মালহামার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে !!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০২ মার্চ, ২০১৮, ১১:২৩:৩৯ সকাল
====================
স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে। (সুরা রুম ৩০ , আয়াত ৪১)
আমরা যে কিয়ামতের নিকবর্তী অবস্থানে রয়েছি,তাতে কারো কোনো সন্দেহ নেই। দেড় হাজার বছর পূর্বে স্বয়ং রসূল(সাঃ)এক সাহাবীকে হাতের দু আঙ্গুল পরষ্পর মিলিত করে কিয়ামত নিকটবর্তী হবার ব্যাপারে ইঙ্গিত করেছিলেন। আর আজ এতগুলো বছর পর সেটা অবশ্যই খুব নিকটবর্তী তা সহযে অনুমেয়। এ সংক্রান্ত বিষয়ে বহু সংখ্যক হাদীস রয়েছে যার অনেকটাই অনেক পূর্ব থেকেই ফলতে শুরু করেছে। আমি আপনাদেরকে কয়েকটি আলামত মনে করিয়ে দিলে বলবেন,,,হ্যা সত্যিই এটা ঘটছে....
রসূল(সাঃ)বলেছিলেন,,,সময় দ্রুতগামী হবে,,,সময় দ্রুততার সাথে চলে যাবে....বছর যাবে মাসের গতিতে,,মাস যাবে সপ্তাহের গতিতে.........বর্তমানের দিকে তাকালে বিষয়টি সহযে অনুমেয়। সময় আসলেই দ্রুত চলে যাচ্ছে।
নারীরা এমন সব কাপুড় পরিধান করবে যা দেখে মনে হবে তারা যেন নগ্ন। এটা বাংলাদেশে কেমন তা ভালো বলতে পারছি না,, তবে ইউরোপ,আমেরিকাতে এ হাদীস হুবহু ফলেছে.....
ফিতনা,হত্যা ব্যপক বেড়ে যাবে। বর্তমানে এ দুটোর প্রকোপ ব্যপক আকার ধারন করেছে।
অযোগ্য,নির্বোধ,চরিত্রহীন একেবারে অবাঞ্চিত শ্রেণীর মানুষ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হবে। এটাও সত্য প্রমানিত হয়েছে।
আরও অনেক আলামত প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু আজ আপনাদেরকে নিয়ে যাচ্ছি ভিন্ন এক বাস্তবতায়, যা সম্পর্কে মোটামুটি সারা বিশ্ব ইচ্ছাকৃতভাবে চোখ-মুখ বন্ধ করে বসে আছে। সেই বাস্তবতার নাম হল শেষের মহাযুদ্ধ যা মালহামা নামে পরিচিত।
পুরো দুনিয়া নানামুখি ঘটনার মধ্য দিয়ে মূলত একটিই পরিনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, আর তা হল শেষ জয় পরাজয়ের যুদ্ধ। হাদীস থেকে যেটা অনুভূত হয়েছে,তাতে দেখা যাচ্ছে শেষের এই যুদ্ধ আসলে একটি নির্দিষ্ট যুদ্ধ নয়। অনেকগুলো যুদ্ধের সমষ্টি। পুরো পৃথিবী নানামুখী অবস্থা,ঘটনার ভেতর দিয়ে গোটা মানব সমাজকে মাত্র দুটি ভাগে ভাগ করে ফেলতে যাচ্ছে। এর একদিকে থাকবে শুধুই কুফর, অন্যদিকে থাকবে শুধুই ইসলাম। প্রথম পর্বে মুসলিম ব্লকে নামকাওয়াস্তে মুসলিমগনও থাকলেও এক পর্যায়ে মুসলিম অংশ থেকে দুষিত অংশ পিছু হটে জাহান্নামের দিকে হারিয়ে যাবে ,বা নিজেদেরকে জাহান্নামী করবে। আর বাকী থাকা খাটি ঈমানদারগন বীরত্বের ময়দানে টিকে থাকবে। এদের একটি অংশ শহীদ হবে,যারা হবে শহীদদের শহীদ, অতি উন্নত মর্যাদাসম্পন্ন শহীদ। আর বাকীদের হাতে বিজয় প্রদান করবেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। এসম্পর্কিত বহু হাদীস রয়েছে যা স্বপ্ল পরিসরে বলা যাচ্ছেনা। কিন্ত এখন প্রশ্ন হল কিসের যুদ্ধ,কার যুদ্ধ,কোথায় যুদ্ধ ইত্যাদী.....
মূলত: ২০০১ সালে আমেরিকার টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর থেকেই বিশ্ব রাজনীতিতে ব্যপক ভিত্তিক পরিবর্তন হতে থাকে। বহু ধরনের ঘঠন-অঘটনের রেশটা মধ্যপ্রাচ্চকেই কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলো প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ইসলাম,মুসলিমকে সকল অনিষ্ঠের মূল ভাবতে থাকে। দুনিয়ার সকল স্থানে ঘটিত সকল খারাপ কাজে তাদেরকে জড়িয়ে মিডিয়ায় হাহাকার তোলা হয়। যেকোনো মূল্যে তাদেরকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা হয়। এরপর জোরপূর্বক তাদের উপর হত্যাযজ্ঞ চলে নানা মাত্রায়। এরপর ইরাক যুদ্ধ, ফিলিস্থিনি নির্যাতনে নতুন মাত্রা,তারপর সামকে জড়ানো হয়। পূর্বের সাম মানে হল আজকের সিরিয়া,লেবানন,ফিলিস্থিন,জর্দান অঞ্চলসমূহ। উপরোক্ত সকল বিষয়ের বর্ণনা দেওয়া আজকের আলোচ্চ বিষয় নয়। আমরা কেবল সিরিয়ার বিষয়টিতে ঢুকে পড়ব কিছু বিষয় অনুধাবনের জন্যে।
যেকোনোভাবেই হোক সিরিয়াকে কেন্দ্র করে বর্তমানের বহু পক্ষীয় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। স্বয়ং সিরিয় শিয়া সরকার নিজ ভূমীর সুন্নীদের উপর নানান বিধ্বংসী মারনাস্ত্র নিয়ে আক্রমন করেছে এবং লাখে লাখে সাধারন মানুষ হত্যা করেছে,যাদের বেশীরভাগই নারী-শিশু। যেসব পরাশক্তিদেরকে মানবতার কথা বলতে শোনা যায়, তারাই ওসখানে অস্ত্রের কারবার করেছে। তাদের সংস্থাসমূহ আহতদেরকে সেবা দিতে ওষুধ পাঠিয়েছে,,,আবার আকাশ থেকে বোম ফেলেছে। বলা যায় বহুপক্ষীয় অভিনয়ের নাট্যমঞ্চ সিরিয়া। বাশার আল আসাদ ও তার সঙ্গীরা অন্যদেরকে বিরোধীতা করতে মুসলিম নিধন করেছে,, আবার বাশারকে হটাতে চাওয়া শক্তিরা বাশারের কথা বলে মুসলিম নিধন করেছে। মধ্যভাগের মাতব্বররা উভয়কে থামাতে গিয়ে আবারও মুসলিম নিধন করেছে। এর ভেতর মুসলিমদের শক্তি হিসেবে উঠে আসা শ্রেণী উম্মাহর কর্ণধার সেজে আবারও মুসলিম নিধন করেছে। অর্থাৎ চারিদিক থেকে কেবল নানামুখি নাটকের মাধ্যমে মুসলিমের অস্তিত্ব বিলিন করতে চেয়েছে। কিন্তু তারা ব্যপকভাবে নিধনের বিশালসব ক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র প্রয়োগ করেও সফল হতে পারেনি। না আসাদ গং সফল হয়েছে, আর না আসাদ বিরোধীরা সফল হয়েছে। কিন্তু বহুমুখী যুদ্ধ চলছেই। সেখানে ঘটা ঘটনা নানান ফিতনার আলোকে আবার আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে, সেটা নিয়ে অনলাইনেও আবার ফিতনা যুদ্ধ হয়েছে নানামুখী।
# আবদুল্লাহ ইবনু হাওয়ালা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে ইবনে হাওয়ালা তুমি যখন দেখতে পাবে যে, খেলাফত পবিত্র ভূমিতে অবতরণ করেছে (বিভিন্ন বর্ণনার আলোকে হাদিস বিশারদদের মন্তব্য পবিত্র ভূমি বলতে শাম বা সিরিয়াকে বোঝানো হয়েছে) তখন মনে করবে যে কেয়ামত-পূর্ববর্তী ভূমিকম্প এবং ঐতিহাসিক বিপর্যয় ও বড় বড় ঘটনাবলি প্রকাশের সময় নিকটবর্তী হয়ে গেছে। আমার এ দুই হাত তোমার মাথার যত কাছাকাছি, তখন কেয়ামত তার চেয়েও নিকটবর্তী হয়ে যাবে।’ (মুসনাদে আহমাদ : ২২৪৮৭, আবু দাউদ : ২৫৩৫)।
বাস্তবতা হল এই যে, এই মহা শক্তিধর শাসকদের শক্ত হাতের নিয়ন্ত্রনের ভেতর দিয়েই এক শ্রেনীর দূর্বার গতিসম্পন্ন, পাহাড়সম ঈমানের বিশালতা সম্পন্ন,বীজয় ছিনিয়ে আনার দৃপ্ত শপথে লড়াকু এক বাহিনী অসিম বীরত্বের সাথে লড়ে যাচ্ছে, যাদের ব্যাপারে কোনো রকম ইতিহাসই নেই। যাদের কোনো মিডিয়া নেই। যাদের পক্ষে কোনো মুসলিম শাসক নেই। যাদের পক্ষে সাধারণ মুসলিমের ধারনাই নেই। যাদের পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে মোটামুটি কেউ নেই,,,,,,,,। যাদের তেমন অস্ত্রশস্ত্রও নেই কিন্তু সেই তাদেরকেই নির্মূল করতে সকল শক্তি নানান কথা বলে আঘাত করছে ,,, তারা আশা করছে রাতারাতি ওদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে,, কিন্তু নিশ্চিহ্ন তারা হচ্ছেনা। একদিকে শিয়াগোষ্ঠী,বাশার তাদেরকে হামলা করছে,,,অপরদিকে বাশারকে হামলা করতে আসা বাহিনী বাশারের নামে তাদের উপর আক্রমন করছে। কিন্তু কেউ তাদেরকে পুরো খতম করতে পারছে না। কারা ওরা !!!
ওরা হল, সিরিয়ার বিশেষ কিছু মুসলিম। আরও স্পষ্টকরে বললে বলতে হয়,,,ওরা গুতা বা ঘুতা অঞ্চলে জড় হওয়া সেই ঈমানদীপ্ত মুসলিম। হয় এরা হাদীসে বর্ণিত তারা,, নয়ত এই বীরদের পরে আসা আরেক স্তর উপরের বীর তারা, যাদের কথা স্বয়ং রসূল(সাঃ) বহু হাদীসে বলেছেন। তবে গুতায় জড় হওয়া আজকের এই বীরযোদ্ধারাই হাদীসের বর্ণিত সেই যোদ্ধাদের চারা, এতে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই।
মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি,
আমার উম্মতের একটি দল সব সময় আল্লাহর হুকুমের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যারা তাদেরকে মিথ্যুক প্রতিপন্ন করতে চাইবে কিংবা বিরোধিতা করবে তারা এদের কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। কিয়ামত আসা পর্যন্ত তারা এ অবস্থায় থাকবে। মালিক ইবনু ইয়ুখামির (রহঃ) বলেনঃ আমি মু’আয রাদিয়াল্লাহু আনহু কে বলতে শুনেছি, তারা হবে সিরিয়ার অধিবাসী। মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মালিক ইবনু ইয়ুখামির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তিনি মু’আয রাদিয়াল্লাহু আনহু কে বলতে শুনেছেন, তাঁরা হবে সিরিয়ার। (সহীহুল বুখারী ৩৬৪১)
আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যুদ্ধের দিন মুসলিমদের শিবির স্থাপন করা হবে ‘গূতা’ নামক শহরে, যা সিরিয়ার সর্বোত্তম শহর দামিশকের পাশে অবস্থিত।'
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪২৯৮)
ইবনুল মুসাইয়াব (রাঃ) হতে বর্নিত তিনি বলেন
রাসুল (সঃ) বলেছেন
শাম দেশে (সিরিয়ায়) ব্যাপক ফিতনা দেখা দিবে
যখন উক্ত দেশের কোন প্রান্তের ফিতনা একটু
শান্ত হবে তখনই অন্য প্রান্ত উত্তপ্ত হয়ে
উঠবে।
(কিতাবুল আল -ফিতান -৬৭৩)
হাদীস থেকে যেটা দেখা যায় তা হল,,,এই অঞ্চলে একের পর এক যুদ্ধ চলবে। এত প্রচন্ড যুদ্ধেও শক্তিশালী ঈমান নিয়ে একদল মুসলিম টিকে থাকবে। আল্লাহ এদের অবিচলতায় খুশী হবেন এবং মাহায্য পাঠাবেন। তখন মুসলিমদের খিলাফত কায়েম হবে। আরেক সহিহ হাদীস অনুযায়ী সেই খিলাফত শাসন ব্যবস্থা চলমান অবস্থায় একজন খলিফা মারা গেলে তার শূণ্যস্থানে কাকে বসানো যায়, তা নিয়ে ব্যপক শোরগোল শুরু হবে। সে সময় এক ব্যক্তি মক্কা থেকে মদীনায় এই কারনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে,যাতে লোকেরা তাকে খলিফা হিসেবে মনোনিত না করতে পারে। সেই সর্বাপেক্ষা যোগ্য তবে নেতৃত্ব ও ব্যপক দায়িত্বশীলতাকে পছন্দ না করে সে পালিয়ে যাবে। কিন্তু তাকে ধরা হবে এবং তাকেই খলিফা হিসেবে মনোনিত করা হবে,,এই ব্যক্তিটিই হলেন ইমাম মাহদী। তার নেতৃত্বে মুসলিমরা সুগঠিত হবে এবং ব্যপক শক্তি সঞ্চয় করবে। শান্তি ও যুদ্ধ উভয় রকম থাকবে তার শাসনামলে। শেষে মুসলিম ও কাফির দুভাগে বিভক্ত হয়ে যুদ্ধ চলবে। তুরষ্ক বা ইস্তামবুল দখল হয়ে যাবে কাফিরদের মাধ্যমে। এরপর মুসলিমরা আবার তা মুক্ত করবে....এমনকি মূল রোমও বিজিত হবে। তারপর দূর্বার গতিতে মুসলিমরা বিজয়ী হতে থাকবে। যুদ্ধলব্ধ সম্পদ যখন তারা ভাগাভাগি করবে, তখন শয়তান নিজেই ঘোষনা করবে দাজ্জাল তোমাদের পরিবারে প্রবেশ করেছে......তখন সেই যোদ্ধারা সবকিছু ফেলে সিরিয়াতে ফেরত আসবে।
মুসলিম শরীফের এই হাদীস থেকে বোঝা যায় ওই দূর্বার বাহিনী ছিলো সিরিয়ান বীরযোদ্ধা,যারা তুরষ্ক উদ্ধার করে আবার সিরিয়া ফিরে এসে দাজ্জালের বাহিনীর সাথে লড়াই করতে সারিবদ্ধভাবে দাড়াবে বা ক্যাম্প তৈরী করবে। কাফিরদের প্রধান লিডার মূল দাজ্জাল ও তার বাহিনী মুসলিমদের বিরুদ্ধে যখন প্রস্তুত, তখনই ঈশা(আঃ) দামেষ্কের আলোকোজ্জ্বল মিনারে অবতরন করবেন। এই বিষয়টি বাইবেলেও বর্ণিত হয়েছে। এ সময় কোনো এক সালাতের সময় হবে এবং ইমাম মাহদী ঈশা(আঃ)কে ইমামতি করতে বললে,তিনি সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করে ইমাম মাহদীর ইমামতিতে নামাজ আদায় করবেন।
(জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী(সাঃ)কিয়ামত পর্যন্ত আমার উম্মাতের একটি দল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়তে থাকবে এবং অবশেষে ঈসা আলাইহিস সালাম অবতরণ করবেন। মুসলিমদের আমীর (ইমাম মাহদি) বলবেন, আসুন, স্বলাতে আমাদের ইমামত করুন! তিনি উত্তর দিবেন, না; আপনাদের একজন ইমাম নিযুক্ত হবেন। এ হল এই উম্মাতের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত সম্মান। (সহীহ মুসলিম: ২৮৬))
এরপর যুদ্ধ হবে। ঈশা(আঃ)দাজ্জালকে হত্যা করবেন। কিন্তু ঈসা(আঃ)কত বছর থাকবেন,,পুরো ঘটনা কত বছর পর্যন্ত চলবে। কোনটা আগে কোনটা পরে এসব বিষয়ে আলেমরা কেবল অনুমান করেছেন। সঠিক তথ্য আল্লাহ জানেন। নীচের হাদীসগুলো লক্ষ্য করুন !
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিঃ)থেকে বর্ণিত-
রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না রোমীয় (সিরিয়ার অন্তর্গত) সেনাবাহিনী আ‘মাক অথবা দাবিক নহরের কাছে অবতীর্ণ হবে। তখন তাদের মুকাবিলায় মাদীনাহ্ হতে এ দুনিয়ার সর্বোত্তম মানুষেরর এক দল সৈন্য বের হবে। তারপর উভয় দল সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হবার পর রোমীয়গণ বলবে, তোমরা ঐ সমস্ত লোকেদের থেকে পৃথক হয়ে যাও, যারা আমাদের লোকেদেরকে বন্দী করেছে। আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করব। তখন মুসলিমগণ বলবে, আল্লাহর শপথ! আমরা আমাদের ভাইদের থেকে কক্ষনো সম্পর্কচ্ছেদ করব না। পরিশেষে তাদের পরস্পর যুদ্ধ হবে। এ যুদ্ধে মুসলিমদের এক তৃতীয়াংশ সৈন্য পলায়নপর হবে। আল্লাহ তা‘আলা কক্ষনো তাদের তাওবাহ্ গ্রহণ করবেন না। সৈন্যদের এক তৃতীয়াংশ নিহত হবে এবং তারা হবে আল্লাহর কাছে শহীদানের মাঝে সর্বোত্তম শাহীদ। আর সৈন্যদের অপর তৃতীয়াংশ বিজয়ী হবে। জীবনে আর কক্ষনো তারা ফিত্নায় আক্রান্ত হবে না। তারাই কুস্তুনতিনিয়া বিজয় করবে। তারা নিজেদের তালোয়ার যাইতুন বৃক্ষে লটকিয়ে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ ভাগ করতে থাকবে।
এমতাবস্থায় তদের মধ্যে শাইতান উচ্চৈঃস্বরে বলতে থাকবে, দাজ্জাল তোমাদের পেছনে তোমাদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে চলে এসেছে। এ কথা শুনে মুসলিমরা সেখান থেকে বের হবে। অথচ এ ছিল মিথ্যা সংবাদ। তারা যখন সিরিয়া পৌঁছবে তখন দাজ্জালের আগমন ঘটবে। যখন মুসলিম বাহিনী যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে এবং সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান হতে শুরু করা মাত্র সলাতের সময় হবে। অতঃপর ‘ঈসা (‘আঃ) অবতরণ করবেন এবং ইমাম মাহদি সলাতে তাদের ইমামাত করবেন। আল্লাহর শত্রু তা ঈসা( আ দেখামাত্রই বিচলিত হয়ে যাবে যেমন লবণ পাণিতে মিশে যায়। যদি ‘ঈসা (‘আঃ) তাকে এমনিই ছেড়ে দেন তবে সেও নিজে নিজেই বিগলিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। অবশ্য আল্লাহ তা‘আলা ‘ঈসা (‘আঃ)-এর হাতে তাকে হত্যা করবেন এবং তার রক্ত ‘ঈসা (‘আঃ)-এর বর্শাতে তিনি তাদেরকে দেখিয়ে দিবেন। (ই.ফা. ৭০১৪, ই.সে. ৭০৭১)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১৭০
# নাওওয়াস ইবনু সাম’আন (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) দাজ্জাল সম্পর্কে (বিস্তারিত) আলোচনা করলেন। (এক পর্যায়ে) তিনি বললেন, অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম দামেস্ক নগরীর পূর্বদিকের উজ্জ্বল মিনারে অবতরণ করবেন। তিনি দাজ্জালকে সন্ধান করতে থাকবেন। অবশেষে তাকে বাবে লুদ নামক স্থানে গিয়ে পাকড়াও করবেন এবং তাকে হত্যা করবেন।’ (মুসলিম : ৭২৬৩)।
এখন কথা হল মুসলিম হিসেবে আমাদের কর্তব্য কি ?
আমাদের কর্তব্য হল নিজেদের ঈমানকে পোক্ত করা। ঈক্য বজায় রাখা। বিনা কারনে বিতর্ক করে ঐক্য নষ্ট না করা। আল্লাহর ইবাদতে অধিক মনোযোগী হওয়া। আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা। নিজেদেরকে হাদীস অনুযায়ী প্রস্তুত করা। এরপর যখন আল্লাহ সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন, যখন পরিবারের ভেতরও বিভক্তি সৃষ্টি হয়ে যাবে ইসলামের পক্ষে-বিপক্ষে,,, তখন ইসলামের পক্ষে থাকা সহজ হবে। ইমাম মাহদী,ঈসা(আঃ) আগমন করলে তাদের দলে প্রবেশ করা অধিক সহজ হবে। আর আল্লাহ দূর্জেয়,দূর্বার গতিসম্পন্ন,অকূতভয়,অপরাজেয় কালো পতাকাধীদেরকে খোরাসান থেকে বের করলেও বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাদের সাথে মিলিত হওয়া সহজ হয়ে যাবে, যদি আমরা ঈমানকে উচু স্তরে উন্নিত করি। ইহুদী এবং খ্রিষ্টানদের একটি বিশাল অংশও নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মুসলিম তথা ঈসা(আঃ)এর বাহিনীতে যোগদান করবেন। রসূল(সাঃ) আমাদেরকে ঈসা(আঃ)এর সেই বাহিনীতে থাকতে বলেছেন। ফলে আমরা যেন অন্তরে সেই আশা লালন করি। আল্লাহ কবুল করুন !
“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করবে, আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হবে।” (সূরা ত্বালাক- ৩)
বিষয়: বিবিধ
২২৭৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন