সদাকাহ
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০১:০০:৪৬ দুপুর
".....এবং যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোনো সৎ কাজ করবে,,নিশ্চয়ই তার ব্যাপারে আল্লাহ প্রশংসাকারী এবং তিনি সর্বজ্ঞ।"...(সূরা বাকারা, আয়াত ১৫৮)
যদিও আমাদের অনেকের চোখ সওয়া হয়ে গেছে দেখতে দেখতে, তারপরও বলব, আরেকবার ভাবুন। আপনি নিজেকে ওই রাস্তায় কল্পনা করুন। ভালো আশ্রয় নেই আপনার। ক্লান্ত,শ্রান্ত,বিধ্বস্ত আপনার শরীর আর কুলাতে পারছে না। প্রচন্ড শীত। ধুলো ধুসরিত পরিবেশ। খোলা আকাশ। রাস্তায় গাড়ি চলার প্রচন্ড শব্দ। আপনার দিকে ভ্রক্ষেপ করার সময় নেই কারো। মানুষেরা বিকারগ্রস্তের মত চলে যাচ্ছে। শীতের পোষাক নেই আপনার। তারপর অনেক কষ্টে একটি চটের বস্তা জোগাড় করে শক্ত কংক্রিটের উপর গা এলিয়ে দিলেন। হুহু করে ঠান্ডা বাতাশ ঢুকছে বস্তা ভেদ করে। ঘুম আসছে না কিন্তু পরিশ্রান্ত দেহ মানছে না। চোখ আপনা থেকেই বুজে আসছে কিন্তু শব্দ,ঠান্ডা,শক্ত বিছানা কোনোটাই আপনাকে কোনোভাবে স্বস্তি দিচ্ছেনা। তারপর একসময় আপনার দেহ পরাস্ত হল এবং গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল। পরের দিনটাও আপনার জন্যে পূর্বের দিনের মতই। এভাবেই আপনার জীবন অতিবাহিত হচ্ছে। কি, কল্পনায় আসে ???
আমি জানি আপনি ঘাবড়ে গেছেন। আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে দ্রুত এই কল্পনা থেকে মুক্ত করতে মরিয়া হয়েছে। আপনি আপনাকে বিপদগ্রস্ত মনে করতে পারছেন না। আপনার সমস্ত দেহ-মন আপনাকে বাধা প্রদান করছে আপনার এ কল্পনায়। ভাবতে পারেন, যা আপনি কল্পনাও করতে পারছেন না, তাই'ই অনেক মানুষের নিত্য দিনের বাস্তবতা ! একজন মানুষ অবশ্যই অপর মানুষ সম্পর্কে ভাববে, পাশে দাড়াবে। এটাই মনুষত্ব ! আর মুসলিম হিসেবে এই দায়িত্ব বেড়ে যায় বহু গন। কিন্তু সুবিধা এই যে, আপনার এ সংক্রান্ত চিন্তা,সামান্য অথবা বৃহৎ কর্ম কোনোটাই ব্যর্থ হবেনা। এক বিশাল পরিমানে নিয়ামত, যা কোনো মন কখনই কল্পনা করতে পারেনা,গুনতে পারেনা,,,এমন মহা পুরষ্কারে আপনাকে আল্লাহ ভূষিত করবেন ! অবশ্যই আল্লাহ আপনাকে মহা পুরষ্কারে ভূষিত করবেন ! শুধু তাই নয়, দুনিয়াতেও আপনি সবচেয়ে সুখী মানুষের ভেতর অন্তর্ভূক্ত হবেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন :
" তারা তাদের প্রতিপালকের সন্তুষ্টি কামনায় ধৈর্য্যধারন করে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে জিবীকা দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে। তারা অন্যায়কে ন্যায় দ্বারা প্রতিরোধ করে। পরকালে ঘর(জান্নাত)প্রাপ্তী এদের জন্যেই নির্দিষ্ট।" ( আল কুরআন , ১৩:২২)
রসূল(সাঃ)বলেন- " প্রত্যেকটি মুসলিমকেই সাদাকাহ বা দান খয়রাত করতে হবে।" তখন একজন জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ(সাঃ) যদি করো সম্পদ না থাকে, তাহলে সে কিভাবে দান করবে ? জবাবে রসূল(সাঃ) বললেন- তাহলে সে দৈহিক পরিশ্রম করবে এবং উপার্জিত অর্থ থেকে সদাকাহ করবে। পূণরায় জিজ্ঞেস করা হল: "যদি সে সেটাও না করতে পারে,তাহলে ? " তিনি(সাঃ) বললেন, যদি সেটাও না পারে,তবে সে কোনো সাহায্য প্রার্থীকে দৈহিক শক্তি দিয়ে সাহায্য করবে। আবার জিজ্ঞেস করা হল, যদি সে সেটাও করতে সক্ষম না হয়, তাহলে কি হবে ? রসূল(সাঃ) বললেন..."তাহলে সে ভালো কাজ করতে থাকুক এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখুক নিজেকে। তাহলে সে সদাকাহর পুরষ্কার লাভ করবে আল্লাহর কাছ থেকে। " (বুখারী)
আপনি কি জানেন সদাকাহ আপনার কষ্ট,দু:খ দূর করে দেয় ? আপনি কি জানেন, সদাকাহ বিপদ হতে হেফাজত করে ? .... সদাকাহ হল সুখী হওয়ার এক গোপন সূত্র ! সদাকাহ পাপকে মিটিয়ে দেয়। এটা আল্লাহর রাগকে প্রশমিত করে। সদাকাহ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে। আর যার উপর আল্লাহ সন্তুষ্ট, তার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট হয়ে যান। রসূল(সাঃ) বলেন- নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো, তা সে একটি খেজুরের অংশ বিশেষ সদাকাহ করে হলেও.......
বিষয়: বিবিধ
৬১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন