ডঃ আব্দুস সালাম আজাদী
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৮ মার্চ, ২০১৯, ১০:০৫:১১ সকাল
https://www.youtube.com/channel/UCY4PK3slBn1VOUj5pK52SAg?view_as=subscriber&fbclid=IwAR1xE7QI_ZPws5wL8cVtCufcDFPZ7GXITtV_nrYWQPzCKhyoBNfsNhvDhxk
--------------------------------
অনেক আগে থেকে আমি পিস টিভির ভক্ত ছিলাম। সেটা ছিলো ডঃ জাকির নায়েকের কারনে। ইসলামের কারনে উনাকে পছন্দ করতাম। আমি কখনই অন্ধ ছিলাম না। ভালো মন্দ সাধ্যানুসারে যাচাই করে নিয়েই কোনো কিছু গ্রহন করা ছিলো আমার স্বভাব। ডঃ জাকির নায়েকের প্রতিষ্ঠিত পিস টিভি এমন একটা সময়ে তার নানান সব অনুষ্ঠান প্রচার করা শুরু করে, যখন ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের নামে শিরক,বিদাত,অন্ধ বিশ্বাস,কুসংষ্কার পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত। সেগুলো এখনও দূর হয়নি কিন্তু মানুষের কাছে সঠিক বিষয়টি পৌঁছাতে পিস টিভির ভূমিকা ছিলো অনন্ন। খুব অল্প সময়ের ভেতরই পিস টিভি আলোড়ন সৃষ্টি করে। অনেকে ডঃ জাকির নায়েকের নানান ক্ষেত্রে সমালোচনা করেছেন, কিন্তু সেসবের বেশীরভাগই প্রতিহিংসাপরায়নতার কারনে। অথচ তিনি সারা বিশ্বে ইসলামকে খুব দারুন আঙ্গিকে পরিচিত করার ক্ষেত্রে সুন্দর ভূমিকা রেখেছেন। আমরা তার দিকে আলোচনা নিয়ে যাব না।
পিস টিভির আলোচকদের ভেতর এক স্কলারের আলোচনা আমার মনের ভেতর চলে যেত। আমি সাধারণত দেখতাম শাইখগণ বা যারা ওয়াজ করেন, তারা গলা ফাটিয়ে চিল্লাচিল্লি করে কথা বলেন। কিন্তু উনি খুব নরম ভাষায়, যুক্তি-প্রজ্ঞা এবং দলিল প্রমান সহকারে কথা বলতেন। তার উপস্থাপনের ভঙ্গী আমার ভালো লাগে। এসময়ে আমি এস.বি ব্লগে লিখতাম। আর সেখানে ডঃ আজাদী সাহেবও লিখতেন। সেখান থেকেই দুজনের পরিচয় হয়। সে অনেক আগের কথা।
বিভিন্ন সময়ে উনি আমাকে গুরত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছেন এবং কখনও নিজে মুভ করে আমার অনেক কাজ করে দিয়েছেন। আমার এলাকার কাছাকাছি মানুষ হওয়ায় এবং আমার এলাকায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সুবাদে তিনি আমার দুলাভাই হয়ে যান,আমি হই তার শালা। তার বিভিন্ন সময়ে উপকারের জন্যে আল্লাহ অতি উত্তম পুরষ্কার প্রদান করুন ! আমি তার প্রশংসা করার জন্যে এই লেখা লিখছি না। ইসলামে যেসব মানুষের খেদমত অন্যের চোখের আড়ালে পড়ে থাকে, উনি তাদের একজন। ফলে ইসলামের স্বার্থে উনাকে তুলে আনা জরুরী।
বাংলায় যেসব মানুষ ইসলামের খেদমত করেছেন, তাদের খুব ভয়ঙ্কর কিছু ভাষাগত সমস্যা রয়েছে। মরহুম ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর এবং অল্প কিছু মানুষ ছাড়া বাংলা ও আরবী ভাষার উপর ভালো দখল খুব কম পন্ডিতেরই ছিলো ও আছে। বেশীরভাগ উঁচু স্তরের আলেমগণ ইসলাম সম্পর্কে অনেক জানা সত্ত্বেও ইসলামের মূল ভাব সঠিকভাবে বাঙ্গালীদের কাছে পেশ করতে পারেন না। কারন তারা আরবী পড়তে গিয়ে বাংলা ভুলে গেছেন অথবা শুরু থেকেই ভাষার জ্ঞান ছিলোনা, চর্চা হয়নি। বাংলা ভাষায় কুরআন ও হাদীসের অনেক অনুবাদ রয়েছে বাজারে, যা পড়লে অনুবাদের মান দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে ইচ্ছে করে। ভুল শব্দচয়নে পুরো কিতাব ভরপুর। এতে বক্তব্যের আবেদন নষ্ট হয়।
