আবারও পুলিশ !!!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১১ আগস্ট, ২০১৮, ১২:৫৬:০৭ দুপুর
================
আজ জুম্মার খুতবায় খতিব সাহেব হজ্জ নিয়ে বয়ান করলেন এবং সেখানে জিলহাজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের নানান ফজিলতও বর্ণনা করলেন। জিলহাজ্জ মাসের প্রথম ৯দিন,মানে ৯ তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখার বিশাল ফজিলত রয়েছে। হুজুর ৩টা রোজা রাখার কথাও বলল যতদূর মনে পড়ছে, তার উপর ভিত্তি করে নিয়ত করলাম এই কাঠফাটা গরমে একটা রিস্ক নিয়ে নেব। এ সংক্রান্ত বেশ কিছু হাদীস পড়েছিলাম কিন্তু ভুলে গেছি। কেউ জানলে আমাকে জানান যে এই মাসে রোজা রাখার সঠিক সিস্টেম কি।
এই রোজার ফজিলত হল এই যে, আল্লাহ তায়ালা পূর্বের এক বছর ও পরের এক বছরের পাপ মাফ করবেন। কুরবানীর ফজিলতও শুনলাম। যারা কুরবানী করবে অর্থাৎ যদি তিনি পরিবারের কর্তা হিসেবে কুরবানী করেন,তাহলে তিনি ১লা জিলহাজ্জ থেকে ১০ই জিলহাজ্জ পর্যন্ত চুল-দাড়ি,নখ কাটতে পারবেন না। কুরবানী করে তবে চুল-দাড়ি,নখ কাটবেন। যে কোনো ব্যক্তি,যিনি কুরবানী করবেন মনস্থির করেছেন তার জন্যে একই বিধান।
ভাবলাম এখানে কুরবানী করলে মন্দ হত না ! কিন্তু উপায় নেই। দেশেই করতে হবে। তারপরও মনের ভেতর একটা আশা ছিলো। প্রতি শুক্রবার জুম্মা শেষে মসজিদের বাইরে আমাদের হালকা একটা আড্ডা হয়। সেখানে প্রফেসর সাহেব বললেন, আমরা ভাগে কুরবানী করতে যাচ্ছি, তুমি শরিক হবা নাকি ? বললাম---আলহামদুলিল্লাহ,, এটাই তো চাচ্ছিলাম। এখানে বাজার নামক একটা লেবানিজ হালাল গ্রোসারী দোকান আছে, যারা নাকি অর্ডার নেয়। আমরা ৭ জনে মিলে বিশাল এক গরু কুরবানী করব সেটাই মোটামুটি ঠিক হল। উনি উক্ত দোকানে ফোন করে কথা বললেন। তবে এবার প্রতি পাউন্ড গোস্ত পড়বে প্রায় ৫ ডলার। অন্যবার নাকি ৪ ডলারে পাওয়া যেত। এরা ভিন্ন স্থান থেকে গরু কিনে আনে এবং তার পরিবহন ব্যয় অনেক,যার কারনে গোস্তের দাম বেড়ে যাচ্ছে। তবে এখানে কুরবানী করব,গোস্ত খাব আনন্দই আলাদা।
মনে প্রশান্তি নিয়ে ফিরতি পথ ধরলাম। সারাপথ প্রচন্ড গতিতে ড্রাইভ করলাম ,সমস্যা হলনা। কিন্তু বাসার কাছাকাছি একটা স্থানে এসে যখন ৪৫ মাইল গতিসীমার স্থলে ৬৫ মাইলে টানলাম, তখন হঠাৎ খেয়াল করি পেছনে লাল-নীল ফ্লাশ লাইট জ্বেলে পুলিশ সিগন্যাল দিচ্ছে। পুলিশের গাড়ি দেখে অবাক ! খানিক আগেই গাড়িটাকে মোড়ে দেখলাম, কিন্তু এটা যে পুলিশরে গাড়ি তা বোঝার উপায় নেই, কারন গাড়ির চেহারা ভিন্ন, বাইরে লেখা নেই যে পুলিশের গাড়ি,অন্য কোনো সাইন নেই, গাড়ির রং সাদা অথবা কালোও নয়, বরং রংটা বাদামী। বুঝলাম পুলিশ ইদানিং রং বদল করে লুকিয়ে থেকে আইন পরিক্ষায় নেমেছে।
কি আর করা রাস্তার ডানে দ্রুত থেকে বসে থাকলাম। পুলিশ এসে জানালার গ্লাস নামাতে বলল, নামালাম। বলল-লেখা ছিলো ৪৫ মাইল বেগে চলো,,তুমি অনেক উচ্চ গতিতে চালাচ্ছিলে। ....বললাম অত্যন্ত দু:খিত, লজ্জিত, আমি ঠিক খেয়াল করিনি, ভেবেছিলাম ৫৫, পরে অবশ্য আমি ভুল বুঝতে পেরে মনে মনে লজ্জিত হয়েছি। আমি সত্যি দু:খিত। একইসাথে বললাম অমুক কোম্পানীতে জব করি, কাজে যাচ্ছি এখন।
সে লাইসেন্স এবং ইন্সুরেন্স কার্ড নিয়ে তার গাড়িতে ফিরে গেল। আমি আল্লাহকে ডাকতে থাকলাম। কারন মাত্র ৩ মাস আগে একবার জরিমানা দিয়েছি। এবারও যদি টিকেট পাই তাহলে মাসিক ইন্সুরেন্সের টাকা প্রায় দ্বিগুন হারে প্রদান করতে হবে।
খানিক পর লাইসেন্সটা ফেরৎ দিয়ে বলল-আচ্ছা ঠিক আছে, সতর্ক করলাম, নিয়ম মেনে গাড়ি চালাবেন ! আহ তার কথা শুনেই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম। আমেরিকার দেশগুলোতে এসব আসলেই একটা সমস্যা। এদেরকে ঘুষ দেওয়া দূরে থাক ঘুষের কথা বললেই আরেক ধারায় মামলা হয়ে যেতে পারে।
আলহামদলিল্লাহ এ যাত্রা বেচে গেছি,,,আবারও আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ আমার উপর বরাবরই প্রবল রহমত বর্ষন করেন, করে যাচ্ছেন, আর আমি নাফরমান ! আল্লাহ ক্ষমা করুন !!
বিষয়: বিবিধ
৭৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন