লিডারশিপ খুব ভয়াবহ ব্যাপার ! ,
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১০:২৭:১১ রাত
,
,
,
"আর তারা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা ! আমরা আমাদের নেতাদেরকে মান্য করতাম। তারাই আমাদেরকে গুমরাহ করেছিলো। হে আমাদের পালনকর্তা ! তাদেরকে দ্বিগুন শাস্তি দিন , আর তাদেরকে মহা অভিশাপে অভিশপ্ত করুন !
(সূরা আল আহযাব, আয়াত (৬৭-৬৮)
"হে মুমিনগণ তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সরল সঠিক কথা বল। আল্লাহ তোমাদের জন্যে তোমাদের আমলগুলোকে ত্রুটিমুক্ত করবেন এবং তোমাদের পাপগুলোকে ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রসূলের আনুগত্য করে, সেই সাফল্য লাভ করে, মহা সাফল্য ! " (সূরা আল আহযাব, আয়াত ৭০-৭১)
লিডারশিপ ব্যাপারটা কতটা ভয়াবহ সেটা কেউ বুঝতে পারলে কখনই নের্তৃত্ব কর্তৃত্ব পাওয়ার জন্যে লালায়িত হওয়া দূরে থাক, জোর করে নের্তৃত্ব চাপিয়ে দিতে চাইলে সে পালিয়ে যেত। অবশ্য জোর করে কোনো যোগ্য লোককে ভালো কাজে দায়িত্ব চাপাতে চাইলে তাকে গ্রহন করতে হবে মর্মে রসূল(সাঃ) নির্দেশনা দিয়েছেন। আজকের সমাজে নের্তৃত্ব বিষয়টা সামাজিক মর্যাদা এবং অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হয়ে দাড়িয়েছে। কর্তব্য পালন এখানে গৌণ বিষয়। মানুষ তার রবের চোখে মর্যাদাবান হওয়ার চেয়ে অধিনস্ত বা যাদের উপর দায়িত্বশীল তাদের চোখে ভালো সাজার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। এদের ভেতর যারা ভালো বলে পরিচিত, তাদের অবস্থাও সুবিধার নয়।
নেতৃত্ব সংক্রান্ত আয়াত ও হাদীসগুলো কেবল রাজনৈতিক নেতাদের উপর বর্তায় না। রসূল(সাঃ) বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেকই কর্তৃত্বশীল,,পিতা তার পরিবারে কর্তৃত্বশীল.....এই হাদীসটিতে বলা হয়েছে প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে কারো না কারো উপর কর্তৃত্বশীল। ফলে সকলকেই তার অধিনস্তদের সম্পর্কে কৈফিয়ত দিতে হবে। যেমন যে লোকটির সমাজে কোনো মর্যাদা নেই এমনকি পরিবারও নেই, পাগল না হয়ে থাকলে নিশ্চয়ই তার এলাকার ছোটভাই অথবা তার কথা শোনে,মান্য করে এরকম কিছু লোক আছে। অর্থাৎ ওই লোকটিও একজন নেতা বা কতৃত্বশীল ব্যক্তি,যদিও তার পরিসর খুব ছোট। নেতা ছোট হোক আর বড় হোক বিধান সকলের জন্যে সমান।
অন্য হাদীসে এসেছে, রসূল(সাঃ)বলেন- কর্তৃত্বশীলদেরকে আখিরাতে শেকল পরিহিত অবস্থায় উঠানো হবে, এবং যতক্ষন না তার অধিনস্তরা তার সম্পর্কে ভালো কথা বলছে ও অভিযোগ প্রত্যাহার করতে, ততক্ষন পর্যন্ত তাকে অবমুক্ত করা হবে না। কাজেই ব্যাপারটি ভয়াবহ। আর যারা আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য বিধানে মানুষকে পরিচালিত করতে চায়, তাদের জন্যে ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে। তারা ব্যক্তিগতভাবে যতই ইবাদত বন্দেগী করুক না কেন, সামাজিক,রাষ্ট্রীয়ভাবে বা সামষ্টিকভাবে আল্লাহর আদেশ-নিষেধগুলো প্রত্যাখ্যান করার কারনে ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখিন হবে। আল্লাহ তায়ালা আমদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন সত্য প্রকাশে আমরা যেন ভয় না পাই।
অল্প কিছুদিনের দুনিয়ার জীবন দেখতে দেখতেই পার হয়ে যাবে। মারাত্মক ব্যাপার হল এই যে, গতকাল,গত সপ্তাহ,গত বছর আর ফিরে আসবে না। আমরা মুসাফিরের মত আমাদের গন্তব্যে চলেছি। আর অল্প কিছুক্ষনের ভেতরই আমাদের হিসাব শুরু হবে। কাজেই আমরা নানান ক্ষেত্রে নানানভাবে কর্তৃত্বশীল হিসেবে কি কাজ করছি, সেটা এখনই ভারা দরকার এবং সংশোধন করা জরুরী। নইলে অবস্থা ভয়াবহ। আফসোস,অনুশোচনা এখনই হওয়া জরুরী। আখিরাতের আফসোস কেবল শাস্তির নামান্তর। অন্যের অধিকার সম্পর্কে সতর্ক হোউন ! কাওকে কথা,হাত দ্বারা অথবা আচরণ দ্বারা অথবা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকলে এক্ষুনি বিষয়টি নিষ্পত্তি করে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। এতে যদি ইজ্জত চলে যায়,তবে যাক। আল্লাহ ইজ্জত দান করবেন। নইলে আখিরাতে কিন্তু শত শত কোটি মানুষের সামনে ইজ্জত বাঁচবে না। জাহান্নামে এক মিনিট জ্বলার চাইতে সারা দুনিয়ার মানুষের সামনে অপদস্ত হয়ে ক্ষমা পাওয়া অনেক বেশী কল্যানকর। মোমবাতির উপর কয়েক মুহুর্ত হাত রেখে তাপ উপভোগ করুন,,বিষয়টি উপলব্ধীতে আসবে।
বিষয়: বিবিধ
৬৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন