যে বিষয়টি আমরা খেয়াল করিনা !!!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ০১:১৮:১৯ দুপুর
কেমন আছেন ??
সুন্দর উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো আছি বা আল্লাহ ভালো রেখেছেন।
কেমন আছেন ??
উত্তর :
১. এই তো আছি ।
২. চলে যাচ্ছে।
৩. আছিরে ভাই,,,,,,কেমন তা জানিনা।
৪. মোটামুটি আছি।
৫. আছি মন্দ না।
৬. খারাপ আছি।
৭. কোনোমতে চলে যাচ্ছে।
৮. শেষ হয়ে গেছিরে ভাই,,,আমি ধ্বংস হয়ে গেছি।
৯. নাহ,,,একটা দিনও শান্তিতে থাকতে পারলাম না,,,,,আমি তো জানামতে কোনো পাপ করিনি,,,তাহলে কেন এমন হচ্ছে !
১০. ভাই এটা জানতে চেয়েন না,,,আছি এক রকম !
আপনি ভাবছেন আপনি সৎ মানুষ তাই সততার সাথে উত্তর দিচ্ছেন ভাবছেন ,,,রাইট ??? মানে আপনি নিজে যে অবস্থানে আছেন ,সেটাই সততার সাথে অন্যকে বলছেন,,,কেমন আছি প্রশ্নের জবাবে ,,,রাইট ???
আপনি মনে মনে বলছেন,,,জি হ্যা,,সেটাই তো !!
================
============
======
না, আপনি ঠিক বলেননি,, আপনি ভুলের মধ্যে আছেন। আপনি ভুল বুঝেছেন এবং ভুলের মধ্যে বসবাস করছেন। আপনি কেবল ভুল বলেছেন তাই নয়,, সম্ভবত: আপনি জ্ঞানসারে অথবা অজ্ঞাতে আল্লাহর নাফরমানি করেছেন। আপনি অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন।(যদি আমি এটা করে থাকি, আমিও অকৃতজ্ঞ)
*** আমরা অবশ্যই অকৃতজ্ঞ। মাত্র একবার হলেও ভাবুন,,,, আমার সত্ত্বাটাই সৃষ্টি হওয়ার কথা ছিলোনা। কি হত যদি আমি সৃষ্টই না হতাম !!
*** আমি আমার কোনো যোগ্যতা ছাড়াই আল্লাহর একটি পরিকল্পনার অংশ। অর্থাৎ আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করে অনন্ত কাল জান্নাতে আরামে থাকার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছেন।
*** আল্লাহ বিষয়টাকে আরও সহজসাধ্য করতে আমাকে মুসলিমের ঘরে পাঠিয়েছেন। আমার প্রত্যাশা ছাড়াই চরম রহমত প্রদান করেছেন।
*** অন্যের তুলনায় নানানভাবে আমাকে উপকৃত করেছেন। আমার জন্যে সফলতার সুযোগ উম্মোচিত হয়েছে। আমাকে শারিরীক,মানুষিকভাবে,পারিপার্শ্বিকভাবে নানান রকমের নিয়ামত দান করা হয়েছে।
এতগুলো বিশাল সম্ভাবনা,রহমত প্রাপ্ত হওয়ার পর যদি "কেমন আছেন ? " প্রশ্নের উত্তর উপরোক্ত সুন্দর উত্তরের মত না হয়ে পরবর্তী ১ থেকে ১০ নং উত্তরের মত হয়,,, তাহলে সুমহান,দয়াময় আল্লাহ তার রহমান ও রহিম বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী আচরন করতে পারেন এবং আমরা উত্তরে যা বলে থাকি,,,বাস্তবে সেটাই ঘটে যেতে পারে। মানে হল....যিনি বলেন,,,,আমি কোনো রকম,,,,,তিনি কোনো রকমই থাকবেন,,,,যিনি বলেন মোটামুটি আছি---তিনি মোটামুটিই থাকবেন,,,,যিনি বলেন-খারাপ আছি,,,তিনি খারাপই থাকবেন,,,তার খারাপ খবরের পাহাড় তৈরী হতে থাকবে। আর যিনি বলেন- আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি,,,তিনি যে কোনো পরিস্থিতিতে আল্লাহর সাহায্য পাবেন এবং মানুষিক প্রশান্তিতে থাকবেন। কল্যানের উপর থাকবেন।
যখন আমরা বলি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, তখন তার মানে হল--আমরা আমাদের অবস্থার উপর সন্তুষ্ট। সকল সুখ ও দু:খের সময় যদি বলি- আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, তাহলে এর অর্থ হল- আমি ধৈর্য্য ধারন করেছি এবং আল্লাহ যেন আমাকে ভালোই রাখেন,সফল করেন। আর সত্যিই এই বান্দাকে আল্লাহ দ্রুত সফল করেন এবং দ্রুত অবস্থার উন্নতি সাধন করেন আর তার মনোবল শত গুন বাড়িয়ে দেন, আল্লাহ তার জন্যে অভিভাবক হয়ে যান। ভালো আছি শব্দটা বলা মানে হল---কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। আল্লাহ এটাতেই খুশী হন।এটাই তার একটি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।
এমনকি এরূপ কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী কাফিরকেও আল্লাহ দুনিয়াতে সুখ,সমৃদ্ধি প্রদান করেন। মানুষিক শান্তি প্রদান করেন, রোগ মুক্ত করেন,সুস্থ্যতা প্রদান করেন এবং দীর্ঘ হায়াত দান করেন। ইমানদাররা এমন করলে তাকে দুনিয়া ও আখিরাত দুটোই দান করেন। প্রতিনিয়ত আমরা জ্ঞাতসারে অথবা অজ্ঞাতে আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ আচরণ করছি, আল্লাহর উপর অভিযোগ করছি আবার আল্লাহর সাহায্য কামনা করছি। হয়ত আমাদের আচরনসমূহ কখনও কখনও আল্লাহর কাছে চরম হাস্যকর হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ ক্ষমা করুন !!
"তোমরা অকৃতজ্ঞ হলে জেনে রাখ, আল্লাহ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন। তিনি তাঁর দাসদের অকৃতজ্ঞতা পছন্দ করেন না। যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তাহলে তিনি তোমাদের কৃতজ্ঞতা পছন্দ করেন।"
(সূরা আয-যুমার, আয়াত-০৭)
বিষয়: বিবিধ
৭১৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন