঃ)এর সময়ে মসজিদগুলো ছিলো মাটির তৈরী এবং উপরে থাকত খেজুরের পাতার ছাউনী। বৃষ্টির সময় রাস্তা এবং মসজিদের মেঝেও কর্দমাক্ত হয়ে যেত। প্রবল বৃষ্টি বা দূর্যোগের কারনে মসজিদে জুম্মায় আসা ঐহ্যিক বিষয়। এখানে ওজর থাকাটা একটি বিষয়। রসূল(সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আযান শুনলো এবং তার কোনো ওজর না থাকা সত্ত্বেও জামায়াতে উপস্থিত হলনা, তার নামাজ নাই।"-(ইবনে মাজাহ ৭৯৩, আবু দাউদ ৫৫১)
এখন কথা হচ্ছে বর্তমানে প্রানঘাতি ভাইরাস করোনার কারনে জুম্মাহর নামাজ কিছু কালের জন্যে বন্ধ রাখা কি শরিয়তসম্মত হবে ?
"সাকিফ গোত্রের প্রতিনিধী দল বায়াত নিতে আসল এবং সেখানে এক কুষ্ঠ রোগী ছিলো। রসূল(সাঃ) সেই রোগীকে বললেন, আমি তোমার বায়াত গ্রহন করেছি(তার হাতে হাত না দিয়েই বললেন)।" (মুসলিম ৫৭১৫,ইবনে মাজাহ ৩৫৪৪,নাসায়ী ৪১৮২)
এখান থেকে দেখা যায় যে, ছোঁয়াচে রোগ থেকে রসূল(সাঃ)দূরে থেকেছেন,থাকতে বলেছেন। আর যে কোনো বড় দূর্যোগে জন সমাবেশ বা জামাতের নামাজের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি।
"কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাকো, যেভাবে তুমি বাঘ থেকে দূরে থাকো।"-(বুখারী ৫৭০৭)
অতি বৃষ্টির দিনে হযরত ইবনে আব্বাস(রাঃ) মুয়াজ্জিনকে বলেছিলেন, আযানে যখন আসহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ যখন বলবে,এরপর হাইয়ে আষাস সালাহ এর পরিবর্তে বলবে,আসসালাতু ফি বুয়াতীকুম(তোমরা নিজ নিজ ঘরে সালাত আদায় করো)। কিন্তু লোকেরা এটা খুব অপছন্দ করলো। তখন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রাঃ)বলেন-যিনি আমার চাইতে উত্তম, সেই মুহাম্মদ(সাঃ) এরূপই করেছেন। নি:সন্দেহে জুম্মাহর সালাত ওয়াজিব কিন্তু তোমরা কাদাযুক্ত পিচ্ছিল পথে কষ্ট করে চলবে,তা আমি পছন্দ করিনি" -(বুখারী,মুসলিম)
এসব উদাহরণ থেকে বুঝা যায় যে, বৃস্টির মত বিষয়েও যদি বাড়িতে নামাজ আদায় করতে বলা হয়,তাহলে প্রানঘাতি রোগের বিষয়ে নির্দেশনা কেমন হতে পারে ! যেসব ব্যাধী মানুষের থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ে, সেসব ব্যাধীর বিষয়ে সতর্কতার জন্যে রসূল(সাঃ)দেড় হাজার বছর পূর্বেই যে ব্যবস্থা গ্রহন করেছিলেন, তা এখনকার মানুষেরা করছে। আলিমগন ঘোষনা করেছেন কিছু সময়ের জন্যে মসজিদে জামাতবদ্ধ নামাজ না আদায় করতে। যদিও কিছু মানুষ সেটা মানতে নারাজ,এমনকি অনেকে কিয়ামতের আলামত হিসেবে গ্রহন করছে। কিন্তু বিষয়টা সেরকম নয়। আমরা নিজেদের অজান্তেই অন্যের ভেতর ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছি কি না সেটা বুঝতে হবে। হতে পারে আমার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা প্রবল,কিন্তু যার ভেতর ছড়িয়ে দিচ্ছি তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল, ফলে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর যেহেতু এই কর্মকান্ডের পেছনে হাদীসের রেফারেন্স রয়েছে ফলে এটি বৈধ।
বিষয়: বিবিধ
১১৫১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন