ভারত-পাকিস্থান লড়াই
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৯:৫৭:২২ সকাল
সাম্প্রতিক সময়ে উরীতে ১৮ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্থানের ভেতর যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিলো। ভারত যেভাবে বক্তব্য দিচ্ছিলো এবং রন প্রস্তুতি নিচ্ছিলো তাতে মনে হচ্ছিলো যুদ্ধ করবেই।পাকিস্থানও প্রস্তুত ছিলো। ভারত পাকিস্থানকে ৫ মিনিটে উড়িয়ে দিতে চাইলো,অপর দিকে পাকিস্থানও ভারতকে উড়িয়ে দিতে চাইলো। এমনকি এই দু-পক্ষের ভেতর বাংলাদেশ বুক চেতিয়ে দাড়িয়ে ভারতের পক্ষে কাশ্মীর-পাকিস্থানের বিরুদ্ধে লড়ার প্রতিশ্রুতিও দিল। ভাবলাম এবার একটা লড়াই হয়েই যাবে। নরেন্দ্র মোদী তার বাহিনীর সাথে বারবার আলাপ করল। ওদিকে পাকিস্থান তাদের মহাসড়কের উপর এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান উঠা-নামা করিয়ে যুদ্ধের শেষ প্রস্তুতি সম্পন্ন করল। মনে হল এই বুঝি লেগে গেল.....
কিন্তু তারপর এ কি !! দুদিনের ভেতরই সব চুপ চাপ....নরেন্দ্র মোদী নিম্নোক্ত বক্তব্য প্রদান করেছেন...
".............ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাক শাসকদের জানা উচিত; উরিতে ভারতীয় সেনাদের প্রাণহানি কখনই বৃথা যাবে না। এমন একদিন আসবে, যখন দেশের জনগণই পাক সরকারের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। বিশ্বে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে সফল হয়েছে ভারত এবং এ চেষ্টা আরো জোরদার করা হবে; যাতে বৈশ্বিকভাবে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পাকিস্তান। সন্ত্রাসের সামনে ভারত কখনোই মাথা নত করেনি ভবিষ্যতেও করবে না।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, চলুন দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও নিরক্ষরতার বিরুদ্ধে লড়াই করি। দেখি কে প্রথমে বিজয়ী হয়; ভারত নাকি পাকিস্তান।".....
পক্ষপাতিত্বমূলক কথা বলব না কিন্তু যুদ্ধের প্রাক্কালে এই বক্তব্য কোনো জাতীয় নেতার হতে পারেনা। এটা অসম্ভব। এ কথা শুনে আমার যা মাথায় আসল তা হল এই যে.....গ্রামের দুই লোক ঝগড়া করছে এভাবে ...
" ১ম জন: তুই শয়তান ! তোর মাথা উড়িয়ে দেব !
২য় জন : আমিও তোর মাথা উড়িয়ে দেব !
:কি ! তোর এত সাহস ! দাড়া আমি আসছি !!
:আচ্ছা দাড়ালাম,,আয় তুই....
: না, মানে....ওহ...আচ্ছা...তুই কি জানিস তোদের পুকুরের চেয়ে আমাদের পুকুরে মাছ বেশী ?...তুই পারলে আমাদের চেয়ে বেশী মাছ চাষ করে দেখা !!!!""
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হুবহু এই ১ম জনের মত আচরন করেছেন এবং বিশাল ভারতের ইজ্জত তামা তামা করে ফেলেছেন। কোনো জাতীয় নেতাসূলভ বক্তব্য দিতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
পূনশ্চ: এখন যা ঘটতে পারে তা হল এই যে, কাশ্মীর মানুষিকভাবে ভারতীয় সৈন্যদের পূর্বে চাইতে বেশী দূর্বল মনে করবে এবং নিজেরা শক্তি সঞ্চয় করতে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হবে। স্বাধীনতার আওয়াজ আরও জোরালো হবে কাশ্মীরে। যদিও ভারতের মোট ১৩ লক্ষ সৈন্যের লক্ষই কাশ্মীরে মজুদ তারপরও তারা অনিরাপত্তায় দিন কাটাবে। মোদীর বক্তব্য তাদের আভ্যন্তরিন দূর্বলতার বহি:প্রকাশ। এ বিষয়টি তাদের সৈন্যদের হীনবল করে দিয়েছে অথবা তাদের সৈন্যদের হীনবলতার কারনে মোদী এমন বক্তব্য প্রদান করেছেন। কারন তারা জানিয়েছে যে জার্মানীর তৈরী রাফায়েল যুদ্ধ বিমান এখনও এসে পৌছেনি,সেটা আসতে সাড়ে ৪ বছর লাগবে। তাদের নিয়মিত যুদ্ধবিমানের অনেকটাই উপযোগী নেই...এরকম কিছু....।
মোট কথা হল গত কিছুদিনের যুদ্ধাবস্থা থেকে পাকিস্থান সুবিধা তুলে নিয়ে গেল এবং মনস্তাত্ত্বিকভাবে বিজীত হল। আর এবার তাদের গোয়েন্দা বিভাব পরোক্ষভাবে আরও হামলা চালাবে। দোষ পড়বে লষ্কর এ তৈয়বার উপর....ভারত বলবে পাকিস্থান এ কাজ করেছে,,,পাকিস্থান বলবে আমরা করিনি ....ভারতও প্রমান করতে পারবে না,কেবল এটা বলবে যে আমাদের হাতে প্রমান আছে..এবং এটা চলতেই থাকবে।
আমার ব্যক্তিগত অভিমত হল ভারত অদূর ভবিষ্যতে আক্রান্ত হতে চলেছে। তারা ভেবেছে নিজেরা আরও গুছিয়ে নিয়ে,শক্তি সঞ্চয় করে তবে লড়বে। কিন্তু তাদের এই সিদ্ধান্ত তাদের বিরুদ্ধে যাবে মনে হচ্ছে। আরও ভয়াবহ ঘটনা হল এই যে, ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমন হলে আফগানিস্থান,পাকিস্থান,কাশ্মিরসহ অন্য স্থানের মুসলিমের ভেতর যে আন্ত:কলহ চলছিলো বা মতবিরোধে ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছিলো তারা এই ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হবে। মিডিয়ার ভাষায় জঙ্গী,সেখানকার স্থানীয়দের ভাষায় মুজাহিদ ,সাধারন জনতা,আর্মী সব কাধে কাধ মিলিয়ে লড়বে। আর এই বিষয়টি হাদীসে বর্ণিত হিন্দুস্থানের জীহাদের চেতনায় এক মহা যুদ্ধে রূপলাভ করবে মনে হচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা স্বাধীনতার দাবীতে আন্দোলনরত লোকেরা সুযোগ নিবেই। ভারত -পাকিস্থানের এবারকার যুদ্ধ এক বিশাল রকমের ভবিষ্যৎ নির্ধারনী যুদ্ধ হয়ে দেখা দিতে পারে। সম্ভবত ভারত সে হিসাব করেছে কিন্তু তাদের হিসাবে গড়বড় হবে এবং হতেই থাকবে। এদের ভেতর থেকে বাংলাদেশ সরকার সঠিক রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন না করতে পারলে পুরো জাতি কঠিন মূল্য দিতে হয়ত বাধ্য হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৫০০ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর, কৌতুকপ্রদ ও স্মার্ট বিশ্লেষণটি ভাল লেগেছে।
ভারতিয় ব্রাম্মন্যবাদি হিন্দুরা কখনই সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হবেনা যতক্ষন না তার নিশ্চিত হচ্ছে প্রতিপক্ষের মধ্যে প্রচুর পরিমানে বিশ্বাসঘাতক আছে।
আপনিও মারাত্মক বলেছেন।
তবে হাসিনার আগ বাড়িয়ে হুট করে ভারতের পক্ষে থাকার ঘোষণা আবাল মার্কা কাজ ছাড়া আর কিছুই না। ভক্তিতে একেবারে অন্ধ হয়ে গেছে!
মন্তব্য করতে লগইন করুন