সাফারী পার্ক

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৪ জুলাই, ২০১৬, ১১:৪৪:৫৭ সকাল









১লা জুন,২০১৬। উদ্দেশ্য ওরেগনের উইনস্টোনের সাফারী পার্কে যাওয়া। এটাই প্রথম সাফারী পার্কে যাওয়া। অনেক আগে নেপালের দুটো সাফারী পার্কে যাওয়ার প্লান করেও হয়নি। এমনকি এক মাস কাঠমন্ড ও পোখারায় থাকার পরও ব্যাটে বলে হয়নি। এবার সেই শখ পূরন হচ্ছে।

বাসা থেকে আড়াই ঘন্টার ড্রাইভ, প্রায় ৩শত কি:মি: । এটা সেটা খেতে খেতে চললাম। এক কালে গাড়িতে চলার সময় গান শুনতাম। সেসব এখন ইতিহাস। কিভাবে যে এই অভ্যাসটা উড়ে গেল বুঝলাম না। যাইহোক রোজবার্গ ছাড়িয়ে উইনস্টোনে আসলাম। ১৮ ডলারে টিকেট কেটে ভেতরে ঢুকলাম। এখানে সাড়ে ৬কি:মি: রাস্তা আছে যা আকা বাকা উচু নীচু,কিন্তু সাফারী পার্ক বলতে যা বুঝায় তা এটা না।

আমি ভেবেছিলাম উম্মুক্ত স্থানে বাঘ ভাল্লুক সব ছাড়া থাকবে। গাড়ি থামিয়ে তাদের ছবি তুলব। অনেক সাফারী পার্কের এমন ভিডিও দেখেছি। এমনকি চিন্তা করছিলাম বাঘ,সিংহ জানালা দিয়ে থাবা মারলে কি করব ইত্যাদী...কিন্তু দেখলাম সিংহ,বাঘ সব বড় বড় খাচায় বন্দী। খাচার পাশ দিয়ে রাস্তা, থেমে খাচার ভেতরের বাঘ দেখতে হবে। এটা তে চিড়িয়াখানা হল !! পুরোই ফাকি !!

তবে উটপাখি,কেশওয়ারী,হরিন,ছাগল,জেব্রা,বুনো গরু,ইয়াক এসব প্রানী উম্মুক্ত ছিলো। উটপাখির ভয় ডর কম। মাস্তানের মত জানালার কাছে এসে তাকিয়ে থাকে। হাতে খাবার দেখলে ঠোক দেয়।

একেবারে খারাপও লাগেনি। এক টিকেটে ২ চক্কর দেওয়া যায় কিন্তু এসব ভুয়া জিনিস দেখার খায়েস তেমন ছিলোনা। আফ্রিকা,এশিয়া ও অন্যান্য এলাকার নানান সব প্রানী এখানে রয়েছে। তবে বড় সাইজের বাইসন নামক গরু খুব ভালো লাগল। এর একেকটার গায়ে ২০মনের বেশী গোস্ত। চিন্তা করছিলাম এরকম একটা মেরে বারবিকিউ করলে কেমন হত ! এদের শরীরে শীতের সময় বাড়তি লোক গজায়,যা তাদেরকে শীতের গরম থাকতে সহায়তা করে,আবার গৃষ্মে শরীরের উপর থেকে সেই বাড়তি লোমগুলো খসে পড়ে। দেখলাম বেশ কয়েকটার গা থেকে আস্তরন খসে পড়ছে।

চিত্রল হরিন আছে বেশ কিছু। এরা খুব আহাম্মক। একেবারে কাছে চলে আসে। এদের সাইজ ছোট। পূর্ণ বয়ষ্ক একটার গায়ে ২০কেজীর বেশী গোস্ত হবেনা। কুরবানীর ঈদের এদের কুরবানী করা আমার খুব শখ। এদের গোস্ত ঝোল ঝোল করে রান্না করে দেশী চালের ভাতের সাথে টানার মজাই আলাদা।তবে গ্রাম্য স্টাইলে রান্না করতে হবে।

ঘন্টা খানিকের মধ্যেই সবকিছু দেখা শেষ হয়ে গেল। বেশ কিছু প্রানী দেখে জবাই করে খেতে মন চাইলো,এর থেকে বেশী কিছু না। এটা কোনো সাফারী পার্কের জাত'ই না। জীবনে দ্বিতীয়বার এমুখো হব বলে মনে হয়না। চলে আসলাম। রাস্তার অপর পাশে একটা জাদুঘর আছে। কিন্তু বন্ধ ছিলো,কারন আজ আমি আসতে পারি এটা তারা অনুমান করেছিলো।

ফিরতি পথ ধরলাম। এত ক্ষুধা লাগল যা বলার মত না। প্রচন্ড গরম ছিলো। ফেরার পথে ইউজিনের এক হালাল রেস্টুরেন্টে টানলাম ভেজার গোস্ত আর নান রুটি। পুরো সফরে এটাই আসল প্রাপ্তী।

বিষয়: বিবিধ

১২৩০ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

374614
১৪ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০৩:০২
হতভাগা লিখেছেন :
তবে বড় সাইজের বাইসন নামক গরু খুব ভালো লাগল। এর একেকটার গায়ে ২০মনের বেশী গোস্ত। চিন্তা করছিলাম এরকম একটা মেরে বারবিকিউ করলে কেমন হত !


০ ২০ মণের বাইসনকে বারবিকিউতে নিতে যেরকম ফিগার লাগে মনে হয় আমেরিকাতে গিয়ে সেরকম ফিগারই বাগিয়েছেন - তাই সাহস দেখাচ্ছেন বাইসনকে বারবিকিউ বানাতে ।

একটা নিয়ে আসবেন কুরবানীর সময় , ২৫-৩০ লাখ এক লহমায় কামাতে পারবেন ।

পুরো প্রথিবীটাকে সাফারিংস পার্ক বানিয়ে নিজেরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে
১৪ জুলাই ২০১৬ রাত ১১:৪৫
310800
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হাহাহাহাহাহাহা...বাইসন ঘাড়ে করে নিয়ে আসব তাইলে একটা। জবাইটা আপনি কইরেন। অর্ধেক ভাগ পাবেন Happy
১৫ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৮:৫৫
310806
হতভাগা লিখেছেন : হাত-পা ভাল করে চাপা দিয়ে ধরবেন
374620
১৪ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০৩:২১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এটার অবস্থা আমাদের ডুলাহাজারা বল্টু সাফারি পার্ক এর মত নাকি!!!
তবে বাঘ-সিংহ কে খাঁচার মধ্যে না রাখলে ওদের যদি আপনাকে খাইতে ইচ্ছা হইত তবে???
হরিন দিয়া কুরবানি হবেনা। সম্বর এর গোস্ত খেয়েছি। খুবই মজাদার। আমেরিকান ২০ মনি বাইসন নাকি সাদা চামড়ার মানুষরা আসার পর ধ্বংস করে ফেলে। শুধু বাইসন এর জিহবা টা খেত আর বাকি পুরা শরির ফেলে দিত। যতটুক শুনছি ন্যাচারালি এখন আমেরিকার অল্প কয়েকটি জায়গাতেই বাইসন পাওয়া যায়। বাইসন এর জাতের গরু কিন্তু চট্টগ্রামেও আছে!! বন বিভাগ মাঝে মাঝে নিলাম দেয়। একেকটা ১২-১৩ মনি হয়।
১৪ জুলাই ২০১৬ রাত ১১:৪৯
310801
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হ্যা সাদারা অনেক কিছু ধ্বংস করেছে। ডুলাহাজারায়ও কি এরকম খাচায় ভরা ?

অনেক সাফারী পার্কে সবকিছু ছাড়া থাকে। সেখানে বাঘ ,সিংহ শিকার ধরে খায়। এমনকি ভারত ও নেপালে এরকম আছে। সেখানে বাঘের অঅক্রমনে মারাও গেছে অনেকে,তারপরও মজা আছে। হরিনের গোস্ত একবার খেয়েছি,ভালো লেগেছে। এরা শিকারের অনুমতি দেয়।
374636
১৪ জুলাই ২০১৬ রাত ০৮:৪৬
শেখের পোলা লিখেছেন : টানা হিঁচড়ার অভ্যাস আর গেলা। যাদুঘরটা বন্দছিল ভালই হয়েছে নয়ত ডয়নোসরটাকেই টানা শুরু হয়ে যেত। বেচারারতো না বলার ক্ষমতা নেই। কিছুতো ছাড়া অবস্থায় ছিলই। তাইবা কম কি? টরোণ্টর সাফারীতে অনেক বানর গাড়ি ঘিরে ফেলে। ভাগ্যিস ওখানে বানর নাই, থাকলে হয়ত ভূণা ক্ষেতে ইচ্ছে করত। ঈদ কেমন গেলো?
১৪ জুলাই ২০১৬ রাত ১১:৫১
310802
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হাহাহাহাহাহাহা চাচাভাই ঠিকই বলেছে। তবে টানার ভেতরই জীবন সুখকর। বহু লোক তো খেতেই পারেনা যদিও পয়সা আছে Happy

পশুরা গাড়ি ঘিরে ফেলবে এমনই মজার Happy ঈদে তো টানলাম ব্যপক। অনেক গোস্ত কিনেছিলাম,এখনও খাচ্ছি Happy
374637
১৪ জুলাই ২০১৬ রাত ০৮:৪৮
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিশ মণ গোস্ত বারবিকিউ!!! হাহাহাহাহা……

ছবিগুলো অন্নেক সুন্দর, সাথে হাসি উদ্রেককারী কাহিনী, না না লিখনী!!

জাজাকাল্লাহু খাইর।
১৪ জুলাই ২০১৬ রাত ১১:৫২
310803
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ওয়া আলাইকুম সালাম সিস্টার। ২০মনের বারবিকিউ একবারে খেয়ে ফেলতে পারি Smug Smug Smug যেখানে ওটা করব ,সেখানেই একটা বসতি গাড়ব। খেতেই থাকব...Rolling on the Floor Rolling on the Floor
374723
১৬ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৬:১২
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : যাক বাইসনের ঢুস না খেয়ে, লং হর্নের গুতো না খেয়ে, বাঘ সিংহের ডাকে কাবু না হয়ে যে ভালো ভাবে বাসায় এসেছেন আর আমাদের জন্য লিখছেন তাতেই আমি বেজায় খুশি |
১৬ জুলাই ২০১৬ রাত ১০:০৫
310884
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হাহাহাহাহাহা..গুতো খেয়েও যদি তাদের দু পিছ গোস্ত খাওয়া যায় সেটাই Happy কাফি
374728
১৬ জুলাই ২০১৬ সকাল ১১:৪৭
আবু জান্নাত লিখেছেন : Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Eat Eat Eat Eat Eat Eat ধন্যবাদ
১৬ জুলাই ২০১৬ রাত ১০:০৫
310885
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ জনাব Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
375602
৩১ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৮:০৬
কুয়েত থেকে লিখেছেন : এটা সেটা খেতে খেতে চলা অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ
৩১ জুলাই ২০১৬ সকাল ১০:৪৬
311434
দ্য স্লেভ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File