জুমু'আ(জুম্মাহ)

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১০:০৮:৩০ রাত



-----------------

হে মুমিনগণ, যখন জুমু‘আর দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে। অতঃপর যখন সালাত সমাপ্ত হবে তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় আর আল্লাহর অনুগ্রহ হতে অনুসন্ধান কর এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফল হতে পার। (সূরা জুমু'আ, আয়াত ৯-১০)

ইবনে আওস (রাদিয়াল্লাহু আ'নহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "তোমাদের দিনগুলির মধ্যে সর্বোত্তম একটি দিন হচ্ছে জুম'আর দিন। সুতরাং ঐ দিনে তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরূদ পাঠ কর। কেননা, তোমাদের পাঠ করা দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়।"

--[আবু দাউদ ১০৪৭, নাসাঈ ১৩৭৪, ইবনে মাজাহ ১৬৩৬, আহমাদ ১৫৭২৯]

ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, "অন্য মাসের তুলনায় রমযান মাসের মর্যাদা যেমন, সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় জুম'আ বারের মর্যাদা ঠিক তেমন। তাছাড়া রমযানের কদরের রাতে যেমন ভাবে দু'আ কবুল হয়, ঠিক তেমনি শুক্রবারের সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণেও দু'আ কবুল হয়।"

--[যাদুল মা'আদ ১/৩৯৮]

আবূ হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আ'নহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) জুম'আর দিন সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং বলেন, "এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে কোন মুসলিম বান্দা যদি এ সময় সালাতে দাঁড়িয়ে আল্লাহ‌র নিকট কিছু চায়, তা হলে তিনি তাকে অবশ্যই তা দান করে থাকেন এবং তিনি হাত দিয়ে ইশারা করে বুঝিয়ে দিলেন যে, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত।"

--[বুখারী ৯৩৫, মুসলিম ৮৫২]

আবূ হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আ'নহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "পাঁচ ওয়াক্তের সালাত, এক জুম'আ থেকে আরেক জুম'আ এবং এক রমাদান থেকে আরেক রমাদানের মধ্যবর্তী সব (সগীরা) গুনাহ কে মুছে দেয়, যদি সে কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।"

--[মুসলিম ৪৫৯]

আবু সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আ'নহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "যে ব্যক্তি জুম'আর দিন 'সূরা কাহফ' পাঠ করবে তার জন্য দুই জুম'আর মধ্যবর্তীকাল জ্যোতির্ময় হবে।"

--[বাইহাক্বী ৬২০৯, হাকেম ৩৩৯২, সহীহ তারগীব ৭৩৫]

আবূ লুবাবাহ বাদরী (রাদিয়াল্লাহু আ'নহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "জুম'আর দিন সকল দিনের সর্দার এবং আল্লাহর নিকট সবার চেয়ে মহান দিন। এমনকি এ দিনটি আল্লাহর নিকট আযহা ও ফিতরের দিন থেকেও শ্রেষ্ঠ। এই দিনে রয়েছে ৫টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য; এই দিনে আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করেছেন, এই দিনে তিনি (আদম) পৃথিবীতে অবতারণ করেছেন, এই দিনে তাঁর ইন্তেকাল হয়েছে, এই দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে; যদি কোন মুসলিম বান্দা সে মুহূর্তে আল্লাহর নিকট কোন কিছু বৈধ জিনিস প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে তা দিয়ে থাকেন। এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। আর প্রত্যেক নৈকট্যপ্রাপ্ত ফিরিশতা, আকাশ, পৃথিবী, বাতাস, পর্বত, সমুদ্র এই দিনকে ভয় করে।"

--[আহমাদ ১৫৫৪৮, সহীহুল জামি ২২৭৯]

ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আ'নহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "যে ব্যক্তি আমার উপর দরূদ পড়তে ভুল করল, সে আসলে জান্নাতের পথ ভুল করল।"

--[ইবনে মাজাহ ৯০৮, ত্বাবারানী ১২৬৪৮, সহীহ তারগীব ১৬৮২]

জুম্মাহর দিন সম্পর্কে অনেকগুলো হাদীস রয়েছে। এই দিনের ফজিলত অত্যন্ত অধিক। একটি সহি হাদীস মনে পড়ছে,যেখানে বলা হয়েছে, জুম্মাহর দিনে যে ব্যক্তি গোসল করে পবিত্র হবে, মসজিদে পায়ে হেটে গমন করবে, মসজিদে সামনের দিকে বসবে এবং মনোযোগসহকারে ইমামের খুৎবা শুনবে, তার প্রতি কদমে(মসজিদে আসার পথের) আল্লাহ ১ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব দান করবেন।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আ'নহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "দু'টি নিয়ামত এমন আছে; যার ব্যাপারে বহু মানুষ ধোঁকার মধ্যে রয়েছে। আর সে দু'টি নিয়ামত হল সুস্থতা ও অবসর।"

--[বুখারী ৬৪১২]

বিষয়: বিবিধ

৬২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File