সমাজের তুচ্ছ মানুষেরা
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০৮:২৬:১০ রাত
হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেন
"আমার বান্দাদের ভেতর সেই আমার অধিক প্রিয় যে জীবীকার পেছনে ন্যুনতম সময় দেয় এবং আমার শ্মরনে অধিক সময় ব্যয় করে। যে তার রবের ইবাদতে একনিষ্ঠ এবং তার প্রকৃত অনুগত। যে মানুষের ভেতর কম পরিচিত। তার জীবীকা মাত্র চলার জন্যে যথেষ্ঠ এবং সে এতেই সন্তুষ্ট। তার মৃত্যু তাড়াতাড়ি আসবে। তার অন্তিম যাত্রায় কম মানুষ হবে এবং তার রেখে যাওয়া সম্পদ হবে কম।"
(তিরমিজী)
এখানে অনেকগুলো পয়েন্ট উঠে এসেছে আল্লাহ প্রিয় বান্দাদের। আল্লাহ সেই লোকদের পছন্দ করেন ,যারা অল্পতে তুষ্ট। এর মানে হল তারা প্রচেষ্টা চালায়,কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে ওই অল্প রিজিকের ভেতরই রেখেছেন, কিন্তু তারা হা-হুতাশ না করে আল্লাহর উপর নির্ভর করে ও সন্তুষ্ট থাকে। আর তারা জীবীকার জন্যে মরিয়া হয়ে না উঠে ন্যূনতম সময় সেটার পেছনে দেয় এবং বেশী সময় দেয় আল্লাহর ইবাদতে। এটাই আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠ। তবে সম্পদশালীরা বঞ্চিত এমন নয়। বরং রসূল(সাঃ)বলেন যে, যার সম্পদ আছে এবং সে আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাকে হিংসা করা যায়। অর্থাৎ আমারও সম্পদ থাকলে আমিও আল্লাহর পথে ব্যয় করতাম, এমন।
অরেকটি বিষয় এসেছে আল্লাহর সেসব প্রিয় বান্দারা সমাজে অপরিচিত বা কম পরিচিত। অর্থাৎ তারা সমাজের মানুষের কাছে সেলিব্রিটি হওয়ার জন্যে বা অপরের প্রশংসা পাওয়ার জন্যে,বা নিজের নাম প্রচারের জন্যে কাজ করেনা। তারা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে কাজ করে। তবে এর মানে এই নয় যে, এরকম লোকেরা পরিচিত হতে পারবে না। বরং অনেক ভালো মানুষকে আমরা শ্রদ্ধায় শ্মরণ রাখি। কিন্তু সেই লোকটি পরিচিত হতে চায়নি, এমনই হবে তাদের চরিত্র।
আরেকটি বিষয় এসেছে তাদের মৃত্যু আসতে পারে বৃদ্ধ না হলেও। এটাকে আমরা বলি অকালে ভালো মানুষটা চলে গেল। এভাবে বলা উচিৎ নয়, কারন সকলের জন্যেই নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত। কিন্তু আল্লাহর প্রিয় বান্দারা দীর্ঘ হায়াতও পেতে পারেন। এবং দীর্ঘ হায়াত পাওয়া বান্দারাও আল্লাহর বিশেষ রহমত প্রাপ্ত, সেটাও হাদীসে এসেছে।
আল্লাহ বলছেন, তাদের জানাজায় লোক কম হয়। অর্থাৎ তারা তো সমাজে পরিচিত নয় তেমন,ফলে জানাজায়ও লোক কম হয়। এর মানে এই নয় যে, যার জানাজায় লোক কম হয় সেই এরকম ভালো ব্যক্তি, যে আল্লাহর প্রিয়। বরং সেই লোকটি নিজেকে আড়াল করতে চেয়েছে সারাজীবন,আর মানুষও চেনেনি তাকে,ফলে জানাজায় লোক কম। আবার জানাজায় বেশী মানুষ হওয়াও আল্লাহর আরেকটি রহমত। এর ভেতরও অধিক ফজিলত রয়েছে। কিন্তু এখানে আল্লাহ তার এক ধরনের প্রিয় বান্দাদের কথা বলছেন, যারা সমাজে কম পরিচিত কিন্তু আল্লাহর কাছে প্রিয়। এর উদ্দেশ্য এই যে, যারা অল্প রিজিক পেয়েছে, অল্প হায়াত পেয়েছে,অল্প সম্মান পেয়েছে,যারা দুনিয়াতে অনেক ক্ষেত্রে বঞ্চিত হয়েছে, তারা এসব সীমাবদ্ধতার পরও আল্লাহর উপর নির্ভর করলে ও আস্থা রাখলে ও ইবাদতে অধিক মনোযোগী হলে আল্লাহ তাদেরকে তার সেরা বান্দাদের ভেতর গণ্য করবেন। কোনোভাবে বঞ্চিত হয়ে আমরা যেন হতাশ না হই ! আল্লাহ দেখছেন এবং তিনি আমাদের সাথে আছেন।
বিষয়: বিবিধ
৬৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন