সত্য বা হকের স্বপক্ষে বা আল্লাহর পক্ষে থাকার কারনে যারা নানানভাবে গালি খান ও খারাপভাবে সমালোচনার সম্মুখিন হন,তাদের জন্যেঃ

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২০ জুন, ২০১৯, ০৯:৫২:৪১ সকাল



সত্য বা হকের স্বপক্ষে বা আল্লাহর পক্ষে থাকার কারনে যারা নানানভাবে গালি খান ও খারাপভাবে সমালোচনার সম্মুখিন হন,তাদের জন্যেঃ

------------------------------------------------------------------

আমরা মানুষ এবং আমাদের নানান রকমের,মাত্রার আবেগ রয়েছে। আমরা যখন সত্যের স্বপক্ষে অবিচল থাকি,তখন কাছের মানুষও অনেক সময় ভুল বুঝে আমাদেরকে পরিত্যাগ করে অথবা খারাপভাবে সমালোচনা করে, ফোড়ন কাটে,হিংসা করে, গীবত করে,মিথ্যা অপবাদ দেয়,উপহাস করে,বিদ্রুপ করে। কখনও আমরা নানানভাবে ও মাত্রায় অত্যাচারের সম্মুখিন হই। এটাই আল্লাহর বিধান যে, যখনই কেউ আল্লাহর পক্ষে থাকবে,তখন কাফির বা শয়তান বা শয়তানের পক্ষশক্তি বা অবুঝ সম্প্রদায় এর বিরোধীতা করবে। অধিকাংশ মানুষই ট্রেডিশন অনুসরণ করে,তারা ভালো মন্দের জ্ঞান তেমন রাখেনা। সমাজের স্বাভাবিক গতির বাইরে কিছু গেলেই তারা খারাপ মনে করে এবং সমালোচনামুখর হয়। অথচ ভালো মন্দের মাপকাঠি হল আল্লাহ প্রদত্ত ওহী ভিত্তিক জ্ঞান। অধিকাংশ মানুষই অবুঝ,অবিবেচক, ফলে সমালোচনা হবেই। আর আল্লাহ যেহেতু তার পক্ষের মানুষদেরকে মহা পুরষ্কারে ভূষিত করবেন,তাই তাদেরকে শয়তান,মানুষ দ্বারা হেনস্থা করে পাপমুক্ত করে নেন,যাতে আখিরাতে বিশাল পুরুষ্কারে তাদেরকে ধন্য করতে পারেন। মুমিনের যোগ্যতা অনুসারেই আল্লাহ অপদস্ত,অত্যাচারের সম্মুখিন করেন। প্রথম শ্রেনীতে রয়েছে নবী-রসূলগন। এরাই সবচেয়ে বেশী অত্যাচার ও সমালোচনার সম্মুখিন হন। ফলে আমরা এটাকে বিবেচনায় রাখব যে, ভালো কাজ করলে সমালোচনা হবেই। যদি মানুষ আমার কেবল প্রশংসাই করে এবং সমালোচনা না করে, তবে চিন্তার যথেষ্ট কারন রয়েছে। হতে পারে নিজের অজান্তেই আমি শয়তানের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলেছি।

সর্বাবস্থায় আলহামদুলিল্লাহ বলতে হবে। আমাদেরকে যখন মানুষ প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে গালি দেয়, তখন আমাদের ভেতর প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়,সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তখন ভাবতে হবে , এটাই সকল নবী-রসূলদের একটি স্বাভাবিক প্রাপ্তী ছিলো দুনিয়াতে। আর আমি নিশ্চয়ই নবীদের থেকে মর্যাদাবান নই যে গালি খাব না ! এরপর ভাবত হবে, আল্লাহ অবশ্যই ন্যায় বিচারক এবং তিনি দেখছেন। আমি আল্লাহর পক্ষে থাকার কারনেই গালি খাচ্ছি। আল্লাহই অন্যের দ্বারা গালি খাইয়ে পাপগুলো ধুয়ে দিচ্ছেন এবং মর্যাদা বাড়িয়ে দিচ্ছেন,এটা মহা ভাগ্য। অতএব তিনিই যথেষ্ট। দু:খের কোনো কারন নেই। আলহামদুলিল্লাহ বলে ওদেরকে বরং বলা উচিৎ, ভাই অনেকদিন গালি টালি খাইনা,,কিছু গালি টালি দেন খাই...... প্রশংসা তো অনেক পেলাম,,এবার একটু গালি খাওয়া হোক Happy

একজন মুমিন যথাসম্ভব বিতর্ক থেকে নিজেকে মুক্ত রাখে, তবে যদি পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করে, তাহলে অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গতভাবে, ভারসাম্যপূর্ণভাবে, যুক্তিসঙ্গতভাবে,অপরের প্রতি মর্যাদা রেখে, সুন্দর ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে হবে ঐক্য ও শান্তির জন্যে। এর কারন হল, উভয় পক্ষে এমন অনেক লোক থাকে, যারা যথেষ্ট ধৈর্য্যশীল নয় এবং জ্ঞানী নয়, এরা আলিমদের মুখ থেকে দ্রুত সিদ্ধান্তমূলক কথা বের করতে চাপাচাপি করে। এরা নিজেরা পক্ষ বিপক্ষ তৈরী করে আলিমদেরকে যে কোনো একটি পক্ষ বেছে নিতে চাপ প্রয়োগ করে। আর যখন কোনো আলিম তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কোনো একটি পক্ষে কিছুটা হলেও ঝুঁকে পড়ে, তখন শুরু হয় ফিতনার উপর ফিতনা। খুব দ্রুত চরিত্র হনন শুরু হয় এবং দ্রুত সম্মানিত লোকদেরকে অপদস্ত করা হয়। এ কারনেই ফিতনার সময় চুপ থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন রসূল(সাঃ)। আলিমরাও অনেক সময় ফিতনা বুঝতে সক্ষম হয়না, ফলে তারা অনেক সময় এমন বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে যা শেষ পর্যন্ত একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা গন্ডির ভেতর সীমাবদ্ধ থাকেনা। অনেক সময় বিষয়টি বাড়তে বাড়তে বহু দূর চলে যায় এবং নিয়ন্ত্রনও করা যায়না।

কোনো বিষয়ে বিতর্ক থাকলে বোদ্ধা বা আলেমগনের গোপনে সেটা নিয়ে কথা বলা উচিৎ এবং যদি একমত হওয়া সম্ভব নাও হয়,তবে প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান রেখে সুন্নাহ ভিত্তিক নিজের অভিমত প্রকাশ করে চুপ থাকা উচিৎ। বিচক্ষন মানুষ সত্য উপলব্ধী করতে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদেরকে যথেষ্ট ধৈর্য্যশীল হতে হবে। অপরের প্রতি শ্রদ্ধা,সম্মান রাখতে হবে। কারো বিষয়ে নিজের মাথায় কোনো চিন্তা আসলেই তা মুখ দিয়ে বলে ফেলা যাবেনা। কারো কোনো বিষয়ের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দ্রুত বাতিল ফিরকার গ্রুপে ফেলে দেওয়া মহা ভুল হতে পারে।

মনে রাখতে হবে আমলের জোরে কেউ জান্নাতে যাবেনা। জান্নাতে যাবে আল্লাহর দয়ায় এবং তার সন্তুষ্টির কারনে। কখনও কখনও একটি ক্ষুদ্র কথা ও কাজ আমাদেরকে জান্নাতের নিকটবর্তী করে দেয়, আবার কখনও কখনও একটি ক্ষুদ্র কথা ও কাজ আমাদেরকে জাহান্নাতের গভীরে নিক্ষেপ করে। ফলে নিজেদের জ্ঞানকে পরিপক্ক মনে করে ,জ্ঞানের উপর নির্ভর করে দ্রুত সিদ্ধান্তমূলক কথা বলা থেকে বিরত থাকা উচিৎ। আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন ! আল্লাহ মর্যাদা বৃদ্ধি করুন এবং জ্ঞান বৃদ্ধি করুন !

বিষয়: বিবিধ

৬৫১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File