একটি উট সদাকাহ করলাম, আলহামদুলিল্লাহ !!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৫ এপ্রিল, ২০১৭, ০৭:০১:৩৫ সকাল
আজ মারাত্মক পবিত্র সুন্দর শুক্রবার। সকালে দ্বিতীয় ইনিংসে কোষে ঘুম দিলাম। সকাল ১১টার পর গোসল করলাম। সুন্দর পোষাক পরে মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম দ্রুত। পৌছে দেখী কোনো বান্দা হাজির হয়নি,মসজিদের সকল গেট বন্ধ। খানিক হাটাহাটির পর এক তিউনিশিয়ার বান্দা বশীর ভাই হাজির। সালাম ও সৌহার্দ বিনিময় করলাম। আর নিশ্চিত করলাম যে জুম্মাহর দিনের উট'টি আমার ভাগেই পড়েছে। রসূল(সাঃ)বলেন-জুম্মাহর দিনে যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম হাজির হয় সে একটি উট সদাকাহর সওয়াব পায়,পরবর্তী জনদের ক্ষেত্রে সওয়াব ক্রমানুযায়ী কমতে থাকে। তবে এটা ছাড়াও আরও অনেক রকমের সওয়াব জুম্মাহর দিনে ধার্য করা হয়েছে,আরও অনেক কিছু আছে যা প্রকাশিতও হয়নি।
বি:দ্র: আমি জীবনে কোনো দিন জুম্মাহর নামাজে সকলের পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করিনি। এটাই প্রথম। আমাদের দেশের মসজিদে খাদেম,মুয়াজ্জিন বহু পূর্বেই মসজিদে অবস্থান করে,ফলে তাদের আগে যাওয়া প্রায় অসম্ভব।
সেদিন জুম্মাহর দিনের ব্যাপারে একটা হাদীস শুনছিলাম শাইখ আহমদুল্লাহর থেকে। উনি বলছিলেন জুম্মাহর দিনে যে গোসল করে,সুন্দর পোষাক পরে,আগে আগে মসজিদে উপস্থিত হয়ে সামনের কাতারে বসে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে.....তাকে যে কি দেওয়া হয় তা মনে করতে পারছি না তবে কাজগুলো মনে রেখেছিলাম। আর কি কি দিবেন সেটা আল্লাহ ভালো জানেন। যা যা দিবেন তার সাথে যেন আরও কোটি গুন দান করেন.....তিনি এমন স্রষ্টা যিনি দিলে তার কিছু কোমে না,,ফলে চাইতে কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়।
ভেতরে বশীর ভাই এবং আমি খানিকক্ষন কথা বলে কুরআন তিলাওয়াত করলাম। এরপর আরেক বড় ভাই আসল এবং তারপর ইমাম আসলেন। ইমাম হলো ব্যপক জ্ঞানী আর স্বভাবে তুলোর মত নরম। তুলো হুজুরের সাথে বললাম যে আপনার সাথে একান্তে কিছু কথা আছে। হুজুর অফিসে নিয়ে গেলেন। উনার সাথে অন্তত ৩০ মিনিট নানান বিষয়ে কথা বললাম। উনি নিয়মিত ওরেগনের বিভিন্ন জেলে ভ্রমন করেন। সেখানে থাকা মুসলিম বন্দীদের খবর নেন এবং কখনও খাবারও সরবরাহ করেন। রমজানে তাদের জন্যে স্পেশাল খাবার সরবরাহ করা হবে। দাওয়াহও আগাচ্ছে জেলখানায় আলহামদুলিল্লাহ। ব্যক্তিগতনানান বিষয়ে কথা বলে আবার মসজিদের ভেতরে আসলাম,সামনের কাতারে একজন বসার মত স্থান ছিলো,সেটা আমি দখল করলাম। রসূল(সাঃ)বলেন-কেউ যদি জানত, সামনের কাতারে দাড়ানোর কি সওয়াব,তবে তারা এখানে দাড়ানোর জন্যে যুদ্ধ করত/শক্তি প্রয়োগ করত।..(সম্ভবত বুখারী)
নামাজ শেষে খানিকক্ষন মসজিদের সামনে দাড়ালাম কোনো দ্বীনি ভাইকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাওয়া যায় কি না সে কারনে। মনে মনে সওয়াব হিসাব করছিলাম। কিন্তু সেরকম কাওকে পেলাম না। বেশ কয়েকজনের সাথে নতুন পরিচিত হলাম ,তারা ছিলো এক পাল...এত লোককে রেস্টুরেন্টে নিলে পকেটের মান সলেমান আর থাকবে না ভেবে নিজেই পরবর্তী সওয়াবের জন্যে উদ্যোগী হলাম। সওয়াব এই কারনে যে,আমি হালাল ইনকাম করি এবং তা দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হালাল খাচ্ছি,ফলে সওয়াব হচ্ছে। ইসলাম এমনই এক দ্বীন,যেখানে লসের কোনো কারবার নেই। আল্লাহর সাথে ব্যবসা করলে লসের কোনো কারবার নেই,এমনকি পুজীটাও তিনি সরবরাহ করেন,ব্যবহারের জ্ঞানও দেন,শক্তিও দেন,সবটাই তার আবার সওয়াবও দিচ্ছেন....আল্লাহু আবকার !!
আজ কোনো এক ঐতিহাসিক কারনে ভেড়ার গোস্ত রান্না করেছে,,সম্ভবত আমি আসব এটা তারা জেনেছিলো। আর ভেড়া মানেই হল মাথা পর্যন্ত গেলা অনিবার্য্য। মাথা পর্যন্ত খাবার নিয়ে একটি গ্রোসারী স্টোরে গিয়ে নানান খাবার জিনিসপাতি কিনলাম। এরপর দুটি পোষাকের দোকানে গেলাম এবং কিছু পোষাক,জুতো কিনে ঘরে ফিরলাম। আহ আমার উট'টা নিশ্চয়ই আজ বেশ বড় ছিলো !!(আল্লাহ কবুল করুন !!)
বিষয়: বিবিধ
১০২৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এসব মুসলিম বন্দীদের কি অপরাধ ছিল ?
আমেরিকাতে বর্ণবাদ ও ধর্মবাদ মোটেই কম না । জেলের বাইরে গালাগাল , মাইর এমনকি খুন পর্যন্ত হতে হয় । এগুলো হয়ই বেশীর ভাগ বাহির থেকে আগত মুসলমানদের প্রতি ।
জেলের ভেতর কি এরা নিরাপদে থাকে ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন