ভারত খুবই চতুর এক রাষ্ট্র !
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:৫৫:৪০ দুপুর
------------------------------
সারা দুনিয়াতে ভাত তেমন না পেলেও ভারতের ভাতের বিশাল সংস্থান হয় বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশ এক দরিদ্র দেশ, বিশাল সংখ্যক তরুন,যুবকরা বেকার এখানে। আর এর ভেতর দিয়ে ভারতের ১০ লাখ অবৈধ লোক এদেশে নানান ক্ষেত্রে চাকুরী,ব্যবসা করে বছরে ১৪ বিলিয়ন ডলার তুলে নিয়ে যাচ্ছে, যা ভারতের বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্রে তৃতীয় বৃহত্তম। ভাবা যায় !! অপরদিকে বাংলাদেশ সরকারের পৃথিবীতে একটিই মাত্র দেশ রয়েছে,আর তা হল ভারত। এদের কাছে ভারত হল ভগবান, যদিও ভারতের কাছে ভগবান হল গাভী।
গত ১০বছরে ভারত বাংলাদেশে এমন অসাধারণ এক সেটআপ তৈরী করেছে যা তুলনাহীন। ভারত তার অন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল,শ্রীলংকা,মালদ্বীপ এমনকি ভূটানেও এরকম দারুন প্রভাব বলয় তৈরী করতে পারেনি। ভারত নিজেও ভাবেনি যে এতটা সাফল্যজনকভাবে তারা এই প্রভাববলয় তৈরী করতে পারবে। বিষয়টা খুব নিখুঁত ছিলো। এটা ঘটেছে সেল্ফ ইন্টারেস্ট বন্ডের মত এক ক্ষণস্থায়ী সম্পর্কের ভিত্তিতে, কিন্তু স্বার্থ যেহেতু সুগভীর তাই বলা যায় সম্পর্কও গভীরতা পেয়েছে। ভারতের প্রয়োজন ছিলো বাংলাদেশকে নিবীড়ভাবে পাওয়া। চায়না ও আমেরিকারও এরকম ইচ্ছা ছিলো কিন্তু বর্তমান সরকারের অন্তরে অন্যরা ভালোবাসার স্থানে ছিলোনা।
অবস্থা এখন এমন যে, সরকার কোনো কিছু নিজের মত চাইলেও তা পুরোপুরি সম্ভব নয়। কারন এখানে কিছু হতে হলে ভারতের অনুমোদন লাগবে। তারা অনেক ঝুকি নিয়েছে,অনেক কাঠখড় পুড়িয়েছে। আর সরকার তার নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারতকেই বেছে নিবে। এরা যদি কোনোভাবে আনুগত্য প্রকাশে কার্পন্য করে তাহলে ভারত ইচ্ছা করলে এদেরকে তছনছ করে দিতে পারে। ফলে সরকার তাদের প্রতি সদা অনুগত, ভারতও ভালোবাসার ছোয়ায় রাখে এদেরকে। আর আওয়ামী সরকার ছাড়া অন্য কেউ ভারতের স্বার্থ পুরোপুরি রক্ষা করবে না, এটা ভারত জানে।
তাই মার্কিন,ইউরোপ,আরব, যেই বাংলাদেশ সম্পর্কে বয়ান করুক না কেন, নছিয়ত করুক না কেন, ভারত মুখে মুখে বলে আচ্ছা ঠিক আছে,অবশ্যই,আচ্ছা দেখছি,,সহমত আমরা,বিষয়টা যুক্তিসঙ্গত, অবশ্যই চাই...... কিন্তু গোপনে বাংলাদেশ সরকারকে বলে,,,,মুখে বলা কথাগুলো একান দিয়ে শুনে ওকান দিয়ে বের করে দাও। ভারত জানে অন্য বৈদেশিক শক্তিগুলো তাদের বাংলাদেশ নিয়ে নানান চালের ভেতর প্রকাশ্যে লড়তে আসবে না। আর বাংলাদেশ-ভারতের বোঝাবুঝিটা খুব সুন্দর হওয়াতে অন্যরা প্রকাশ্যে কিছু বলার নৈতিক অধিকারও রাখেনা। এছাড়া আমেরিকা এখন প্রকাশ্য সংঘাতের অবস্থান থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নেওয়ার নীতিতে চলে গেছে। তারা অনেক কিছু বুঝতে পেরেও এখন তেমন কিছু বলেনা। অপরদিকে চায়না হল চরম আত্মকেন্দ্রীক রাষ্ট্র। আবার অন্য দলের সরকার ক্ষমতায় আসলে যে ধরনের স্বার্থ রক্ষা করত, তার সমপরিমান স্বার্থে ছাড় দিতেও বাংলাদেশ রাজি, ফলে অন্যরাও কিছু মনে করলেও তেমন কিছু বলতে পারেনা।
এখন সমস্যা হয়েছে জাতিসংঘে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশ গ্রহন নিয়ে। এ ব্যাপারে যদি সেনাবাহিনী সমস্যাগ্রস্ত হয়,তাতে ভারতের লাভ। তাদের আর্মী শূন্যস্থান পূরন করতে উদগ্রীব। আর যারা প্রতিবাদ করবে, তারা এখন ওদের পক্ষের লোক। চোখ তুলে তাকানোর লোক এখন নেই। বাংলাদেশের গার্মেণ্টস ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভারতের লাভ, কারন তারা প্রধান প্রতিদ্বন্দী। আবার বাংলাদেশের উৎপাদন খরচ কম হওয়াতে ইউরোপ,আমেরিকার প্রতিষ্ঠানগুলো সহযে অন্য বাজারে প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে এখানে যাই ঘটুক, তারা ব্যবসা চালিয়ে যাবে। আবার ভারতীয় বিশাল সংখ্যক ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে বড় বড় গার্মেন্টস বায়িং হাউজের মাধ্যমে এদেশ থেকে সস্তায় পোষাক তৈরী করিয়ে বিদেশে এক্সপোর্ট করছে। ফলে তারা নিজ দেশ এবং এদেশে এখন সমান তালে লাভবান। আর সরকার মাথা উচু করবে না, কারন তাদের জীবন মৃত্যু ওদের হাতে তুলে দিয়েছে। সরকার ক্ষমতা ছাড়লেই তারা ধ্বংস হয়ে যাবে বলে সরকার বিশ্বাস করে। আর এই সুযোগটি ভারত খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে।
এবার নির্বাচনে ভারত কোনো কথা বলছে না বটে কিন্তু গোপনে কলকাঠি সব তারাই নাড়ছে। সরকারের নির্বাচনী আচরণ কেমন হওয়া উচিৎ তা তারাই নির্ধারন করে। এতে জনগন ক্ষুব্ধ হলেও তাদের লাভ, খুশী হলেও তাদের লাভ। বরং জনগন ক্ষুব্ধ হলে বেশী লাভ, এতে আরও বেশী ভয় দেখিয়ে নিজেদের পক্ষে কাজ করিয়ে নেওয়া যায়। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে বল ভারতের পায়ে, হরদম গোল করে যাচ্ছে। তবে এ অঞ্চলের মানুষ একসময় বিস্ফোরিত হবে। চতুরতায় কাজ হবেনা। কিন্তু সে পর্যন্ত যেতে যেতে জনগনের অবস্থা পুরো কাহিল হয়ে যাবে।
বিষয়: বিবিধ
৬২৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন