ক্যাসিনো
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০৮:২৪:২৬ রাত
ক্যাসিনো
----------
ক্যাসিনোর কথা আসলেই অনেকের মাথায় আসতে পারে লাসভেগাসের উজ্জ্বল ক্যাসিনোর চিত্র, যেখানে মিউজিকের তালে তালে ছোট পোষাক পরা মেয়েরা নাচছে, ভিলেন আছে সেখানে, হলিউডের নায়ক সেখানে অপরাধী খুজতে জুয়া খেলছে ইত্যাদী।
*** ক্যাসিনোতে ওয়াল ঘড়ি রাখা হয়না। উদ্দেশ্য হল এই যে, মানুষ যেন সময় হিসাব করতে না পারে। ক্যাসিনোর জানালা থাকেনা। এটা সিনেমা হলের মত। মানুষকে ভেতরের এক রাজ্যে নিমগ্ন রাখাই এর উদ্দেশ্য। প্রবল সিকিউরিটি সিস্টেম থাকে এখানে। প্রতি ইঞ্চি স্থানকে নজদারীতে রাখা হয়।
আসলে ক্যাসিনোর আসল চিত্র ওটা নয়। পাশ্চাত্য সমাজে নফসের ইবাদত করা হয় আর গডকে সন্তুষ্ট করতে প্রতি রবীবারে গীর্যায় যাওয়া হয়। অবশ্য সকলে সেখানে যায় না। কিন্তু জীবনে আনন্দ,ফুর্তি করাই সবকিছু এটাই তাদের জীবন ভাবনা। আর সেখান থেকে নানান ধরনের ফুর্তির উৎপত্তি। একই পথে ক্যাসিনো এসেছে অনেক রকমরে ফান ফুর্তির একটি পর্ফেক্ট স্থান হিসেবে।
ক্যাসিনো মূলত জুয়া খেলার স্থান, তবে মদ্যপান,নাচ গানসহ আরও অনেক ফূর্তির ব্যবস্থাও থাকে। পাশ্চাত্যের মানুষেরা টাকাকেই সবকিছু মনে করে,আর সেই অর্থ ইনকামের সহজ রাস্তায় হাটতে চায়। ফলে এখানে দুটো জিনিস খুব ভালো চলে, একটা হল লটারী,আরেকটা জুয়া। ক্যাসিনোতে নানান ধরনের মনোমুগ্ধকর জুয়া চলে। ব্যক্তি ব্যক্তির সাথে জুয়া খেলতে পারে। তবে বেশীরভাগই খেলা হয় মেশিনের সাথে। অর্থাৎ এগুলো কম্পিউটার গেমের মত মেশিন। গ্যাম্বলিং মেশিনে নির্দিষ্ট ডলার নোট প্রবেশ করালে গেম স্টার্ট হয়। একেক গেমের একেক ধরন। জিতলে নির্দিষ্ট হারে ডলার পায়, আর না জিতলে ডলার হারাতে থাকে। খুবই ব্রিলিয়ান্টভাবে গেমগুলো তৈরী করা হয় সহজ উপায়ে, যাতে মানুষ আকৃষ্ট হয়। মজার ব্যাপার হল মানুষ এখানে মাঝে মাঝে জিতে যায় এবং কিছু ডলার পকেটে ভরতে পারে। আসলে ওটাই আসল জুয়া। ব্রিলিয়ান্ট মেশিন কখনও জিতিয়ে দেয়,যাতে মানুষ আসতে থাকে এবং নেশা তৈরী হয়।
বহু বুড়ো বুড়িকে দেখা যায় এখানে, যারা সারা জীবন মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ইনকামের আশায় এখানে জুয়া খেলেছে। সারা জীবনের হারানো টাকার পরিমান আসলে মিলিয়ন মিলিয়ন হয়ে গেছে কিন্তু জিততে পারেনি পুরোপুরি। তবে কেউ কেউ এখান থেকে অনেক টাকা জিতেছে। ওরাই তাদের হিরো। টাকা জেতার নেশায় খেলেই যাচ্ছে।
ক্যাসিনোতে রঙিন আলো জ্বলে,নানান ধরনের হালকা মিউজিক বাজে, জুয়ার মেশিনগুলো,জুয়ার মনোমুগ্ধকর টেবিলগুলো থেকেও দারুন মিউজিক আসে যা ব্যক্তিতে আরও বেশী সময় খেলতে আগ্রহী করে। চারিদিকে চোখ ধাধানো পরিবেশ থাকে। কখনও মানুষ কেসিনো ভাড়া করে ফুর্তি করে। আবার কোনো কোনো কেসিনোতে কিছু সময় মেয়েদের নিয়ে মিউজিক শো হয়। সাধারনত লাসভেগাসে এগুলো বেশী হয়। বিনোদন দিয়ে টাকা ইনকাম হয়।
ধনীরা তাদের সামাজিক অনুষ্ঠানও করতে পারে ক্যাসিনো ভাড়া করে। সেখানে বহু রকমের ব্যবস্থাই আছে,আর সবকিছুই টাকা ইনকামের জন্যে। বাংলাদেশে কিছু বড় বড় ক্লাব আছে যা ধনীদের বিনোদন প্রদান করে। মুসলিমদের কথা ভেবে কিছু হালাল ব্যবস্থাও রাখে যাতে মানুষ পরিবার নিয়ে সেখানে যেতে পারে। তবে দেশে যে ক্যাসিনো আছে সেটা আমেরিকান ক্যাসিনোর মত নয়। ওটা হল ব্যক্তিগতভাবে জুয়া খেলা,মদপান করা এবং কখনও নারী নিয়ে সরাসরি ফুর্তি করার স্থান। বলা যায় পাশ্চাত্যের শৈল্পিক হারামের বিদঘুটে,নোংড়া ভার্সন হল বাংলাদেশী ক্যাসিনো। বেশ্যালয়ের উন্নত ভার্সন বললেও ভুল বলা হবেনা। এখানে যারা যায়, তাদেরকে দেখলে আপনার চোখ মাথায় উঠে যাবে। উচ্চ পদস্ত ফেরেশতার মত মানুষদের সেখানে দেখতে পাবেন।
আমি ক্যাসিনোতে বেশ কয়েকবার প্রবেশ করেছি, তবে উদ্দেশ্য ছিলো একটাই। সেটা হল চলতি পথে থেমে মুত্র বিয়োগ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এযসব জায়গায় জুয়া খেলা আর নারী নিয়ে ফূর্তি করাটাই মূল বিষয় সেখানে মুসলমানেরা কিভাবে যেতে পারে? তাদের জন্য কি কি হালাল ব্যবস্থা রাখা থাকে সেখানে? শুনলাম - সৌদি যুবরাজও নাকি মুসলমানদের জন্য হালাল নাইট ক্লাব চালু করবে! ক্যাসিনো আর নাইট ক্লাবে যে কারবারগুলো হয় সেগুলো কি ইসলামে হালাল করানোর সুযোগ রাখা আছে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন