পূঁজিবাদ

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ০১:৩৬:৪২ দুপুর

গত বছর আমার এলাকায় গাড়ির তেলের দাম ছিলো প্রতি গ্যালন ৩ ডলার অথবা কখনও কিছু কম,কখনও কিছু বেশী। আর আজ আমার এখানে তেলের দাম প্রতি গ্যালন ২.৩৫ থেকে ২.৪৫। কোথাও কোথাও আরও বেশী বা আরও কম আছে। কথা সেটা নয়, কথা হল এই দাম হ্রাস বৃদ্ধীর কারন কি ?

বিষয়টাকি এই যে, যেসব দেশ তেল উৎপাদন করে তারা তেল উৎাদন বন্ধ রেখেছে ? অথবা প্রয়োজনের তুলনায় মার্কেটে তেল কম/বেশী হয়েছে ? নাকি মাটির নীটের তেলগুলো ধর্মঘট ডেকে নিজেদের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে !

যদি কারন অনুসন্ধানে যান, দেখবেন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দাম বাড়ার কারন হল: ভালো লাগে,ঠেলায়, ঘুরতে এরকমই। ভালো করে শুনুন তেলের উৎপাদন পূর্বের চেয়ে বরং বেশী হয়েছে। তাহলে দাম কেন বেড়েছিলো ?

মূল কারন হল এসব পণ্য নিয়ন্ত্রণ ও বিক্রী করে দুনিয়ার কিছু দৈত্য দানব কোম্পানী। এরা পণ্য দ্রব্য মজুদ করে রাখে নিজেদের মত করে। এরপর ইচ্ছামত দাম কমায় বা বাড়ায়। যদি পূঁজিবাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান,,,তাহলে আপনাকে বি.বি.এ, এম.বি.এর বিশাল কোর্স পড়াবে এই ব্যাপারে,,,যে এই এই কারনে বাজারে এই এই হয়,,,তারপর দাম বাড়ে কমে....কিন্তু আপনি বাস্তবতা দেখলে আপনার পুস্ততে প্রস্রাব করতেও ঘৃণাবোধ করবেন।

অর্থনীতি শেখাচ্ছে বাজারে পণ্যের সরবরাহ কমলে দাম বাড়ে। আর ইসলাম বলছে, পণ্যের সরবরাহ কমার কারনে দাম বাড়লে ওই ব্যবসায়ীদের কানের নীচে........। আচ্ছা চিন্তা করুন তো, বাজারে চাহিদা ১০০ টন চাল। বাজারে ১০০ টন চালই আছে। দাম ধরা হল প্রতি কেজী ৫০ টাকা। এখন এই বাজারে চালের সরবরাহ যদি কমে ৫০ টন হয়ে যায়, তাহলে দাম বাড়বে কেন ????? মানুষ ভাত কম খাবে, নইলে না খেয়ে মরে যাবে। পকেটে টাকা নিয়ে দৌড়াবে কিন্তু চাল পাবে না, এমনই তো হওয়ার কথা, তাই নয় কি ?? কিন্তু চালের দাম বাড়বে কোন যুক্তিতে ??? যদি কোনো যুক্তি থেকে থাকে, সেটা স্রেফ প্রতারনার যুক্তি। অবশ্যই সৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হওয়া যুক্তি নয়। কল্যানকর যুক্তি নয়। বরং সঠিক যুক্তি হল এই যে, বাজারে সরবরাহ কম, তাহলে দাম একই থাকবে। কিন্তু নিয়ম হবে একজন মানুষ বেশী পরিমান পণ্য কিনতে পারবে না। কারন একজন পয়সাওয়ালা মানুষ বেশী পণ্য কিনে নিয়ে গেলে বাকীরা বঞ্চিত হবে। এটাই ইসলামী অর্থনীতির শিক্ষা। এখানে ব্যবসায়ীদেরকে ব্যবসা করে পয়সা কামাতে দেওয়া হয়, প্রতিযোগীতা করতে দেওয়া হয় কিন্তু জনগণকে নিষ্পেষণ করে নয়।

রসূল(সাঃ) নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী মজুদ করে বাজারে কৃত্তিম সঙ্কট তৈরী করাকে হারাম ঘোষনা করেছেন। আর এই কৃত্তিম সঙ্কট তৈরী করে ফায়দা লোটাই হল পুঁজিবাদের ১ নাম্বার শিক্ষা ও কাজ। এখানে কোটি লোকের পূজিঁ পদ্ধতিগতভাবে তুলে দেওয়া হয় কয়েকজন দৈত্তাকৃতির মানুষের হাতে,আর সাধারণ জনতা হাপিত্যেশ করে।



আবারও তেলের উদাহরনে চলে যাচ্ছি। মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল একই দামে ,একই জাহাজে করে আমেরিকায় প্রবেশ করছে। ট্যাক্স রেটও একই আছে। পরিবহন ও আনুষাঙ্গিক খরচও প্রায় একই আছে, তাহলে দাম বাড়ার কারন কোনটা ? আবার অনেক ক্ষেত্রে এই তেল কোম্পানীগুলোই খনির মালিক। মানে মাটির নীচ থেকে এরাই তেল তুলছে।

আসল বিষয় হল এই যে, এরা যখন দেখলো মানুষের এই তেল ছাড়া চলেনা, আমাদের কাছেই আসতে হবে,,তখনই এই খেলা শুরু হল। আর এসবকে খুব দারুন দারুন নাম দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদেরকে পড়ানো হল।

বিশ্বাস করেন, ইসলামী অর্থনীতি যদি কার্যকরভাবে চর্চা করা হয়, তাহলে একেবারে আম জনতা প্রচন্ডভাবে লাভবান হবে এবং ধনীরাও থাকবে, ব্যবসায়ীরাও একটা মুনাফা করবে কিন্তু রাতারাতি ফুলে কলাগাছ হবেনা। এ অর্থনীতি আল্লাহ দিয়েছেন মানুষের কল্যানে। এর ভেতরই কল্যান। ইসলামী অর্থনীতি চর্চার কারনে শত শত বছর ধরে মুসলিম ভূখন্ডগুলোতে মুদ্রাস্ফিতি প্রায় ঘটেনি বললেই চলে, পণ্য সামগ্রীর দাম ছিলো স্থিতিশীল একই রকম !

বিষয়: বিবিধ

৫৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File