মাসুদা ভাট্টির পোস্টমর্টেম !
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০১ এপ্রিল, ২০১৯, ১০:১৪:৩৮ সকাল
-----------------------------
বর্তমানের আলোচিত বুদ্ধিজীবী ,নারী অধিকার কর্মী,ও মানবতাবাদী মাসুদা ভাট্টির একটা লেখা নজরে পড়ল, যা উনি উনার টাইম লাইনে শেয়ার করেছেন। নীচের প্যারা দেখুন :
"যৌনতা মানে নষ্টামী না । যৌনতা মানুষের স্বাভাবিক শারিরীক প্রক্রিয়া । বিবাহ ছাড়া যৌনতাও খুবই স্বাভাবিক ঘটনা । এই স্বাভাবিক ঘটনাকে আমরা অস্বাভাবিক ভাবে নেই কারন আমরা একটা অস্বাভাবিক সমাজে বাস করি ।"
মাসুদা ভাট্টি অবাধ যৌনাচারকে সমর্থন করেছেন এ কারনে যে, এটি একটি স্বাভাবিক শারিরীক প্রক্রিয়া বা অনুভূতি। সুস্থ্য মানুষের এ অনুভূতি আছে, ফলে সে যার সাথে খুশী শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করবে। উনার এই অভিমতের পেছনের যুক্তি হল এই যে, এটি একটি সহজাত অনুভূতি, যার অবাধ ব্যবহার অন্যায় নয়। কিন্তু উনি যে উৎস্যকে কোনো বিষয়ের ভালো-মন্দের মাপকাঠি হিসেবে গ্রহন করেছেন, সেটা নিয়ে উনি সম্ভবত গভীরভাবে ভেবে দেখেননি।
মানুষের অনেকগুলো স্বাভাবিক বা সহজাত বা প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট রয়েছে যা মানুষ হিসেবে আমরা প্রাপ্ত। এর ভেতর রয়েছে যেকোনোভাবে বাঁচার আকাঙ্খা, ক্রোধ, রাগ, হিংসা-বিদ্বেষ,জেলাসী বা পরশ্রীকাতরতা,ক্ষোভ,দু:খ,সুখী হওয়ার প্রবনতা, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বা যৌনতা ইত্যাদী। মানুষের অনেকগুলো স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যের ভেতর উনি যৌনতাকে তুলে এনেছেন এবং এটার নিয়ন্ত্রনের বিষয়ে ব্যক্তির নিজস্ব স্বাধীনতার উপর নির্ভর করেছেন। ব্যক্তির নিজস্ব স্বাধীনতাকে ব্যবহার করাকে স্বাভাবিকতা ও ভালো কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
উনি যেভাবে মানুষের একটি বৈশিষ্ট্যকে মূল্যায়ন করেছেন, ঠিক সেভাবে আমরা যদি মানুষের অন্য একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যকে তুলে এনে উনার মত করে মূল্যায়ন করি,তবে ঘটনা কি দাড়ায় ?
ধরুন সেটা হল মানুষের হিংসা। হিংসা একেবারেই স্বাভাবিক একটি বৈশিষ্ট্য। আচ্ছা এখন এই হিংসাকে আমরা নিয়ন্ত্রন করব না। এটাকে ব্যক্তির বৈশিস্ট্য অনুযায়ী তার স্বাধীনতার উপর ছেড়ে দেব। চলুন মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে একটা গল্প তৈরী করি :
মাসুদার স্বামী বর্তমান আছেন, কিন্তু মাসুদা স্বামী ছাড়া অন্য কিছু মানুষকে পছন্দ করেন এবং তাদের সাথে রাত্রি যাপন করেন। মাসুদার স্বামী মাসুদাকে প্রচন্ড ভালোবাসেন। তো এই ঘটনায় মাসুদার স্বামীর ভেতর স্বাভাবিকভাবে কি হিংসা জাগ্রত হবে ? মাসুদার থিওরী কি বলে ?
মাসুদার "স্বাভাবিকক্ত থিওরী" অনুযায়ী মানুষের একটি স্বাভাবিক অনুভূতিগত বিষয় হল এই যে, মানুষ তার ভালোবাসার মানুষটিকে অন্যের সাথে ভাগাভাগি করতে চায়না। এর বিপরীতটা ঘটলে মানুষের ভেতর হিংসা,ক্রোধ জাগ্রত হয়। তো এমতাবস্থায় মাসুদার স্বামী উত্তেজিত হবে,ক্রোধে জর্জরিত হবে এটাই স্বাভাবিক। আর যেহেতু মাসুদার থিওরী ব্যক্তিকে সম্পুর্ণ স্বাধীনতা দিচ্ছে তার এই স্বাভাবিক প্রবনতা বা বৈশিষ্ট্যকে নিজের মত চরিতার্থ করতে, তাই বলতে পারি, মাসুদার স্বামী ক্রোধে জ্বলতে জ্বলতে উম্মাতাল হয়ে উঠবে আপন নিয়মে। এরপর এই থিওরী অনুযায়ী মাসুদার স্বামী তার উপর যদি আক্রমন করে বা মাথা কেটে নেয় ক্রোধে, তাহলেও মাসুদার থিওরী অনুযায়ী বলার কিছু নেই। কারন তিনি যৌনতা নিয়ে উল্লেখ করেছেন, এই অনুভূতি স্বাভাবিক,ফলে এই অনুভূতি জাগ্রত হয়ে ওঠাও স্বাভাবিক, এবং সেই অনুভূতী জাগ্রত হওয়ার পর তা যেকোনো স্থানে চরিতার্থ করাও স্বাভাবিক। ফলে একই নিয়মে তার স্বামীর ক্রোধ জাগ্রত হল এবং যেহেতু এটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, তাই এর নিয়ন্ত্রন প্রয়োজন নেই, ফলে ক্রোধের বশবর্তী হয়ে মাসুদা ভাট্টিকে চাট্টিখানায় অথবা মলমূত্রের হাউসে ডুবিয়ে মারলেও তার সূত্র অনুযায়ী আপত্তি থাকার কথা নয়।
==============
কিন্তু না, মাসুদা ভাট্টিরা মানুষের স্বাভাবিক প্রবনতার কথা বলে অন্য বৈশিষ্ট্যের বিষয়টি বিবেচনায় আনবে না। তারা সব বিষয় বাদ দিয়ে ঘুরে ফিরে মানুষের যৌনতা নিয়ে আসবে,এবং অবাধ যৌনাচারে সমাজ ধ্বংস করবে। নারীদের সম অধিকার নিয়ে আসবে এবং তার নিশ্চিন্ততার স্থান থেকে তাকে নামিয়ে বিশাল প্রতিযোগীতাপূর্ণ একটি স্থানে পুরুষের প্রতিযোগী বানাবে, যাতে শিঘ্রই সেই প্রতিযোগীতাপূর্ণ পরিবেশে তার স্বাভাবিক মমত্ববোধ দূর হয় এবং ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে পুরুষের সাথে দ্বন্দে জড়িয়ে সংসার ত্যাগ করে। তখন যেন তার জৈবিক চাহিদা পূরনে অবাধ যৌনতার থিওরী নিয়ে আসা যায়, সে রাস্তা খোলা রাখবে। এভাবে মানুষকে নফসের দাস বানিয়ে তার ইহজীবনও নরক যন্ত্রনায় কাটাতে বাধ্য করবে।
## তারা কেবল স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে যৌনতাকেই বিবচনায় এনে তরুন-যুবকদেরকে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি উসকে দিবে।
## তারা অবাধ ব্যভীচারের ক্ষেত্র তৈরী করবে।
## তারা স্বামী-স্ত্রীর বিশ্বস্ততার সম্পর্ককে ভেঙ্গে চুরমার করবে।
## তারা বিয়েকে অত্যাচার হিসেবে উল্লেখ করে অবাধ যৌনাচারকে উৎসাহিত করবে।
## নারীদের অন্তর ও পোষাকের পর্দাকে উম্মুক্ত করে তাকে ঘর থেকে রাস্তায় বের করে অন্য পুরুষ দ্বারা অত্যাচার করিয়ে ঘোষনা করবে,সে এখন যথেষ্ট মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। মিডিয়াগুলো যেহেতু মাসুদা ভাট্টিদের ভাতারদের, তাই মাসুদার থিওরী ওরা ফলাও করে ছাপাবে এবং যুবক,তরুনদের ব্রেইন ওয়াশ করবে।
## মাসুদারা যেহেতু অনেক বিশাল ক্ষমতাশালীদের পালিতা এবং তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে, তাই মাসুদাদের প্রভাবে গনমাধ্যমে ও কিছু কুত্তা সমাজে তাদের থিওরীর পক্ষ জোয়ার তৈরী হবে। এরপর সমমনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাশালী ব্যক্তিবর্গ তাদের স্বপক্ষে আইন প্রনয়ণ করবে।
## এরা নিজের পড়ন্ত যৌবনে কাস্টমারের অনাগোনার অভাব জেনেও অন্যকে অবাধ যৌনাচারে উৎসাহিত করতে এতটুকু কার্পণ্য করবে না। কারন ওরা শয়তানের থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত। ওদের রুটি-রুজি এসববের উপর নির্ভর করে।
---------------------------------------------------------
শেষ কথা হল এই যে, আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন কিছু বৈশিষ্ট্য দিয়ে। তিনি ভালো এবং মন্দ দুটোই তৈরী করেছেন।
খারাপের প্রতি আমাদের আকর্ষনও তৈরী করেছেন। কারন তিনি এর ভেতর দিয়ে আমাদেরকে পরিক্ষা করতে চান, আমরা কি আচরণ করি তা দেখতে চান। যে বৈশিষ্ট্যগুলো প্রদান করেছেন তা সহজাত ও স্বাভাবিক, কিন্তু এগুলোকে স্বভাবিকতার বলে অবাধ করা হয়নি, বরং নিয়মের দ্বারা নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে। আর এই বৈশিষ্টগুলো অবাধ হলে মানব সমাজের টিকে থাকা কষ্টকর হবে। তাদের ভেতর থেকে স্বভাবিক সুখ উঠে যাবে। আল্লাহ আমাদের কল্যানের জন্যেই আমাদের ভেতরকার অনেক বৈশিষ্ট্যগুলোকে নিয়ন্ত্রনের নানান সব নিয়ম- কানুন- আইন প্রদান করেছেন। এর ভেতরই কল্যান ও সুখ। এটা বুঝতে পন্ডিত হওয়ার দরকার নেই। মূর্খ্যরাও বোঝে, কিন্তু মাসুদা ভাট্টিরা সেটা বুঝতে দিতে চায় না।
অবাধ যৌনাচারে যে সুখ নেই, আছে হতাশা আর কোন্দল এটা মাসুদা ভাট্টিরাও জানে, কিন্তু তারা যা বিশ্বাস করে তা বলেনা, আর যা বলে তার সবটা বিশ্বাস করেনা। তাদের মত নারী অধিকার কর্মীদের অধিকাংশই পারিবারিক জীবনে প্রতিনিয়ত জাহান্নামের আগুনে জ্বলে। ব্যক্তিজীবনে এরা অসম্ভব ক্রেজী,হিংসুটে,পরশ্রীকাতর,উম্মত্ত,কপট, মিস্টভাষী বাজে মানুষ। বাংলার সাধারণ একটা নারী তার স্বামীর পরকীয়ায় কষ্ট পাবে কিন্তু হয়ত তাকে তালাক দিবেনা বরং সংশোধনের চেষ্টা করবে। কিন্তু মাসুদা ভাট্টিদের স্বামীরা পরকীয়া করলে ডিভোর্স করতে এক দিনও সময় নিবেনা। এটাকে তারা তাদের স্বাভাবিক যৌনাচারের থিওরীতে ফেলবে না। আর যদি স্বার্থের বন্ধন থাকে, মানে স্বামীর টাকা'ই সব ভরসা, তাহলে তাকে রেখে দিয়ে নিজেও স্বামীর রাস্তা ধরে আপোষকামী হবে। এরা সর্বদা মুখোসধারী।
মাসুদা ভাট্টি বলেছে- আমাদের সমাজে অবাধ যৌনাচার স্বাভাবিক নয়, কারন এটি একটি অস্বাভাবিক সমাজ। উনার কাছে জানতে চাই, আপনার মতের অনুরূপ অবাধ যৌনাচার দুনিয়ার কোন সমাজ অনুসরণ করে ? আমার মনে হয়, উনার দুনিয়া সম্পর্কে ভালো ধারনা নেই, অথবা উনি সত্য লুকাচ্ছেন। আপনি আমেরিকা-ইউরোপের সমাজের দিকে তাকিয়ে দেখুন। আপনি দেখবেন সেখানে মানুষেরা তাদের স্বামী বা স্ত্রীর সাথে অথবা প্রেমীম,প্রেমিকার সাথে অন্যকে ভাগাভাগি করতে চাচ্ছেনা। দেখবেন, নিজ প্রেমিকার দিকে অন্য কেউ তাকালে লোকটা তার দিকে ক্ষ্যাপা দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে,আপন সঙ্গীর অবাধ যৌনাচার কোনো সমাজে কোনো সুস্থ্য মানুষ মানেনা। কিন্তু গোপনে কারো পদস্খলন ঘটতে পারে, এটা সকল সমাজেই রয়েছে। তবে অল্প কিছু মানুষ আছে ইউরোপ-আমেরিকায়, এরা এসব নিয়ম মানেনা। ওদের সংখ্যা খুবই কম। মাসুদা ভাট্টিরা কল্পনায় ওদের রোমন্থন করে।
যদি প্রশ্ন করা হয়, তাহলে মুসলিম পুরুষরা একাধিক বিয়ে করে কেন, যদি নারীরা স্বাভাবিকভাবে স্বামীদের সাথে অন্যের ভালোবাসা ভাগাভাগি না'ই করতে চায় ?
এর উত্তর হল এই যে, অধিকাংশ মুসলিম নারীই স্বামীর ২য় বিয়ে পছন্দ করেনা। এটাই নারীর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। কিন্তু তারা মেনে নেয় এ কারনে যে, স্বামী উভয়ের সাথে সুআচরণ করবেন এবং সমান অধিকার প্রদান করবেন। আল্লাহ আদেশ করেছেন, তাই আল্লাহর আদেশের প্রতি সম্মান করে এটা মেনে নেয়। আখিরাতের লাভকে বিবেচনায় এনে আত্মত্যাগ করে। অর্থনৈতিক,সামাজিক নিরাপত্তার কথা ভেবে বা সন্তানাদীর কথা ভেবে মেনে নেয়। স্বামীর প্রতি আস্থা থাকার কারনে এবং ভালোবাসার মানুষকে কোনোভাবে হারাতে না চেয়ে তার থাকে থেকে যায়। ইসলামের আদেশ মানলে দুনিয়া ও আখিরাতে ভালো থাকবে এই চিন্তায় মেনে নেয়। তবে খুবই অল্প কিছু নারী স্বতস্ফুর্তভাবে মেনে নেয়। এ বিষয়টি মাসুদা ভাট্টির থিওরীর মত কিছু নয়। এখানে তার স্বভাবিকতার থিওরীর উর্ধ্বে উঠে আল্লাহর আদেশ মানাকে প্রাধান্য দিয়ে সুখী হওয়ার চেষ্টা করা হয়, নফসকে নিয়ন্ত্রনের ভেতর সফলতার চিন্তা করা হয়।
মাসুদা ভাট্টিরা গলাবাজি করতে থাকুক। এসব বাতিল মালকে কেউ না গুনলে এরা ইসলামের বিরোধীতা করে, কারন এরা জানে ধার্মিক মানুষেরা ব্যপক সমালোচনা করে তাকে সকলের সামনে পরিচিত করবে। এটাই এদের সফলতা যে, মানুষ ওদের নিয়ে আলোচনা করে। আর এরা সামাজিক ট্যাবু ভাঙ্গার কথা বলে নানান উপায়ে ইসলামের বিরোধীতা করে শক্তিশালী কর্তৃপক্ষ থেকে দয়া দাক্ষিণ্য গ্রহন করে। এদেরকে প্রত্যাখ্যান করুন ! আর এরা যেটাকে সমালোচনা করবে, সেটাই করবেন। কারন শয়তানকে দেখেও ইসলাম শেখা যায়,সঠিক রাস্তা চেনা যায়। যে কাজে শয়তানের গা জ্বলে, সেই কাজই বেশী বেশী করতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৩২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
উনার কাছে স্বাভাবিক সমাজ কোনটা ? যেখানে বিবাহ ছাড়াও যৌনতা চলে সেটা ?
আমরা রাস্তাঘাটে কুকুরকে দেখি এরকম করতে। ওদের মধ্যে বিয়ে হয় না বরং খুবই যৌনলীলা সাধিত হয় - একেবারে ওপেন ফিল্ডে। এটাই কি মাসুদা ভাট্টিদের সেই স্বাভাবিক সমাজ ?
তারা আমাদেরকে মানুষের কাতার থেকে কুকুরের কাতারে নিতে চায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন