যেভাবে ইসলাম বিদ্বেষীরা মুসলিমদেরকে মদন বানানোর চেষ্টা করে !
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০২:০৯:১৯ দুপুর
----------------------------------------------------------
১৯৬৯ সালে এপোলো ১১ নামক নভোযানে চড়ে নীল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিন, এবং মাইকেল কলিন্স পৃথিবীর সবেধণ নীলমনি চান্দালী ওরফে চাঁদের বুকে বীরদর্পে পদার্পণ করেন। সারা দুনিয়া বিশ্ময়ে হতবাক হয়ে যায় সেই খবরে। সেটা ছিলো স্নায়ু যুদ্ধের সময়, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া সকল বিষয়ে একে অপরের সাথে টেক্কা দিত। সোভিয়েত রাশিয়া ভাঙ্গার পর এখনও টেক্কা দেয় তবে পূর্বের মত ওভাবে নয়। উক্ত ঘটনার পূর্বে রাশিয়া মহাশূন্যে লাইকা নামক এক কুকুরকে পাঠিয়েছিলো। সেখানে তারা মহাশূণ্য অভিযানে এক বিশাল সম্ভাবনা দেখার পরপরই আমেরিকা মহাশূণ্যে মানুষ পাঠিয়ে রাশিয়াকে চরম জবাব দেয়।
এবার অাসেন একটা মজার কাহিনী শুনাই :
এক বইতে পড়লাম , চন্দ্র বীজয়ের অনেকদিন পর নীল আর্মস্ট্রং মিশরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। তখন উনি একটা অদ্ভূত সূর শুনতে পেলেন। উনি বিচলিত হলেন এবং সেই সূরের উৎস্যের দিকে ধাবিত হলেন। একজনের কাছে জানতে চাইলেন, এটা কিসের সূর ? সেই ভদ্রলোক জবাব দিল- এটা আযানের সূর। তখন নীল সাহেব মসজিদের ইমামের কাছে গেলেন এবং বললেন, জনাব ! আমি চাঁদে গিয়ে এই সূর শুনেছিলাম। তখন কিছু বুঝিনি, এখন বুঝলাম। আমি ইসলাম গ্রহন করতে চাই। তখন নীল আর্মস্ট্রং ইসলাম গ্রহন করলেন। কিন্তু তিনি গুপ্ত ঘাতকের হাতে মরার ভয়ে নিজের ইসলামিত্বের পরিচয় গোপন করলেন।
উক্ত ইমাম সাহেবের কাছে নীল আর্মস্ট্রং অারও বললেন, আমার প্রথমেই একটু সন্দেহ ছিলো একটা বিষয়ে। আমরা মহাকাশে যাবার প্রাক্কালে দুনিয়ার সকল দেশের পতাকা নিয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু সৌদী আরবের পতাকা ইচ্ছাকৃতভাবে নেইনি, কারন সেখানে মুসলিমদের ধর্মীয় কালিমা লেখা ছিলো। আর এর ফলাফল হয়েছিলো এই যে, রকেটের ইঞ্জিনে স্টার্ট নিচ্ছিলো না। পরে সৌদী পতাকা নেওয়া হলে রকেটের ইঞ্জিত স্টার্ট হয়। তখনই আমি ইসলাম সম্পর্কে ভাবতে শুরু করি ! আজ ইসলামে দিক্ষীত হয়ে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি !
অারও পড়েছিলাম, উক্ত ৩ বিজ্ঞানী চাঁদের বুকে ফাটল দেখতে পান, যেটা ছিলো রসূল(সাঃ)এর সময়ে ঘটা একটি মুযিজা।
এই ঘটনা পড়ার পর আমার মন আবেগে ত্যানা ত্যানা হয়ে পড়েছিলো। আপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। এরপর যখন পরিনত বয়সে পদার্পণ করলাম, তখন জানতে পারলাম- নাসার উক্ত ৩ বিজ্ঞানী কর্তৃক চন্দ্র বিজয়ের কাহিনী চিত্রায়ন হয় আমেরিকাতেই। আমেরিকার মোট স্টেট সংখ্যা ৫০ কিন্তু এর বাইরে আরও একটি স্টেট আছে যেখানটার ব্যাপারে মারাত্মক গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। ওটার নাম এরিয়া-৫১। ওই স্থানের ম্যাপও পরিষ্কার করা হয়না। এরিয়া-৫১ এর আশপাশে গেলেই আর্মীরা ফিরে যেতে বলে এবং এর ভেতর বিনাঅনুমতিতে প্রবেশ করলে গুলি করার নির্দেশ রয়েছে। কথিত আছে এখানেই ফ্লাইং সসার তৈরী হয়।
যাইহোক চন্দ্র বিজয় নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে নানান সব পক্ষ বিপক্ষ রয়েছে। আমেরিকা প্রমান করার চেষ্টা করে তারা চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছিলো, আর রাশিয়াসহ বহু দেশের বিজ্ঞানীরা প্রমান করে যে, সে সময়ে প্রকাশিত ভিডিওতে বহু সংখ্যক ভুল রয়েছে, যেমন বাতাস না থাকা সত্ত্বেও পতাকা উড়তে থাকা, সূর্য্যের আলো পৃথিবীর উপর প্রতিফলিত হয়ে চাঁদের উপর পড়লে বস্তু,মানুষের ছায়া একদিকেই তৈরী হবে কিন্তু সেখানে চারিপাশে ছায়া দেখা গেছে, যা ছিলো বিশাল ফ্লাড লাইট থেকে তৈরী। আরও অনেক বড় বড় ক্ষুঁত দেখা গেছে, যাতে প্রমানিত হয়, তারা চাঁদে অবতরন করেনি।
বিজ্ঞানীরা অনেক মাপজোক,হিসাব করে বলেছেন যে, চাঁদে মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয় মহাজাগতিক অতিরিক্ত চাপের কারনে। নভোযানও ধ্বংস হয়ে যাবে সেখানে। আর মজার ব্যাপার হল এই যে, ১৯৬৯ সালের প্রযুক্তি আর ২০১৮ সালের প্রযুক্তি এক রকম নয়। প্রযুক্তি এখন হাজার হাজার গুন উন্নত। এত প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতার পরও নাসা আজ পর্যন্ত দ্বিতীয়বার চাঁদে মানুষ পাঠালোনা কেন ?? ১৯৬৯ সালে স্বশরীরে মানুষ চাঁদে গেলে এখন তো ওখানে জনগনের জন্যে সস্তায় এপার্টমেন্ট বিক্রী হবার কথা !
---------------------------------------------------------
উল্লেখ্য: আল্লাহ মানব জাতিকে সত্যের পথে আনতে নবী-রসূলদেরকে কিছু অলৌকিক ক্ষমতা প্রদান করেন, যার নাম মুযিজা। এটায় বিশ্বাস করা ইমানের অবধারিত অংশ। আল্লাহ নবীদেরকে যতটুকু গায়েবের খবর জানান বা যতটুকু মুযিজা প্রদান করেন, তারা ঠিক ততটুকুই প্রাপ্ত হয়। এটা নবীদের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নয়, বরং আল্লাহর দান। কখনও নবীদের প্রার্থনা কবুল করে এটি প্রদান করা হয়,আবার কখনও আল্লাহ তার নিজ ইচ্ছায় কোনো ঘটনা ঘটিয়ে দেন,এরপর নবীকে তা অবগত করেন। একদল অবিশ্বাসী রসূল(সাঃ)কে কোনোভাবেই মানছিলো না এবং তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করছিলো। শেষে তারা বলে, আচ্ছা আমরা আল্লাহকে মেনে নেব ,তোমাকেও রসূল হিসেবে মানব ,যদি চাঁদকে দিখন্ডিত করে দেখাও। এটা সম্ভব নয় জেনেই তারা এরূপ বলেছিলো। তখন আল্লাহর আদেশে , অত:পর রসূল(সাঃ) এর আঙ্গুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখন্ডিত হয়ে দুদিকে সরে যায়। কিন্তু তারা ঈমান আনেনি।
-----------------------------------------------------------------
আচ্ছা এবার কি বুঝতে পারছেন কাহিনী কোনদিকে গেল ? নীল আর্মস্ট্রংরা চাঁদে গিয়ে আযান শুনেছে, রকেটের ইঞ্জিন স্টার্ট নিল সৌদী পতাকা বহনের পর এবং তারা চাঁদের বুকে ফাটল দেখেছে, যা ছিলো রসূল(সাঃ) এর একটি মুযিজা। বৈজ্ঞানিকভাবে মুজিজাও প্রমানিত হয়ে গেল। হুজুররা ওয়াজে সেসব বর্ণনাও করল।
আর, এরপর যখন মুসলিমরা সত্য জানতে পারলো বা বিজ্ঞান প্রমান করল, জীবনেও কেউ কখনও চাঁদে যায়নি, সম্ভব হয়নি। তাহলে মুসলিমদের ইজ্জতের কি দশা হল !!! আর যারা ওয়াজে শুনেছিলো এসব কাহিনী, তাদের ইমানের অবস্থা কি হল ??
আরেকটা মজার কহিনী বলি: ১৯৭০ সালে গাইডপোস্ট নামে এক আমেরিকান ম্যাগাজিনে গীর্জার পাদ্রীদের বরাত দিয়ে একটা খবর ছাপা হয়েছিলো যে, নাসার ওই ৩ বিজ্ঞানীর একজন এডউইন অলড্রিন চাঁদের বুকে এক রহস্যজনক শব্দ শুনেছিলো, আর সেই শব্দের বয়ান সে আবিষ্কার করেছিলো বাইবেলে। ফলে প্রমানিত হয় বাইবেল সত্য।
ঠিক নীল আর্মস্ট্রং যেভাবে মিশরে আযান আবিষ্কার করেছিলো; হুবহু সেভাবে অলড্রিনও বিপরীতমুখী আবিষ্কার করে বসল। আরও মজার ব্যপার হল: ১৯৬৯ সালের ওই মহাশূণ্য অভিযানের ব্যাপারে নাসার পক্ষ থেকে চাঁদে বা মহাশূন্যে কোনো রহস্যজনক শব্দের কোনো রকম বয়ান করা হয়নি।
----------------------------------------------------------------
আপনি কি জানেন ইসলামের নামে এসব বানোয়াট কাহিনী কারা তৈরী করে ?
চরম ইসলাম বিদ্বেষী মানুষ,যারা কখনই ইসলামকে মেনে নিতে পারেনি। যারা গত দেড় হাজার বছর ধরে নানানভাবে ইসলাম,মুসলিমদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করা,ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছে,তারাই এসব তৈরী করে। এরপর তারা মিডিয়ার মাধ্যমে এসব প্রচার করে। এরপর নাদানরা, "আমিন ! আমিন !!" করে নিজেদের জ্ঞানের কবর খুড়ে তাতে শুয়ে পড়ে। এসব নাদানরা এরপর সেই খবরগুলো অন্যের কাছে প্রচার করে বলে, আমিন না লিখে যাবেন না। আরেক কাঠি সরেশ নাদানরা বলে- এটা এত জনের কাছে প্রচার না করলে বিপদ হবে, আর প্রচার করলে খুশীর সংবাদ পাবেন !
এরপর ইসলাম বিদ্বেষী শ্রেনীরাই একই ঘটনা আবারও সামনে নিয়ে আসে ভিন্নভাবে। এবার তারা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমান করে বা সত্য উপস্থাপন করে যে, ওই ঘটনাটাই ঘটেনি বা ওটা ছিলো ভূয়া। এর দ্বারা তারা প্রমান করতে চায় যে, এতকাল মুসলিমরা কুরআন,হাদীসে উল্লেখিত যেসব ঘটনাকে মানুষের সামনে উল্লেখ করেছে, তা মিথ্যা(নাউযুবিল্লাহ) । আর এসব ঘটনার কারনে বহু মুসিলিম ভেতরে ভেতরে মুষড়ে পড়ে। তারা ইসলামের ব্যাপারে জ্ঞান অর্জন করার অাগ্রহ হারিয়ে ফেলে। যেহেতু কুরআন সুন্নাহর সরাসরি জ্ঞান থেকে বঞ্চিত এবং আলেমরূপী মূর্খের কাছ থেকে জ্ঞান শিক্ষা করেছে, তাই তারা প্রকৃত সত্য অনুধাবনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। অনেকে মনে মনে নাস্তিক হয়ে ওঠে, কিন্তু সমাজের ভয়ে তা গোপন রাখে। অনেকে ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রচারিত রঙচঙা কনসেপ্টকে সত্য হিসেবে গ্রহন করে বিভ্রান্তির জালে জড়িয়ে পড়ে। বাহ্যিক লাভ ক্ষতির মাধ্যমে আল্লাহর বিধানসমূহকে মাপতে থাকে। বিভ্রান্তির পর বিভ্রান্তিতে নিমজ্জিত হয়। হতাশায় হতাশায় ভেতরে ভেতরে মুষড়ে পড়ে কিন্তু সমাজচ্যুত হবার ভয়ে নিজেদের চিন্তা প্রকাশ করতে পারেনা।
====================
এ জন্যেই জ্ঞান শিক্ষা করা ফরজ। নির্বোধ সর্বদাই বিপজ্জনক। সে না নিজের কল্যান বুঝে,আর না অপরের কল্যান করতে পারে। কিন্তু সে সর্বদাই ভাবে সে সঠিক কাজটিই করছে। আল্লাহ আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধী করুন ! আমাদের জ্ঞানকে সঠিক পথে পরিচালিত করার তাওফিক দান করুন ! আমাদের জ্ঞানকে আখিরাতে ক্ষমা ও নাজাতের ওছিলা বানিয়ে দিন !
বিষয়: বিবিধ
৯৬৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন