ঘা ঘেঁষে দাড়াবেন না !
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৭ এপ্রিল, ২০১৯, ০৯:৪৯:৩৫ সকাল
-------------------------
"একটা মারলে আরেকটা নেওয়ার জায়গা নেই, আবার গায়ে হাত দেয় ! একেবারে জানালা দিয়ে ফেলে দেব ! "
প্রায় ৫০ বছর বয়ষ্ক লোকটা মুখ কাচুমাচু করে মাথাটা নীচু করে বসে থাকল। আমি পেছন থেকে মাথাটা উঁচু করে দেখলাম তাকে, নাহ , চেহারা দেখে মায়া জন্মায় না। আর যে মহিলা ঝাঁঝালোভাবে কথাগুলো বললেন, তাকেও মনে হল গায়ে গতরে খাটা কর্মজীবী মহিলা। বয়স অনুমানিক ৪০/৪৫ হবে। তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছিলো পুরুষ মানুষ দু চারটাকে তুলে আছাড় দিতে পারে। হিসাব মিললো না, বয়ষ্ক লোকটা গায়ে হাত দেওয়ার মত আর মহিলা খুঁজে পেলনা ! ঘটনা বহুকাল আগের।
ঢাকা শহরে বাসে চড়ার অনেক ভবিজ্ঞতা আছে আমার। অনেক পূর্বে একবার গাজিপুর চৌরাস্তা থেকে বনানী আসার পথে বাসের ভেতর ওই ঘটনাটা প্রত্যক্ষ করি। আমি আসলে মাথা তুলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম লোকটা কেমন প্রজাতির ! লোকটার বয়স ৩৫ এর কাছাকাছি হলেও কিক আউট করতাম। এটা স্রেফ কথার কথা না, আমি বহু লোককে কিক আউট করেছি।
আমার ঝুলিতে এমন কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা বহু বুড়োর পক্ষেও সারা জীবনে দেখা সম্ভব হয়নি। অবাক হবেন একটা তথ্য জানলে যে, সুযোগ পেয়ে মেয়ে মানুষ অথবা বাচ্চাদের গায়ে, স্পর্শকাতর অংশে স্পর্শকারীদের বিরাট অংশই বয়ষ্ক মানুষ। কি গ্রামে, কি শহরে, সর্বত্রই একই অবস্থা। বয়ষ্কদের এক সুবিশাল অংশ চারিত্রিকভাবে ব্যপক ত্রুতিপূর্ণ। সম্ভবত এরা তরুন বয়স থেকেই অভ্যস্ত। আর এরা সাধারণত নিখূঁতভাবে কাজ করে। অভিজ্ঞতা বেশী হওয়ার কারনে বুঝতে পারে, কোথায় কিভাবে , কি করতে হবে। টার্গেটকে দূর্বল দেখলে এরা ধর্ষনও করতে পারে, তবে ধর্ষণ এদের টার্গেট নয়।
আমার নিকটজনদের সাক্ষাৎকারে আমি অনেক তথ্য জেনেছি এদের ব্যাপারে। বাসের ভেতর পাশাপাশি সীটে দুশ্চরিত্রবান যে কোনো বয়সী পুরুষের সাথে কোনো মেয়ে বা নারীকে যদি বসতে হয়, আর বাসে যদি ভীড় হয়, তবে সেই পুরুষ কিছু পরিক্ষা-নিরিক্ষা চালায়। সে উক্ত নারীর গা ঘেসে বসে এবং এমনভাবে বসে, যাতে কেউ অভিযোগ করতে না পারে। এরপর অন্যদিকে তাকিয়ে অথবা ঘুমের ভান করে নিজের বাহু দিয়ে নারীর শরীরে চাপ দেয় বা স্পর্শের পরিমান বাড়িয়ে দেয়। সেটা এতটাই নিখুঁতভাবে করে যে উক্তর নারী দ্বিধা-দ্বন্দে ভূগতে থাকে যে, সত্যিই কি সে ইচ্ছাকৃতভাবে স্পর্শ করছে, নাকি অনিচ্ছাকৃত ! এরপর উক্ত নারী যদি লজ্জায় অথবা যেকোনো কারনে প্রতিবাদ না করে, তবে সেই লোক আস্তে আস্তে গায়ে হাত দেয়। ওইটাই তার মজা। গায়ে একটু হাত দিয়ে মনে মনে নিজেকে তার সাথে নিজের ইচ্ছামত কল্পনা করেই সে শিহরিত হয়। আর যদি নারীটা খুব লাজুক হয় এবং প্রবলভাবে আত্মসম্মান হারানোর ভয় করে, তাহলে এরা খুব বড় চান্স পায়।
এরা খুব ভীরু কাপুরুষ ধরনের হয়, তবে বুদ্ধিমান প্রজাতির। এদের প্রতিহত করার একটা কৌশল হল এই যে, কনুই নিয়ে এমন এক ঘা দেওয়া, যাতে বাসের জানালা ভেঙ্গে নীচে পড়ে যায়। প্রত্যেকটা নারীকে বলব, এরকম পরিস্থিতিতে কখনই চুপ থাকবেন না। ভদ্রচীতভাবে এবং বলিষ্ঠ আওয়াজে ওই লোকটাকে সরে যেতে বলবেন। দেখবেন কিভাবে কাচুমাচু হয়ে সরে যায় ! আর বেশী বেয়াদবী করলে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন। দেশে সব মানুষ পঁচে যায়নি। আর মানুষের মন মেজাজ এমনেই খারাপ নানান পরিস্থিতির কারনে। দেখবেন এসব বিকৃত মানুষদেরকে অন্যরা কিভাবে সাইজ করছে। অবশ্য তার প্রতি অবিচার না হয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। বিষয়টা আসলে এমন যে, কারো কোনো জবাবদিহিতা নেই। আপনি পুলিশ ডেকে লাভবানও হবেন না। আইন কানুনের এত ফাঁক যে ওদের কিচ্ছু হবে না, তবে আপনার অনেক সময় ও অর্থ নষ্ট হবে। তাই প্রতিবাদী হওয়াই শ্রেয়।
দেশে বাস,টেম্পু, বা অন্য যানবাহন ও জনাকীর্ণ কোনো স্থানে মেয়েরা কিছু খারাপ পুরুষ কর্তৃক নিষ্পেষিত হচ্ছে। আরও অনেক খানে অনেক ভাবে নিষ্পেষিত হচ্ছে কিন্তু আজকের বিষয়বস্তু সেটা নয়। আরেকটা ব্যাপার হল ছোট মেয়ে বাচ্চারাও ব্যপকভাবে খারাপ স্পর্শের শিকার হচ্ছে। বিকৃত পুরুষরা জানে এরা লজ্জায় ও ভয়ে কাওকে কিছু বলবে না। ফলে ওরা বড় একটা সুযোগ পায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই লোকগুলো হয় খুব আপন আত্মীয় স্বজন,প্রতিবেশী, যাদের উপর নির্ভর করা যায়, শ্বিাস করা যায়। ফলে বাচ্চা মেয়েদের ক্ষেত্রে পিতা-মাতাকে সাবধান হতেই হবে। আর এখন একটা বিশাল সংখ্যক তরুন-যুবক,বালক প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে বহু কিছু অনেক আগে থেকেই জেনে যাচ্ছে এবং নিজেদের অজান্তেই বিকৃত রূচী লালন করতে শুরু করছে। সঠিক পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষার অভাব, পর্ণগ্রাফী এদেরকে ভেতরে ভেতরে শেষ করে দিয়েছে। ব্যক্তির ভেতর সেই ধ্বংসটা খালি চোখে দেখা যায়না, কিন্তু সমাজের দিকে তাকালে স্পষ্ট বোঝা যায়। ফলে আপনার বুঝ আপনি বুঝে নিন।
-----------------------------------
অনেকে সমাধান নিয়ে কথা বলতে বলতে অথবা সমস্যা নিয়ে কথা বলতে বলতে সকল সমস্যার মূলে মেয়েদের পর্দা না করা অথবা বোরখা না পরাকেই সমস্যার মূল কারন হিসেবে দেখতে পায়। হ্যা, এটাও অন্যতম কারন, কিন্তু মূল কারন নয়। এটা ঠিক যে, কোনো নারী নিজেকে প্রদর্শন করলে, পুরুষরা আকর্ষিত হবে, এবং এদের কারো ভেতর বিকৃতি থাকলে সে আরও অগ্রগামী হবে। কিন্তু এখানে আরও অনেক বিষয় রয়েছে। পর্দা মূলত নারী ও পুরুষ উভয়েরই। আল্লাহ তায়ালা উভয়কেই নিজেদের সতর ঢাকতে বলেছেন, উভয়কেই দৃষ্টিশক্তি ও গোপনাঙ্গের হেফাজত করতে বলেছেন। ফলে এটি নারীদের জন্যে একতরফা নয়। কিছু ঘটলেই নারীদেরকে দোষারোপ করা যাবেনা। তবে সঠিক পারিবারিক,সামাজিক শিক্ষা ও শৃঙ্খলা এখানে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দায়ী। আইনের শাসন না থাকাটা দায়ী। বিচার ব্যবস্থায় দূর্নীতি দায়ী। সরকার,পুলিশের দায়িত্বহীনতা,চরিত্রহীনতা,শিক্ষাহীনতা,নৈতিকতাবোধ হীনতা,ইচ্ছাহীনতা দায়ী। মানুষের ভেতর ঘৃণ্য কর্মকান্ড ও বিকৃতির জন্ম নেয় এমন সব উপায়,উপকরন সহজলভ্য করে মানুষকে নৈতিকতার সবক দেওয়া স্রেফ প্রতারণা। মানুষের নৈতিক চরিত্রের দিকে না তাকিয়ে স্রেফ পোষাক নিয়ে সমালোচনা করলে দেখবেন বোরখা পরা মানুষগুলোও রেহাই পাচ্ছে না।
------------------------------
কিছুদিন পূর্বে কিছু মেয়ে নিজের টিশার্টে "গা ঘেষে দাড়াবেন না" লিখে বা এই লেখা ছাপ মেরে বাসে যাতায়াত করেছে। এখান থেকে পুরো ফেসবুক জগত দুভাবে বিভক্ত হয়ে নানানভাবে আলোচনা-সমালোচনায় লিপ্ত হয়েছে। বর্তমানে ফেসবুকই হল অন্যতম প্রধান মিডিয়া। দেশের টিভি ও সংবাদপত্র বহু আগেই গ্রহনযোগ্যতা,নির্ভরযোগ্যতা হারিয়েছে। ফেসবুকে মিথ্যা সংবাদ পড়েও মানুষ আস্থা রাখে। কিন্তু সংবাদ পত্রের সঠিক সংবাদকেও মানুষ তেমন বিশ্বাস করেনা। ফলে ফেসবুক এখন প্রধান মিডিয়া। যারা সমালোচনা করছেন, তারা কিছু বিষয় মাথায় রাখলে ভালো হয়, সেটা হল " মেয়েগুলোর মূল ফোকাস কি ছিলো " ? ওটা কিন্তু এড়ানো যাবেনা। তারা একটা বড় ধরনের সামাজিক সমস্যা তুলে ধরেছে। হ্যা তাদের পোষাক নিয়ে সমালোচনা করতে পারি, কিন্তু তাদের বক্তব্যকে তুচ্ছ করে নয়। নারী আর পুরুষের চিন্তার ধরন একই রকম নয়। নারীরা অনাকাঙ্খিতভাবে কারো দ্বারা স্পর্শের শিকার হলে সারা জীবন মনোকষ্টে ভোগে। ফলে এই মায়ের জাতিকে সম্মান করতেই হবে, নিরাপত্তা দিতেই হবে। নারীর ইজ্জত দিতে না পারলে পুরষত্ব প্রদর্শণ অর্থহীন বিষয়।
আমি ইসলামের কথা বলে এবং সমাজ,সাংষ্কৃতির কথা বলে তাদের পোষাকের সমালোচনা করতে পারি, উপদেশও দিতে পারি। কিন্তু তা যেন সমস্যাকে পাশ না কাটিয়ে যায় ! অনেকে বলেছে, 'ওরকম মেয়েদের সাথে তো লোকে গা ঘেঁষে দাড়াবেই ! খোলা জিনিসে তো মাছি বসবেই !' অনেকে আরও খারাপভাবে তাদেরকে আক্রমন করেছে। কিন্তু আপনারা কি জানেন, বোরখা পরা নারীরা এখন বেশী স্পর্শের শিকার হচ্ছেন ? এর কারন হল এই যে, যেসব মেয়েরা খোলামেলা চলে, ওদের বেশীরভাগেরই চাপার জোর আছে। ফলে প্রতিবাদ করে বসে। ওদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশী। কোনো পতিতাও পয়সা ছাড়া পুরুষের অযাচিত স্পর্শ পছন্দ করেনা। আর বোরখা পরা নারীরা বেশীরভাগই উচ্চবাচ্চ করেনা। তার কথা মানুষ জেনে ফেললে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারবে না, এই চিন্তাটা তাকে অত্যাচারে ধৈর্য্য ধারন করতে উৎসাহিত করে এবং সে কারনে সে চুপ করে অন্যের হাতের স্পর্শ ঘৃণাভরে সহ্য করে যায়। আপনি আপনার নিকটআত্মীয়দের কাছে বিশেষ অনুরোধের সাথে জানতে চান, তাহলে শুনবেন অনেক ভয়ঙ্কর সব তথ্য এবং শিউরে উঠবেন।
আমি বলব, মেয়েরা আল্লাহর পথে সুন্নাহ অনুসারে ফিরুক। তারা পর্দা করুক, ইসলাম সঠিকভাবে চর্চা করুক। এবং পুরুষরাও তাদের দুষ্টি ও গোপনাঙ্গের হেফাজত করুক। পরিবার তার দায়িত্ব পালন করুক। সমাজ ও রাষ্ট্র সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুক, তাহলে এসব ঘটনা সর্বনীম্ন পর্যায়ে চলে আসবে। আমরা মেয়েদেরকে বলব, আপনি মুসলিম হলে মার্জিত পোষাক পরুন এবং পর্দা করুন। আর অমুসলিম হলে বাংলাদেশের সাংষ্কৃতির চর্চা করুন। এদেশে বেশীরভাগ অমুসলিমদেরকেও খুব মার্জিত পোষাক পরে চলতে দেখা যায়, এটা অনেক পূর্ব থেকে প্রচলিত সাংষ্কৃতি। কিছু খোলামেলা সাহসী মেয়েকে মিডিয়া সকলের চিত্র হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে, এটা অন্যায়। তবে এটাও ঠিক, কিছু সুশীল,নারীবাদী,বেহায়া মহিলা/মেয়ে এসব বিষয়কে উপলক্ষ্য করে নিজেদের বস্তাপচা চিন্তা-চেতনার প্রসার ঘটাতে চায়, সমাজকে তাদের মত করে পরিবর্তন করতে চায়। এরা সর্বদা অবাঞ্চিত, পরিতাজ্য ।
আজকে নারীরা যদি সমাজে নির্যাতন,অত্যাচারের শিকার হয় ,তবে তার দায় পুরুষ সমাজের। কারন প্রত্যেক নারীরই পুরুষ অভিভাবক রয়েছে। সমাজ পুরুষ কর্তৃক পরিচালিত হয়, ফলে সে দায় এড়াতে পারেনা। সমালোচনা তার মানায়,যে যথাযথ কর্ম সম্পাদন করে। সমাজে কিছু আধা শিক্ষিত আলেম নামধারী ওয়াজেরীন বা আলেম রয়েছে, এরা নারীদের বিষয়ে কথা বলার সময় যথেষ্ট সম্মানের সাথে কথা বলেনা বা বলতে পারেনা। এদের যথেষ্ট ও উত্তম শিক্ষা দরকার। কারন সমাজের মানুষের উপর এদের ব্যপক প্রভাব রয়েছে। এরা সাধারণ মানুষের চিন্তা তৈরীতে সহায়তা করে, কিন্তু এদের বেশীরভাগেরই চিন্তাগত দৈন্যতা রয়েছে। আমরা অবশ্যই নারীদেরকে সম্মান করি ও করব। নারী হল আমাদের সম্মানীতা মা,বোন,স্ত্রী,কন্যা। তাদেরকে আমরা হায়েনার মুখে ঠেলে দিতে পারিনা, শয়তানের খপ্পরে ছেড়ে দিতে পারিনা। সম্মানের সাথে তাদেরকে আমরা সঠিক পথে চলতে সর্বোচ্চ সাহায্য করব ইনশাআল্লাহ ।
বিষয়: বিবিধ
১১৪৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হেডলাইনটা সম্ভবত ‘গা ঘেঁষে দাড়াবেন না’ হবে!
খুব প্রয়োজন না হলে মহিলাদের ঘরের বাইরে বের হবার কথা না। তা সত্ত্বেও তারা বের হচ্ছে।
পোশাক আশাকের ব্যাপারে তাদেরকে একটু বেশীই বলা আছে পবিত্র ক্বুরআনে। কিন্তু সেটা মেইনটেইন করে খুব কম মহিলা।
তার মানে মহিলারা এখানে ধর্মীয় অনুশাসনকে খুব একটা ফলো করে না বা থোড়াই কেয়ার করে।
ফলাফল - এখানে ধর্মীয় অনুশাসন নিয়ে কথা বলাটা অরন্যে রোদন করার শামিল।
তাই - বলবো, মহিলারা যখন ফিল্ডে নেমেছে তখন তাদেরকে এসব জিনিস সহ্য করতে হবে , এরকম মেন্টালিটি নিয়েই নামতে হবে। এরকম ধাক্কা দিনে হাজারটাও খায় পুরুষ মানুষেরা।
মহিলারা এসব ব্যাপারে খুবই সেনসিটিভ বিধায় হয় তাদের উচিত মাঠে না নামা (কারণ তাদের বাবা/ভাই/স্বামী/ছেলেরাই মাঠে নামার জন্য নির্ধারিত) কিংবা নামলে সেটা সহ্য করার মানসিকতা নিয়ে নামতে হবে।
বাসে কিংবা ট্রেনে যারা যাতায়াত করি তারা জানি যে - একজন মহিলা দাঁড়ালে তার সামনে পিছে ডানে বামে মিনিমাম আধা হাত ফাঁকা রাখতে হয় । তার মানে একজন মহিলা ৫ জন পুরুষের জায়গা নিয়ে ফেলে (যেহেতু তার গা ঘেঁষা যাবে না)। ফলে অন্য যাত্রীদের সমস্যা হয় দাঁড়াতে।
আবার বসার ক্ষেত্রে দেখা যায় যে মহিলাদেরকে সিট ছেড়ে দেয় অনেক পুরুষ। যদি বয়ষ্ক মহিলা কিংবা বাচ্চা কোলে মহিলা হয় তাহলে সেটা করা যেতে পারে। কিন্তু ইয়ংদেরকে তো সেরকম ট্রিট করা উচিত না।
আমাদের পুরুষ মানুষদের মধ্যেই সমস্যা। ইয়ং মহিলা দেখলেই গদ গদ হয়ে যাই । তাকে খাতির করার জন্য তার সিট ছেড়ে দেই । যারা ভাল মনের তারা মনে করেন উনারা তার মা বোনের মত। আর যারা কুটিল মনের তারা মনে করে যে , হয়ত এই মহিলা আমার এই উপকারের বিনিময়ে কোন সময়ে আমার সাথে সেক্সও করতে পারে।
আপনি যতই উনাদের মা বোনের মত মনে করেন না কেন উনারা কিন্তু আপনাকে সব সময়েই নেগেটিভ সেন্সে চিন্তা করে। মনে করে না যে আপনি উনাদের ভাই কিংবা বাবার মত।
কোন ইয়ং মহিলাকে কি দেখেছেন কোন ইয়ং পুরুষের জন্য তার সিট ছেড়ে দিয়েছে?
মহিলারা নিজেদের জন্যও সিট ছেড়ে দেয় না তা কোন বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কোন মহিলাই হোক কিংবা হাত/পা ভাঙ্গা কোন সন্তানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হোক।
তাই মহিলাদের জন্য আগাম ও আলগা সিমপ্যাথি দেখানোর মোটেও পক্ষপাতি নই।
দাঁড়ানো ও বসা নিয়ে মহিলা ও পুরুষদের সাথে এই যে পারষ্পরিক রেষারেষি কথা কাটাকাটি এসব সমাধানের ব্যবস্থা তো আছেই।
গত ৩০ বছর ধরে মহিলারা এ দেশ শাসন করছে। মহিলাদের জন্য আলাদা স্কুল আছে, কলেজ আছে, বিশ্ববিদ্যালয় আছে , মেডিকেল কলেজ আছে, বাসে আলাদা সিটের ব্যবস্থা আছে। চাকুরিতে কোটা আছে।
তাহলে মহিলাদের এত সাফারিংস কেন? তারা তো অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদেরকেও পিছিয়ে দিয়েছে। তার পরেও কেন নাই নাই ভাব?
মহিলাদের জন্য আলাদা বাস থাকলেও মহিলারা সে সব বাসে না গিয়ে পুরুষদের সাথে ঘেষাঘেষি করে চলতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাতে লাভ আছে- এক ইচ্ছে করে পুরুষটির কাছ থেকে টাচ পেয়ে তাকে ইচ্ছেমত ফাঁপড় দিতে পারে এবং অন্য নারীবাদী+নারীপ্রেমী পুরুষদের দিয়ে ধোলাই মারতে পারে। বিপরীত লিঙ্গের লোক দিয়েই বিপরীত লিঙ্গকে ধোলাই খাওয়ানোতে মেয়েদের জুড়ি মেলা ভাড়। এক্ষেত্রে স্মর্তব্য ইউসুফ (আঃ) এর ঘটনাটি।
এখনকার পরিস্থিতি ভিন্ন। মহিলাদের মধ্যে নিজেকে শো-অফ করানোর প্রবনতা সবসময়ই ছিল। তারা চলবে ওয়েস্টার্ন স্টাইলে আর বিচার চাইবে ইসলামী বিধানে - দুটো তো একসাথে চলতে পারে না ।
আল্লাহ তা'য়ালা পুরুষ ও নারীদেরকে আলাদাআলাদা ভাবে বিচার করবেন। ইনফ্যাক্ট প্রত্যেককেই। এখনকার মহিলারা কি কোন পুরুষের শরিয়ত সন্মত বিধি নিষেধ মেনে চলে? আল্লাহ যে বলে দিয়েছেন পুরুষদের কর্তৃত্বে চলতে সেটা কি তারা মানে ? তাদের আচরণে কি মনে হয়? শরিয়ত সে জানে , আপনিও বারন করতেছেন - তার পরেও যদি নউনারা ডিরেইলড হয় তাতেও কি আপনি বলবেন পুরুষদের দোষ?
কড়াকড়ি করলে হবে নারী স্বাধীনতার খেলাপ আর ছেড়ে দিলে টাল্ডি বাল্ডি কিছু করলে হবেন দাইয়ুছ !!!
ভাইরে- কেউ কারও বোঝা বহন করবে না। আল্লাহ তা'য়ালা প্রত্যকেকে মস্তিস্ক দিয়েছেন। সেখানে কি মহিলাদের জন্য কোন কোটারর ব্যবস্থা আছে কিংবা তাদেরেকে কি প্রাধিকার দেওয়া আছে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন