সূরা কাহ্ফ থেকে যা শিখলাম !! ====================
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৫ এপ্রিল, ২০১৮, ০৬:১০:৪৯ সকাল
ইহুদী ও খ্রিষ্টানরা মুহাম্মদ(সাঃ) সত্য নবী কিনা সেটা যাচাই করার জন্যে মাঝে মাঝে এমন সব প্রশ্ন করত, যা কেবল আল্লাহর প্রেরিত নবী-রসূলগণই জেনে থাকে। যতবার তারা প্রশ্ন করেছে, ততবারই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ওহী নাযিল করে সেসব বিষয় সম্পর্কে অবহিত করেছেন। কিন্তু সেসব লোকেদের বেশীরভাগই ঈমান আনয়ন করেনি। একটি বিশাল সংখ্যক কিতাবী(ইহুদী-নাসারা) মানুষেরা শেষ রসূলকে(সাঃ) সত্য জেনেও পরিত্যাগ করে কেবল এই কারনে যে তিনি তাদের বংশ থেকে আগমন করেননি। এ বিষয়ে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন যে-তারা তাদের নিজেদের সন্তানদেরকে যেভাবে চিনে,ঠিক সেভাবে তোমাকেও চিনে....।তবে তাদের অনেক বড় বড় পন্ডিত ইসলাম গ্রহন করেছিলো। আমাদের আজকের আলোচনা সেটা নিয়ে নয়। আমরা ভিন্ন একটি আঙ্গিকে সূরা কাহফ নিয়ে কথা বলব।
সূরা কাহফে প্রাচীন কালে গুহায় অবস্থানকারী কতিপয় যুবকের বিষয়ে বিবরণ এসেছে। মূলত: এই বিষয়ে তাওরাতে বর্ণনা এসেছিলো কিন্তু সেখান থেকে মানুষেরা আল্লাহর নিদর্শণ থেকে শিক্ষা গ্রহন না করে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে অযথা বিতর্কে লিপ্ত হয়ে পড়ে। তারা এই ঘটনায় নানান দলে বিভক্ত হয়ে গুহায় অবস্থানকারী যুবকদের সংখ্যা কত ছিলো,কত বছর তারা ঘুমিয়েছিলো সেটা নিয়ে মহা বিতর্কে লিপ্ত হয়ে পড়ে এবং তা শতাব্দীর পর শতাব্দী চলে। উল্লেখ্য: বর্তমান আলিম সমাজের একটি বিরাট অংশই পূর্বের জ্ঞান পাপীদের মত অযথা বিতর্কে লিপ্ত রয়েছে।
ইহুদীরা গুহায় অবস্থানকারী যুবকদের বিষয়ে যখন রসূল(সাঃ)কে জিজ্ঞেস করলেন, তখন আল্লাহ আয়াত অবতীর্ণ করেন। আল্লাহ এই বিষয়ে কি কি বললেন, তা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শুনুন। আমার ধারনা আমরা মূল প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে প্রাচীন ইহুদীদের মতই আচরণ করব,,, আল্লাহ ক্ষমা করুন !
"তুমি কি মনে কর যে, গুহা ও রাকীমের অধিবাসীরা আমার নিদর্শনাবলীর মধ্যে বিস্ময়কর?" (সূরা কাহফ: ৯)
(রাকীম একটি পাহাড়ের নাম, অথবা যে এলাকা থেকে তারা বের হয়েছিল সে এলাকার নাম, অথবা একটি ফলক- যাতে ঐ সব যুবকের নাম লিখা ছিল।)
"যুবকরা যখন গুহায় আশ্রয় নিল তখন তারা বলেছিলঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি নিজ হতে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান করুন এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন।" (সূরা কাহফ: ১০)
অতঃপর আমি তাদেরকে গুহায় ঘুমন্ত অবস্থায় অনেক বছর রেখে দিলাম। (সূরা কাহফ: ১১)
পরে তাদেরকে জাগ্রত করলাম এটা জানার জন্য যে, (গুহাবাসীরা আর যাদের যুগে তারা জাগ্রত হয়েছিল সে যুগের লোকেরা এ) দু’টি দলের মধ্যে কোনটি তাদের অবস্থানকালের সঠিক হিসাব করতে পারে।(সূরা কাহফ: ১২)
আমি তোমার কাছে তাদের সঠিক বৃত্তান্ত বর্ণনা করছিঃ তারা ছিল কয়েকজন যুবক, তারা তাদের রবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল এবং আমি তাদের সৎ পথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেছিলাম।(সূরা কাহফ: ১৩)
আর তাদের দিল মযবুত করে দিয়েছিলাম যখন তারা (মুশরিক রাজা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে) দাঁড়িয়ে গেল তখন বলল, ‘আমাদের প্রতিপালক তো তিনিই যিনি আসমানসমূহ যমীনের প্রতিপালক। আমরা কক্ষনো তাঁকে ত্যাগ করে অন্য কোন ইলাহকে ডাকব না। যদি আমরা ডাকি তাহলে মহা অপরাধের কথাই বলা হবে।(সূরা কাহফ: ১৪)
আমাদের জাতির এই লোকেরা তাঁর পরিবর্তে বহু ইলাহ গ্রহণ করেছে, তারা তাদের ইলাহদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণ পেশ করে না কেন? তার থেকে বড় যালিম আর কে হতে পারে যে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে?(সূরা কাহফ: ১৫)
এখন যেহেতু তোমরা তাদের থেকে আর তারা আল্লাহ ছাড়া যেগুলোর ‘ইবাদাত করে তাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিয়েছ, তখন চল, গুহায় গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ কর। তোমাদের জন্য তোমাদের প্রতিপালক তাঁর কল্যাণ বিস্তার করবেন আর তোমাদের কাজ-কর্মকে ফলদায়ক করে দেবেন।’ (সূরা কাহফ: ১৬)
==============
====================
============================
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রত্যেক সম্প্রদায়ে নবী-রসূল পাঠিয়েছেন এবং মানুষদেরকে তার পথে আহবান করেছেন। তাদের পরিনতিও স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু তারপরও অল্প কিছু সংখ্যক মানুষই উপদেশ গ্রহন করেছে। আলোচ্য যুবকগণ যে সম্প্রদায়ে বা এলাকায় ছিলেন, সেখানকার শাসক ও পুরো সমাজ-রাষ্ট্র ছিলো মুশরিক। কিন্তু তারা কোনোভাবে পূর্বে প্রেরিত ওহীর কিতাব অনুসরণ করছিলেন এবং তারা অনুধাবন করেন যে বর্তমানে প্রচলিত শাসক ও তার অনুগত সমাজ পুরো ভ্রান্ত এবং আল্লাহর নাফরমানীতে লিপ্ত। তারা সত্যের উপর এতটাই প্রবলভাবে অবস্থান করে যে, চরম বাধার সম্মুখিন হতে হয়। বাপ-দাদা বা পূর্ব পুরুষদের দোহায় দিয়ে তাদেরকে প্রচলিত ধর্মে,সাংষ্কৃতিতে আস্থা রেখে জীবন পরিচালিত করতে আদেশ করা হয়, কিন্তু উক্ত যুবকগণ দ্বার্থ কন্ঠে প্রতিবাদ করেন এবং আল্লাহর উপাসনা ছাড়া অন্য কারো উপাসনা কোনোভাবেই করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এরপর তারা গোটা সমাজ থেকে নানামুখী বাধার সম্মুখিন হন। তারপরও তারা দমে যাননি। এরপর শাসক তাদেরকে পাথর মেরে হত্যার ফর্মান জারি করে। সে সময় তারা যে আচরণ করে তা আরশের অধিপতি সমহান আল্লাহ তায়ালার ভিষন পছন্দ হয়ে যায়।
যুবকগণ যখন দেখলেন তারা অসহায় এবং তাদের সামনে কোনো রাস্তা খোলা নেই,তখন তারা শাসকের তাবেদারীর/নতজানু হওয়ার মনোবৃত্তিকে পদাঘাত করে সরাসরি আল্লাহর দরবারে হাত তুলেন সাহায্য লাভের আশায়। জীবন বাচানো এবং ফিতনা থেকে মুক্তির জন্যে তারা দূরের এক নির্জন গুহায় লুকিয়ে আল্লাহর ইবাদত করবেন বলে রওনা হন। তাদের সাথে ছিলো এক হিংস্র শিকারী কুকুর,যে তাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলো। আল্লাহ তাদেরকে কবুল করেন এবং তাদেরকে অন্যদের জন্যে নিদর্শন করে রাখেন। তাদেরকে এক দীর্ঘকাল তিনি ঘুমন্ত অবস্থায় রাখেন। অভিমত রয়েছে সেটা ছিলো ৩০০ বছরের দীর্ঘ ঘুম এবং জাগ্রত হওয়ার পরে আরও ৯ বছরের ঘুম অত:পর মৃত্যু, তবে প্রকৃত হিসাব আল্লাহই জানেন।
"তুমি দেখতে পেতে সূর্য উদয়ের সময় তাদের গুহা হতে ডান দিকে হেলে যেত, আর যখন তা অস্তমিত হত তখন তা তাদের থেকে বাম দিকে নেমে যেত, আর তারা ছিল গুহার অভ্যন্তরে বিশাল চত্বরে। এ হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। আল্লাহ যাকে সৎপথ দেখান সে সঠিকপথপ্রাপ্ত আর যাকে তিনি পথহারা করেন, তার জন্য তুমি কক্ষনো সৎপথের দিশা দানকারী অভিভাবক পাবে না।"(সূরা কাহফ: ১৭)
"তুমি মনে করবে যে তারা সজাগ, অথচ তারা ছিল ঘুমন্ত, আমি তাদের ডানে বামে পার্শ্ব পরিবর্তন করাতাম। আর তাদের কুকুরটি ছিল গুহাদ্বারের সম্মুখে তার সামনের পা দু’টি প্রসারিত করে। তুমি যদি তাদেরকে তাকিয়ে দেখতে তাহলে অবশ্যই পেছন ফিরে পালিয়ে যেতে, আর অবশ্যই তাদের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়তে।"(সূরা কাহফ:১৮)
কিন্তু এভাবে ঘুমন্ত অবস্থায় তারা মারা গেলে আমাদের জন্যে নিদর্শন থাকবে না, ফলে আল্লাহ তাদেরকে জাগিয়ে দেন এবং তারা নিজেরা অনুমান করে যে, তারা খুব অল্প সময় ঘুমিয়েছে। তবে যখন তারা তাদের একজনকে বাজারে পুরোনো রৌপ্য মুদ্রা দিয়ে খাবার কিনতে পাঠায়, তখনই পুরো বিষয় প্রকাশিত হয়ে পড়ে। মানুষ তাদের বিষয়ে অবহিত হয় এবং তাদের ঘুমানোর স্থানকে মসজিদে রুপান্তরিত করার কথাও ভাবে। পরবর্তীতে এই ঘটনা থেকে মূল শিক্ষা গ্রহন না করে মানুষ নানান সব অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে উদগ্রীব হয় এবং তর্ক বিতর্কে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
"আর এমনিভাবে আমি তাদেরকে জাগিয়ে তুলেছিলাম, যাতে তারা পরস্পর জিজ্ঞাসা করে। তাদের একজন বলল, ‘তোমরা কতক্ষণ অবস্থান করলে’? তারা বলল, ‘আমরা একদিন কিংবা একদিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছি। তারা বলল, ‘তোমরা কতক্ষণ অবস্থান করেছ, সে ব্যাপারে তোমাদের রবই অধিক জানেন। তাই তোমরা তোমাদের কাউকে তোমাদের এই রৌপ্যমুদ্রাগুলো দিয়ে শহরে পাঠাও। অতঃপর সে যেন দেখে শহরের কোন্ খাবার একেবারে ভেজালমুক্ত, তখন সে যেন তোমাদের জন্য তা থেকে কিছু খাবার নিয়ে আসে। আর সে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করবে এবং কাউকে যেন তোমাদের ব্যাপারে না জানায়’।"(সূরা কাহফ:১৯)
"‘নিশ্চয় তারা যদি তোমাদের ব্যাপারে জেনে যায়, তাহলে তারা তোমাদেরকে পাথর মেরে হত্যা করবে অথবা তোমাদেরকে তাদের ধর্মে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। আর তখন তোমরা কোনভাবেই সফল হবে না’।"(সূরা কাহফ:২০)
"আমি এভাবে তাদের ব্যাপারটা লোকেদেরকে ওয়াকিফহাল করে দিলাম যাতে তারা জানতে পারে যে, আল্লাহর ওয়া‘দা সত্য, আর ক্বিয়ামাতের দিন সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। যখন তারা (অর্থাৎ নগরবাসীরা) নিজেদের কর্তব্য সম্পর্কে নিজেদের মধ্যে বাদানুবাদ করছিল, (কতক) বলল, ‘তাদের উপর সৌধ নির্মাণ কর।’ তাদের প্রতিপালক তাদের সম্পর্কে ভাল জানেন। তাদের কর্তব্যকর্ম সম্পর্কে যাদের মতামত প্রাধান্য লাভ করল তারা বলল, ‘আমরা তাদের উপর অবশ্য অবশ্যই মাসজিদ নির্মাণ করব।’" (সূরা কাহফ: ২১)
"বিতর্ককারীরা বলবে, ‘তারা ছিল তিন জন, চতুর্থ হল তাদের কুকুর’। আর কতক বলবে, ‘তারা ছিল পাঁচজন, ষষ্ঠ হল তাদের কুকুর’। এসবই অজানা বিষয়ে অনুমান করে। আর কেউ কেউ বলবে, ‘তারা ছিল সাত জন; অষ্টম হল তাদের কুকুর’। বল, ‘আমার রবই তাদের সংখ্যা সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত’। কম সংখ্যক লোকই তাদেরকে জানে। সুতরাং স্পষ্ট আলোচনা ছাড়া তুমি তাদের ব্যাপারে বিতর্ক করো না। আর তাদের ব্যাপারে লোকদের মধ্যে কারো কাছে জানতে চেয়ো না।"(সূরা কাহফ: ২২)
=====================
যখন তাদের একজন বাজারে গিয়ে খাদ্য ক্রয় করতে গেল, তখনই অন্যরা বিশ্ময় প্রকাশ করল এবং তাদের মুদ্রায় অঙ্কিত বহু পুরোনো শাসকের চিত্র দেখে বুঝতে পারে ঘটনা বিশ্ময়কর। তখন সেখানে উপস্থিত মানুষেরা পুরো বিষয় উপলব্ধী করতে পারে এবং তারা আল্লাহর এই অলৌকিকত্বে ইমানের বৃদ্ধি উপলব্ধী করতে পারে। তখন তারা সেই স্থানে মসজিদ তৈরীর চিন্তা করে। এখানে উল্লেখ্য যে: আল্লাহ তায়ালা যুবকদেরকে এমন একটা সময়ে ঘুম থেকে জাগ্রত করেন, যখন পূর্বের খারাপ শাসকদের সময় বিগত হয়েছে এবং ভালো শাসকের শাসন চলছে। আল কুরআনে কোনো ঘটনারই বিস্তারিত বর্ণনা নেই, কারন ঘটনাগুলো উদাহরন হিসেবে উপস্থিত করা হয়েছে। সেখানে যতটুকু বর্ণনা করা হয়েছে সেটাই যথেষ্ট শিক্ষা গ্রহনের জন্যে। আর আল্লাহ তায়ালা অযথা তথ্যের সন্নিবেশ ঘটাননি। যাইহোক এরপর উক্ত যুবকেরা আবারও গুহায় প্রবেশ করেন এবং ঘুমিয়ে পড়েন ,এরপর তাদের ঘুমের ভেতরই মৃত্যু হয়ে যায়।
সূরা কাহফ থেকে আমাদের জন্যে অযথা বিতর্কসমূহ হল এই যে:
----------------------------------------------------
১. তারা কোন এলাকার ছিলো ?
২.তাদের পিতা-মাতার আচরণ কি ছিলো ? তারা মুসলিম ছিলো কিনা ??
৩.তাদের কুকুরটা কোন জাতের কুকুর ছিলো?
৪.তাদের সংখ্যা কত ছিলো ?
৫. কোন এলাকার গুহায় ঘুমিয়েছিলো ?
৬. কত বছর ঘুমিয়েছিলো?
৭. সেটা কোন শাসকের সময় ছিলো ?
৮. শেষ পর্যন্ত সেখানে মসজিদ তৈরী হয়েছিলো কিনা ?
৯.কিছু বিশেষজ্ঞ উক্ত স্থান খুজে পেয়েছে বলছে,,এটাই সেই স্থান কিনা ?
১০. সেই কুকুরটি তাদের সাথে জান্নাতে যাবে কিনা ??
১১. আরও অনেক বিষয় উপস্থাপন করে বিতর্ক ও মারামারি করা।
কিন্তু খ্রিস্টান- ইহুদীরা তাদের সংখ্যা নিয়ে মাতামাতি করলেও এবং আল্লাহ এই ঘটনা প্রকাশে অন্যদের মতামত তুলে ধরলেও তিনি প্রকৃত সংখ্যাটা উল্লেখ করেননি। এটা উল্লেখ করলে মাত্র এক লাইন খরচ হত, কিন্তু তবু্ও তিনি তা করেননি, কারন আমাদেরকে তিনি নিছক এই ঘটনা পূর্ণাঙ্গরূপে জানাতে চাননি। আমাদের চিন্তা যাতে অন্যদিকে বিক্ষিপ্ত না হয়, তার জন্যে তিনি প্রধান প্রধান বিষয়গুলো উল্লেখ করে ঘটনার ইতি টেনেছেন। কোনো বিষয়ে অধিকাংশ লোক কি ধারনা করে সেটাকে তিনি তাচ্ছিল্য অর্থে প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন অল্প কিছু সংখ্যক লোকই শিক্ষা গ্রহন করে, বেশীরভাগ লোকই মূর্খ,উপদেশ গ্রহন করেনা। আলোচ্য ঘটনায় মূল শিক্ষার বিষয়টি ছিলো এই যে- চরম প্রতিকূল পরিবেশে আল্লাহর দ্বীনের উপর অটল থাকতে হবে সেসব যুবকদের মত। আর সাহায্য কেবল আল্লাহর কাছে সরাসরি চাইতে হবে। আল্লাহ অবশ্যই সাহায্য পাঠাবেন। কিভাবে পাঠাবেন সেটা বান্দার না ভাবলেও চলবে। আর মর্যা কেবল আল্লাহই প্রদান করেন। বান্দা কেবল আল্লাহর রাস্তায় সঠিকভাবে চলবে, আল্লাহর উপর কঠিনভাবে আস্থা রাখবে। এরপর তাকে আর কিছু ভাবতে হবেনা। আল্লাহই যথেষ্ট।
"আর তুমি তোমার কাছে ওয়াহীকৃত তোমার প্রতিপালকের কিতাব থেকে পাঠ করে শুনাও, তাঁর কথা পরিবর্তন করে দেবে এমন কেউ নেই, আর তাঁকে ছাড়া তুমি কক্ষনো অন্য কাউকে আশ্রয়স্থল হিসেবে পাবে না। " (সূরা কাহফ: ২৭)
"আর তুমি নিজকে ধৈর্যশীল রাখ তাদের সাথে, যারা সকাল-সন্ধ্যায় তাদের রবকে ডাকে, তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশে, এবং দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে তোমার দু’চোখ যেন তাদের থেকে ঘুরে না যায়। আর ওই ব্যক্তির আনুগত্য করো না, যার অন্তরকে আমি আমার যিকির থেকে গাফেল করে দিয়েছি এবং যে তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে এবং যার কর্ম বিনষ্ট হয়েছে।"
(সূরা কাহফ: ২৮)
বিষয়: বিবিধ
৯৭২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর বিশ্লেষন! আল্লাহ্ আপনার জ্ঞানকে আরো বাড়িয়ে দিন। জাযাকুমুল্লাহ্
মন্তব্য করতে লগইন করুন