ডঃ আব্দুস সালাম আজাদী আরবী ভাষা,সাহিত্যের উপর পান্ডিত্ব অর্জন করেছেন তাই নয় দীর্ঘ সময় উনার এটা চর্চা হয়েছে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। উনি আরবে আরবী ভাষায় কিতাব লিখেছেন,অনুবাদ করেছেন,পত্রিকায় লিখেছেন,আর্টিকেল,খুৎবা,আলোচনাসহ বহু কিছু রয়েছে। বহু সংখ্যক মূল্যবান কিতাব রয়েছে উনার। মদীনা ইসলামী ইউনিভার্সিটিতে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন। এখন লন্ডনে একই পেশায় আছেন। উনার অনেক বিশাল বিশাল ডিগ্রী রয়েছে কিন্তু সেগুলো আলোচনার উদ্দেশ্য নয়। মূল বিষয় হল অত্যন্ত সাবলীলভাবে উনি সুন্দর মাত্রায় ইসলামকে ঠিক ইসলামের মতই উপস্থাপন করেন। তার ভাষার মিষ্টতা মানুষকে মুগ্ধ করে। আরবী থেকে অনুবাদের সময় বাংলা ভাষার সঠিক মাত্রাটি উনার বক্তব্য ও লেখায় পাওয়া যায়। দাওয়াহর উদ্দেশ্যে দুনিয়ার অধিকাংশ দেশই উনি ভ্রমন করেছেন। বহুবার আমেরিকা আসলেও আমার সাথে দেখা না করেই অন্য দিক দিয়ে ভেগে গেছেন। সময়রে সাথে খাপ না খাওয়াতে আমার পক্ষেও দেখা করা সম্ভব হয়নি। তবে দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। ছাই দিয়ে ধরব। আমি তার কল্যানকামী,ফলে আল্লাহ ব্যবস্থা করবেন'ই।
দীর্ঘ সময় ইসলামের খেদমত করে গেলেও তিনি এই ডিজিটাল যুগে অনেকটা এনালগ হয়ে ছিলেন। পূর্বে ইউটিউবে তার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বক্তব্য সম্বলিত নানান ভিডিও দেখেছি। সিরাতের উপর তার পূর্ণাঙ্গ একটি আলোচনা রয়েছে, যা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধারাবাহিক ভিডিওতে ভিভক্ত। সম্প্রতি তিনি ইউটিউবে নিজস্ব চ্যানেল খুলেছেন। আমি খুব খুশী হয়েছি। নিজে সাবস্ক্রাইব করেছি এবং আপনাদেরকে অনুরোধ করছি সেখানে অংশ নিতে।
বর্তমান যুগ হল ফিৎনার শ্রেষ্ঠ যুগ। সম্ভবত কিয়ামত আসন্ন। ছোটখাটো আলামত বহু আগেই প্রকাশিত হয়েছে। বড় আলামতের কিছু কিছু ঘটে গেছে। আমরা খুব শেষের দিকে অবস্থান করছি। এমতাবস্থায় দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ও বুঝ প্রাপ্ত হওয়া মানে হল মহা সাগরে হাবুডুবু খেতে খেতে নৌযান প্রাপ্ত হওয়া। উনাকে আপনাদের ভালো লাগবে, কারন উনি কোনো বিশেষ গ্রুপের নন, বরং উনি ইসলামকে ইসলামের মত করেই চর্চা করেছেন এবং সত্য বিষয়টি আমাদের সামনে নিয়ে এসেছেন। তারপরও উনি মানুষ, উনি ভুলের উর্ধ্বে নন। তবে উনি উনার সাধ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছেন। আমাদের উচিৎ ইসলামের প্রচারে অংশগ্রহন করা। আল্লাহ কখন কিভাবে কাকে আলোর পথে নিয়ে আসেন, তা আমরা কেউ'ই জানিনা। আমরা কেবল চেষ্টা করতে পারি, আর সেই চেষ্টাকে স্বার্থক করতে কুরআন-সুন্নাহকে মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। সে লক্ষ্যেই ইসলামী স্কলারদের বাণী মানুষের কাছে পৌছানোর চেষ্টা।
শেষ কথা হচ্ছে ডঃ আব্দুস সালাম আজাদীর বক্তব্য শুনুন, ইনশাআল্লাহ ভালো লাগবে এবং তার চ্যানেলটি বেশী বেশী প্রচার করুন,শেয়ার করুন। ভালো বিষয় যত বেশী শেয়ার হবে, তত বেশী নেকী,কারো নেকী কমবে না, বরং প্রবল গতিতে বাড়তে থাকবে। দুনিয়াতে প্রশান্তি ও আখিরাতের মুক্তির জন্যে ইসলামের বানী প্রচারে অংশ নিন। আল্লাহ আপনাদের কল্যান করুন এবং আল্লাহ ডঃ আব্দুস সালাম আজাদীকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন, সুস্থ্যতা দান করুন, কল্যান,বরকত,রহমত দান করুন,আখিরাতে অতি উঁচু মর্যাদা দান করুন !
বিষয়: বিবিধ
৮৭১ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন