গাজরের জুস
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ০৯:৪৮:০০ সকাল
এক এলাকায় এক মিথ্যাবাদী,বদ মুদী দোকানদার ছিলো। সে ওজনে ঠকাতো এবং ব্যক্তি হিসেবেও খারাপ ছিলো, কিন্তু তার প্রভাবের কারনে কেউ তার কাজের প্রতিবাদ করত না। এলাকায় অন্য দোকানও সে থাকতে দিতনা, ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে তার থেকেই কেনাকাটা করত।
এক পাগল প্রত্যেকদিন সেই মুদী দোকানে গিয়ে বলত গাজর আছে ভাই গাজর আছে ? মুদি দোকানদার বলত , না নেই। মুদী দোকানে কখনও গাজর থাকে ?
কিন্তু প্রত্যেকদিনই সে মুদী দোকানে গিয়ে একই কথা বলত,,ভাই গাজর আছে ? গাজর খাব,,,দেন না ভাই। এমন করেন ক্যান ? আমি গরিব বলে অবহেলা করছেন? ও ভাই মুখ ঘুরিয়ে আছেন ক্যান ? দেন না,,গাজর দেন গাজর দেন....।
: ওরে ভাই তোর পায়ে ধরি তুই যা,,,ভাগ....গাজর নেই রে...
:উমমম নেই বললেই হল, !! গাজর দেন গাজর দেন,,গাজর খাব,,,কুটুর মুটুর করে খাব...
:নেই,যা ভাগ...
:ভাগবো না,,আগে গাজর দেন তারপর ভাগবো...
:আচ্ছা দেখাতো দেখী আমার দোকানে গাজর কোথায় ?
:তা জানিনা, তুমি লুকিয়ে রেখেছো,,বের করো,,বের করো,,গাজর বের করো গাজর খাবো....
দোকানদারের ঘুম হারাম করে দিল পাগলটা। এরপর দোকানে আসলে তার ভয় ভয় করত, না জানি পাগলটা আবার চলে আসে ! একদিন সে ঘুমাচ্ছে,,,পাগল এসে বলছে,,,ও ভাই,,,আমার গাজর না দিয়ে ঘুমাস কেন ?? উঠে পড়....গাজর দে,,,গাজর খাবো...
:তুই আমার মাথা খা,,হারাম জাদা,,দূর হয়ে যা...ফের যদি গাজর চাস তো তোর দাত ফেলে দেব...
পরেরদিন পাগলের দেখা নেই। ভাবলো পাগল ভয় পেয়েছে। যাক কাজ হয়েছ। দোকানদার একটা হাতুড়ী এনে রাখলো।...
এর পরের দিন পাগল হাজির। খুব ভদ্র লোকের মত দোকানদারকে বলছে,, ভাই আপনার দোকানে চাল আছে ?
: হ্যা আছে..
:ডাল আছে ?
:হুমম ওই তো দেখা যাচ্ছে আছে...
:ভাই তেল আছে ?
:আছে আছে...
:ভাই লবন আছে ?
:ওরে আল্লাহ,,,,,আছে আছে....
:ভাই ময়দা আছে ?
:ইয়া আল্লাহ আমাকে তুলে নাও,,,,,এই পাগল সবই আছে...
:সবই আছে !! তাইলে তো গাজরও আছে,,,, গাজর দাও গাজর খাব,,,আজ আমি গাজর খাব...খাজর দে...এই হারামী শয়তান তুই আমার গাজরকে আটকে রেখেছিস,,,গাজর দে...গাজর দে.....গাজর খাব....!!!
দোকানদারের আর সহ্য হলনা। সে উঠে হাতুড়ীটা নিয়ে পাগলের দাতে বাড়ি দিয়ে সব দাত ফেলে দিল। পরের ২ দিন পাগলের আর দেখা নেই....।
তৃতীয় দিনে পাগল হাজির,,, দেখে দোকানদার দুপুরে ঘুমাচ্ছে। দোকানদারের কান ধরে টেনে তুলে বলল,,,,এ ভাই....ওঠ !!
: কি দরকার ?
: গাজরের জুস আছে ? গাজরের জুস খাবো,,,,দাত ভেঙেছিস ক্যান,,,এখন গাজর খেতে পারব না,,,গাজরের জুস দে...জুস খাবো....দে দে দে...
দোকানদার আর লোড নিতে পারলো না। নিজের হাতুড়ী দিয়ে নিজের মাথায় বাড়ি মেরে চিৎ হয়ে পড়ে থাকলো।
=========================
শিক্ষা: পাগল তার স্থান থেকে একজন ঠকবাজ,অসৎ মানুষের খারাপ কাজের প্রতিবাদ করেছে তার ভাষায়। প্রতিবাদ খুব ছোট হলেও তা যখন সম্মিলিতভাবে হয়, তখন তার প্রভাব হয় ব্যপক। আর যখন মানুষ নিজেকে গুটিয়ে ফেলে এবং নিজে নিজে ভালো থাকতে চায়, তখন পুরো সমাজ খারাপ হতে থাকে, আর তার নিজেরও ব্যক্তিগতভাবে ভালো থাকা অসম্ভব হয়ে ওঠে।
বিষয়: বিবিধ
৭৯৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন