চীর সুখী জন

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০১:২৯:৫৭ রাত



সুখী হতে আসলেই সম্পদ তেমন দরকার হয়না। তবে প্রয়োজনীয় সম্পদ বা অর্থ দরকার হয়। সেটাও তেমন না যেমনভাবে আমরা মনে করি। একেবারে খাটি কথা। বাস্তবতার নিরিখেই বলছি। আমি বহু ক্লাশের মানুষের সাথে মিশেছি কিন্তু এর ভেতর ধনীদেরকেই কম সুখী দেখেছি। ধনীদের ভেতর আত্মতুষ্টি কম থাকে। এরা যত টাকা উপার্জন করে ততই দেখী বেশী অনিরাপত্তায় ভোগে। আরও বেশী ইনকামের জন্যে মরিয়া হয়ে ওঠে। বিষয়টা ভয়াবহ হয়ে ওঠে যখন তারা অন্যের সাথে এ বিষয়ে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়। আর এটাও বেশ স্বাভাবিক যে এই প্রতিযোগীতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

এরপর শুরু হয় তার জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিয়ে নানান টেনশন। তার অবর্তমানে সম্পদ কে প্রাপ্ত হবে, তারা এটা চালাতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে নানান টেনশন। নিজেকে সম্মানিত মনে করার কারনে অন্যের থেকে সম্মান ঠিকমত আসছে কিনা সেটা নিয়েও টেনশন। দেখা গেছে মন ও শরীর দুটোই দূর্বল হতে থাকে। অন্যের উপর নির্ভরশীল হওয়াতে শারিরীক পরিশ্রম করতে চায়না। ফলে আরও দূর্বল হয়ে ওঠে। ভেতরে ভেতরে ক্ষয় হতে থাকে। এসব মানুষের কেউ কেউ সম্মান বেশী পাওয়ার জন্যে নেতা হওয়ার চেষ্টা করে। অথবা সামাজিক নানান প্রতিষ্ঠান,ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধর হতে মরিয়া হয়। কাছ থেকে দেখেছি এদের অনেককে। এরা আসলেই সুখী নয়।

তবে কিছু ধনী আছে যারা আল্লাহকে ভয় করেই সম্পদ তৈরী করেছে এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে। এরা মানসিকভাবে বেশ সুখী, যদিও এদেরও নানান টেনশন আছে।

তবে আমি কিছু সুখী মানুষ দেখেছি,যারা জীবনকে সার্ধের ভেতর সবচেয়ে বেশী উপভোগ করে। এরাই প্রকৃত সুখী এমন মনে হয়েছে। এরা তেমন সম্পদশালী নয়, তবে জীবন চালানোর মত পয়সা আছে। এদের আছে সুন্দর ও সরল একটা মন। সরলতা নির্ভাবনার জন্ম দেয়। আল্লাহর উপর নির্ভরশীলতা এমন কিছু সৎ গুনের সৃষ্টি করে যা তাকে অন্যের চোখে বিশ্বস্ত আর সুন্দর মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করে। সুখের শুরু ওখান থেকেই।

ওয়াল্লাহি আমি দুনিয়ার সেরা সুখী মানুষ। অনেকে ভাবে আমার অনেক সম্পদ আছে। কিন্তু আসলে আমি ধনী নই। আমি পকেট সর্বস্ব একজন সাধারণ মানুষ। আল্লাহ আমাকে সম্মান দিয়েছেন। উৎকৃষ্ট স্বাস্থ্য দিয়েছেন। ভালোভাবে জীবন চালাতে যতটুকু অর্থ দরকার ততটুকু দিয়েছেন। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার মত মন দিয়েছেন। অন্যের জন্যে দোয়া করতে পারার হৃদয় দিয়েছেন। অন্যের কাছে আমাকে চরম বিশ্বস্ত মানুষ হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। আমি প্রান খুলে হাসি। জীবনকে হালালভাবে সর্বোচ্চ উপভোগ করি। আমি আল্লাহর দেওয়া বর্তমান অবস্থার কারনে শুকরিয়া জানাই এবং সর্বদা আল্লাহর সন্তুষ্ট থাকি। আর আল্লাহ ভেতর থেকে আমাকে প্রশান্তি দান করেন। বিলিয়ন ডলারেও এই সুখ কিনতে পাওয়া যায় না, কিন্তু উপভোগ করতে এই উপলব্ধী প্রয়োজন। আমার দু:খ কষ্টের অবস্থা আসেনা তা নয়, কিন্তু আমি তখন একদিকে সেটা থেকে উত্তরনের চেষ্টা করি, অপরদিকে আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট থাকি। যে কোনো অবস্থায় থাকি না কেন আল্লাহর উপর সদা সন্তুষ্ট থাকি। সুখের সূত্র এখানেই।

আপনি কিভাবে সুখী হবেন ??? খুব সোজা....ওই হাদীসটা মাথায় ঢুকিয়ে নেন। রসূল(সাঃ)বলছেন-"যে সুস্থ্যভাবে একটি দিন অতিবাহিত করল এবং সেদিনের খাবারও তার কাছে মজুদ রয়েছে,,,তাকে যেন সারা দুনিয়া প্রদান করা হয়েছে"...বুখারী

অসুস্থ্য মানুষের দিকে তাকিয়ে নিজের কথা ভাবুন,আরও বহু লোক আছে তাদের দিকে তাকিয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। সর্বদা মাথায় আল্লাহর ব্যাপারটি রাখুন। আল্লাহ প্রশান্তি দিবেন আর সেটাই প্রকৃত সুখ। সম্পদের বিষয়টি মুখ্য নয়। হৃদয় তৈরী করুন,,, আপনার মন প্রাচুর্য্যে ভরে যাবে। সুখ আসবেই ইনশাআল্লাহ।

বিষয়: বিবিধ

৫৯৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

386245
১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ সকাল ০৭:০১
Ruman লিখেছেন : অনেক সুন্দর উপদেশ পেলাম।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সকাল ১১:২১
318172
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File