মহা প্ররাক্রমশালী আল্লাহ কত বিশাল !!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৩ আগস্ট, ২০১৭, ১১:২৪:২৯ সকাল
আস সালামুআলাইকুম। আমরা অনেকসময় মহা বিশ্ব শব্দটা ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা কি জানি এটা কত বিশাল ??
======================
যে বিষয়ে আমি আপনাদেরকে ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করছি, তা বুঝতে মোটামুটি জ্ঞান প্রয়োজন হবে(আমি নিজেও মোটামুটি নির্বোধ) কিন্তু আমি আপনাদেরকে খুবই সাধারনভাবে একটি ধারনা দেব। জ্ঞান জাহির করা উদ্দেশ্য নয়, বরং আল্লাহর সম্পর্কে ধারনা তৈরীতে এটি সহায়ক হবে আর ঈমান বেড়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। শুরু করছি :
১. আমাদের এই বিশাল পৃথিবীর চেয়ে সূর্য ১৩ লক্ষ গুন বড়। সূর্যও একটি নক্ষত্র বা তারা। তারা মানে হল যে জোতিষ্কের নিজস্ব আলো ও তাপ আছে।
২. সূর্যকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো গ্রহ ঘুরছে বা প্রদক্ষিন করছে। বৃহস্পতি গ্রহ হল অনেক বিশাল,পৃথিবী মাঝারি সাইজের গ্রহ। এসব গ্রহবে কেন্দ্র করে আবার অনেকগুলো করে উপগ্রহ প্রদক্ষিন করছে। আর মহাবিশ্বে সূর্যের মত এরকম অনেক তারা রয়েছে, যাদেরকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো গ্রহ প্রদক্ষিন করছে। আমাদের পৃথিবীর
৩. মহাবিশ্বে আমাদের সূর্য্য(যা পৃথিবীর চাইতে ১৩ লক্ষ গুন বড়) একটি মধ্যম সাইজের তারা বা তারকা। এরকম সাইজের বা এর চাইতে লক্ষ গুন বড় বা এর চাইতে ছোটসাইজের কোটি কোটি তারকা নিয়ে একটি গ্যালাক্সি গঠিত।
৪. আমাদের সৌরজগৎ যে গ্যালাক্সীতে অবস্থান করছে, তার নাম হল "মিল্কিওয়ে" । এই গ্যালাক্সীতে কতগুলো তারা রয়েছে জানেন ???? বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছে এখানে ১০০ বিলিয়ন থেকে ৪০০ বিলিয়ন তারকা রয়েছে। এক বিলিয়ন মানে হল ১০০ কোটি। এটি বিজ্ঞানীদের অনুমান কিন্তু প্রকৃত হিসাব আরও বেশী।
৫. আপনি কি জানেন, মহাবিশ্বে সবচেয়ে কাছাকাছি দুটি তারার পারষ্পরিক দূরত্ব কত ???
উ: এই দূরত্ব হল ৪ আলোকবর্ষ। এর মানে হল সবচাইতে কাছাকাছি থাকা দুটি তারার একটি থেকে যদি আপনি অন্যটিতে যেতে চান, তাহলে আপনি যদি আলোর গতিতে অর্থাৎ ১ সেকেন্ডে ১লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল(প্রায় ৩ লক্ষ কি:মি বেগে চলেন, তাহলে উক্ত কাছের তারকায় পৌছতে আপনার সময় লাগবে ৪ বছর !!! আবার চিন্তা করুন দয়া করে।
৬. তাহলে এরকম কতগুলো গ্যালাক্সী আছে মহাবিশ্বে ??
উ: গ্যালাক্সীগুলো বিরিয়ন বিলিয়ন তারকায় পূর্ণ, যার বেশীরভাগ তারকাই আমাদের সূয্যের চাইতে বহু গুন বিশাল। কিন্তু বিশাল সাইজের গ্যালাক্সীর মোট পরিমান বিজ্ঞানীরা জানো, কেবল হাবল টেলিস্কোপ দিয়ে যা দেখো সম্ভব হয়েছে এবং অনুমান করা সম্ভব হয়েছে,তার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা বলেছেন মহাবিশ্বে ১০০ বিলিয়নেরও বেশী গ্যালাক্সী রয়েছ। ১ বিলিয়ন= ১০০কোটি।
সবচেয়ে মজার বিষয় হল এই যে, এ যাবৎকাল পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের যতটুকু অনুমান করেছে, সেটা পূর্ণাঙ্গ চিত্র নয়। তারা এর এক ক্ষুদ্র ভগ্নাংশই প্রত্যক্ষ করেছে। আর মহাবিশ্বের আকার কেমন বা আসলে তা কত বড়, সেটা অনুমান করাও সম্ভব হয়নি। আবার এই মহা বিশ্ব প্রতিনিয়ত চারিদিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে। পূর্বে মনে করা হত যে গতিতে তার চাইতেও বেশী গতিতে এটি সম্প্রসারিত হচ্ছে। ২০১৬ সালে বিজ্ঞানীরা বলছেন এটি আলোর গতির চাইতেও বেশী গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে। (বি:দ্র: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা একটি আয়াতে এই সম্প্রসারনের বিষয়ে বলেছেন)
৭. আমরা পৃথিবী নামক গ্রহ, সূর্য্য,গ্যালাক্সীর আকার জানলাম এবং আনুমানিক কতগুলো গ্যালাক্সী আছে তাও জানলাম। কিন্তু এই সকল গ্যালাক্সীসহ মহাবিশ্বের আসল আকৃতি বিজ্ঞানীরা এখনও কল্পনাও করতে পারেনি। আবার তা আলোর গতির চাইতেও অধিক গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে।
৮. এবার টাস্কি খাওয়ার পালা : গোটা মহাবিশ্বই আসলে তারকা দ্বারা পরিপূর্ণ। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা আলকুরআনে জানিয়েছেন যে, তিনি নিকটতম আসমানকে তারকা দ্বারা সুশোভিত করেছেন। আল্লাহ আরও জানিয়েছেন যে, তিনি আসলামসমূহকে আরও ৬টি স্তরে বিন্যস্ত করেছেন। অর্থাৎ এই মহাবিশ্বটা আসলে ১ম আসলাম। এরপর উপর একে পরিবেষ্টন করে আছে আরেকটি আসলাম,তারপর আরেকটি,,এভাবে আরও ৬টি স্তর রয়েছে। ....
###### এর উপর রয়েছে আল্লাহর আরশ ,যা এসকল আসমানসমূহের চাইতে বহু বহু বহু এবং বহু গুন বিশাল। তা এতটাই বিশাল যে বিষয়ে উপমা দিতে গিয়ে রসূল(সাঃ) যা বলেছেন, তা হুবহু মনে নেই কিন্তু মূল ভাবটি এমন-এই আসমানসমূহ যেন কয়েকটি পয়সা বা দিরহামের মত, আর আরশ হল ঢালের মত । আর আল্লাহর কুরসী হল এমন যে, উক্ত ঢালসহ পয়সাগুলো যেন বিশাল মরুভূমীকে ছুড়ে দেওয়া হল। (যতদূর মনে পড়ছে এটি বুখারী বা মুসলিম বর্ণিত হাদীস। পুরো বলতে না পারার কারনে আল্লাহ ক্ষমা করুক। সংশোধন প্রযোজ্য)
কিন্তু এখানে মানুষকে বুঝানোর জন্যে একটি উপমা ব্যবহৃত হয়েছে মাত্র। প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর আরশ, কুরসীর সাথে কোনো কিছুর তুলনা চলেনা। সেটা কত বিশাল তা সীমাবদ্ধ জীব হিসেবে মাথায় আনা সম্ভব নয়।
######## মহান আল্লাহ এরপর সমাসীন। তিনি কিভাবে সেখানে সমাসীন তা আমরা জানিনা। তিনি জানিয়েছেন সেখানে তিনি সমাসীন, সেটাই বিশ্বাস করতে হবে। আর এত ঘটনা আল্লাহ ঘটিয়েছেন, নিজের বিশালতা বোঝানোর জন্যে। এর বাইরে আরও তার সৃষ্টি থাকতে পারে, সেটা আমাদের জানা নেই। আল্লাহ এই আসমানসমূহ এবং আরশ,কুরসীকে পরিবেষ্টন করে আছেন কি না, জানা নেই। আমাদেরকে জানানো হয়নি। তবে মানুষ যেভাবে চেয়ারে বসে থাকেন,তিনি সেভাবে বসে নেই,এটা নিশ্চিত, কারন তার কোনো সাদৃশ্যই আমাদের মাঝে নেই(সূরা ইখলাস),যদিও তার কিছু গুন আমাদের দান করেছেন। (আর যেসব অখাদ্য মূর্খ আল্লাহর সম্পর্কে বলে, "আল্লাহ কুরসীতে বসে আছেন, অতএব যুক্তি এই যে, তিনি তার কুরসীর মতই বড় !! " তারা দূরে গিয়ে মর)
আমরা সীমাবদ্ধ জীব। অতি নগন্য আমাদের জ্ঞান। এই সীবদ্ধতা দিয়ে অসীম সত্ত্বার অস্তিত্বের পরিমান বা বিশালতার বিষয়টি পরিমাপ করা অসম্ভব কিন্তু তার অস্তিত্বের উপস্থিতি বোঝা সম্ভব। এতটুকু বোঝা সম্ভব যে, আমাদের প্রত্যক্ষ করা মহাবিশ্ব ও তার উপরের স্তর সমূহের চাইতে তিনি অতি সুবিধাল। তার বৈশিষ্ট্য অনন্য। তিনি অনাদী ও অনন্ত,অক্ষয়। তার থেকেই সবকিছু সৃষ্ট। তার সাথে কোনো কিছুরই তুলনা চলেনা।
আলহামদুলিল্লাহ ! আমরা সেই রবের পরিচয় পেয়েছি। আমরা সত্যিই ভাগ্যবানদের অন্তর্ভক্ত আর আল্লাহই আমাদেরকে সেই সুযোগ দিয়েছেন। আমরা যেন এই নিয়ামতের প্রতি সুবিচার করি। আমরা যেন বিভ্রান্ত না হই। ইয়া আল্লাহ ! আপনি আমাদেরকে আপনার অনুগত বান্দা হিসেবে কবুল করুন !
এবার মহবিশ্বের কিছু ছবি দেখুন :
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুব'হানাল্লাহি ওয়া আলহা'মদুলিল্লাহি ওয়া লা.....ইলাহা ইল্লা্ল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবার
মন্তব্য করতে লগইন করুন