ব্রাউন্সভিল

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১০:১৫:২৯ সকাল



------------

নামাজ থেকে ফিরে স্যামুলেকে নিয়ে গেলাম এক পুরোনো শহরে, নাম ব্রাউন্সভিল। এখানে দারুন একটা সেতুর পার হয়ে ছোট্ট সুন্দর শহরে প্রবেশ করলাম। জনসংখ্যা মাত্র ১৬৩০ জন। সবচেয়ে পুরোনো বাড়িটির তৈরী সাল দেখলাম ১৮৫০। তবে প্রথমে যেখানে থামলাম সেখানে দাড়িয়ে টাস্কি খেলাম। কারন এখানে একটি রহস্যময় বাড়ি রয়েছে, যা নির্মিত ১৮৬৫ সালে। একপাশটা দ্বিতল,পাশে একতলা কাঠের বাড়ি,যার ভেতরে প্রবেশের ছোট্ট দরজা রয়েছে। এর সাথেই বড় পরিসরে পেছনের দিকে বাড়ি রয়েছে। এই পুরো বাড়িটি হল ম্যাসনিক লজ। এটা ফ্রি-ম্যাসনদের গুপ্ত কাজে দীক্ষা দেওয়ার একটি আস্তানা। এরকম স্থাপনা নিজ চোখে এবারই প্রথম দেখলাম। ইলুমিনাতি,ফ্রি ম্যাসন এসব নিয়ে নানান কথা আছে। বহু বছর ধরে তারা গুপ্ত সংগঠন হিসেবে রয়েছে। তাদের কাজকর্ম রহস্যময়। তাদের অনেক প্রভাব রয়েছে দুনিয়ায়। অনেক রথি মহারথীদেরও তারা নিয়ন্ত্রন করে নানানভাবে শুনেছি।

শহরটা ঘুরলাম। খুব ঠান্ডার কারনে একটানা বেশীক্ষন হাটা যাচ্ছিলো না। স্ট্রলারে করে স্যামুয়েলকে ঠেলছিলাম,,সে খুব মজা পাচ্ছিলো কিন্তু খুব ঠান্ডায় তার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলো। একটা পুরোনো বাড়িতে ঢুকলাম। এটা হল ক্রিস্টমাসের সামগ্রী নিলামের বাড়ি। ১৮৬৫ সালে নির্মিত বাড়িটাকে মনে হচ্ছে এ বছরই বানানো হয়েছে। সুন্দর তার ভেতরের অংশও। বাড়ির মালিক এটা লোকাল সরকারকে দান করেছিলো। ভেতরটা সুন্দর। সেখানে কিচেনে যেসব সরঞ্জাম দেখলাম তা ১০০ বছরের পুরোনো কিন্তু সেটা বাংলাদেশে বোধহয় এখনও আধুনিক হিসেবে চালানো যাবে। গ্যাস চালিত কিচেন এবং ওভেন। আলোকসজ্জিত ক্রিস্টমাস ট্রিগুলো নিলামে তোলা হয়েছে। বাড়ির সামনে দুশো বছরের একটা গাছ শুকনো হয়ে দাড়িয়ে আছে । বয়সের ভারে তার কান্ড পেচিয়ে গেছে। বিশাল শাখা প্রশাখা তার। এখানে খানিক উষ্ণতা নিয়ে ব্রিজের দিকে চললাম।

ব্রিজটা খুব দারুন লাগল। এর নীচ দিয়ে প্রবাহিত দারুন স্বচ্ছ পানির নদী প্রবাহিত। শহরটার পুরো অংশই ভালো লেগেছে। আমার পুরোনো জিনিস খুব ভালো লাগে। দুটো মিউজিয়াম আছে এখানে যার একটি বন্ধ পেলাম। অন্য মিউজিয়ামে প্রবেশ করলাম। প্রবেশ ফ্রি। এক বৃদ্ধাকে দেখলাম বসে আছেন। আমিই একমাত্র ভিজিটর আজ। মিউজিয়ামটা ১৮৫০ সালে তৈরী। সত্যি বলছি এটা ছোট মিউজিয়াম হতে পারে কিন্তু ওরেগনে দেখা অন্যতম সেরা মিউজিয়াম এটা। কয়েক'শ বছরের পুরোনো নানান সব জিনিসপত্রে ভরপুর। অসম্ভব ভালো লাগল। মজার ব্যাপার হল শতাধীক বছর পূর্বের সেসব অনেক সরঞ্জাম বাংলাদেশে এখনও চলছে।

চিকিৎস্যা সরঞ্জাম দেখলাম, মনে হল এখনও ভালোই চালানো যাবে অথচ সেসব ১২৫ বছরের পুরোনো। প্রাচীন কালের মানুষের তৈরী নানান জিনিসপত্র দেখলাম। শত বছর আগের অফিস আদালতের চিহ্ন,ব্যাংকের ভল্ট,টাইপ রাইটার,ক্যালকুলেটর,প্রিন্টিং মেশিন সবই আছে,,,। প্রাচীন কালের মানুষের সেসব চিহ্ন দেখে নিজেদেরকে মেলায়,দারুন অনুভূতী হয়। বেশ কিছু সময় ছিলাম শহরটিতে। খুবই ভালো লাগল। পুরোনো ঐতিহ্যবাহী শহরটা আবারো যেতে বলল, যাব ইনশাআল্লাহ

বিষয়: বিবিধ

৬৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File