ফ্যাক্ট # ২ সাবেক প্রেমিকের মুখোমুখী !! কি করবেন ??
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৮:০২:৩৯ সকাল
======================
ইউনিভার্সিটিতে এক সিনিয়র ভায়ের প্রেমে পড়েছিলো সুমী। উথালপাথাল অবস্থা। সুমী তাকে ছাড়া কাওকে বিয়েই করবে না পণ করে ৩ বছর প্রেম করল। কিন্তু টিউশনি করা ছ্যামড়া ভালো চাকুরী জোটাতে না পেরে মর্মাহত। সুমী বিরোধীদলের মত আল্টিমেটাম দিল। এরপর এক ধনীর পুত্রের সাথে ঘর বাধল। সুন্দর সুখী পরিবার তার। অবস্থা এমন যেন সুমীর জীবনে কোনো পুরুষের সাথে পরিচয়ই ছিলোনা।
বিয়ের পর সুমী পুরো বদলে গেল। স্বামী খুব পরহেজগার। তার সংস্পর্শে সে সুখী এবং ধার্মিকও বটে। সুখেই সংসার চলছিলো। কেট গেল অনেকদিন।
একদিন সুমী তার স্বামীকে নিয়ে শপিংয়ে গিয়েই সাবেক প্রেমিকের মুখোমুখি। এমতাবস্তায় সুমীর আচরণ কি হওয়া উচিৎ ?
১. সুমী ইগনোর করবে। এক পলক তাকিয়েই স্বাভাবিকভাবে চলে যাবে। যেন কিছুই সে দেখেনি, অথবা অন্য দশটা লোকের দিকে যেভাবে তাকায় সেভাবে তাকিয়েছে এমন ভাবে থাকবে। সে এটা করবে এ কারনে যে, তার একটি সুখের সংসার অাছে এবং তার সম্পর্কে তার স্বামীর ধারনা অনেক উঁচু মানের। তার জীবনে কখনও প্রেম প্রীতি ছিলোনা, এটাই সে বলেছে স্বামীকে। ফলে বিনা কারনে থলের বিড়াল বের করার কোনো প্রয়োজন নেই। তাছাড়া সেই ছেলেটার স্মৃতি তার মনের ভেতর থাকলেও এই স্মৃতি তাকে এখন আর নাড়া দেয়না। সে বর্তমানকে ভালোবাসে। সো ইগনোর,,,ইগনোর...
২. যে কোনো জ্ঞান বুদ্ধি সম্পন্ন পুরুষই সে সময় মেয়েটার পথ ধরে তাকে ইগনোর করবে। কারন সে যখন দেখলো যে, মেয়েটা তাকে না চেনার ভান করছে, তখন সে ভাবে, থাক....বিনা কারনে তার সমস্যা বাড়িয়ে লাভ নেই। সে ভালো থাকুক। ফলে সাধারনত সেও এক পলক দেখে চলে যায়। হয়ত বুকের ব্যাথা মোচড় দিয়ে ওঠে কিন্তু সে শুভকামনাই করে। তবে যদি নিরেট গর্ধব হয়, তাহলে সেই অবস্থায় নিজের পরিচয় দেয়। তখন স্ত্রী উক্ত ছেলেকে নিজের পরিচিত,সহপাঠী,বড় ভাই এসব বলে পরিচয় দেয়। লোকটা তার স্বামীর সথে পরিচিত হতে চেষ্টা করে এবং পরবর্তীতে যোগাযোগের রাস্তা তৈরী করে। মেয়েটা এটা চায়না এমনটা বুঝতে পেরেও সে এই কসরত করতে থাকে। স্বামী হয়ত নিজের বিজনেস কার্ড দেয় আর সে পরে হাই হ্যালো বলে সুম্পর্ক ভিন্নভাবে হলেও ধরে রাখার চেষ্টা করে। এটা মানুষের স্বভাবগত একটি বৈশিষ্ট্য ফলে তারা বহু কাজ কেন করে তাও জানেনা।
পুরুষরা এক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ধরে রাখার চেষ্টা করে। আর স্ত্রী যদি দেখে স্বামী এটায় কিছু মনে করেনা, তাহলে সেও মনে মনে খানিকটা অাগ্রহী হয়। অথচ স্বামী মনে মনে চায় তার স্ত্রীর সাথে লোকটার যোগাযোগ না হোক। তবে বাইরে লিবারাল সাজে।
৩. যদি এমন হয় যে, এমনভাবে চোখাচোখি হল যে ইগনোর করার উপায় নেই। তাহলে স্বাভাবিক সালাম দিয়ে দু একটা কথা বলে বিদায় নেওয়া উচিৎ। কারন তার একটি সুন্দর সংসার আছে, সেখানে কোনো রকম ঝামেলা তার পছন্দ করা উচিৎ নয়। তাকে তার পরিবারে,সংসারে বিশ্বস্ত হতে হবে।
৪. এসব ক্ষেত্রে অতীতকে ভুলে যাওয়াই ভালো, কারন এটা তার বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে সমস্যাযুক্ত করবে। তাকে বাস্তববাদী হতে হবে এবং হারাম-হালালের জ্ঞান অনুযায়ী আচরণ করতে হবে। আর যদি স্বয়ং মেয়েটাই চায় যোগাযোগ হোক,,,, তাহলে দুনিয়ার কোনো শক্তি ছেলেটাকে আটকে রাখতে পারবে না, যোগাযোগ তাদের হবেই হবে। ছেলেটা পূর্বের সম্পর্কের জের ধরে বহু কাছাকাছি চলে যাবে। অল্প কিছু পুরুষ ছাড়া অধিকাংশের ক্ষেত্রে এটা ঘটাই স্বাভাবিক। সম্ভবত এ কারনেই আল্লাহ তায়ালা দুজনের একই রকম বৈশিষ্ট্য দেননি। নইলে দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যেত, সুখ দাফন হয়ে যেত। যেসব ক্ষেত্রে মেয়েরা অর্গবর্তী হয়েছে,,সেসব ক্ষেত্রে বিরাট সব সমস্যা তৈরী হয়েছে, অথবা এটাকে তারা সমস্যা হিসেবে স্বীকার করেনি ব্যক্তিগত কনসেপ্টের কারনে।
৫. মেয়েটাকেই ইগনোর করতে হবে, কারন পুরুষের স্বভাব খাই খাই করা। মেয়ে একবার তাকিয়ে হাসলে সে উক্ত মেয়ের দিকে ১০০ মাইল স্পিডে দৌড়ে যাবে। আর এসব ক্ষেত্রে গুপ্ত প্রতিশোধের আগুন জ্বলতে থাকে মনে। আমাকে সুখে থাকতে দাওনি অথবা তুমি আমার হলে আমি সুখী হতাম, এরকম চিন্তা প্রবল হলে, সেই লোক মেয়েটার সাথে সম্পর্ক তৈরীর চেষ্টা করে তাকে বিপদগ্রস্ত করবে। বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরী করে স্বামীর কর্তৃত্বে ভাগ বসাতে চাইবে। ফলে এক্ষেত্রে মেয়েটির অবস্থান হতে হবে সুস্পষ্ট এবং মোটেও সম্পর্ক ধরে রাখা তার উচিৎ হবেনা। পুরোনো স্মৃতি পুড়িয়ে ফেলতে হবে, সম্ভব না হলে সেটা এমনভাবে রেখে দিতে হবে, যাতে ডাল-পালা গজানোর সুযোগ না পায়।
৬. শপিংমলে সাবেক প্রেমিকের সাথে চোখাচোখি হওয়ার পর তার ভেতর কোনো পরিবর্তন না আসাই উচিৎ। কারন তার ভাবগাম্ভির্য্য,মৌনতা তার স্বামীর মনে নানান প্রশ্ন তৈরী করবে। ফলে বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নিয়ে ছুড়ে ফেলতে হবে। ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন পুরুষ অবশ্য কখনই উক্ত মেয়ের কোনোভাবে ক্ষতি হোক তা চাইবে না। এরকম ঘটনা ইউরোপ আমেরিকাতে ঘটলে দেখা যায় উক্ত ছেলে-মেয়ে দুজনই ইগনোর করছে। আর যদি কথা বলে, তবে হাই হ্যালো মার্কা কথা বলেই বিদায় নেয়। তারা ফোন নাম্বার আদান প্রদান করেনা। পরে যোগাযোগের রাস্তা সাধারণত তৈরী করেনা। তবে বাঙ্গালী এ কাজ করার চেষ্টা করে। আঠার মত লেগে থাকা তারা পছন্দ করে। অন্যের ব্যাপারে কৌতুহল পছন্দ করে। উভয়ের জীবন কেমন চলছে,কেমন হতে পারত,কে লাভবান হল এসব নিয়ে বিরাট জ্ঞান কপচাতে পছন্দ করে। তবে ভালো মন্দ উভয় স্থানেই আছে। দুটোই পুরোপুরি সত্য নয়।
তবে মোটা দাগে এরকম ক্ষেত্রে নারী হোক অার পুরুষই হোক ইগনোর করাই শ্রেয়, তাহলে পরবর্তী ঘটনার জন্মই হতে পারেনা। আর দোষ উভয়েরই থাকে। ফলে উভয়ে উভয়কে ক্ষমা করে আল্লাহর থেকে ক্ষমা নেওয়াই সর্বাপেক্ষা উত্তম। ভুলকে বুঝতে সক্ষম হয়ে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সঠিক পথে চলতে হবে। ভুলকে নিয়ে সারাক্ষন তরজমা করে জীবনকে বিষিয়ে তোলা বোকামী। কি হতে পারত,কি করলে কি হত এসব অমুলক চিন্তা বাদ দিয়ে সরল সোজাভাবে আল্লাহর দাসত্ব করতে হবে। বহু প্রেমিক ক্ষমা করতে পারেনা, কিন্তু যত কষ্টই হোক ক্ষমার নীতিতে গেলেই লাভ। এতে আল্লাহ তার ভেতর প্রশান্তি ঢেলে দেন এবং তার ভবিষ্যৎ মসৃণ করেন।
বিষয়: বিবিধ
৯১৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে, ধনীর পুত্র খুব পরহেজগার - এটাই কাহিনীর সবচেয়ে দূর্বল পয়েন্ট । ধনী আর পরহেজগার শব্দ দুটি প্রাত্যহিক জীবনে একে অপরের বিপরীত।
যাই হোক সাবেক প্রেমিক যদি এখন সুমির পরহেজগার স্বামীর চেয়ে বেশী ধনী হয় তাহলে সুমি তার কাছে ফিরে যাবার জন্য কাহিনী শুরু করবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন